Ajker Patrika

পাঁচ লাখ শিশু সময়মতো পাচ্ছে না টিকার সব ডোজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের প্রায় পাঁচ লাখ শিশু সময়মতো টিকার সব ডোজ পাচ্ছে না। তাদের মধ্যে ৭০ হাজার শিশু কোনো টিকাই পায় না। টিকা না পাওয়ার হার শহরাঞ্চলে বেশি।

টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও এসব তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের (গ্যাভি) যৌথ বিবৃতিতে। বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ-২০২৫-এর শুরুতে গতকাল সোমবার সংস্থা তিনটি এই বিবৃতি দিয়েছে।

বিবৃতির তথ্য অনুযায়ী, দেশে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও চার লাখের মতো শিশু ঠিকমতো সব টিকা পায়নি। কোনো টিকা পায় না ৭০ হাজার শিশু। শহরাঞ্চলগুলোয় টিকা না পাওয়ার হার বেশি। ৭৯ শতাংশ শিশু পুরোপুরি টিকা পেয়েছে। এক ডোজও টিকা পায়নি ২ দশমিক ৪ শতাংশ। ৯ দশমিক ৮ শতাংশ শিশু টিকার সব ডোজ সময়মতো পায়নি। অবশ্য গ্রামাঞ্চলে ৮৫ শতাংশ শিশুই টিকার সব ডোজ পেয়েছে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি (ওআইসি) স্ট্যানলি গোয়াভুয়া বলেন, ১৯৭৯ সালে ইপিআই চালু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। সব ডোজ টিকা গ্রহণের হার ২ শতাংশ থেকে ৮১ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এই সাফল্য সরকারের জোরালো প্রতিশ্রুতি এবং অংশীজন, এনজিও এবং প্রত্যক্ষভাবে জড়িত স্বাস্থ্যকর্মীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে। তবে চূড়ান্ত সফলতার জন্য প্রতিটি শিশু ও নারীর কাছে পৌঁছাতে বিশেষ করে প্রত্যন্ত এলাকা ও শহরের দরিদ্র এলাকাগুলোয় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ, জোরালো প্রচেষ্টা এবং বাড়তি বিনিয়োগ প্রয়োজন।

ইউনিসেফ, ডব্লিউএইচও এবং গ্যাভি বলছে, বাংলাদেশে ইপিআইয়ের কারণে বর্তমানে প্রতিবছর প্রায় ৯৪ হাজার মানুষের জীবন রক্ষা পাচ্ছে। আর এই কর্মসূচির কারণে ৫০ লাখ শিশুর অসুস্থতা প্রতিরোধ করা যাচ্ছে। তবে প্রতিটি শিশুকে টিকাদান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। একেবারেই টিকা না পাওয়া ৭০ হাজার এবং টিকার সব ডোজ ঠিকমতো না পাওয়া অন্তত ৪ লাখ শিশুর কাছে পৌঁছানো জরুরি। এসব শিশু প্রায়ই নানাবিধ জটিলতার মুখোমুখি হয়ে থাকে। যেমন দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব এবং স্বাস্থ্যসেবার সীমিত সুযোগ। টিকার সব ডোজ সময়মতো প্রয়োগের লক্ষ্যপূরণের চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে জনবলের ঘাটতি, শহরের বস্তিগুলোয় ব্যাপক সংখ্যার টিকা না পাওয়া, প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় পৌঁছাতে নানা বাধা এবং গ্যাভির সহায়তার ক্ষেত্রে আসন্ন পরিবর্তন অন্যতম।

Untitled-7

বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. আহমেদ জামশেদ মোহাম্মদ বলেন, ‘মানুষের জীবন রক্ষাকারী ও জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপাদানের অন্যতম টিকা; যার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবাকে এগিয়ে নেওয়া, সেবাদান ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। অনেক সংকটের মধ্যেও টিকাদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীদের নিবেদন এবং অংশীজনদের সহায়তার ভূমিকাকে প্রতিফলিত করে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, গ্যাভি, ইউনিসেফ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে বাংলাদেশে পোলিও, হাম, রুবেলা এবং রোটা ভাইরাসের মতো রোগগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রুটিন টিকাদান কর্মসূচিতে সহায়তা করে চলেছে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ গ্যাভির সহায়তায় জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য ১০-১৪ বছর বয়সী ৭০ লাখের বেশি মেয়েকে লক্ষ্য করে এক ডোজ হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) ভ্যাকসিন চালু করেছে।

গ্যাভির আঞ্চলিক প্রধান (কোর কান্ট্রিজ) স্যাম মুলের বলেন, ‘বাংলাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় যে বাস্তব প্রভাব দেখা গেছে ও অগ্রগতি হয়েছে, তা আমরা ধরে রাখতে চাইলে স্বাস্থ্য নিরাপত্তার উন্নয়ন ও মানুষকে টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য টিকাদানে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এবার সরানো হলো জ্বালানি উপদেষ্টার পিএসকে

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

উদ্দীপনের ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক সচিব মিহির কান্তির বিরুদ্ধে ৬ মামলা

ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে কুকুরের ছবি: প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

মন্ত্রণালয়ের মতামত ছাড়াই ইশরাককে মেয়র ঘোষণা: আইন উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত