Ajker Patrika

শিশুর ডেঙ্গু হলে যেসব বিষয় জানতে হবে

ডা. নূরজাহান বেগম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, কেসের সংখ্যা ২০০০ সালে ৫ লাখ ৫ হাজার ৪৩০ থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে ১ কোটি ৪৬ লাখ হয়েছে। বর্তমানে রোগটি শতাধিক দেশে স্থানীয়ভাবে (এনডেমিক) বিদ্যমান। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ডব্লিউএইচওতে ৯৭টি দেশ থেকে ৪০ লাখের বেশি কেস এবং ৩ হাজারের বেশি মৃত্যুর রিপোর্ট করা হয়েছে।

রেহাই পায়নি বাংলাদেশও। পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। প্রতিবছরের মতো এবারও শিশুদের আক্রান্তের হার ও জটিলতা বেশি। পরিস্থিতি বেড়ে চলেছে। নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা যদি ত্বরান্বিত না করা হয়, তাহলে শিশুদের ক্ষেত্রে বিপদ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেনে রাখা দরকার, জিন পরিবর্তনের ফলে এডিস মশা এখন রাতেও কামড়ায় এবং ময়লা পানিতে বংশ বিস্তার করে। ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীদের রক্তে ভাইরাসটির নতুন নতুন সেরোটাইপ শনাক্ত হচ্ছে। এবার সেরোটাইপ ১-এর আধিক্য বেশি।

ডেঙ্গু জ্বরে করণীয়

জ্বর কমিয়ে আনার জন্য ওজন অনুসারে শিশুকে প্যারাসিটামল দিতে হবে। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে শিশুর পুরো শরীর বারবার মুছিয়ে দিতে হবে। জ্বর থাকলেও ন্যূনতম চার ঘণ্টার আগে কোনোভাবে দেওয়া যাবে না প্যারাসিটামলের পরবর্তী ডোজ।

দ্রুত জ্বর কমানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যাসপিরিন, ডাইক্লোফেনাক, আইবুপ্রোফেন, ন্যাপরক্সেন, মেফেনেমিক অ্যাসিড, স্টেরয়েড ও অ্যান্টিবায়োটিকজাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যাবে না।

অ্যাসপিরিন কিংবা ওয়ারফেরিনজাতীয় ওষুধ শিশু নিয়মিত খেয়ে থাকলে চিকিৎসককে জানিয়ে তা বন্ধ রাখতে হবে রক্তের অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেট স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং শিশু যেন তরল খাবার; যেমন পানি, স্যালাইন, ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রস খায়; সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। অন্যান্য খাবার খাওয়া নিয়ে এ সময় শিশুকে জোর করা যাবে না।

রক্তের অণুচক্রিকা কমা শুরু করলে ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজা এবং মলদ্বারে সাপোজিটরি দেওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো।

যে ধরনের সমস্যায় শিশুকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার

  • অতিরিক্ত ওজন থাকলে।
  • আগে ডেঙ্গু হলে।
  • বয়স এক বছরের নিচে হলে।
  • অ্যাজমা বা হাঁপানি, ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, কিডনি ও লিভারের সমস্যায় আক্রান্ত থাকলে।
  • স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ খেলে।

যেসব লক্ষণে শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে

  • অতিরিক্ত পেটব্যথা।
  • সারা দিনে তিনবারের বেশি বমি কিংবা তিনবারের বেশি পাতলা পায়খানা।
  • অতিরিক্ত অস্থিরতা কিংবা নেতিয়ে যাওয়া।
  • হঠাৎ ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া কিংবা হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
  • বসা থেকে দাঁড়ালে মাথা ঘোরা কিংবা চোখে অন্ধকার দেখা।
  • অতিরিক্ত ঘাম।
  • শ্বাসকষ্ট।
  • ৬ ঘণ্টা প্রস্রাব না হওয়া।
  • নাক ও মাড়ি থেকে, কাশির সঙ্গে কিংবা প্রস্রাব-পায়খানার সঙ্গে রক্তক্ষরণ হওয়া।

ডা. নূরজাহান বেগম, স্পেশালিস্ট, পেডিয়াট্রিক আইসিইউ, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত