মো. ইকবাল হোসেন
শিশুরাই পরিবার ও দেশের ভবিষ্যৎ। সুস্থ এবং স্বাভাবিকভাবে তাদের বেড়ে ওঠার জন্য চাই রুটিনমাফিক সুষম খাবার। এই খাবার শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ত্বরান্বিত করবে।
শিশুর সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হলে তার জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক খাবার ব্যবস্থাপনা; যাতে প্রতিফলিত হবে বাড়ন্ত শিশু কেমন খাবার খাবে।
প্রোটিন
বয়স অনুযায়ী শিশুদের প্রতি কেজি শারীরিক ওজনের জন্য ১ দশমিক ২ থেকে ১ দশমিক ৬ গ্রাম করে প্রোটিন দরকার। মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, দুধজাতীয় খাবার থেকে এই প্রোটিনের জোগান নিশ্চিত করতে হবে। শরীর গঠনের প্রধান খাবার হচ্ছে প্রোটিন। তাই শর্করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত প্রোটিন শিশুর জন্য নিশ্চিত করতে হবে।
ভালো চর্বি
শিশুদের খাবারে ভালো চর্বি বা গুড ফ্যাট রাখতে হবে। প্রতিদিনের মোট ক্যালরির প্রায় ৩০ শতাংশ চর্বি থাকা জরুরি। খাবারের এ ধরনের উপাদান শিশুর মস্তিষ্কের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ; বিশেষ করে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। গুড ফ্যাট ত্বকের স্বাস্থ্য এবং হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে। এ ছাড়া সব ধরনের বাদাম, সূর্যমুখীর তেল, তিসির তেল, সরিষার তেল, অলিভ অয়েল, সামুদ্রিক মাছ এবং পেটিযুক্ত মাছ গুড ফ্যাটের ভালো উৎস।
ভিটামিন বি-১২
ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতি হলে শিশুর খাবারে অরুচি হয়ে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। এতে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়। মাছ, মাংস, ডিম, দুধসহ প্রায় সব রঙিন শাকসবজিতে ভিটামিন বি-১২ পাওয়া যায়। তাই শিশুর প্রতিদিনের খাবারে মিশ্র শাকসবজি অবশ্যই রাখা দরকার। ভিটামিন বি-১২-এর অভাবে ত্বক ও চোখের ক্ষতি হতে পারে।
লাইসিন অ্যামিনো অ্যাসিড
বাইরে থেকে খাবারের মাধ্যমে যে কটি অ্যামিনো অ্যাসিডের সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়, লাইসিন অ্যামিনো অ্যাসিড তাদের মধ্যে অন্যতম। লাইসিন ক্যালসিয়ামের শোষণ বাড়িয়ে দৈহিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। সব ধরনের প্রোটিন-জাতীয় খাবারে লাইসিন পাওয়া যায়। এ ছাড়া চালে বেশি লাইসিন পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে চাল ও ডাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করলে এটি বেশি কার্যকর হয়।
ভিটামিন ডি
শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি থাকলে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধির প্রক্রিয়া খুব ধীরগতির হয়। ফলে শিশুর খাওয়ার চাহিদা কমে যায়। ভিটামিন ডি-এর সহজলভ্য উৎস সূর্যের আলো। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন তার শরীর ১৫-২০ মিনিট রোদ রাখতে হবে। ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হলে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। এ ছাড়া ক্ষুধামান্দ্যের পাশাপাশি রিকেটস রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার
শিশুর হাড় ও দাঁত গঠনের অন্যতম প্রধান উপাদান ক্যালসিয়াম। এর সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রতিদিনের খাবারে দুধ বা দুধের তৈরি খাবার রাখা জরুরি। মাছ, মাংস, লালশাক, পালংশাক, ছোট মাছ, ডিম, বাদাম ইত্যাদি ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।
জিংকসমৃদ্ধ খাবার
জিংকের ঘাটতি হলে খাওয়ার রুচি কমে যায়। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, কলিজা, বাদাম—এগুলো জিংকের ভালো উৎস। শাকসবজি থেকেও জিংক পাওয়া যায়।
তবে প্রাণিজ উৎস থেকে জিংকের সরবরাহ তৈরি করতে হবে। জিংক ক্ষুধামান্দ্য দূর করার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। এর অভাবে নখ সাদা ও ভঙ্গুর হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া ত্বক খসখসে হয়ে চুল পড়ে যেতে পারে। জিংক পরিপাকতন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে খাওয়ার রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।
ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার
শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে শিশুকে। এর অভাবেও ক্ষুধামান্দ্য হতে পারে। আমাদের দেশীয় প্রায় সব ফল ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস। শাকসবজিতেও ভিটামিন সি রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগই রান্নার সময় নষ্ট হয়ে যায়। তাই প্রতিদিনের খাবারে প্রয়োজনমতো লেবু, আমড়া, আমলকী, জাম্বুরা, পেয়ারা থেকে পছন্দমতো ফল খাওয়াতে হবে। ভিটামিন সি আয়রনের শোষণ ত্বরান্বিত করে।
প্রোবায়োটিকস-সমৃদ্ধ খাবার
প্রোবায়োটিকস-সমৃদ্ধ খাবারগুলো অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে কার্যকর। তাই শিশুর খাবারে প্রতিদিন প্রোবায়োটিকস জাতীয় খাবারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। টক দই, ঘোল, পান্তা, ডার্ক চকলেট—এগুলো প্রোবায়োটিকস জাতীয় খাবারের ভালো উৎস।
সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি শিশুর সঠিক ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। রাতের পর্যাপ্ত ঘুম শরীরে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষাসহ পুষ্টির শোষণ ত্বরান্বিত করে। এ ছাড়া সকালে কিংবা বিকেলে শিশুদের খোলা মাঠে খেলার সুযোগ দিতে হবে। কারণ, খেলাধুলা শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে।
পরামর্শ দিয়েছেন: সিনিয়র পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
শিশুরাই পরিবার ও দেশের ভবিষ্যৎ। সুস্থ এবং স্বাভাবিকভাবে তাদের বেড়ে ওঠার জন্য চাই রুটিনমাফিক সুষম খাবার। এই খাবার শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ত্বরান্বিত করবে।
শিশুর সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হলে তার জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক খাবার ব্যবস্থাপনা; যাতে প্রতিফলিত হবে বাড়ন্ত শিশু কেমন খাবার খাবে।
প্রোটিন
বয়স অনুযায়ী শিশুদের প্রতি কেজি শারীরিক ওজনের জন্য ১ দশমিক ২ থেকে ১ দশমিক ৬ গ্রাম করে প্রোটিন দরকার। মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, দুধজাতীয় খাবার থেকে এই প্রোটিনের জোগান নিশ্চিত করতে হবে। শরীর গঠনের প্রধান খাবার হচ্ছে প্রোটিন। তাই শর্করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত প্রোটিন শিশুর জন্য নিশ্চিত করতে হবে।
ভালো চর্বি
শিশুদের খাবারে ভালো চর্বি বা গুড ফ্যাট রাখতে হবে। প্রতিদিনের মোট ক্যালরির প্রায় ৩০ শতাংশ চর্বি থাকা জরুরি। খাবারের এ ধরনের উপাদান শিশুর মস্তিষ্কের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ; বিশেষ করে ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। গুড ফ্যাট ত্বকের স্বাস্থ্য এবং হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে। এ ছাড়া সব ধরনের বাদাম, সূর্যমুখীর তেল, তিসির তেল, সরিষার তেল, অলিভ অয়েল, সামুদ্রিক মাছ এবং পেটিযুক্ত মাছ গুড ফ্যাটের ভালো উৎস।
ভিটামিন বি-১২
ভিটামিন বি-১২-এর ঘাটতি হলে শিশুর খাবারে অরুচি হয়ে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। এতে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা থেকে যায়। মাছ, মাংস, ডিম, দুধসহ প্রায় সব রঙিন শাকসবজিতে ভিটামিন বি-১২ পাওয়া যায়। তাই শিশুর প্রতিদিনের খাবারে মিশ্র শাকসবজি অবশ্যই রাখা দরকার। ভিটামিন বি-১২-এর অভাবে ত্বক ও চোখের ক্ষতি হতে পারে।
লাইসিন অ্যামিনো অ্যাসিড
বাইরে থেকে খাবারের মাধ্যমে যে কটি অ্যামিনো অ্যাসিডের সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়, লাইসিন অ্যামিনো অ্যাসিড তাদের মধ্যে অন্যতম। লাইসিন ক্যালসিয়ামের শোষণ বাড়িয়ে দৈহিক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। সব ধরনের প্রোটিন-জাতীয় খাবারে লাইসিন পাওয়া যায়। এ ছাড়া চালে বেশি লাইসিন পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে চাল ও ডাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করলে এটি বেশি কার্যকর হয়।
ভিটামিন ডি
শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি থাকলে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধির প্রক্রিয়া খুব ধীরগতির হয়। ফলে শিশুর খাওয়ার চাহিদা কমে যায়। ভিটামিন ডি-এর সহজলভ্য উৎস সূর্যের আলো। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন তার শরীর ১৫-২০ মিনিট রোদ রাখতে হবে। ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হলে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। এ ছাড়া ক্ষুধামান্দ্যের পাশাপাশি রিকেটস রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার
শিশুর হাড় ও দাঁত গঠনের অন্যতম প্রধান উপাদান ক্যালসিয়াম। এর সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রতিদিনের খাবারে দুধ বা দুধের তৈরি খাবার রাখা জরুরি। মাছ, মাংস, লালশাক, পালংশাক, ছোট মাছ, ডিম, বাদাম ইত্যাদি ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস।
জিংকসমৃদ্ধ খাবার
জিংকের ঘাটতি হলে খাওয়ার রুচি কমে যায়। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, কলিজা, বাদাম—এগুলো জিংকের ভালো উৎস। শাকসবজি থেকেও জিংক পাওয়া যায়।
তবে প্রাণিজ উৎস থেকে জিংকের সরবরাহ তৈরি করতে হবে। জিংক ক্ষুধামান্দ্য দূর করার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। এর অভাবে নখ সাদা ও ভঙ্গুর হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ ছাড়া ত্বক খসখসে হয়ে চুল পড়ে যেতে পারে। জিংক পরিপাকতন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে খাওয়ার রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।
ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার
শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে শিশুকে। এর অভাবেও ক্ষুধামান্দ্য হতে পারে। আমাদের দেশীয় প্রায় সব ফল ভিটামিন সি-এর ভালো উৎস। শাকসবজিতেও ভিটামিন সি রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগই রান্নার সময় নষ্ট হয়ে যায়। তাই প্রতিদিনের খাবারে প্রয়োজনমতো লেবু, আমড়া, আমলকী, জাম্বুরা, পেয়ারা থেকে পছন্দমতো ফল খাওয়াতে হবে। ভিটামিন সি আয়রনের শোষণ ত্বরান্বিত করে।
প্রোবায়োটিকস-সমৃদ্ধ খাবার
প্রোবায়োটিকস-সমৃদ্ধ খাবারগুলো অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে কার্যকর। তাই শিশুর খাবারে প্রতিদিন প্রোবায়োটিকস জাতীয় খাবারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। টক দই, ঘোল, পান্তা, ডার্ক চকলেট—এগুলো প্রোবায়োটিকস জাতীয় খাবারের ভালো উৎস।
সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি শিশুর সঠিক ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। রাতের পর্যাপ্ত ঘুম শরীরে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষাসহ পুষ্টির শোষণ ত্বরান্বিত করে। এ ছাড়া সকালে কিংবা বিকেলে শিশুদের খোলা মাঠে খেলার সুযোগ দিতে হবে। কারণ, খেলাধুলা শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে।
পরামর্শ দিয়েছেন: সিনিয়র পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
দেশে ডেঙ্গু ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চলতি সেপ্টেম্বরে মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রতিদিন নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। সর্বশেষ গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৪০ জন রোগী।
১৪ ঘণ্টা আগেদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে; যা এক দিনের মধ্যে এ বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যা। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৪০ জন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও এক দিনে সর্বোচ্চ।
১ দিন আগেডেঙ্গুতে দুদিনে মারা যাওয়া ১২ জনের মধ্যে ছয়জন নারী ও ছয়জন পুরুষ। তাদের মধ্যে বরিশাল বিভাগের পাঁচজন, চট্টগ্রাম বিভাগের একজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তিনজন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দুজন ও ময়মনসিংহ বিভাগের একজন রয়েছে।
১ দিন আগেদেশের মানুষের দীর্ঘমেয়াদি ও অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার হার ক্রমেই বাড়ছে। প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মারা যাচ্ছেন এসব রোগের কারণে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের প্রায় ৫৩ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন সদস্য কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত।
২ দিন আগে