Ajker Patrika

মাদকাসক্তির চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি

সানজিদা শাহ্‌রিয়া ও ফরিদা ইয়াসমিন সুমি
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ২৭
মাদকাসক্তির চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি

মানসিক স্বাস্থ্য
আমরা দুই ভাই। ছোট ভাইকে নিয়ে একটি ঝামেলার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। উচ্চমাধ্যমিক শেষে তাকে কোনোভাবেই অনার্সে ভর্তি করানো যায়নি। এখানে ভর্তি হবে, সেখানে পরীক্ষা দেবে করে সেশন নষ্ট করেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন কাজে ঢোকানোরও চেষ্টা করেছি। সম্ভব হয়নি। এই সম্ভব না হওয়ার অন্যতম কারণ মাদকাসক্তি। প্রথমে এতটা প্রকট ছিল না। কিন্তু এখন কোনোভাবেই তাকে সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। টাকা চাইলে যদি না দেওয়া হয়, তাহলে বাড়িতেই নানা রকম হুমকি দিচ্ছে। কারও কোনো শাসনই মানছে না। বাইরেও এমন সব আচরণ করছে, যা আমাদের পরিবারের জন্য অসম্মানজনক। তাকে চেষ্টা করেছিলাম এক আত্মীয়ের বাসায় রেখে একটা কাজে ঢোকানোর। কিন্তু এক দিনের মাথায় সে কাজ ছেড়ে চলে আসে। তার গায়ে হাত তুলেও লাভ হয়নি। কোনোভাবেই তাকে নেশা থেকে দূরে রাখা যাচ্ছে না। শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। এক মাসের চিকিৎসাও দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনো উন্নতি হয়নি; বরং টাকা না দিলে আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছে। আসলে কী করব? তার আসলে কোন ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, নোয়াখালী

আপনার ভাই কোন ধরনের নেশায় আসক্ত, সেটা জানালে আরও ভালো হতো।

মাদকাসক্তি চিকিৎসাযোগ্য দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা। কাজেই হতাশ হওয়ার বা হাল ছাড়ার কিছু নেই। তবে দীর্ঘদিন এই চিকিৎসা চালাতে হবে। এই চিকিৎসা মনোদৈহিক দুটো ভাগে করা হয়। নেশাগ্রস্ততার জন্য শারীরিক লক্ষণগুলোর জন্য দৈহিক চিকিৎসার প্রয়োজন। আর মানসিক ক্ষতি দূর করতে কাউন্সেলিং এবং সাইকোথেরাপি প্রয়োজন। দুটোই দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। মাত্র এক মাসের চিকিৎসায় সুফল আসবে না।

মস্তিষ্কের সার্কিট, জেনেটিকস, পরিবেশের প্রভাব এবং মানসিক স্বাস্থ্য, মাদকাসক্তি মানুষের এই চারটি জায়গায় জট পাকায়। সেই সঙ্গে যুক্ত হয় নেশা গ্রহণ থেকে বিরত হওয়ার অক্ষমতা। আপনার ভাই এ জটিলতার মধ্যে প্রবেশ করেছেন। এটা একটা দূষিত চক্র। ধীরে ধীরে মাদকাসক্ত মানুষ বিষণ্নতা, দুশ্চিন্তা, তীব্র, রাগ, ক্ষোভে পুড়তে থাকে।

একজন অসুস্থ মানুষের সঙ্গে আমরা যেমন রাগ করতে পারি না, তার চিকিৎসা করাই, তার যত্ন করি, সেই চিকিৎসা এবং যত্ন আপনার ভাইয়ের এখন প্রয়োজন।

গবেষণা বলছে, পুরুষদের মাদকাসক্ত হওয়ার প্রধান কারণ বন্ধুদের সঙ্গ। কাজেই তিনি কোন বন্ধুদের সঙ্গে মেশেন, সেটা চিহ্নিত করে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবতে হবে। দ্বিতীয়ত, আপনার ভাইয়ের সঙ্গে যে আন্তসম্পর্কের বন্ধনটা ঢিলে হয়ে গেছে, সেটা আবার শক্ত করে বাঁধতে হবে। কারণ মাদকাসক্তরা নিজেদের সবার থেকে আলাদা মনে করেন। বিচ্ছিন্ন, পরিত্যক্ত মনে করেন। তাঁকে বোঝাতে হবে যে তাঁর পরিবার সব সময় তাঁর পাশে আছে।

তৃতীয়ত, এই পথ চলা দীর্ঘসময়ের। এখানে অর্থনৈতিক চাপ থাকবে। পরিবারকে সেটাও পরিকল্পনার মধ্যে আনতে হবে। চতুর্থত, মাদকাসক্তি নিরাময়ে সাইকোথেরাপি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এটি তাঁর অতীতকে হিলিংয়ে সাহায্য করবে। কাউন্সেলিং তাঁকে বর্তমানে কীভাবে নিজের আচরণ পরিবর্তন করতে হবে, সেটা শিখতে সাহায্য করবে। পঞ্চমত, ব্যক্তিত্বের সংঘাত অনেক সময় নেশার দিকে ঠেলে দেয়। কাজেই আপনার ভাইয়ের জন্য যত্ন প্রয়োজন। তাঁর ওপর রাগ দেখানো যাবে না। 
‘তুমি ভুল করছ, তোমার জন্য আমাদের সমস্যা হচ্ছে’, এমন কথা বলা যাবে না; বরং তাঁকে বলুন যে এটা তাঁর অসুস্থতা। এটার চিকিৎসা আছে। পরিবার তাঁকে সুস্থ করে তুলতে সব ব্যবস্থা নিয়েছে।

যত্রতত্র যেসব রিহাব সেন্টার তৈরি হয়েছে, সেগুলোতে না যাওয়াই ভালো। কিছু কিছু সেন্টারের ভেতরের পরিবেশ ভয়ংকর।

সানজিদা শাহ্‌রিয়া, চিকিৎসক ও সাইকোথেরাপি প্র‍্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা

স্ত্রীরোগ
আমার বয়স ২২ বছর। উচ্চতা ৫ ফুট ১ ইঞ্চি এবং ওজন ৫০ কেজি, অবিবাহিত। এখনো পড়াশোনা করছি। বেশ কয়েক বছর ধরে আমার প্রতি মাসে পিরিয়ড হয় ঠিকই, তবে এক-দুই সপ্তাহ করে ডেট পেছায়। কোনো কোনো মাসে আবার হয়ও না। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী? 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

পিরিয়ড অনিয়মিত হওয়ার পাশাপাশি ব্রণ হওয়া, চুল পড়ে যাওয়া, অবাঞ্ছিত লোম গজানোর মতো উপসর্গ আছে কি না জানতে হবে।
অনেক সময় স্ট্রেস বা টেনশন থেকে এ রকম সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া হরমোনজনিত কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে। এটি সাধারণ ঘটনা। একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখিয়ে হরমোন পরীক্ষা করিয়ে হরমোনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে 
নিতে হবে। 

ফরিদা ইয়াসমিন সুমি, সহকারী অধ্যাপক, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত