রিমন রহমান, রাজশাহী

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা পার্কে। জানা গেল, রোজ ভোরে এখানে শরীরচর্চা করেন জ্যেষ্ঠ এই নাগরিকেরা।
এভাবে টানা ২৩ বছর রাজশাহীর একদল স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ শরীরচর্চা করে চলেছেন। একসঙ্গে চলতে চলতে তাঁরা একটি সংগঠনও দাঁড় করেছেন, নাম ‘উজ্জীবন পদ্মার পাড়, রাজশাহী’। সংগঠনে এখন সদস্য প্রায় ৬০ জন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রতিদিনই ভোরে এক হন শরীরচর্চা করতে। তাঁরা এখন শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত। যান না চিকিৎসকের কাছে; বরং শরীরচর্চার জন্য কয়েকজন চিকিৎসকই আসেন তাঁদের কাছে, পদ্মার পাড়ে!
বাধা ডিঙিয়ে উজ্জীবিত উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের স্লোগান হলো ‘নিয়মিত হাঁটুন, সুস্থ থাকুন’। সংগঠনের সদস্যরা আগে রাজশাহী রিভারভিউ স্কুলের মাঠে শরীরচর্চা করতেন। সেখানে হাসিঠাট্টা হতো, জোরে শব্দ হতো। অভিযোগ এল পাশেই থাকা জেলা প্রশাসকের বাংলো থেকে। ফলে জায়গা ছাড়তে হলো তাঁদের। গেলেন শিশু একাডেমির মাঠে। আপত্তি এল সেখানেও। এরপর শিমলা পার্ক। এখানে কোনো আপত্তি নেই। প্রায় আট বছর ধরে রোজ ভোরে সেখানেই চলছে শরীরচর্চা। এখানে যাঁরা আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই বার্ধক্যে পৌঁছেছেন। তবে উজ্জীবনের মাধ্যমে বার্ধক্য জয় করে জীবনকে একেবারে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছেন তাঁরা।
হেঁটে হেঁটে পার্কে
রোজ ভোরে সবাই বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে শিমলা পার্কে আসেন। কেউ কেউ মসজিদে ফজরের নামাজ আদায়ের পর বাড়ি না ফিরে হাঁটা দেন পার্কের উদ্দেশে। শিমলা পার্কে এসে সবাই গোল হয়ে দাঁড়ান। তারপর শরীর নিয়ে চলে নানা রকম কসরত। বুধবার ভোরে পার্কে গিয়ে দেখা গেল, একজন বাঁশি বাজিয়ে শরীরচর্চা শুরুর সংকেত দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সবাই বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর মুখে ‘হু-হা, হা-হু’ শব্দ করে, কখনো দুহাত দুই দিকে প্রসারিত করার সঙ্গে সঙ্গে কোমর ভাঁজ করে নিচু হচ্ছেন সবাই। আবার কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছেন। এটি তাঁদের কণ্ঠের ব্যায়াম। চোখ পিটপিট করে চোখের ব্যায়াম করার সময় একজন সুরে সুরে বলে উঠলেন, ‘চোখের ব্যায়াম করলে চোখের অবস্থা ভালো থাকবে। সুচের গোড়ায় সুতা পরাতে পারবে..।’ ফুসফুস আর হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা বাড়াতে যে যতক্ষণ পারলেন নিশ্বাস ধরে রাখলেন। তারপর দম ছাড়লেন মুখে শব্দ করে।
শরীরচর্চার শেষ পর্যায়ে শপথ করালেন দলনেতা। শপথে বলা হলো, ‘সুস্থ থাকতে ধূমপান না করি। পরিমিত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করি। শারীরিক সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করি। নৈতিকতাবিরোধী কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি। নিত্যদিনের কাজে মানুষের মঙ্গল কামনা করি। দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখি।’ এরপর ১ বলে নিজের নাম বললেন। এভাবে গণনা ও নাম বলা শেষ হলে শরীরচর্চাও শেষ হলো। পরে পার্কের কোণে থাকা ছোট্ট চায়ের দোকানে কেউ কেউ চা পান করলেন। কেউ গল্পগুজব, হাসিঠাট্টা করে বাড়ি ফিরলেন।
নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন। শহরের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা তিনি। ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা। অবসর নিয়েছেন ২০১৬ সালে। ২০০০ সাল থেকে তিনি এই সংগঠন চালাচ্ছেন। দলনেতা হিসেবে শরীরচর্চা করাচ্ছেন বিনা পয়সায়। তিনি সংগঠনটির সভাপতি। জাহাঙ্গীর রতন একবার প্রশিক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন ভারতে। সেখানে শরীরচর্চাও করতে হয়েছিল। দেশে ফেরার পর তার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য একা একা শরীরচর্চা শুরু করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অন্যরা। অনেকে অসুস্থ অবস্থায় এসে সুস্থ হয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন বললেন, ‘শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক উপকার করে। ছোটখাটো যেসব শারীরিক সমস্যা, সেগুলো এমনিই চলে যায়, চিকিৎসকের দরকার হয় না। তাই আমি নিজে শরীরচর্চা করি এবং অন্যদের উৎসাহিত করি।’
শরীরচর্চার সময় সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তিনি সরকারি চাকুরে। নজরুল ইসলাম বললেন, ‘বয়স আপনার যতই হোক না কেন, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার বিকল্প নেই। উজ্জীবন পদ্মার পাড় তেমনই স্বাস্থ্যসচেতনমূলক একটি সংগঠন। যে কেউ এখানে শরীরচর্চার জন্য আসতে পারেন। আমি নিজে পাঁচ বছর ধরে আসি। এটা এখন আমার জীবনের অংশ।’
নেই অবসাদ ও অসুস্থতা
পরপর দুই ছেলের মৃত্যুতে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হাসান আলী। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁকে উজ্জীবনে আনেন জাহাঙ্গীর রতন। এখন হাসান আলী সব অবসাদ ভুলে গেছেন। হৃৎপিণ্ডে বাইপাস সার্জারি করাতে হয়েছে সিরাজুল ইসলাম (৬০) ও হারুন-অর-রশিদের (৫৮)। এখন নিয়মিত পদ্মাপাড়ের মুক্ত বাতাসে শরীরচর্চা করে তাঁরা ভালো আছেন।
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি একটি উপদেষ্টা কমিটিও আছে। সেই কমিটির সদস্য খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বেল্টু। তিনি বললেন, ‘রোজ ভোরে আমরা হাঁটাহাঁটির পর এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করি। এই রুটিন প্রায় ২৫ বছর ধরে চলছে। এখানে হাতের, হার্টের, চোখের, পায়েরসহ সব ধরনের ব্যায়াম করা হয়।’
আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. নুরুদ্দীন বললেন, ‘এটা বিজ্ঞানসম্মত। স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কোনো দুর্যোগ ছাড়া প্রতিদিনই আমাদের শরীরচর্চা হয়। পিএইডি থেকে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ম্যাজিস্ট্রেট, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ—সবাই এখানে আসেন। আমরা খুব আন্তরিকভাবে এটাকে ভালোবাসি। আমরা নিজ উদ্যোগেই মনের টানে চলে আসি। প্রায় এক ঘণ্টা অনুশীলনের পর চায়ের আড্ডা হয়। আমরা মন খুলে সবাই আলাপ করি। কার কী সমস্যা আছে বলি। মন খুলে হাসি। মনটা প্রফুল্ল হয়।’
ওষুধ ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন মামুন প্রথমে লজ্জা পেতেন। এখন বলছেন, ‘নিজে সুস্থ আর ভালো থাকার স্বার্থে এখানে আসি। এখানে শরীরচর্চার কারণে ছোটখাটো কোনো সমস্যা শরীরে হয় না। চিকিৎসকের কাছেও যেতে হয় না। আমি আগে শুধু এমনিই হাঁটতাম। পার্কে এসে প্রথমে লজ্জা পেতাম। একটু আড়ালে ব্যায়াম করে চলে যেতাম। পরে দেখলাম, সবাই একসঙ্গে শরীরচর্চা করছেন। বিষয়টা খুব ভালো লাগছে। তারপর আমিও যুক্ত হলাম।’
সামাজিক কর্মকাণ্ডে উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের একটি কার্যালয় আছে রাজশাহী শহরের মনিবাজারে। সেখানে মাসে একবার সভা হয়। কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সদস্যরা নিজেরাই টাকা তুলে প্রয়োজনে শীতবস্ত্র কিংবা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারকে অর্থসহায়তা করেন। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বই কিনে দেন। বেতন পরিশোধ করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। দুস্থদের দেন চিকিৎসাসহায়তা। পাশাপাশি নিজেদের বিনোদনের জন্য আয়োজন করেন বনভোজন। উজ্জীবনের সদস্যরা জানান, এসব কাজে তাঁরা মানসিক প্রশান্তি পান।

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা পার্কে। জানা গেল, রোজ ভোরে এখানে শরীরচর্চা করেন জ্যেষ্ঠ এই নাগরিকেরা।
এভাবে টানা ২৩ বছর রাজশাহীর একদল স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ শরীরচর্চা করে চলেছেন। একসঙ্গে চলতে চলতে তাঁরা একটি সংগঠনও দাঁড় করেছেন, নাম ‘উজ্জীবন পদ্মার পাড়, রাজশাহী’। সংগঠনে এখন সদস্য প্রায় ৬০ জন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রতিদিনই ভোরে এক হন শরীরচর্চা করতে। তাঁরা এখন শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত। যান না চিকিৎসকের কাছে; বরং শরীরচর্চার জন্য কয়েকজন চিকিৎসকই আসেন তাঁদের কাছে, পদ্মার পাড়ে!
বাধা ডিঙিয়ে উজ্জীবিত উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের স্লোগান হলো ‘নিয়মিত হাঁটুন, সুস্থ থাকুন’। সংগঠনের সদস্যরা আগে রাজশাহী রিভারভিউ স্কুলের মাঠে শরীরচর্চা করতেন। সেখানে হাসিঠাট্টা হতো, জোরে শব্দ হতো। অভিযোগ এল পাশেই থাকা জেলা প্রশাসকের বাংলো থেকে। ফলে জায়গা ছাড়তে হলো তাঁদের। গেলেন শিশু একাডেমির মাঠে। আপত্তি এল সেখানেও। এরপর শিমলা পার্ক। এখানে কোনো আপত্তি নেই। প্রায় আট বছর ধরে রোজ ভোরে সেখানেই চলছে শরীরচর্চা। এখানে যাঁরা আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই বার্ধক্যে পৌঁছেছেন। তবে উজ্জীবনের মাধ্যমে বার্ধক্য জয় করে জীবনকে একেবারে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছেন তাঁরা।
হেঁটে হেঁটে পার্কে
রোজ ভোরে সবাই বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে শিমলা পার্কে আসেন। কেউ কেউ মসজিদে ফজরের নামাজ আদায়ের পর বাড়ি না ফিরে হাঁটা দেন পার্কের উদ্দেশে। শিমলা পার্কে এসে সবাই গোল হয়ে দাঁড়ান। তারপর শরীর নিয়ে চলে নানা রকম কসরত। বুধবার ভোরে পার্কে গিয়ে দেখা গেল, একজন বাঁশি বাজিয়ে শরীরচর্চা শুরুর সংকেত দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সবাই বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর মুখে ‘হু-হা, হা-হু’ শব্দ করে, কখনো দুহাত দুই দিকে প্রসারিত করার সঙ্গে সঙ্গে কোমর ভাঁজ করে নিচু হচ্ছেন সবাই। আবার কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছেন। এটি তাঁদের কণ্ঠের ব্যায়াম। চোখ পিটপিট করে চোখের ব্যায়াম করার সময় একজন সুরে সুরে বলে উঠলেন, ‘চোখের ব্যায়াম করলে চোখের অবস্থা ভালো থাকবে। সুচের গোড়ায় সুতা পরাতে পারবে..।’ ফুসফুস আর হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা বাড়াতে যে যতক্ষণ পারলেন নিশ্বাস ধরে রাখলেন। তারপর দম ছাড়লেন মুখে শব্দ করে।
শরীরচর্চার শেষ পর্যায়ে শপথ করালেন দলনেতা। শপথে বলা হলো, ‘সুস্থ থাকতে ধূমপান না করি। পরিমিত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করি। শারীরিক সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করি। নৈতিকতাবিরোধী কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি। নিত্যদিনের কাজে মানুষের মঙ্গল কামনা করি। দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখি।’ এরপর ১ বলে নিজের নাম বললেন। এভাবে গণনা ও নাম বলা শেষ হলে শরীরচর্চাও শেষ হলো। পরে পার্কের কোণে থাকা ছোট্ট চায়ের দোকানে কেউ কেউ চা পান করলেন। কেউ গল্পগুজব, হাসিঠাট্টা করে বাড়ি ফিরলেন।
নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন। শহরের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা তিনি। ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা। অবসর নিয়েছেন ২০১৬ সালে। ২০০০ সাল থেকে তিনি এই সংগঠন চালাচ্ছেন। দলনেতা হিসেবে শরীরচর্চা করাচ্ছেন বিনা পয়সায়। তিনি সংগঠনটির সভাপতি। জাহাঙ্গীর রতন একবার প্রশিক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন ভারতে। সেখানে শরীরচর্চাও করতে হয়েছিল। দেশে ফেরার পর তার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য একা একা শরীরচর্চা শুরু করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অন্যরা। অনেকে অসুস্থ অবস্থায় এসে সুস্থ হয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন বললেন, ‘শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক উপকার করে। ছোটখাটো যেসব শারীরিক সমস্যা, সেগুলো এমনিই চলে যায়, চিকিৎসকের দরকার হয় না। তাই আমি নিজে শরীরচর্চা করি এবং অন্যদের উৎসাহিত করি।’
শরীরচর্চার সময় সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তিনি সরকারি চাকুরে। নজরুল ইসলাম বললেন, ‘বয়স আপনার যতই হোক না কেন, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার বিকল্প নেই। উজ্জীবন পদ্মার পাড় তেমনই স্বাস্থ্যসচেতনমূলক একটি সংগঠন। যে কেউ এখানে শরীরচর্চার জন্য আসতে পারেন। আমি নিজে পাঁচ বছর ধরে আসি। এটা এখন আমার জীবনের অংশ।’
নেই অবসাদ ও অসুস্থতা
পরপর দুই ছেলের মৃত্যুতে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হাসান আলী। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁকে উজ্জীবনে আনেন জাহাঙ্গীর রতন। এখন হাসান আলী সব অবসাদ ভুলে গেছেন। হৃৎপিণ্ডে বাইপাস সার্জারি করাতে হয়েছে সিরাজুল ইসলাম (৬০) ও হারুন-অর-রশিদের (৫৮)। এখন নিয়মিত পদ্মাপাড়ের মুক্ত বাতাসে শরীরচর্চা করে তাঁরা ভালো আছেন।
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি একটি উপদেষ্টা কমিটিও আছে। সেই কমিটির সদস্য খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বেল্টু। তিনি বললেন, ‘রোজ ভোরে আমরা হাঁটাহাঁটির পর এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করি। এই রুটিন প্রায় ২৫ বছর ধরে চলছে। এখানে হাতের, হার্টের, চোখের, পায়েরসহ সব ধরনের ব্যায়াম করা হয়।’
আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. নুরুদ্দীন বললেন, ‘এটা বিজ্ঞানসম্মত। স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কোনো দুর্যোগ ছাড়া প্রতিদিনই আমাদের শরীরচর্চা হয়। পিএইডি থেকে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ম্যাজিস্ট্রেট, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ—সবাই এখানে আসেন। আমরা খুব আন্তরিকভাবে এটাকে ভালোবাসি। আমরা নিজ উদ্যোগেই মনের টানে চলে আসি। প্রায় এক ঘণ্টা অনুশীলনের পর চায়ের আড্ডা হয়। আমরা মন খুলে সবাই আলাপ করি। কার কী সমস্যা আছে বলি। মন খুলে হাসি। মনটা প্রফুল্ল হয়।’
ওষুধ ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন মামুন প্রথমে লজ্জা পেতেন। এখন বলছেন, ‘নিজে সুস্থ আর ভালো থাকার স্বার্থে এখানে আসি। এখানে শরীরচর্চার কারণে ছোটখাটো কোনো সমস্যা শরীরে হয় না। চিকিৎসকের কাছেও যেতে হয় না। আমি আগে শুধু এমনিই হাঁটতাম। পার্কে এসে প্রথমে লজ্জা পেতাম। একটু আড়ালে ব্যায়াম করে চলে যেতাম। পরে দেখলাম, সবাই একসঙ্গে শরীরচর্চা করছেন। বিষয়টা খুব ভালো লাগছে। তারপর আমিও যুক্ত হলাম।’
সামাজিক কর্মকাণ্ডে উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের একটি কার্যালয় আছে রাজশাহী শহরের মনিবাজারে। সেখানে মাসে একবার সভা হয়। কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সদস্যরা নিজেরাই টাকা তুলে প্রয়োজনে শীতবস্ত্র কিংবা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারকে অর্থসহায়তা করেন। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বই কিনে দেন। বেতন পরিশোধ করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। দুস্থদের দেন চিকিৎসাসহায়তা। পাশাপাশি নিজেদের বিনোদনের জন্য আয়োজন করেন বনভোজন। উজ্জীবনের সদস্যরা জানান, এসব কাজে তাঁরা মানসিক প্রশান্তি পান।
রিমন রহমান, রাজশাহী

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা পার্কে। জানা গেল, রোজ ভোরে এখানে শরীরচর্চা করেন জ্যেষ্ঠ এই নাগরিকেরা।
এভাবে টানা ২৩ বছর রাজশাহীর একদল স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ শরীরচর্চা করে চলেছেন। একসঙ্গে চলতে চলতে তাঁরা একটি সংগঠনও দাঁড় করেছেন, নাম ‘উজ্জীবন পদ্মার পাড়, রাজশাহী’। সংগঠনে এখন সদস্য প্রায় ৬০ জন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রতিদিনই ভোরে এক হন শরীরচর্চা করতে। তাঁরা এখন শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত। যান না চিকিৎসকের কাছে; বরং শরীরচর্চার জন্য কয়েকজন চিকিৎসকই আসেন তাঁদের কাছে, পদ্মার পাড়ে!
বাধা ডিঙিয়ে উজ্জীবিত উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের স্লোগান হলো ‘নিয়মিত হাঁটুন, সুস্থ থাকুন’। সংগঠনের সদস্যরা আগে রাজশাহী রিভারভিউ স্কুলের মাঠে শরীরচর্চা করতেন। সেখানে হাসিঠাট্টা হতো, জোরে শব্দ হতো। অভিযোগ এল পাশেই থাকা জেলা প্রশাসকের বাংলো থেকে। ফলে জায়গা ছাড়তে হলো তাঁদের। গেলেন শিশু একাডেমির মাঠে। আপত্তি এল সেখানেও। এরপর শিমলা পার্ক। এখানে কোনো আপত্তি নেই। প্রায় আট বছর ধরে রোজ ভোরে সেখানেই চলছে শরীরচর্চা। এখানে যাঁরা আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই বার্ধক্যে পৌঁছেছেন। তবে উজ্জীবনের মাধ্যমে বার্ধক্য জয় করে জীবনকে একেবারে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছেন তাঁরা।
হেঁটে হেঁটে পার্কে
রোজ ভোরে সবাই বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে শিমলা পার্কে আসেন। কেউ কেউ মসজিদে ফজরের নামাজ আদায়ের পর বাড়ি না ফিরে হাঁটা দেন পার্কের উদ্দেশে। শিমলা পার্কে এসে সবাই গোল হয়ে দাঁড়ান। তারপর শরীর নিয়ে চলে নানা রকম কসরত। বুধবার ভোরে পার্কে গিয়ে দেখা গেল, একজন বাঁশি বাজিয়ে শরীরচর্চা শুরুর সংকেত দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সবাই বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর মুখে ‘হু-হা, হা-হু’ শব্দ করে, কখনো দুহাত দুই দিকে প্রসারিত করার সঙ্গে সঙ্গে কোমর ভাঁজ করে নিচু হচ্ছেন সবাই। আবার কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছেন। এটি তাঁদের কণ্ঠের ব্যায়াম। চোখ পিটপিট করে চোখের ব্যায়াম করার সময় একজন সুরে সুরে বলে উঠলেন, ‘চোখের ব্যায়াম করলে চোখের অবস্থা ভালো থাকবে। সুচের গোড়ায় সুতা পরাতে পারবে..।’ ফুসফুস আর হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা বাড়াতে যে যতক্ষণ পারলেন নিশ্বাস ধরে রাখলেন। তারপর দম ছাড়লেন মুখে শব্দ করে।
শরীরচর্চার শেষ পর্যায়ে শপথ করালেন দলনেতা। শপথে বলা হলো, ‘সুস্থ থাকতে ধূমপান না করি। পরিমিত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করি। শারীরিক সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করি। নৈতিকতাবিরোধী কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি। নিত্যদিনের কাজে মানুষের মঙ্গল কামনা করি। দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখি।’ এরপর ১ বলে নিজের নাম বললেন। এভাবে গণনা ও নাম বলা শেষ হলে শরীরচর্চাও শেষ হলো। পরে পার্কের কোণে থাকা ছোট্ট চায়ের দোকানে কেউ কেউ চা পান করলেন। কেউ গল্পগুজব, হাসিঠাট্টা করে বাড়ি ফিরলেন।
নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন। শহরের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা তিনি। ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা। অবসর নিয়েছেন ২০১৬ সালে। ২০০০ সাল থেকে তিনি এই সংগঠন চালাচ্ছেন। দলনেতা হিসেবে শরীরচর্চা করাচ্ছেন বিনা পয়সায়। তিনি সংগঠনটির সভাপতি। জাহাঙ্গীর রতন একবার প্রশিক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন ভারতে। সেখানে শরীরচর্চাও করতে হয়েছিল। দেশে ফেরার পর তার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য একা একা শরীরচর্চা শুরু করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অন্যরা। অনেকে অসুস্থ অবস্থায় এসে সুস্থ হয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন বললেন, ‘শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক উপকার করে। ছোটখাটো যেসব শারীরিক সমস্যা, সেগুলো এমনিই চলে যায়, চিকিৎসকের দরকার হয় না। তাই আমি নিজে শরীরচর্চা করি এবং অন্যদের উৎসাহিত করি।’
শরীরচর্চার সময় সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তিনি সরকারি চাকুরে। নজরুল ইসলাম বললেন, ‘বয়স আপনার যতই হোক না কেন, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার বিকল্প নেই। উজ্জীবন পদ্মার পাড় তেমনই স্বাস্থ্যসচেতনমূলক একটি সংগঠন। যে কেউ এখানে শরীরচর্চার জন্য আসতে পারেন। আমি নিজে পাঁচ বছর ধরে আসি। এটা এখন আমার জীবনের অংশ।’
নেই অবসাদ ও অসুস্থতা
পরপর দুই ছেলের মৃত্যুতে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হাসান আলী। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁকে উজ্জীবনে আনেন জাহাঙ্গীর রতন। এখন হাসান আলী সব অবসাদ ভুলে গেছেন। হৃৎপিণ্ডে বাইপাস সার্জারি করাতে হয়েছে সিরাজুল ইসলাম (৬০) ও হারুন-অর-রশিদের (৫৮)। এখন নিয়মিত পদ্মাপাড়ের মুক্ত বাতাসে শরীরচর্চা করে তাঁরা ভালো আছেন।
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি একটি উপদেষ্টা কমিটিও আছে। সেই কমিটির সদস্য খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বেল্টু। তিনি বললেন, ‘রোজ ভোরে আমরা হাঁটাহাঁটির পর এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করি। এই রুটিন প্রায় ২৫ বছর ধরে চলছে। এখানে হাতের, হার্টের, চোখের, পায়েরসহ সব ধরনের ব্যায়াম করা হয়।’
আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. নুরুদ্দীন বললেন, ‘এটা বিজ্ঞানসম্মত। স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কোনো দুর্যোগ ছাড়া প্রতিদিনই আমাদের শরীরচর্চা হয়। পিএইডি থেকে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ম্যাজিস্ট্রেট, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ—সবাই এখানে আসেন। আমরা খুব আন্তরিকভাবে এটাকে ভালোবাসি। আমরা নিজ উদ্যোগেই মনের টানে চলে আসি। প্রায় এক ঘণ্টা অনুশীলনের পর চায়ের আড্ডা হয়। আমরা মন খুলে সবাই আলাপ করি। কার কী সমস্যা আছে বলি। মন খুলে হাসি। মনটা প্রফুল্ল হয়।’
ওষুধ ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন মামুন প্রথমে লজ্জা পেতেন। এখন বলছেন, ‘নিজে সুস্থ আর ভালো থাকার স্বার্থে এখানে আসি। এখানে শরীরচর্চার কারণে ছোটখাটো কোনো সমস্যা শরীরে হয় না। চিকিৎসকের কাছেও যেতে হয় না। আমি আগে শুধু এমনিই হাঁটতাম। পার্কে এসে প্রথমে লজ্জা পেতাম। একটু আড়ালে ব্যায়াম করে চলে যেতাম। পরে দেখলাম, সবাই একসঙ্গে শরীরচর্চা করছেন। বিষয়টা খুব ভালো লাগছে। তারপর আমিও যুক্ত হলাম।’
সামাজিক কর্মকাণ্ডে উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের একটি কার্যালয় আছে রাজশাহী শহরের মনিবাজারে। সেখানে মাসে একবার সভা হয়। কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সদস্যরা নিজেরাই টাকা তুলে প্রয়োজনে শীতবস্ত্র কিংবা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারকে অর্থসহায়তা করেন। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বই কিনে দেন। বেতন পরিশোধ করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। দুস্থদের দেন চিকিৎসাসহায়তা। পাশাপাশি নিজেদের বিনোদনের জন্য আয়োজন করেন বনভোজন। উজ্জীবনের সদস্যরা জানান, এসব কাজে তাঁরা মানসিক প্রশান্তি পান।

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা পার্কে। জানা গেল, রোজ ভোরে এখানে শরীরচর্চা করেন জ্যেষ্ঠ এই নাগরিকেরা।
এভাবে টানা ২৩ বছর রাজশাহীর একদল স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ শরীরচর্চা করে চলেছেন। একসঙ্গে চলতে চলতে তাঁরা একটি সংগঠনও দাঁড় করেছেন, নাম ‘উজ্জীবন পদ্মার পাড়, রাজশাহী’। সংগঠনে এখন সদস্য প্রায় ৬০ জন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক মানুষ প্রতিদিনই ভোরে এক হন শরীরচর্চা করতে। তাঁরা এখন শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত। যান না চিকিৎসকের কাছে; বরং শরীরচর্চার জন্য কয়েকজন চিকিৎসকই আসেন তাঁদের কাছে, পদ্মার পাড়ে!
বাধা ডিঙিয়ে উজ্জীবিত উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের স্লোগান হলো ‘নিয়মিত হাঁটুন, সুস্থ থাকুন’। সংগঠনের সদস্যরা আগে রাজশাহী রিভারভিউ স্কুলের মাঠে শরীরচর্চা করতেন। সেখানে হাসিঠাট্টা হতো, জোরে শব্দ হতো। অভিযোগ এল পাশেই থাকা জেলা প্রশাসকের বাংলো থেকে। ফলে জায়গা ছাড়তে হলো তাঁদের। গেলেন শিশু একাডেমির মাঠে। আপত্তি এল সেখানেও। এরপর শিমলা পার্ক। এখানে কোনো আপত্তি নেই। প্রায় আট বছর ধরে রোজ ভোরে সেখানেই চলছে শরীরচর্চা। এখানে যাঁরা আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই বার্ধক্যে পৌঁছেছেন। তবে উজ্জীবনের মাধ্যমে বার্ধক্য জয় করে জীবনকে একেবারে নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছেন তাঁরা।
হেঁটে হেঁটে পার্কে
রোজ ভোরে সবাই বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে শিমলা পার্কে আসেন। কেউ কেউ মসজিদে ফজরের নামাজ আদায়ের পর বাড়ি না ফিরে হাঁটা দেন পার্কের উদ্দেশে। শিমলা পার্কে এসে সবাই গোল হয়ে দাঁড়ান। তারপর শরীর নিয়ে চলে নানা রকম কসরত। বুধবার ভোরে পার্কে গিয়ে দেখা গেল, একজন বাঁশি বাজিয়ে শরীরচর্চা শুরুর সংকেত দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে সবাই বৃত্তাকারে দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর মুখে ‘হু-হা, হা-হু’ শব্দ করে, কখনো দুহাত দুই দিকে প্রসারিত করার সঙ্গে সঙ্গে কোমর ভাঁজ করে নিচু হচ্ছেন সবাই। আবার কখনো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছেন। এটি তাঁদের কণ্ঠের ব্যায়াম। চোখ পিটপিট করে চোখের ব্যায়াম করার সময় একজন সুরে সুরে বলে উঠলেন, ‘চোখের ব্যায়াম করলে চোখের অবস্থা ভালো থাকবে। সুচের গোড়ায় সুতা পরাতে পারবে..।’ ফুসফুস আর হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা বাড়াতে যে যতক্ষণ পারলেন নিশ্বাস ধরে রাখলেন। তারপর দম ছাড়লেন মুখে শব্দ করে।
শরীরচর্চার শেষ পর্যায়ে শপথ করালেন দলনেতা। শপথে বলা হলো, ‘সুস্থ থাকতে ধূমপান না করি। পরিমিত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করি। শারীরিক সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ সেবন করি। নৈতিকতাবিরোধী কাজ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখি। নিত্যদিনের কাজে মানুষের মঙ্গল কামনা করি। দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখি।’ এরপর ১ বলে নিজের নাম বললেন। এভাবে গণনা ও নাম বলা শেষ হলে শরীরচর্চাও শেষ হলো। পরে পার্কের কোণে থাকা ছোট্ট চায়ের দোকানে কেউ কেউ চা পান করলেন। কেউ গল্পগুজব, হাসিঠাট্টা করে বাড়ি ফিরলেন।
নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন। শহরের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা তিনি। ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা। অবসর নিয়েছেন ২০১৬ সালে। ২০০০ সাল থেকে তিনি এই সংগঠন চালাচ্ছেন। দলনেতা হিসেবে শরীরচর্চা করাচ্ছেন বিনা পয়সায়। তিনি সংগঠনটির সভাপতি। জাহাঙ্গীর রতন একবার প্রশিক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন ভারতে। সেখানে শরীরচর্চাও করতে হয়েছিল। দেশে ফেরার পর তার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য একা একা শরীরচর্চা শুরু করেছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অন্যরা। অনেকে অসুস্থ অবস্থায় এসে সুস্থ হয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম জাহাঙ্গীর রতন বললেন, ‘শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক উপকার করে। ছোটখাটো যেসব শারীরিক সমস্যা, সেগুলো এমনিই চলে যায়, চিকিৎসকের দরকার হয় না। তাই আমি নিজে শরীরচর্চা করি এবং অন্যদের উৎসাহিত করি।’
শরীরচর্চার সময় সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তিনি সরকারি চাকুরে। নজরুল ইসলাম বললেন, ‘বয়স আপনার যতই হোক না কেন, খেলাধুলা ও শরীরচর্চার বিকল্প নেই। উজ্জীবন পদ্মার পাড় তেমনই স্বাস্থ্যসচেতনমূলক একটি সংগঠন। যে কেউ এখানে শরীরচর্চার জন্য আসতে পারেন। আমি নিজে পাঁচ বছর ধরে আসি। এটা এখন আমার জীবনের অংশ।’
নেই অবসাদ ও অসুস্থতা
পরপর দুই ছেলের মৃত্যুতে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হাসান আলী। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁকে উজ্জীবনে আনেন জাহাঙ্গীর রতন। এখন হাসান আলী সব অবসাদ ভুলে গেছেন। হৃৎপিণ্ডে বাইপাস সার্জারি করাতে হয়েছে সিরাজুল ইসলাম (৬০) ও হারুন-অর-রশিদের (৫৮)। এখন নিয়মিত পদ্মাপাড়ের মুক্ত বাতাসে শরীরচর্চা করে তাঁরা ভালো আছেন।
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি একটি উপদেষ্টা কমিটিও আছে। সেই কমিটির সদস্য খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বেল্টু। তিনি বললেন, ‘রোজ ভোরে আমরা হাঁটাহাঁটির পর এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করি। এই রুটিন প্রায় ২৫ বছর ধরে চলছে। এখানে হাতের, হার্টের, চোখের, পায়েরসহ সব ধরনের ব্যায়াম করা হয়।’
আরডিএ মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. নুরুদ্দীন বললেন, ‘এটা বিজ্ঞানসম্মত। স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কোনো দুর্যোগ ছাড়া প্রতিদিনই আমাদের শরীরচর্চা হয়। পিএইডি থেকে চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ম্যাজিস্ট্রেট, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ—সবাই এখানে আসেন। আমরা খুব আন্তরিকভাবে এটাকে ভালোবাসি। আমরা নিজ উদ্যোগেই মনের টানে চলে আসি। প্রায় এক ঘণ্টা অনুশীলনের পর চায়ের আড্ডা হয়। আমরা মন খুলে সবাই আলাপ করি। কার কী সমস্যা আছে বলি। মন খুলে হাসি। মনটা প্রফুল্ল হয়।’
ওষুধ ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন মামুন প্রথমে লজ্জা পেতেন। এখন বলছেন, ‘নিজে সুস্থ আর ভালো থাকার স্বার্থে এখানে আসি। এখানে শরীরচর্চার কারণে ছোটখাটো কোনো সমস্যা শরীরে হয় না। চিকিৎসকের কাছেও যেতে হয় না। আমি আগে শুধু এমনিই হাঁটতাম। পার্কে এসে প্রথমে লজ্জা পেতাম। একটু আড়ালে ব্যায়াম করে চলে যেতাম। পরে দেখলাম, সবাই একসঙ্গে শরীরচর্চা করছেন। বিষয়টা খুব ভালো লাগছে। তারপর আমিও যুক্ত হলাম।’
সামাজিক কর্মকাণ্ডে উজ্জীবন
উজ্জীবন পদ্মার পাড়ের একটি কার্যালয় আছে রাজশাহী শহরের মনিবাজারে। সেখানে মাসে একবার সভা হয়। কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সদস্যরা নিজেরাই টাকা তুলে প্রয়োজনে শীতবস্ত্র কিংবা খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন। কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারকে অর্থসহায়তা করেন। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বই কিনে দেন। বেতন পরিশোধ করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। দুস্থদের দেন চিকিৎসাসহায়তা। পাশাপাশি নিজেদের বিনোদনের জন্য আয়োজন করেন বনভোজন। উজ্জীবনের সদস্যরা জানান, এসব কাজে তাঁরা মানসিক প্রশান্তি পান।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৬৯ জন। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ করা তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
১৭ ঘণ্টা আগে
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৪৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৬২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আজ রোববার (২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৪ দিন আগে
রাশিয়ায় টিকটকে চলতি বছরের শুরুতে ভাইরাল হয় এক ধরনের ওজন কমানোর ওষুধ। ‘মলিকিউল’ নামে একটি পিল। তরুণদের ফিডে ভেসে উঠতে থাকে নানা ক্যাপশন—‘মলিকিউল খাও, খাবার ভুলে যাও, ওজন কমাও’, কিংবা ‘বড়সড় পোশাক পরে ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসতে চাও?’
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৬৯ জন।
আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ করা তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১ হাজার ৬৯ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ৪০৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১৯, বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২৮, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৯, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৮, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৭০, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৪, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩০২ জন মারা গেছে। একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৪ হাজার ৯৯২ জন।
২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১০ জনের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও পাঁচজন নারী। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ৫০, ৭০, ৪০, ৪৮, ৫০, ৭৫, ৪৫, ৫০, ৮০ ও ৬০ বছর।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় ৯৫৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৭১ হাজার ৪৮৭ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৬৯ জন।
আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ করা তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১ হাজার ৬৯ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ৪০৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১৯, বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২৮, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৯, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৮, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৭০, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৪, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩০২ জন মারা গেছে। একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৪ হাজার ৯৯২ জন।
২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১০ জনের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও পাঁচজন নারী। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ৫০, ৭০, ৪০, ৪৮, ৫০, ৭৫, ৪৫, ৫০, ৮০ ও ৬০ বছর।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় ৯৫৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৭১ হাজার ৪৮৭ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা
০২ মার্চ ২০২৪
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৪৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৬২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আজ রোববার (২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৪ দিন আগে
রাশিয়ায় টিকটকে চলতি বছরের শুরুতে ভাইরাল হয় এক ধরনের ওজন কমানোর ওষুধ। ‘মলিকিউল’ নামে একটি পিল। তরুণদের ফিডে ভেসে উঠতে থাকে নানা ক্যাপশন—‘মলিকিউল খাও, খাবার ভুলে যাও, ওজন কমাও’, কিংবা ‘বড়সড় পোশাক পরে ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসতে চাও?’
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৪৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগের ২৪ ঘণ্টায়ও ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১ হাজার ১৪৭ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ৪২৯, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৬৬, বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩২, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৮, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৯, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৭০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) নয়জন ভর্তি হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৮৮ জন মারা গেছে। একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭২ হাজার ৮২২ জন।
২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও তিনজন নারী। তাদের মধ্যে ১৪ বছরের কিশোরী আছে। অন্যদের বয়স যথাক্রমে ৩৫, ২৫, ৩৫, ৫৮ বছর।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৪২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৬৯ হাজার ৪৫২ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৪৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগের ২৪ ঘণ্টায়ও ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১ হাজার ১৪৭ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ৪২৯, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৬৬, বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩২, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৮, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৯, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৭০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) নয়জন ভর্তি হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৮৮ জন মারা গেছে। একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭২ হাজার ৮২২ জন।
২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও তিনজন নারী। তাদের মধ্যে ১৪ বছরের কিশোরী আছে। অন্যদের বয়স যথাক্রমে ৩৫, ২৫, ৩৫, ৫৮ বছর।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৪২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৬৯ হাজার ৪৫২ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা
০২ মার্চ ২০২৪
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৬৯ জন। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ করা তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
১৭ ঘণ্টা আগে
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৬২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আজ রোববার (২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৪ দিন আগে
রাশিয়ায় টিকটকে চলতি বছরের শুরুতে ভাইরাল হয় এক ধরনের ওজন কমানোর ওষুধ। ‘মলিকিউল’ নামে একটি পিল। তরুণদের ফিডে ভেসে উঠতে থাকে নানা ক্যাপশন—‘মলিকিউল খাও, খাবার ভুলে যাও, ওজন কমাও’, কিংবা ‘বড়সড় পোশাক পরে ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসতে চাও?’
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৬২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
আজ রোববার (২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১ হাজার ১৬২ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ৪৩৬, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৭৬, বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৬৩, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৮, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৫৪, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৭, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৮, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩২ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) আটজন ভর্তি হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৮৩ জন মারা গেছে। একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭১ হাজার ৬৭৫ জন।
২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে ১৩ বছরের এক কিশোর আছে। সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। অন্যদের বয়স যথাক্রমে ৫২, ৪২, ২৮ ও ৫০। তাঁদের মধ্যে দুজন নারী আর দুজন পুরুষ রয়েছেন। এই পাঁচজনের মধ্যে ডিএনসিসিতে একজন, ডিএসসিসিতে তিনজন ও রাজশাহীর হাসপাতালে আরও একজন চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯৫১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৬৮ হাজার ৪১০ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৬২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
আজ রোববার (২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১ হাজার ১৬২ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ৪৩৬, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৭৬, বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৬৩, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৮, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৫৪, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৭, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৮, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩২ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) আটজন ভর্তি হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৮৩ জন মারা গেছে। একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭১ হাজার ৬৭৫ জন।
২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে ১৩ বছরের এক কিশোর আছে। সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। অন্যদের বয়স যথাক্রমে ৫২, ৪২, ২৮ ও ৫০। তাঁদের মধ্যে দুজন নারী আর দুজন পুরুষ রয়েছেন। এই পাঁচজনের মধ্যে ডিএনসিসিতে একজন, ডিএসসিসিতে তিনজন ও রাজশাহীর হাসপাতালে আরও একজন চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯৫১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৬৮ হাজার ৪১০ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা
০২ মার্চ ২০২৪
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৬৯ জন। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ করা তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
১৭ ঘণ্টা আগে
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৪৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
রাশিয়ায় টিকটকে চলতি বছরের শুরুতে ভাইরাল হয় এক ধরনের ওজন কমানোর ওষুধ। ‘মলিকিউল’ নামে একটি পিল। তরুণদের ফিডে ভেসে উঠতে থাকে নানা ক্যাপশন—‘মলিকিউল খাও, খাবার ভুলে যাও, ওজন কমাও’, কিংবা ‘বড়সড় পোশাক পরে ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসতে চাও?’
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ায় টিকটকে চলতি বছরের শুরুতে ভাইরাল হয় এক ধরনের ওজন কমানোর ওষুধ। ‘মলিকিউল’ নামে একটি পিল। তরুণদের ফিডে ভেসে উঠতে থাকে নানা ক্যাপশন—‘মলিকিউল খাও, খাবার ভুলে যাও, ওজন কমাও’, কিংবা ‘বড়সড় পোশাক পরে ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসতে চাও?’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, ফ্রিজ ভর্তি নীল বাক্স। বাক্সের গায়ে ঝলমলে হোলোগ্রাম, তাতে লেখা ‘মলিকিউল প্লাস।’ বিভিন্ন অনলাইন স্টোরে অর্ডারের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। কিশোর-কিশোরীরা নিজেদের ‘ওজন কমানোর যাত্রা’ শেয়ার করছে সামাজিক মাধ্যমে।
কিন্তু এর পেছনে আছে ভয়ানক এক ফাঁদ। ২২ বছর বয়সী মারিয়া অনলাইনের এক জনপ্রিয় দোকান থেকে এই পিল কিনেছিলেন। দিনে দুইটা করে খেতেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে তার মুখ শুকিয়ে যায়, খাবারের প্রতি সম্পূর্ণ অনীহা তৈরি হয়। তিনি বলেন, ‘খাওয়ার তো ইচ্ছে হতোই না, পান করতেও চাইতাম না। ভেতরে-ভেতরে অস্থির লাগত, ঠোঁট কামড়াতাম, গাল চিবাতাম।’
এরপর মারিয়া প্রবল উদ্বেগে ভুগতে থাকেন। তাঁর মনে নেতিবাচক চিন্তা ভর করে। তিনি বলেন, ‘এই পিলগুলো আমার মানসিক অবস্থার ওপর ভয়ানক প্রভাব ফেলেছিল।’ সেন্ট পিটার্সবার্গে বসবাসকারী মারিয়া জানান, এমন ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য তিনি প্রস্তুত ছিলেন না।

অন্য টিকটক ব্যবহারকারীরাও জানান, পিল খাওয়ার পর তাদের চোখের মণি বড় হয়ে যায়, হাত কাঁপে, ঘুম আসে না। কমপক্ষে তিনজন স্কুলশিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এপ্রিলে সাইবেরিয়ার চিতা শহরের এক স্কুলছাত্রীকে ‘মলিকিউল’-এর অতিরিক্ত সেবনের পর হাসপাতালে নেওয়া হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সে দ্রুত ওজন কমিয়ে গ্রীষ্মের আগে ছিপছিপে হতে চেয়েছিল।
আরেক স্কুলছাত্রীর মা জানান, তাঁর মেয়েকে আইসিইউতে নিতে হয়েছিল, কারণ সে একসঙ্গে অনেকগুলো পিল খেয়েছিল। মে মাসে সেন্ট পিটার্সবার্গের ১৩ বছর বয়সী এক ছেলেকে হাসপাতালে নিতে হয়, কারণ সে হ্যালুসিনেশন ও আতঙ্কে ভুগছিল। স্কুলে ওজন নিয়ে উপহাস করার হতো তাকে। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সে এক বন্ধুর মাধ্যমে এই পিল কিনেছিল।
মলিকিউল পিলের মোড়কে সাধারণত লেখা থাকে ‘প্রাকৃতিক উপাদান’, যেমন—ড্যান্ডেলিয়ন রুট ও মৌরি বীজের নির্যাস দিয়ে তৈরি। কিন্তু এ বছরের শুরুতে রুশ দৈনিক ইজভেস্তিয়ার সাংবাদিকেরা অনলাইনে কেনা পিল পরীক্ষার জন্য জমা দেন। তাতে পাওয়া যায় ‘সিবিউট্রামিন’ নামের একটি পদার্থ।
এই সিবিউট্রামিন প্রথমে ১৯৮০-এর দশকে অবসাদনাশক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, পরে ক্ষুধা দমনকারী হিসেবে প্রচলিত হয়। কিন্তু গবেষণায় দেখা যায়, এটি হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়, অথচ ওজন কমায় সামান্যই। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এটি নিষিদ্ধ করা হয়। যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীনসহ অনেক দেশেই এখন অবৈধ।

রাশিয়ায় এটি এখনো ওজন কমানোর ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়, তবে কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এবং চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে। প্রেসক্রিপশন ছাড়া সিবিউট্রামিন কেনাবেচা অপরাধ। কিন্তু তাতে এই ড্রাগের বিক্রি খুব একটা থামছে না। ব্যক্তিগত বিক্রেতা ও ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে এটি বিক্রি করছে—অনেক সময় বৈধ ওষুধের চেয়েও বেশি মাত্রায় এবং কোনো প্রেসক্রিপশন ছাড়াই।
এই অবৈধ পিলের দাম প্রায় ৮ থেকে ৯ ডলার, যা ২০ দিনের জন্য যথেষ্ট। অথচ রাশিয়ার বাজারে পরিচিত ওজন কমানোর ইনজেকশন যেমন ‘Ozempic’-এর দাম প্রতি মাসে ৪০ থেকে ১৬০ পাউন্ড (৫০ থেকে ২১০ ডলার)। সেন্ট পিটার্সবার্গের অন্তঃস্রাববিশেষজ্ঞ জেনিয়া সোলোভিয়েভা বলেন, ‘নিজে নিজে এই ওষুধ খাওয়া ভয়ানক বিপজ্জনক’, কারণ এসব তথাকথিত ‘ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট’-এ কত পরিমাণ সক্রিয় উপাদান আছে তা কেউ জানে না।
‘মলিকিউল’ বিক্রির দায়ে রাশিয়ায় নিয়মিত লোকজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকার অবৈধ বিক্রি বন্ধে হিমশিম খাচ্ছে। এপ্রিলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সেফ ইন্টারনেট লিগ বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানায়। এরপর কয়েকটি বড় অনলাইন মার্কেটপ্লেস মলিকিউল তাদের কার্ট থেকে সরিয়ে দেয়। কিন্তু অচিরেই এটি ফিরে আসে নতুন নামে—‘অ্যাটম।’ প্যাকেজিং প্রায় হুবহু আগের মতো।
সম্প্রতি রাশিয়ায় একটি আইন পাস হয়েছে, যাতে আদালতের আদেশ ছাড়াই ‘অবৈধ ফুড সাপ্লিমেন্ট বা খাদ্য পরিপূরক বিক্রি করা ওয়েবসাইট’ বন্ধ করা যায়। কিন্তু বিক্রেতারা এখন এসব পণ্যকে ‘স্পোর্টস নিউট্রিশন’ হিসেবে দেখিয়ে বিক্রি করছে।
টিকটকে এখনো এমন বিক্রেতা, যারা ‘মলিকিউল’ বিক্রি করছে। তবে নাম ভিন্ন—কখনো তা ‘মিউসলি’, ‘বিস্কুট’ বা ‘লাইটবাল্ব।’ কিছু বিক্রেতা তো আবার গোপনীয়তার ধারই ধারছেন না। কয়েক সপ্তাহ আগে বিবিসি এক জনপ্রিয় রুশ অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ‘মলিকিউল’-এর তালিকা খুঁজে পায়। জানতে চাইলে সংস্থাটি জানায়, তারা দ্রুত সিবিউট্রামিনযুক্ত সব পণ্য সরিয়ে ফেলেছে। তবে তারা স্বীকার করেছে, যেসব তালিকায় স্পষ্টভাবে ‘সিবিউট্রামিন’ লেখা নেই, সেগুলো শনাক্ত করা কঠিন।
যদি কেউ কোনোভাবে ‘মলিকিউল’ কিনতে সক্ষম হয়, তবুও বোঝা মুশকিল আসলে কী পাওয়া যাচ্ছে—আর এই পিল কোথায় তৈরি হচ্ছে, তা-ও অনিশ্চিত। বিবিসি কিছু বিক্রেতার কাছে এমন সনদপত্র পেয়েছে, যাতে লেখা আছে চীনের গুয়াংজু ও হেনান প্রদেশের কারখানায় উৎপাদিত। আবার কেউ কেউ দাবি করে, পণ্যটি জার্মানি থেকে আনা।
কিছু প্যাকেটে লেখা থাকে, এটি জার্মানির রেমাগেন শহরে তৈরি। কিন্তু বিবিসি খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, ওই ঠিকানায় এমন কোনো কোম্পানি নেই। আর কাজাখস্তানের কয়েকজন বিক্রেতা যারা রাশিয়ায় ‘মলিকিউল’ পাঠায়, তারা বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা পণ্যটি বন্ধুদের কাছ থেকে বা রাজধানী আস্তানার কিছু গুদাম থেকে সংগ্রহ করে থাকে, কিন্তু মূল সরবরাহকারীর নাম জানে না।
এদিকে, অনলাইনে ইটিং ডিসঅর্ডার বা খাওয়ার ব্যাধি সংক্রান্ত অনেক কমিউনিটি এখন ‘মলিকিউল’ নামের ওষুধটি প্রচারের জায়গা হয়ে উঠেছে। ব্যবহারকারীরা হ্যাশট্যাগ আর নানা গোপন শব্দ ব্যবহার করে প্ল্যাটফর্মগুলোর নজরদারি এড়িয়ে যাচ্ছে। সোলোভিয়েভা বলেন, যেসব তরুণ-তরুণী আগে থেকেই ইটিং ডিসঅর্ডারে ভুগছে, তাদের জন্য মলিকিউল অত্যন্ত ক্ষতিকর। যারা পুনরায় অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিতে আছে, তাদের হাতে সহজলভ্য এই ক্ষুধা দমনকারী ওষুধ ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে।

রুশ সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার আন্না এনিনা নিজেও অতীতে অননুমোদিত ওজন কমানোর ওষুধ ব্যবহার করেছেন। তবে তিনি প্রকাশ্যে তাঁর অনুসারীদের সতর্ক করে বলেন, ‘আমি নিজে ইটিং ডিসঅর্ডারে ভুগেছি…এর পরিণতি ভয়াবহ হবে। তোমরা এর জন্য দশগুণ অনুতপ্ত হবে।’
মারিয়া সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন। অতিরিক্ত মলিকিউল খাওয়ার পর তিনি মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হন এবং হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। এখন তিনি বিভিন্ন ওজন কমানোর ফোরামে তরুণী ও মেয়েদের এই বড়ি না খেতে পরামর্শ দেন। এমনকি এক কিশোরীর বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরও সতর্ক করেছেন।
তবু মলিকিউল অনলাইনে এখনো জনপ্রিয়। আর মারিয়ার টিকটক ফিডে যখনই নতুন কোনো ভিডিও ভেসে ওঠে, তখন সেটি তাঁকে মনে করিয়ে দেয়—সেই পিলগুলোর কথা, যেগুলো তাঁকে অসুস্থ করে দিয়েছিল।

রাশিয়ায় টিকটকে চলতি বছরের শুরুতে ভাইরাল হয় এক ধরনের ওজন কমানোর ওষুধ। ‘মলিকিউল’ নামে একটি পিল। তরুণদের ফিডে ভেসে উঠতে থাকে নানা ক্যাপশন—‘মলিকিউল খাও, খাবার ভুলে যাও, ওজন কমাও’, কিংবা ‘বড়সড় পোশাক পরে ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসতে চাও?’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, ফ্রিজ ভর্তি নীল বাক্স। বাক্সের গায়ে ঝলমলে হোলোগ্রাম, তাতে লেখা ‘মলিকিউল প্লাস।’ বিভিন্ন অনলাইন স্টোরে অর্ডারের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। কিশোর-কিশোরীরা নিজেদের ‘ওজন কমানোর যাত্রা’ শেয়ার করছে সামাজিক মাধ্যমে।
কিন্তু এর পেছনে আছে ভয়ানক এক ফাঁদ। ২২ বছর বয়সী মারিয়া অনলাইনের এক জনপ্রিয় দোকান থেকে এই পিল কিনেছিলেন। দিনে দুইটা করে খেতেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে তার মুখ শুকিয়ে যায়, খাবারের প্রতি সম্পূর্ণ অনীহা তৈরি হয়। তিনি বলেন, ‘খাওয়ার তো ইচ্ছে হতোই না, পান করতেও চাইতাম না। ভেতরে-ভেতরে অস্থির লাগত, ঠোঁট কামড়াতাম, গাল চিবাতাম।’
এরপর মারিয়া প্রবল উদ্বেগে ভুগতে থাকেন। তাঁর মনে নেতিবাচক চিন্তা ভর করে। তিনি বলেন, ‘এই পিলগুলো আমার মানসিক অবস্থার ওপর ভয়ানক প্রভাব ফেলেছিল।’ সেন্ট পিটার্সবার্গে বসবাসকারী মারিয়া জানান, এমন ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য তিনি প্রস্তুত ছিলেন না।

অন্য টিকটক ব্যবহারকারীরাও জানান, পিল খাওয়ার পর তাদের চোখের মণি বড় হয়ে যায়, হাত কাঁপে, ঘুম আসে না। কমপক্ষে তিনজন স্কুলশিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এপ্রিলে সাইবেরিয়ার চিতা শহরের এক স্কুলছাত্রীকে ‘মলিকিউল’-এর অতিরিক্ত সেবনের পর হাসপাতালে নেওয়া হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সে দ্রুত ওজন কমিয়ে গ্রীষ্মের আগে ছিপছিপে হতে চেয়েছিল।
আরেক স্কুলছাত্রীর মা জানান, তাঁর মেয়েকে আইসিইউতে নিতে হয়েছিল, কারণ সে একসঙ্গে অনেকগুলো পিল খেয়েছিল। মে মাসে সেন্ট পিটার্সবার্গের ১৩ বছর বয়সী এক ছেলেকে হাসপাতালে নিতে হয়, কারণ সে হ্যালুসিনেশন ও আতঙ্কে ভুগছিল। স্কুলে ওজন নিয়ে উপহাস করার হতো তাকে। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সে এক বন্ধুর মাধ্যমে এই পিল কিনেছিল।
মলিকিউল পিলের মোড়কে সাধারণত লেখা থাকে ‘প্রাকৃতিক উপাদান’, যেমন—ড্যান্ডেলিয়ন রুট ও মৌরি বীজের নির্যাস দিয়ে তৈরি। কিন্তু এ বছরের শুরুতে রুশ দৈনিক ইজভেস্তিয়ার সাংবাদিকেরা অনলাইনে কেনা পিল পরীক্ষার জন্য জমা দেন। তাতে পাওয়া যায় ‘সিবিউট্রামিন’ নামের একটি পদার্থ।
এই সিবিউট্রামিন প্রথমে ১৯৮০-এর দশকে অবসাদনাশক ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, পরে ক্ষুধা দমনকারী হিসেবে প্রচলিত হয়। কিন্তু গবেষণায় দেখা যায়, এটি হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়, অথচ ওজন কমায় সামান্যই। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এটি নিষিদ্ধ করা হয়। যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীনসহ অনেক দেশেই এখন অবৈধ।

রাশিয়ায় এটি এখনো ওজন কমানোর ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়, তবে কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এবং চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনে। প্রেসক্রিপশন ছাড়া সিবিউট্রামিন কেনাবেচা অপরাধ। কিন্তু তাতে এই ড্রাগের বিক্রি খুব একটা থামছে না। ব্যক্তিগত বিক্রেতা ও ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে এটি বিক্রি করছে—অনেক সময় বৈধ ওষুধের চেয়েও বেশি মাত্রায় এবং কোনো প্রেসক্রিপশন ছাড়াই।
এই অবৈধ পিলের দাম প্রায় ৮ থেকে ৯ ডলার, যা ২০ দিনের জন্য যথেষ্ট। অথচ রাশিয়ার বাজারে পরিচিত ওজন কমানোর ইনজেকশন যেমন ‘Ozempic’-এর দাম প্রতি মাসে ৪০ থেকে ১৬০ পাউন্ড (৫০ থেকে ২১০ ডলার)। সেন্ট পিটার্সবার্গের অন্তঃস্রাববিশেষজ্ঞ জেনিয়া সোলোভিয়েভা বলেন, ‘নিজে নিজে এই ওষুধ খাওয়া ভয়ানক বিপজ্জনক’, কারণ এসব তথাকথিত ‘ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট’-এ কত পরিমাণ সক্রিয় উপাদান আছে তা কেউ জানে না।
‘মলিকিউল’ বিক্রির দায়ে রাশিয়ায় নিয়মিত লোকজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকার অবৈধ বিক্রি বন্ধে হিমশিম খাচ্ছে। এপ্রিলে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত সেফ ইন্টারনেট লিগ বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানায়। এরপর কয়েকটি বড় অনলাইন মার্কেটপ্লেস মলিকিউল তাদের কার্ট থেকে সরিয়ে দেয়। কিন্তু অচিরেই এটি ফিরে আসে নতুন নামে—‘অ্যাটম।’ প্যাকেজিং প্রায় হুবহু আগের মতো।
সম্প্রতি রাশিয়ায় একটি আইন পাস হয়েছে, যাতে আদালতের আদেশ ছাড়াই ‘অবৈধ ফুড সাপ্লিমেন্ট বা খাদ্য পরিপূরক বিক্রি করা ওয়েবসাইট’ বন্ধ করা যায়। কিন্তু বিক্রেতারা এখন এসব পণ্যকে ‘স্পোর্টস নিউট্রিশন’ হিসেবে দেখিয়ে বিক্রি করছে।
টিকটকে এখনো এমন বিক্রেতা, যারা ‘মলিকিউল’ বিক্রি করছে। তবে নাম ভিন্ন—কখনো তা ‘মিউসলি’, ‘বিস্কুট’ বা ‘লাইটবাল্ব।’ কিছু বিক্রেতা তো আবার গোপনীয়তার ধারই ধারছেন না। কয়েক সপ্তাহ আগে বিবিসি এক জনপ্রিয় রুশ অনলাইন মার্কেটপ্লেসে ‘মলিকিউল’-এর তালিকা খুঁজে পায়। জানতে চাইলে সংস্থাটি জানায়, তারা দ্রুত সিবিউট্রামিনযুক্ত সব পণ্য সরিয়ে ফেলেছে। তবে তারা স্বীকার করেছে, যেসব তালিকায় স্পষ্টভাবে ‘সিবিউট্রামিন’ লেখা নেই, সেগুলো শনাক্ত করা কঠিন।
যদি কেউ কোনোভাবে ‘মলিকিউল’ কিনতে সক্ষম হয়, তবুও বোঝা মুশকিল আসলে কী পাওয়া যাচ্ছে—আর এই পিল কোথায় তৈরি হচ্ছে, তা-ও অনিশ্চিত। বিবিসি কিছু বিক্রেতার কাছে এমন সনদপত্র পেয়েছে, যাতে লেখা আছে চীনের গুয়াংজু ও হেনান প্রদেশের কারখানায় উৎপাদিত। আবার কেউ কেউ দাবি করে, পণ্যটি জার্মানি থেকে আনা।
কিছু প্যাকেটে লেখা থাকে, এটি জার্মানির রেমাগেন শহরে তৈরি। কিন্তু বিবিসি খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, ওই ঠিকানায় এমন কোনো কোম্পানি নেই। আর কাজাখস্তানের কয়েকজন বিক্রেতা যারা রাশিয়ায় ‘মলিকিউল’ পাঠায়, তারা বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা পণ্যটি বন্ধুদের কাছ থেকে বা রাজধানী আস্তানার কিছু গুদাম থেকে সংগ্রহ করে থাকে, কিন্তু মূল সরবরাহকারীর নাম জানে না।
এদিকে, অনলাইনে ইটিং ডিসঅর্ডার বা খাওয়ার ব্যাধি সংক্রান্ত অনেক কমিউনিটি এখন ‘মলিকিউল’ নামের ওষুধটি প্রচারের জায়গা হয়ে উঠেছে। ব্যবহারকারীরা হ্যাশট্যাগ আর নানা গোপন শব্দ ব্যবহার করে প্ল্যাটফর্মগুলোর নজরদারি এড়িয়ে যাচ্ছে। সোলোভিয়েভা বলেন, যেসব তরুণ-তরুণী আগে থেকেই ইটিং ডিসঅর্ডারে ভুগছে, তাদের জন্য মলিকিউল অত্যন্ত ক্ষতিকর। যারা পুনরায় অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিতে আছে, তাদের হাতে সহজলভ্য এই ক্ষুধা দমনকারী ওষুধ ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে।

রুশ সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার আন্না এনিনা নিজেও অতীতে অননুমোদিত ওজন কমানোর ওষুধ ব্যবহার করেছেন। তবে তিনি প্রকাশ্যে তাঁর অনুসারীদের সতর্ক করে বলেন, ‘আমি নিজে ইটিং ডিসঅর্ডারে ভুগেছি…এর পরিণতি ভয়াবহ হবে। তোমরা এর জন্য দশগুণ অনুতপ্ত হবে।’
মারিয়া সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন। অতিরিক্ত মলিকিউল খাওয়ার পর তিনি মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হন এবং হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। এখন তিনি বিভিন্ন ওজন কমানোর ফোরামে তরুণী ও মেয়েদের এই বড়ি না খেতে পরামর্শ দেন। এমনকি এক কিশোরীর বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরও সতর্ক করেছেন।
তবু মলিকিউল অনলাইনে এখনো জনপ্রিয়। আর মারিয়ার টিকটক ফিডে যখনই নতুন কোনো ভিডিও ভেসে ওঠে, তখন সেটি তাঁকে মনে করিয়ে দেয়—সেই পিলগুলোর কথা, যেগুলো তাঁকে অসুস্থ করে দিয়েছিল।

ফাল্গুনেও হালকা কুয়াশা পড়ে এখানে। আমগাছের পাতার ফাঁকে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে ভোরের সূর্য। গাছপালায় ভরা পার্কের একটি জায়গা পরিষ্কার করলেন এক ব্যক্তি। এর মধ্যে একজন-দুজন করে জনাবিশেক মানুষ এসে হাজির। বেশির ভাগই বয়োজ্যেষ্ঠ। একটু পরেই শুরু হলো শরীরচর্চা। গত বুধবার ভোরে এমন দৃশ্য দেখা গেল রাজশাহীর শিমলা
০২ মার্চ ২০২৪
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৬৯ জন। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ করা তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
১৭ ঘণ্টা আগে
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৪৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগে
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ১ হাজার ১৬২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আজ রোববার (২ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
৪ দিন আগে