Ajker Patrika

জাপানে শতবর্ষী নাগরিকের সংখ্যা পৌঁছাল প্রায় ১ লাখে

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৮
জাপানে শতবর্ষী নাগরিকের সংখ্যা পৌঁছাল প্রায় ১ লাখে

জাপান শত বছর বা তার বেশি বয়সী নাগরিকের সংখ্যায় রেকর্ড গড়েছে। সম্প্রতি দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে শতবর্ষী মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৭৬৩ জনে। এর মধ্যে নারীদের সংখ্যা ৮৮ শতাংশ। এটি প্রমাণ করে, জাপানি নারীরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচেন। জাপানের মানুষ যে দীর্ঘ জীবন যাপন করেন, সে খবর প্রায় সবার জানা। বিশ্বে বেশি বয়সী মানুষদের অনেকে দেশটিতে থাকেন।

সর্বোচ্চ বয়সী নারী-পুরুষেরা

দেশটির সবচেয়ে বয়সী মানুষ একজন নারী। শিগেকো কাগাওয়া নামের এই নারীর বয়স ১১৪ বছর। তিনি নারা শহরের উপশহর ইয়ামাটোকরিয়ামায় থাকেন। অন্যদিকে সবচেয়ে বয়সী পুরুষ হলেন কিয়োতাকা মিজুনো। ১১১ বছর বয়সী এই ব্যক্তি বাস করেন উপকূলীয় শহর ইওয়াটায়। জাপানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাকামারো ফুকোকা সব শতবর্ষী নাগরিককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘তাঁদের দীর্ঘায়ু এবং সমাজের উন্নয়নে অসাধারণ অবদানের জন্য আমরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।’

ষাটের দশকে জি৭-ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জাপানে ১০০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের অনুপাত কম ছিল। কিন্তু কয়েক দশক ধরে এই চিত্র উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। ১৯৬৩ সালে যখন সরকার শতবর্ষী ব্যক্তিদের গণনা শুরু

করে, তখন দেশটিতে ১০০ বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা ছিল ১৫৩ জন। এই সংখ্যা ১৯৮১ সালে ১ হাজার এবং ১৯৯৮ সালের মধ্যে ১০ হাজারে পৌঁছায়।

এলডারলি ডে উদ্‌যাপন

জাপানে প্রতিবছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পালিত হয় এলডারলি ডে হিসেবে; প্রধানত বয়সী নাগরিকদের সম্মান জানানোর জন্য। এদিন নতুন শতবর্ষী নাগরিকেরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অভিনন্দনপত্র ও রুপার কাপ পান। চলতি বছরে ৫২ হাজার ৩১০ জন নতুন শতবর্ষী এই অনুষ্ঠানে পুরস্কার পেয়েছেন।

কেন জাপানের মানুষ দীর্ঘ জীবন পান

জাপানের মানুষ সাধারণত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করেন। তাঁরা বেশি মাছ ও শাকসবজি খান এবং লাল মাংস ও চিনি কম খান। দেশটিতে বিশেষ করে নারীদের মধ্যে স্থূলতার হার খুব কম। এ ছাড়া হৃদ্‌রোগের সমস্যা ও সাধারণ ক্যানসারে মৃত্যুর হারও কম। শুধু খাদ্য নয়, জাপানিরা বার্ধক্যেও সক্রিয় থাকেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বয়স্কদের তুলনায় বেশি হাঁটেন

ও গণপরিবহন ব্যবহার করেন। এ ছাড়া তাঁরা সমাজের অন্যদের সঙ্গে নিয়মিত মেলামেশা করেন। এর অংশ হিসেবে ১৯২৮ সালে চালু হয়েছে দৈনিক তিন মিনিটের গ্রুপ ব্যায়াম ‘রেডিও তাইসো’। এটি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয় এবং ছোট ছোট স্থানীয় কমিউনিটিতে সবাই একসঙ্গে এর অনুশীলন করেন।

জাপানের স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, সক্রিয় জীবন, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং সমাজে প্রবীণদের প্রতি সম্মান ও যত্নের প্রতিফল তাদের আজকের এই অর্জন। খাদ্য, ব্যায়াম ও সামাজিক সম্পর্ক—এ তিনটি মূল উপাদানই জাপানের মানুষের দীর্ঘ জীবনের রহস্য বলে মনে করা হয়।

সূত্র: বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত