অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া
বিষয়টিকে দুটো ভাগে ভাগ করব। একটি হচ্ছে পারস্পরিক সম্পর্ক। আর অপরটি মানসিক জটিলতা। প্রতিটা সম্পর্কের মতোই দাম্পত্য সম্পর্কে শ্রদ্ধাবোধ থাকা প্রয়োজন। ধরুন, স্বামী মনে করছেন–স্ত্রী আবার কী বোঝে? তিনি নিজে যা বলবেন, সেটাই সঠিক। আবার অনেক সময় এর উল্টোটাও ঘটে। এই যদি আপনার ধারণা হয় তবে বলব, তা বদলানোর সময় কিন্তু এসেছে।
যেকোনো সম্পর্কে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ তখনই তৈরি হবে, যখন আমরা দুটো কাজ করি। প্রথমত, সিদ্ধান্ত নেওয়ার বেলায় অপর পক্ষকে অংশীদার করা। এখানে অপর পক্ষকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। অর্থাৎ যার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তার মতামতকেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশ্লেষণে আনতে হবে।
দ্বিতীয়ত, তার অনুভূতিগুলো বোঝার চেষ্টা করতে হবে। আমাদের মৌলিক অনুভূতি মাত্র চারটা–আনন্দ, দুঃখ, ভয় ও রাগ। অপরজন যদি অকপটে আমার সামনে তার অনুভূতির কথা বলার সুযোগ পায়, তবে বুঝতে হবে সম্পর্কটিতে শ্রদ্ধাবোধের জায়গাটা আছে।
শ্রদ্ধাবোধের অভাব যদি থাকে তখন কী হয়?
যখন আমরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সংযুক্ত হতে পারি না, অনুমতি পাই না, আমাদের ওপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়, অথবা আমার অনুভূতিকে সামনের মানুষটি বোঝার চেষ্টা করেন না—তখন এক কথায় আমরা গ্রহণযোগ্য পেয়েছি বলে অনুভব করি না। আমাদের অনুভূতিগুলো যে গুরুত্বপূর্ণ এবং তা যদি সামনের মানুষটি না বোঝেন, তখন অবশ্যই নিজের মধ্যে হতাশা তৈরি হবে।
কেন শ্রদ্ধাবোধের অভাব হয়?
প্রথমেই মনে রাখতে হবে, আমাদের সম্পর্কগুলো চর্চার বিষয়। একটা ছোট্ট চারা গাছকে যেমন আমরা প্রতিদিন যত্ন করি। তেমনি সম্পর্কগুলোরও এ রকম যত্নের প্রয়োজন। তা না হলে শ্রদ্ধাবোধ নষ্ট হয়ে যায় ও সম্পর্ক শুকিয়ে যায়।
দ্বিতীয়ত, মানুষ হিসেবে একজন মানুষকে যে শ্রদ্ধা করতে হয়, এই চিন্তার জায়গাটাতেই তো আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা রিকশাওয়ালাকে ডাকি, ‘এই রিকশা”, ভাড়া যাবি?’ দারোয়ানকে বলি, ‘তুই সর।’ এভাবে দেখা যায় দাম্পত্য সম্পর্কে যার আধিপত্য বেশি সে অপরজনকে হেয় করে কথা বলছে। অবজ্ঞা করছে।
তৃতীয়ত, আমরা সম্পর্কগুলোকে টেকেন ফর গ্র্যান্টেড হিসেবে ধরে নেই। ভাবি– ‘যাবে কোথায়, বিয়ে তো হয়েই গেছে!’ কিন্তু বিশ্বাস করুন, এটা ভ্রান্ত ধারণা। একই ছাদের নিচে থেকেও দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা যে দম্পতি হতে পারে—এটা আপনারাও জানেন।
চতুর্থত, নিজের আচরণগত সমস্যা। গবেষণায় বলছে ৯০% বিবাহিত দম্পতি মানসিক ও শারীরিকভাবে পরস্পর এত বেশি বিচ্ছিন্ন অনুভব করে যে তা সম্পর্কের ক্ষেত্রে সত্যিকারের তালাকের চেয়ে বেশি ক্ষতি করে। আচরণগত প্রভাব শরীর ও মন উভয়ের ওপরই পড়ে। আচরণগত সমস্যার কারণে সম্পর্কের মধ্য়ে শ্রদ্ধাবোধের অভাব দেখা দেয়। একটা সম্পর্কে যখন শ্রদ্ধাবোধ চলে যায়, তখন ভালোবাসা থাকলেও সম্পর্কটি শ্বাস নিতে পারে না।
কী করতে হবে যাতে সম্পর্কে শ্রদ্ধাবোধ থাকে?
দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে খোলাখুলি আলোচনা করার বিকল্প নেই। দুজনের মধ্য়ে একজন যদি অপরজনকে কোণঠাসা করে ফেলেন, আপত্তি তোলেন, তাহলে সেটি শুধু খারাপই হবে। দুজনকেই খোলামেলা কথা বলতে হবে এবং সে সময় শব্দচয়ন সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। তা না হলে তারা পুরোপুরি বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। অনেক সময় একপক্ষ শুধু সবকিছু ঠিক করতে চায়। কিন্তু অন্যপক্ষ আগের মতোই থাকে এবং পরিবর্তনের যেকোনো প্রচেষ্টাকেই ব্যর্থ করে দেয়। যেকোনো সমস্যা কাটিয়ে উঠতে, দুই পক্ষকেই শিখতে হবে যে কীভাবে কোনো ঘটনা বাড়তে না দেয়া যায়। তাদের প্রায়ই কথা বলতে হবে, আপত্তিকর কোনো শব্দ বলা যাবে না। যদি স্বামী তার স্ত্রীকে কোনো উপহার দিয়ে অবাক করে না দেয়, তাহলে সে কাজটি স্ত্রীকেই প্রথমে শুরু করতে হবে। সব সময় পদক্ষেপের জন্য বসে না থেকে তা শুরু করে দিলে সেটি অনেক বেশি কার্যকর হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, কখনোই হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না, চেষ্টা করে যেতে হবে।
পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে করণীয়
সঙ্গীর কথা মনোযোগ দিয়ে কথা শুনতে হবে। সঙ্গীকে বুঝতে দিন আপনি তার প্রতি মনোযোগী। খোলামেলা আলোচনা করুন, পরস্পরের জীবনের লক্ষ্য ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করুন, ঘরের কাজ ও দায়িত্ব ভাগ করে নিন, পারস্পরিক গোপনীয় ব্যাপারগুলোকে সম্মান করতে শিখুন, পরস্পরের অনুভূতির ব্যাপারে সচেতন থাকুন।
পরামর্শ: চিকিৎসক, কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, বাংলাদেশ
বিষয়টিকে দুটো ভাগে ভাগ করব। একটি হচ্ছে পারস্পরিক সম্পর্ক। আর অপরটি মানসিক জটিলতা। প্রতিটা সম্পর্কের মতোই দাম্পত্য সম্পর্কে শ্রদ্ধাবোধ থাকা প্রয়োজন। ধরুন, স্বামী মনে করছেন–স্ত্রী আবার কী বোঝে? তিনি নিজে যা বলবেন, সেটাই সঠিক। আবার অনেক সময় এর উল্টোটাও ঘটে। এই যদি আপনার ধারণা হয় তবে বলব, তা বদলানোর সময় কিন্তু এসেছে।
যেকোনো সম্পর্কে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ তখনই তৈরি হবে, যখন আমরা দুটো কাজ করি। প্রথমত, সিদ্ধান্ত নেওয়ার বেলায় অপর পক্ষকে অংশীদার করা। এখানে অপর পক্ষকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। অর্থাৎ যার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তার মতামতকেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশ্লেষণে আনতে হবে।
দ্বিতীয়ত, তার অনুভূতিগুলো বোঝার চেষ্টা করতে হবে। আমাদের মৌলিক অনুভূতি মাত্র চারটা–আনন্দ, দুঃখ, ভয় ও রাগ। অপরজন যদি অকপটে আমার সামনে তার অনুভূতির কথা বলার সুযোগ পায়, তবে বুঝতে হবে সম্পর্কটিতে শ্রদ্ধাবোধের জায়গাটা আছে।
শ্রদ্ধাবোধের অভাব যদি থাকে তখন কী হয়?
যখন আমরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সংযুক্ত হতে পারি না, অনুমতি পাই না, আমাদের ওপর কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়, অথবা আমার অনুভূতিকে সামনের মানুষটি বোঝার চেষ্টা করেন না—তখন এক কথায় আমরা গ্রহণযোগ্য পেয়েছি বলে অনুভব করি না। আমাদের অনুভূতিগুলো যে গুরুত্বপূর্ণ এবং তা যদি সামনের মানুষটি না বোঝেন, তখন অবশ্যই নিজের মধ্যে হতাশা তৈরি হবে।
কেন শ্রদ্ধাবোধের অভাব হয়?
প্রথমেই মনে রাখতে হবে, আমাদের সম্পর্কগুলো চর্চার বিষয়। একটা ছোট্ট চারা গাছকে যেমন আমরা প্রতিদিন যত্ন করি। তেমনি সম্পর্কগুলোরও এ রকম যত্নের প্রয়োজন। তা না হলে শ্রদ্ধাবোধ নষ্ট হয়ে যায় ও সম্পর্ক শুকিয়ে যায়।
দ্বিতীয়ত, মানুষ হিসেবে একজন মানুষকে যে শ্রদ্ধা করতে হয়, এই চিন্তার জায়গাটাতেই তো আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা রিকশাওয়ালাকে ডাকি, ‘এই রিকশা”, ভাড়া যাবি?’ দারোয়ানকে বলি, ‘তুই সর।’ এভাবে দেখা যায় দাম্পত্য সম্পর্কে যার আধিপত্য বেশি সে অপরজনকে হেয় করে কথা বলছে। অবজ্ঞা করছে।
তৃতীয়ত, আমরা সম্পর্কগুলোকে টেকেন ফর গ্র্যান্টেড হিসেবে ধরে নেই। ভাবি– ‘যাবে কোথায়, বিয়ে তো হয়েই গেছে!’ কিন্তু বিশ্বাস করুন, এটা ভ্রান্ত ধারণা। একই ছাদের নিচে থেকেও দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা যে দম্পতি হতে পারে—এটা আপনারাও জানেন।
চতুর্থত, নিজের আচরণগত সমস্যা। গবেষণায় বলছে ৯০% বিবাহিত দম্পতি মানসিক ও শারীরিকভাবে পরস্পর এত বেশি বিচ্ছিন্ন অনুভব করে যে তা সম্পর্কের ক্ষেত্রে সত্যিকারের তালাকের চেয়ে বেশি ক্ষতি করে। আচরণগত প্রভাব শরীর ও মন উভয়ের ওপরই পড়ে। আচরণগত সমস্যার কারণে সম্পর্কের মধ্য়ে শ্রদ্ধাবোধের অভাব দেখা দেয়। একটা সম্পর্কে যখন শ্রদ্ধাবোধ চলে যায়, তখন ভালোবাসা থাকলেও সম্পর্কটি শ্বাস নিতে পারে না।
কী করতে হবে যাতে সম্পর্কে শ্রদ্ধাবোধ থাকে?
দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে খোলাখুলি আলোচনা করার বিকল্প নেই। দুজনের মধ্য়ে একজন যদি অপরজনকে কোণঠাসা করে ফেলেন, আপত্তি তোলেন, তাহলে সেটি শুধু খারাপই হবে। দুজনকেই খোলামেলা কথা বলতে হবে এবং সে সময় শব্দচয়ন সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। তা না হলে তারা পুরোপুরি বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। অনেক সময় একপক্ষ শুধু সবকিছু ঠিক করতে চায়। কিন্তু অন্যপক্ষ আগের মতোই থাকে এবং পরিবর্তনের যেকোনো প্রচেষ্টাকেই ব্যর্থ করে দেয়। যেকোনো সমস্যা কাটিয়ে উঠতে, দুই পক্ষকেই শিখতে হবে যে কীভাবে কোনো ঘটনা বাড়তে না দেয়া যায়। তাদের প্রায়ই কথা বলতে হবে, আপত্তিকর কোনো শব্দ বলা যাবে না। যদি স্বামী তার স্ত্রীকে কোনো উপহার দিয়ে অবাক করে না দেয়, তাহলে সে কাজটি স্ত্রীকেই প্রথমে শুরু করতে হবে। সব সময় পদক্ষেপের জন্য বসে না থেকে তা শুরু করে দিলে সেটি অনেক বেশি কার্যকর হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, কখনোই হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না, চেষ্টা করে যেতে হবে।
পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে করণীয়
সঙ্গীর কথা মনোযোগ দিয়ে কথা শুনতে হবে। সঙ্গীকে বুঝতে দিন আপনি তার প্রতি মনোযোগী। খোলামেলা আলোচনা করুন, পরস্পরের জীবনের লক্ষ্য ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করুন, ঘরের কাজ ও দায়িত্ব ভাগ করে নিন, পারস্পরিক গোপনীয় ব্যাপারগুলোকে সম্মান করতে শিখুন, পরস্পরের অনুভূতির ব্যাপারে সচেতন থাকুন।
পরামর্শ: চিকিৎসক, কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, বাংলাদেশ
গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্যে রয়েছে ‘থ্যালেটস’ (Phthalates) নামক রাসায়নিক পদার্থ। আর এই থ্যালেটস কোনো নির্বিরোধী রাসায়নিক উপাদান নয়। এর কারণে মৃত্যুর ঘটনা অনেক বেশি। থ্যালেটসের সংস্পর্শে আসার কারণে ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাপী ৩ লাখ ৫৬ হাজারেরও বেশি মানুষের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবর
৯ ঘণ্টা আগেপুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের সিটি স্ক্যান মেশিনের ফিল্মসংকট দেখা দিয়েছে। এতে সিটি স্ক্যান করার প্রয়োজন এমন রোগী ও তাঁদের স্বজনদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে যাঁদের জরুরি ভিত্তিতে সিটি স্ক্যান করা প্রয়োজন, তাঁরা পড়ছেন সবচেয়ে বেশি...
২১ ঘণ্টা আগেআশার কথা হলো, পরিবর্তন আসছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক যুগান্তকারী পরীক্ষায় দেখা গেছে, তীব্রভাবে চিনাবাদামের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত দুই-তৃতীয়াংশ প্রাপ্তবয়স্ককে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে চিনাবাদাম খাইয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা সম্ভব হয়েছে।
১ দিন আগেঅতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার বা ‘আল্ট্রা প্রসেসড ফুড’ (ইউপিএফ) বেশি খাওয়ার কারণে শুধু স্থূলতা, হতাশা, ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগই নয়, বাড়ছে অকালমৃত্যুর ঝুঁকিও। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে।
১ দিন আগে