মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন। এতে করে স্থানীয় প্রজাতির মশার জিনগত বৈশিষ্ট্য, আচরণ ইত্যাদি বোঝার মাধ্যমে মশা নির্মূল ও রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে সরকারের অগ্রাধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ব ও রোগতত্ত্ববিদেরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে, যার মধ্যে ১০০ প্রজাতি মানবদেহে অন্তত ২০টি প্রাণঘাতী রোগ ছড়াতে সক্ষম। বাংলাদেশে ঠিক কত প্রজাতির মশা রয়েছে, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি সরকার বা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে মশা ও মাছিবাহিত নয়টি মারাত্মক রোগ দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এডিস মশা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, জিকা; অ্যানোফিলিস মশা লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ম্যালেরিয়া; কিউলেক্স মশা জাপানিজ এনকেফালাইটিস, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ওয়েস্ট নাইল ফিভার ও ফাইলেরিয়া এবং স্যান্ডফ্লাই নামের একধরনের মাছি কালাজ্বরের বাহক হিসেবে কাজ করে।
আমেরিকান মসকিউটো কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের (এএমসিএ) তথ্যমতে, পৃথিবীর অন্য যেকোনো জীবের তুলনায় মশা মানুষের জন্য বেশি দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। বিশ্বে বছরে ১০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় মশাবাহিত রোগের কারণে।
বাড়ছে রোগের প্রাদুর্ভাব
দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেশি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুকে জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের বলে অভিহিত করেছে ডব্লিউএইচও। সরকারের তথ্য বলছে, দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। সাম্প্রতিককালে দেশের সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে একসময় মূলত রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকা রোগটি। প্রথম ডেঙ্গু রোগের সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া যায় ২০০০ সালে। ২০১৯ সালে শহর ও গ্রাম উভয় স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (ইসিডিসি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন ডেঙ্গুতে বিশ্বে সর্বোচ্চ মৃত্যু হারের দেশ।
ডেঙ্গুর মতোই জিকা এবং চিকুনগুনিয়াও ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। দেশে ২০০৮ সালে প্রথম চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়। ২০১৭ সালে দেশজুড়ে ভাইরাল এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। দেশে জিকাও শনাক্ত হয়েছে।
ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায় স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০০৭-২৪ সাল পর্যন্ত দেশে ৬ লাখ ১ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৬৬৩ জন। চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কিউলেক্স মশার দুটি প্রজাতি ও ম্যানসোনিয়া মশা দেশের অন্তত ৩৪টি জেলায় ফাইলেরিয়া বা গোদরোগ ছড়াচ্ছে। ১৯৯৩ সাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে কালাজ্বরের রোগী। দেশে প্রথম জাপানিজ এনকেফালাইটিস রোগী শনাক্ত হয় ১৯৭৭ সালে। ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসবাহিত জ্বরের সংক্রমণও শনাক্ত হয়েছে।
নেই পরীক্ষা বা গবেষণায় গুরুত্ব
মশাবাহিত রোগ বছরের পর বছর ভোগালেও এটি মোকাবিলায় সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ সামর্থ্য গড়ে তোলা হচ্ছে না। অন্তত সিকি শতাব্দী ধরে কখনো কখনো প্রাণঘাতী হয়ে ওঠা ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রোগের ধরন পরিবর্তন, মশকনিধন কর্মসূচির ত্রুটি ও ব্যর্থতা, জনসচেতনার প্রকট অভাবসহ বিভিন্ন কারণে ডেঙ্গুর দৌরাত্ম্য না কমে বরং বাড়ছে। মশা জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ভেক্টর ডিজিজ কন্ট্রোল ইন্টারন্যাশনাল (ভিডিসিআই) বলেছে, মশা নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থাপনা, মশার ক্রিয়াকলাপ, মশার প্রজননের ক্রমবর্ধমান গতিশীলতা ও কীটনাশক নিয়ে বিস্তৃত পদক্ষেপ নিতে হলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে গবেষণা জরুরি। অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গোফার (সাবেক কুইন্সল্যান্ড ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল রিসার্চ), যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ও ব্রাজিলের ওসওয়াল্ডো ক্রুজ ইনস্টিটিউটও বলছে, রোগপ্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মশার পরীক্ষাগার গুরুত্বপূর্ণ। মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের হার বেশি এমনসব অঞ্চল থেকে মশা সংগ্রহ করে গবেষণা করতে হবে। মশার জীববিজ্ঞান, আচরণ, প্রজাতি, বহনকারী ভাইরাসের পরিবর্তন বা রূপান্তর, মশার ঘনত্ব, প্রজাতি শনাক্তকরণ, কীটনাশকের কার্যকারিতা এবং রোগের সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।
কিন্তু অনেক দেশেই মশার মতো রোগের বাহক অর্থাৎ ‘ভেক্টর’ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষাগার থাকলেও বাংলাদেশে মতো মশাবহুল দেশে তা নেই। অথচ কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব তেমন নেই, এমন অনেক দেশেও সমন্বিত পরীক্ষাগার রয়েছে। যেখানে মশার ধরন, মশার জীববিজ্ঞান, প্রজনন, কীটনাশক, ভাইরাস বা পরজীবী নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করা হয়। বাংলাদেশে মশার বেড়ে ওঠা ও পরিপক্বতা অর্জন, জীবাণুর সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি পরিবর্তন হচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন; কিন্তু তার ব্যবস্থা নেই।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবহাওয়ার সঙ্গে মশার অভিযোজন, বহনকারী ভাইরাসের রূপান্তর, ভাইরাসের স্বভাবের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কি না তা জানতে গবেষণা প্রয়োজন। মশা ধ্বংসকারী কীটনাশকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু গবেষণার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, কারিগরি দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে মশাকে নির্মূল করা যাচ্ছে না। সরকারের উদ্যোগ নেই। দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নিপসমে একটি মশা পরীক্ষাগার করা যায়নি।’
পরীক্ষাগারের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, ‘মশা ও রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষাগার থাকা প্রয়োজন। ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে ২০১৯ সালে অর্গানোগ্রামসহ রূপরেখা দিয়েছিলাম। সরকারের আগ্রহ দেখা যায়নি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, মশা নির্মূলে প্রজননস্থল খুঁজে তা ধ্বংস করা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ স্থানীয় সরকার বিভাগের। মশা নিয়ে গবেষণা করবে স্থানীয় সরকার বা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ করে রোগীর চিকিৎসার সব কাজ। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ রয়েছে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার থাকবে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার সম্পৃক্ত হবে। প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যসেবাও সম্পৃক্ত হবে।
রোগ নিয়ে গবেষণা নিয়মিত হচ্ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক হালিমুর রশিদ বলেন, ‘মশার জন্য দেশে পরীক্ষাগার নেই। তবে আইইডিসিআরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, মশা নিয়ে বৃহৎ অর্থে গবেষণাগার নেই। তবে আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু, কীট, টিকা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। রোগীর নমুনার ওপর অধিকতর গবেষণাও হচ্ছে।

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন। এতে করে স্থানীয় প্রজাতির মশার জিনগত বৈশিষ্ট্য, আচরণ ইত্যাদি বোঝার মাধ্যমে মশা নির্মূল ও রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে সরকারের অগ্রাধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ব ও রোগতত্ত্ববিদেরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে, যার মধ্যে ১০০ প্রজাতি মানবদেহে অন্তত ২০টি প্রাণঘাতী রোগ ছড়াতে সক্ষম। বাংলাদেশে ঠিক কত প্রজাতির মশা রয়েছে, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি সরকার বা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে মশা ও মাছিবাহিত নয়টি মারাত্মক রোগ দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এডিস মশা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, জিকা; অ্যানোফিলিস মশা লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ম্যালেরিয়া; কিউলেক্স মশা জাপানিজ এনকেফালাইটিস, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ওয়েস্ট নাইল ফিভার ও ফাইলেরিয়া এবং স্যান্ডফ্লাই নামের একধরনের মাছি কালাজ্বরের বাহক হিসেবে কাজ করে।
আমেরিকান মসকিউটো কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের (এএমসিএ) তথ্যমতে, পৃথিবীর অন্য যেকোনো জীবের তুলনায় মশা মানুষের জন্য বেশি দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। বিশ্বে বছরে ১০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় মশাবাহিত রোগের কারণে।
বাড়ছে রোগের প্রাদুর্ভাব
দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেশি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুকে জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের বলে অভিহিত করেছে ডব্লিউএইচও। সরকারের তথ্য বলছে, দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। সাম্প্রতিককালে দেশের সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে একসময় মূলত রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকা রোগটি। প্রথম ডেঙ্গু রোগের সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া যায় ২০০০ সালে। ২০১৯ সালে শহর ও গ্রাম উভয় স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (ইসিডিসি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন ডেঙ্গুতে বিশ্বে সর্বোচ্চ মৃত্যু হারের দেশ।
ডেঙ্গুর মতোই জিকা এবং চিকুনগুনিয়াও ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। দেশে ২০০৮ সালে প্রথম চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়। ২০১৭ সালে দেশজুড়ে ভাইরাল এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। দেশে জিকাও শনাক্ত হয়েছে।
ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায় স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০০৭-২৪ সাল পর্যন্ত দেশে ৬ লাখ ১ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৬৬৩ জন। চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কিউলেক্স মশার দুটি প্রজাতি ও ম্যানসোনিয়া মশা দেশের অন্তত ৩৪টি জেলায় ফাইলেরিয়া বা গোদরোগ ছড়াচ্ছে। ১৯৯৩ সাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে কালাজ্বরের রোগী। দেশে প্রথম জাপানিজ এনকেফালাইটিস রোগী শনাক্ত হয় ১৯৭৭ সালে। ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসবাহিত জ্বরের সংক্রমণও শনাক্ত হয়েছে।
নেই পরীক্ষা বা গবেষণায় গুরুত্ব
মশাবাহিত রোগ বছরের পর বছর ভোগালেও এটি মোকাবিলায় সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ সামর্থ্য গড়ে তোলা হচ্ছে না। অন্তত সিকি শতাব্দী ধরে কখনো কখনো প্রাণঘাতী হয়ে ওঠা ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রোগের ধরন পরিবর্তন, মশকনিধন কর্মসূচির ত্রুটি ও ব্যর্থতা, জনসচেতনার প্রকট অভাবসহ বিভিন্ন কারণে ডেঙ্গুর দৌরাত্ম্য না কমে বরং বাড়ছে। মশা জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ভেক্টর ডিজিজ কন্ট্রোল ইন্টারন্যাশনাল (ভিডিসিআই) বলেছে, মশা নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থাপনা, মশার ক্রিয়াকলাপ, মশার প্রজননের ক্রমবর্ধমান গতিশীলতা ও কীটনাশক নিয়ে বিস্তৃত পদক্ষেপ নিতে হলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে গবেষণা জরুরি। অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গোফার (সাবেক কুইন্সল্যান্ড ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল রিসার্চ), যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ও ব্রাজিলের ওসওয়াল্ডো ক্রুজ ইনস্টিটিউটও বলছে, রোগপ্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মশার পরীক্ষাগার গুরুত্বপূর্ণ। মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের হার বেশি এমনসব অঞ্চল থেকে মশা সংগ্রহ করে গবেষণা করতে হবে। মশার জীববিজ্ঞান, আচরণ, প্রজাতি, বহনকারী ভাইরাসের পরিবর্তন বা রূপান্তর, মশার ঘনত্ব, প্রজাতি শনাক্তকরণ, কীটনাশকের কার্যকারিতা এবং রোগের সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।
কিন্তু অনেক দেশেই মশার মতো রোগের বাহক অর্থাৎ ‘ভেক্টর’ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষাগার থাকলেও বাংলাদেশে মতো মশাবহুল দেশে তা নেই। অথচ কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব তেমন নেই, এমন অনেক দেশেও সমন্বিত পরীক্ষাগার রয়েছে। যেখানে মশার ধরন, মশার জীববিজ্ঞান, প্রজনন, কীটনাশক, ভাইরাস বা পরজীবী নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করা হয়। বাংলাদেশে মশার বেড়ে ওঠা ও পরিপক্বতা অর্জন, জীবাণুর সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি পরিবর্তন হচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন; কিন্তু তার ব্যবস্থা নেই।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবহাওয়ার সঙ্গে মশার অভিযোজন, বহনকারী ভাইরাসের রূপান্তর, ভাইরাসের স্বভাবের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কি না তা জানতে গবেষণা প্রয়োজন। মশা ধ্বংসকারী কীটনাশকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু গবেষণার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, কারিগরি দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে মশাকে নির্মূল করা যাচ্ছে না। সরকারের উদ্যোগ নেই। দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নিপসমে একটি মশা পরীক্ষাগার করা যায়নি।’
পরীক্ষাগারের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, ‘মশা ও রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষাগার থাকা প্রয়োজন। ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে ২০১৯ সালে অর্গানোগ্রামসহ রূপরেখা দিয়েছিলাম। সরকারের আগ্রহ দেখা যায়নি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, মশা নির্মূলে প্রজননস্থল খুঁজে তা ধ্বংস করা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ স্থানীয় সরকার বিভাগের। মশা নিয়ে গবেষণা করবে স্থানীয় সরকার বা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ করে রোগীর চিকিৎসার সব কাজ। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ রয়েছে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার থাকবে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার সম্পৃক্ত হবে। প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যসেবাও সম্পৃক্ত হবে।
রোগ নিয়ে গবেষণা নিয়মিত হচ্ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক হালিমুর রশিদ বলেন, ‘মশার জন্য দেশে পরীক্ষাগার নেই। তবে আইইডিসিআরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, মশা নিয়ে বৃহৎ অর্থে গবেষণাগার নেই। তবে আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু, কীট, টিকা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। রোগীর নমুনার ওপর অধিকতর গবেষণাও হচ্ছে।
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন। এতে করে স্থানীয় প্রজাতির মশার জিনগত বৈশিষ্ট্য, আচরণ ইত্যাদি বোঝার মাধ্যমে মশা নির্মূল ও রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে সরকারের অগ্রাধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ব ও রোগতত্ত্ববিদেরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে, যার মধ্যে ১০০ প্রজাতি মানবদেহে অন্তত ২০টি প্রাণঘাতী রোগ ছড়াতে সক্ষম। বাংলাদেশে ঠিক কত প্রজাতির মশা রয়েছে, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি সরকার বা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে মশা ও মাছিবাহিত নয়টি মারাত্মক রোগ দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এডিস মশা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, জিকা; অ্যানোফিলিস মশা লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ম্যালেরিয়া; কিউলেক্স মশা জাপানিজ এনকেফালাইটিস, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ওয়েস্ট নাইল ফিভার ও ফাইলেরিয়া এবং স্যান্ডফ্লাই নামের একধরনের মাছি কালাজ্বরের বাহক হিসেবে কাজ করে।
আমেরিকান মসকিউটো কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের (এএমসিএ) তথ্যমতে, পৃথিবীর অন্য যেকোনো জীবের তুলনায় মশা মানুষের জন্য বেশি দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। বিশ্বে বছরে ১০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় মশাবাহিত রোগের কারণে।
বাড়ছে রোগের প্রাদুর্ভাব
দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেশি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুকে জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের বলে অভিহিত করেছে ডব্লিউএইচও। সরকারের তথ্য বলছে, দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। সাম্প্রতিককালে দেশের সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে একসময় মূলত রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকা রোগটি। প্রথম ডেঙ্গু রোগের সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া যায় ২০০০ সালে। ২০১৯ সালে শহর ও গ্রাম উভয় স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (ইসিডিসি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন ডেঙ্গুতে বিশ্বে সর্বোচ্চ মৃত্যু হারের দেশ।
ডেঙ্গুর মতোই জিকা এবং চিকুনগুনিয়াও ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। দেশে ২০০৮ সালে প্রথম চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়। ২০১৭ সালে দেশজুড়ে ভাইরাল এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। দেশে জিকাও শনাক্ত হয়েছে।
ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায় স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০০৭-২৪ সাল পর্যন্ত দেশে ৬ লাখ ১ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৬৬৩ জন। চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কিউলেক্স মশার দুটি প্রজাতি ও ম্যানসোনিয়া মশা দেশের অন্তত ৩৪টি জেলায় ফাইলেরিয়া বা গোদরোগ ছড়াচ্ছে। ১৯৯৩ সাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে কালাজ্বরের রোগী। দেশে প্রথম জাপানিজ এনকেফালাইটিস রোগী শনাক্ত হয় ১৯৭৭ সালে। ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসবাহিত জ্বরের সংক্রমণও শনাক্ত হয়েছে।
নেই পরীক্ষা বা গবেষণায় গুরুত্ব
মশাবাহিত রোগ বছরের পর বছর ভোগালেও এটি মোকাবিলায় সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ সামর্থ্য গড়ে তোলা হচ্ছে না। অন্তত সিকি শতাব্দী ধরে কখনো কখনো প্রাণঘাতী হয়ে ওঠা ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রোগের ধরন পরিবর্তন, মশকনিধন কর্মসূচির ত্রুটি ও ব্যর্থতা, জনসচেতনার প্রকট অভাবসহ বিভিন্ন কারণে ডেঙ্গুর দৌরাত্ম্য না কমে বরং বাড়ছে। মশা জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ভেক্টর ডিজিজ কন্ট্রোল ইন্টারন্যাশনাল (ভিডিসিআই) বলেছে, মশা নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থাপনা, মশার ক্রিয়াকলাপ, মশার প্রজননের ক্রমবর্ধমান গতিশীলতা ও কীটনাশক নিয়ে বিস্তৃত পদক্ষেপ নিতে হলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে গবেষণা জরুরি। অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গোফার (সাবেক কুইন্সল্যান্ড ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল রিসার্চ), যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ও ব্রাজিলের ওসওয়াল্ডো ক্রুজ ইনস্টিটিউটও বলছে, রোগপ্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মশার পরীক্ষাগার গুরুত্বপূর্ণ। মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের হার বেশি এমনসব অঞ্চল থেকে মশা সংগ্রহ করে গবেষণা করতে হবে। মশার জীববিজ্ঞান, আচরণ, প্রজাতি, বহনকারী ভাইরাসের পরিবর্তন বা রূপান্তর, মশার ঘনত্ব, প্রজাতি শনাক্তকরণ, কীটনাশকের কার্যকারিতা এবং রোগের সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।
কিন্তু অনেক দেশেই মশার মতো রোগের বাহক অর্থাৎ ‘ভেক্টর’ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষাগার থাকলেও বাংলাদেশে মতো মশাবহুল দেশে তা নেই। অথচ কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব তেমন নেই, এমন অনেক দেশেও সমন্বিত পরীক্ষাগার রয়েছে। যেখানে মশার ধরন, মশার জীববিজ্ঞান, প্রজনন, কীটনাশক, ভাইরাস বা পরজীবী নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করা হয়। বাংলাদেশে মশার বেড়ে ওঠা ও পরিপক্বতা অর্জন, জীবাণুর সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি পরিবর্তন হচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন; কিন্তু তার ব্যবস্থা নেই।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবহাওয়ার সঙ্গে মশার অভিযোজন, বহনকারী ভাইরাসের রূপান্তর, ভাইরাসের স্বভাবের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কি না তা জানতে গবেষণা প্রয়োজন। মশা ধ্বংসকারী কীটনাশকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু গবেষণার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, কারিগরি দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে মশাকে নির্মূল করা যাচ্ছে না। সরকারের উদ্যোগ নেই। দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নিপসমে একটি মশা পরীক্ষাগার করা যায়নি।’
পরীক্ষাগারের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, ‘মশা ও রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষাগার থাকা প্রয়োজন। ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে ২০১৯ সালে অর্গানোগ্রামসহ রূপরেখা দিয়েছিলাম। সরকারের আগ্রহ দেখা যায়নি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, মশা নির্মূলে প্রজননস্থল খুঁজে তা ধ্বংস করা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ স্থানীয় সরকার বিভাগের। মশা নিয়ে গবেষণা করবে স্থানীয় সরকার বা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ করে রোগীর চিকিৎসার সব কাজ। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ রয়েছে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার থাকবে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার সম্পৃক্ত হবে। প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যসেবাও সম্পৃক্ত হবে।
রোগ নিয়ে গবেষণা নিয়মিত হচ্ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক হালিমুর রশিদ বলেন, ‘মশার জন্য দেশে পরীক্ষাগার নেই। তবে আইইডিসিআরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, মশা নিয়ে বৃহৎ অর্থে গবেষণাগার নেই। তবে আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু, কীট, টিকা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। রোগীর নমুনার ওপর অধিকতর গবেষণাও হচ্ছে।

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন। এতে করে স্থানীয় প্রজাতির মশার জিনগত বৈশিষ্ট্য, আচরণ ইত্যাদি বোঝার মাধ্যমে মশা নির্মূল ও রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। তবে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিতে সরকারের অগ্রাধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ব ও রোগতত্ত্ববিদেরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে, যার মধ্যে ১০০ প্রজাতি মানবদেহে অন্তত ২০টি প্রাণঘাতী রোগ ছড়াতে সক্ষম। বাংলাদেশে ঠিক কত প্রজাতির মশা রয়েছে, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি সরকার বা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে মশা ও মাছিবাহিত নয়টি মারাত্মক রোগ দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ এবং সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এডিস মশা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, জিকা; অ্যানোফিলিস মশা লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ম্যালেরিয়া; কিউলেক্স মশা জাপানিজ এনকেফালাইটিস, লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস, ওয়েস্ট নাইল ফিভার ও ফাইলেরিয়া এবং স্যান্ডফ্লাই নামের একধরনের মাছি কালাজ্বরের বাহক হিসেবে কাজ করে।
আমেরিকান মসকিউটো কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের (এএমসিএ) তথ্যমতে, পৃথিবীর অন্য যেকোনো জীবের তুলনায় মশা মানুষের জন্য বেশি দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। বিশ্বে বছরে ১০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় মশাবাহিত রোগের কারণে।
বাড়ছে রোগের প্রাদুর্ভাব
দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বেশি। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুকে জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগের বলে অভিহিত করেছে ডব্লিউএইচও। সরকারের তথ্য বলছে, দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। সাম্প্রতিককালে দেশের সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে একসময় মূলত রাজধানী ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকা রোগটি। প্রথম ডেঙ্গু রোগের সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া যায় ২০০০ সালে। ২০১৯ সালে শহর ও গ্রাম উভয় স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (ইসিডিসি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন ডেঙ্গুতে বিশ্বে সর্বোচ্চ মৃত্যু হারের দেশ।
ডেঙ্গুর মতোই জিকা এবং চিকুনগুনিয়াও ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। দেশে ২০০৮ সালে প্রথম চিকুনগুনিয়া শনাক্ত হয়। ২০১৭ সালে দেশজুড়ে ভাইরাল এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। দেশে জিকাও শনাক্ত হয়েছে।
ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ায় স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০০৭-২৪ সাল পর্যন্ত দেশে ৬ লাখ ১ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৬৬৩ জন। চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। কিউলেক্স মশার দুটি প্রজাতি ও ম্যানসোনিয়া মশা দেশের অন্তত ৩৪টি জেলায় ফাইলেরিয়া বা গোদরোগ ছড়াচ্ছে। ১৯৯৩ সাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে কালাজ্বরের রোগী। দেশে প্রথম জাপানিজ এনকেফালাইটিস রোগী শনাক্ত হয় ১৯৭৭ সালে। ওয়েস্ট নাইল ভাইরাসবাহিত জ্বরের সংক্রমণও শনাক্ত হয়েছে।
নেই পরীক্ষা বা গবেষণায় গুরুত্ব
মশাবাহিত রোগ বছরের পর বছর ভোগালেও এটি মোকাবিলায় সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ সামর্থ্য গড়ে তোলা হচ্ছে না। অন্তত সিকি শতাব্দী ধরে কখনো কখনো প্রাণঘাতী হয়ে ওঠা ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। রোগের ধরন পরিবর্তন, মশকনিধন কর্মসূচির ত্রুটি ও ব্যর্থতা, জনসচেতনার প্রকট অভাবসহ বিভিন্ন কারণে ডেঙ্গুর দৌরাত্ম্য না কমে বরং বাড়ছে। মশা জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ভেক্টর ডিজিজ কন্ট্রোল ইন্টারন্যাশনাল (ভিডিসিআই) বলেছে, মশা নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থাপনা, মশার ক্রিয়াকলাপ, মশার প্রজননের ক্রমবর্ধমান গতিশীলতা ও কীটনাশক নিয়ে বিস্তৃত পদক্ষেপ নিতে হলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারে গবেষণা জরুরি। অস্ট্রেলিয়ার কিউআইএমআর বার্গোফার (সাবেক কুইন্সল্যান্ড ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল রিসার্চ), যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ও ব্রাজিলের ওসওয়াল্ডো ক্রুজ ইনস্টিটিউটও বলছে, রোগপ্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মশার পরীক্ষাগার গুরুত্বপূর্ণ। মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের হার বেশি এমনসব অঞ্চল থেকে মশা সংগ্রহ করে গবেষণা করতে হবে। মশার জীববিজ্ঞান, আচরণ, প্রজাতি, বহনকারী ভাইরাসের পরিবর্তন বা রূপান্তর, মশার ঘনত্ব, প্রজাতি শনাক্তকরণ, কীটনাশকের কার্যকারিতা এবং রোগের সংক্রমণের গতি-প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করা প্রয়োজন।
কিন্তু অনেক দেশেই মশার মতো রোগের বাহক অর্থাৎ ‘ভেক্টর’ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষাগার থাকলেও বাংলাদেশে মতো মশাবহুল দেশে তা নেই। অথচ কীটতত্ত্ববিদেরা বলছেন, মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব তেমন নেই, এমন অনেক দেশেও সমন্বিত পরীক্ষাগার রয়েছে। যেখানে মশার ধরন, মশার জীববিজ্ঞান, প্রজনন, কীটনাশক, ভাইরাস বা পরজীবী নিয়ে নিয়মিত গবেষণা করা হয়। বাংলাদেশে মশার বেড়ে ওঠা ও পরিপক্বতা অর্জন, জীবাণুর সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি পরিবর্তন হচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন; কিন্তু তার ব্যবস্থা নেই।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম ছারোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবহাওয়ার সঙ্গে মশার অভিযোজন, বহনকারী ভাইরাসের রূপান্তর, ভাইরাসের স্বভাবের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে কি না তা জানতে গবেষণা প্রয়োজন। মশা ধ্বংসকারী কীটনাশকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু গবেষণার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা, কারিগরি দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে মশাকে নির্মূল করা যাচ্ছে না। সরকারের উদ্যোগ নেই। দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নিপসমে একটি মশা পরীক্ষাগার করা যায়নি।’
পরীক্ষাগারের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকারে দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, ‘মশা ও রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষাগার থাকা প্রয়োজন। ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষাগার করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগকে ২০১৯ সালে অর্গানোগ্রামসহ রূপরেখা দিয়েছিলাম। সরকারের আগ্রহ দেখা যায়নি।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বক্তব্য
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, মশা নির্মূলে প্রজননস্থল খুঁজে তা ধ্বংস করা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ স্থানীয় সরকার বিভাগের। মশা নিয়ে গবেষণা করবে স্থানীয় সরকার বা প্রাণিসম্পদ বিভাগ। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ করে রোগীর চিকিৎসার সব কাজ। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ রয়েছে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাগার থাকবে। তাদের সঙ্গে স্থানীয় সরকার সম্পৃক্ত হবে। প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্যসেবাও সম্পৃক্ত হবে।
রোগ নিয়ে গবেষণা নিয়মিত হচ্ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক হালিমুর রশিদ বলেন, ‘মশার জন্য দেশে পরীক্ষাগার নেই। তবে আইইডিসিআরসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, মশা নিয়ে বৃহৎ অর্থে গবেষণাগার নেই। তবে আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু, কীট, টিকা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। রোগীর নমুনার ওপর অধিকতর গবেষণাও হচ্ছে।

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
২৫ মিনিট আগে
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
৬ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত।
১৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৬, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৪, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৮৯, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৫, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬ জন রয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় ৫৭৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৭২ হাজার ৯৬৬ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৭৬ হাজার ৫১৪ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী রয়েছে।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন, এপ্রিলে সাত, মে মাসে তিন, জুনে ১৯, জুলাইয়ে ৪১, আগস্টে ৩৯ ও সেপ্টেম্বরে ৭৬, অক্টোবরে ৮০ জন মারা গেছে। মার্চে কারও মৃত্যু হয়নি। আর নভেম্বরে এখন পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৬, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৪, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৮৯, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৫, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬ জন রয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় ৫৭৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৭২ হাজার ৯৬৬ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরের ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৭৬ হাজার ৫১৪ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী রয়েছে।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন, এপ্রিলে সাত, মে মাসে তিন, জুনে ১৯, জুলাইয়ে ৪১, আগস্টে ৩৯ ও সেপ্টেম্বরে ৭৬, অক্টোবরে ৮০ জন মারা গেছে। মার্চে কারও মৃত্যু হয়নি। আর নভেম্বরে এখন পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন।
১৪ জুলাই ২০২৫
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
৬ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক তাঁদের ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) অনুমোদিত ও নিবন্ধিত নয় এমন ওষুধ লিখে আসছেন। এতে রোগীদের স্বাস্থ্য বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ছে। বিষয়টি তদন্তে মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু হেনা চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফার্মাকোলজি বিভাগের সভাপতি ডা. ইলোরা শারমিন এবং উপ-রেজিস্ট্রার (আইন) ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ। সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক (আইন) অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএমইউর চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ওষুধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোনো ওষুধ, ভিটামিন, মিনারেল বা সাপ্লিমেন্টের নাম প্রেসক্রিপশনে লেখা হলে তা আইনভঙ্গের শামিল কি না এবং হলে কী ধরনের আইনি প্রতিকার বা শাস্তি প্রযোজ্য হতে পারে, তা নির্ধারণ করে প্রচলিত আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ক্ষেত্রে প্রামাণ্য আইন হিসেবে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩’ এবং ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০’ উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—যেসব ভিটামিন, মিনারেল সাপ্লিমেন্ট ও হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে আমদানি হয়, সেগুলো ডিজিডিএ ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কীভাবে যাচাই-বাছাই করে, কিংবা এসব পণ্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় কি না, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ডিজিডিএর ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা সহজেই পাওয়া যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসকদের সচেতন করতে আইটি সেকশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রতিকার হিসেবে বিএমইউর চিকিৎসকেরা যেন অননুমোদিত ওষুধ প্রেসক্রিপশনে না লেখেন সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট ছাপানো এবং সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক তাঁদের ব্যবস্থাপত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) অনুমোদিত ও নিবন্ধিত নয় এমন ওষুধ লিখে আসছেন। এতে রোগীদের স্বাস্থ্য বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ছে। বিষয়টি তদন্তে মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবু হেনা চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফার্মাকোলজি বিভাগের সভাপতি ডা. ইলোরা শারমিন এবং উপ-রেজিস্ট্রার (আইন) ডা. আবু হেনা হেলাল উদ্দিন আহমেদ। সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সহকারী পরিচালক (আইন) অ্যাডভোকেট তানিয়া আক্তার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএমইউর চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ওষুধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কোনো ওষুধ, ভিটামিন, মিনারেল বা সাপ্লিমেন্টের নাম প্রেসক্রিপশনে লেখা হলে তা আইনভঙ্গের শামিল কি না এবং হলে কী ধরনের আইনি প্রতিকার বা শাস্তি প্রযোজ্য হতে পারে, তা নির্ধারণ করে প্রচলিত আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ক্ষেত্রে প্রামাণ্য আইন হিসেবে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩’ এবং ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০’ উল্লেখ করা হয়েছে।
অন্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে—যেসব ভিটামিন, মিনারেল সাপ্লিমেন্ট ও হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট বিদেশ থেকে আমদানি হয়, সেগুলো ডিজিডিএ ও বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কীভাবে যাচাই-বাছাই করে, কিংবা এসব পণ্য ব্যবহারের অনুমোদন দেয় কি না, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়া। প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ডিজিডিএর ওয়েবসাইটে নিবন্ধিত ওষুধের তালিকা সহজেই পাওয়া যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসকদের সচেতন করতে আইটি সেকশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রতিকার হিসেবে বিএমইউর চিকিৎসকেরা যেন অননুমোদিত ওষুধ প্রেসক্রিপশনে না লেখেন সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট ছাপানো এবং সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার সুপারিশ করা হয়েছে।

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন।
১৪ জুলাই ২০২৫
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
২৫ মিনিট আগে
পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
৬ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত।
১৫ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসকদের বদলি ও পদায়ন আপাতত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বদলি-পদায়ন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে অটোমেশন পদ্ধতি চালুর প্রস্তুতি চলমান থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রশাসনিক পদে থাকা চিকিৎসকেরা প্রায়ই উচ্চতর পদে চলতি দায়িত্ব বা পছন্দের কর্মস্থলে বদলি ও পদায়নের জন্য আবেদন করে থাকেন। বর্তমানে চিকিৎসকদের পদোন্নতি কার্যক্রম চলমান থাকায় এসব আবেদন নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিগগির পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, বদলি-পদায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, গতি ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে অটোমেশন ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদন বিবেচনা করা হবে না।

জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসকদের বদলি ও পদায়ন আপাতত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বদলি-পদায়ন কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে অটোমেশন পদ্ধতি চালুর প্রস্তুতি চলমান থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালট্যান্ট, সহকারী অধ্যাপক এবং প্রশাসনিক পদে থাকা চিকিৎসকেরা প্রায়ই উচ্চতর পদে চলতি দায়িত্ব বা পছন্দের কর্মস্থলে বদলি ও পদায়নের জন্য আবেদন করে থাকেন। বর্তমানে চিকিৎসকদের পদোন্নতি কার্যক্রম চলমান থাকায় এসব আবেদন নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিগগির পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, বদলি-পদায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, গতি ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে অটোমেশন ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদন বিবেচনা করা হবে না।

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন।
১৪ জুলাই ২০২৫
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
২৫ মিনিট আগে
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত।
১৫ ঘণ্টা আগেমুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত। প্রাথমিক চিকিৎসার সুযোগ সীমিত। জীবন বাঁচাতে অপরিহার্য অ্যান্টিভেনমের প্রাপ্যতা নিয়ে সমস্যা লেগেই থাকে। খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সাপের দংশনকে বৈশ্বিকভাবে অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ২৪৪ জন সাপের দংশনের শিকার হয় এবং এতে ৫ জনের মৃত্যু ঘটে। মৃত্যু না হলেও সাপের দংশনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের ১১ শতাংশ বিষক্রিয়াজনিত পক্ষাঘাতে ভোগে। বছরে আড়াই হাজার গরুরও মৃত্যু হয় সাপের দংশনে, যা গ্রামীণ অর্থনীতির ওপর তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও একটি চাপ।
পেশাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাপের দংশনের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন গৃহবধূরা। তাঁরা মোট আক্রান্তের ৩২ শতাংশ। এরপর রয়েছে কৃষিশ্রমিক ২৬ শতাংশ ও শিক্ষার্থী ১৯ শতাংশ। বিভিন্ন মাধ্যমে দীর্ঘদিনের নানা প্রচারণার পরও চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে ৬১ শতাংশ ভুক্তভোগী এখনো ওঝার কাছে যায়। মাত্র ৩৫ শতাংশ যায় প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যসেবাদাতার কাছে। ওঝার অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রায়ই কাজে আসে না। এটি মৃত্যুহার ও স্বাস্থ্যের জটিলতা বাড়িয়ে দেয়।
ডব্লিউএইচওর হিসাবে, বছরে বিশ্বে প্রায় ৫৮ লাখ মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ মারা যায়। এশিয়ায় আক্রান্ত হয় প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ। মৃত্যুর সংখ্যার প্রায় তিন গুণ মানুষ স্থায়ী শারীরিক অক্ষমতা বা অঙ্গচ্ছেদের শিকার হয়। সময়মতো সুচিকিৎসা না পেলে বিষধর সাপের দংশন পক্ষাঘাত (প্যারালাইসিস), রক্তপাতজনিত জটিলতা এবং কিডনি ও টিস্যুর ক্ষতি করতে পারে।
দেশজুড়ে সাপের দংশন ও চিকিৎসার চিত্র
উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত সরকারি চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরের শুরু থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সাপের দংশনের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ১ হাজার ২০৫ জন। তাদের মধ্যে ২৬০ জন বিষধর সাপের দংশনে আক্রান্ত হয়েছিল। আর এতে মারা গেছে ৩০ জন। এর মধ্যে ১০ জন চন্দ্রবোড়া (রাসেলস ভাইপার) এবং বাকিরা কালাচ, কেউটে ও গোখরা সাপের দংশনের শিকার হয়েছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশেষায়িত সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সাপের দংশনের শিকার রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪১৪ জন। মারা গেছে ৭ জন।
দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাপের দংশনের ঘটনা ঘটে খুলনা বিভাগে; প্রতি লাখে ৬১৬ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বিভাগ, যেখানে প্রতি লাখে ৪২৯ জন সাপের দংশনের শিকার হয়। সারা দেশের ২৬টি জেলার সরকারি হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ওই সব এলাকায় সাড়ে ৯ হাজার সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একটা বড় অংশ বিষধর সাপের দংশনের শিকার। গত মাস পর্যন্ত ২ হাজার ৫২৭ রোগীর শরীরে সাপের বিষের প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনম) প্রয়োগ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাপে কাটা রোগীর শরীরে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের সময় তাঁর শ্বাসকষ্ট, কিডনি বিকল হওয়া, রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা, হৃদ্যন্ত্রের জটিলতা এবং অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসাকেন্দ্রে আইসিইউ, অক্সিজেন এবং ডায়ালাইসিস সুবিধা থাকা প্রয়োজন।
প্রতিষেধক ও তার কার্যকারিতা
বাংলাদেশের একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৮২ প্রজাতির সাপের মধ্যে ২৮টি বিষধর। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানভিত্তিক তথ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রকুইস্টে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাটি। এতে বলা হয়েছে, সাপের ধরনভেদে অ্যান্টিভেনমের পরিমাণ ও প্রয়োগও ভিন্ন। যেমন গোখরার কামড়ে ১০০-২০০ মিলিলিটার এবং চন্দ্রবোড়ার ক্ষেত্রে ১০০-৮০০ মিলিলিটার।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রয়োগ করা অ্যান্টিভেনম কার্যকর হচ্ছে শুধু চন্দ্রবোড়া, গোখরা ও ক্রেইটজাতীয় সাপের বিষের বিরুদ্ধে। সামুদ্রিক সাপ, গ্রিন পিট ভাইপার, বিরলজাতের ক্রেইটসহ অন্য কিছু বিষধর সাপের দংশনে এটি অকার্যকর। বাংলাদেশে গোখরার তিনটি এবং ক্রেইটের পাঁচটি প্রজাতি রয়েছে। বর্তমানে দেশে গ্রিন পিট ভাইপারের বিষের প্রতিষেধক খুবই জরুরি। এটা কাছাকাছি দেশের মধ্যে থাইল্যান্ডে তৈরি হয়। তবে সেটা আমদানির অনুমতি নেই। অন্যদিকে সামুদ্রিক সব সাপের বিষ মারাত্মক ক্ষতিকর হলেও দেশে এর প্রতিষেধক পাওয়া যায় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাপের একক প্রজাতির জন্য মনোভ্যালেন্ট এবং দুই বা ততোধিক প্রজাতির জন্য পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম ব্যবহৃত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ব্যবহৃত পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম সব বিষধর সাপের ক্ষেত্রে শতভাগ কার্যকর নয়। এ জন্য স্থানীয় সাপের বিষের ভিত্তিতে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা অপরিহার্য। সার্বিকভাবে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় সাপের দংশনের বিষক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে অপর্যাপ্ত বলে মূল্যায়ন করেছে ডব্লিউএইচও।
অ্যান্টিভেনমের প্রাপ্যতার সংকট
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর অ্যান্টিভেনমের দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে। দেশে এ প্রতিষেধক বাজারজাত করে একটিমাত্র ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। তাদের আমদানি করা অ্যান্টিভেনম ভারতের তামিলনাড়ুতে উৎপাদিত। ভারত থেকে বাল্ক পরিমাণে তরল আমদানি করে দেশীয় প্রতিষ্ঠানটি ভায়ালে ভরে বাজারজাত করে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিষয়ক সরকারি কার্যক্রমের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) বিদ্যমান না থাকায় এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করা হচ্ছে না। হাসপাতালগুলোকে নিজ উদ্যোগে কিনতে বলা হয়েছে। বিষধর সাপের দংশনে আহত রোগীদের চিকিৎসায় বছরে ১০ থেকে ২০ লাখ ভায়াল অ্যান্টিভেনমের প্রয়োজন।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ টক্সিকোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ ফায়েজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাধীনতার আগে ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্টিভেনম উৎপাদন করেছিল। বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের উদ্যোগ নেওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে। মুন্সিগঞ্জে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) নতুন কারখানায় অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।
অ্যান্টিভেনমের অসম প্রাপ্যতা প্রসঙ্গে ডা. ফায়েজ বলেন, চিকিৎসা খাতে সাপের দংশনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। হাসপাতালভিত্তিক তথ্যও আংশিক। কোথায় কত মানুষ সাপের দংশনে মারা যাচ্ছে, তা পূর্ণাঙ্গভাবে জানা নেই। ফলে অ্যান্টিভেনম সমানভাবে বিতরণ করা হয় না। আর আমদানিনির্ভরতা, বরাদ্দ ও দামে সংকট সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অ্যান্টিভেনমের ঘাটতি রয়েছে। উচ্চ আদালত গত আগস্টে উপজেলা পর্যায়ে অ্যান্টিভেনম সরবরাহের জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশনা দেন। ২৮ অক্টোবরের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। ওই নির্দেশনার পর দুই মাস পেরোলেও অনেক এলাকায় এখনো অ্যান্টিভেনম পাওয়া যাচ্ছে না বা খুব কম মজুত রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘অ্যান্টিভেনমের সংকট একেবারে নেই, তা বলা ঠিক হবে না। যেখানে ঘাটতি আছে, সেখানকার হাসপাতালকে পাশের উপজেলা থেকে সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। যে ওষুধ প্রতিষ্ঠান এটি তৈরি করছে, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা উৎপাদন বাড়াচ্ছে। দু-তিন মাসের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভেনম রিসার্চ সেন্টারে দেশীয় অ্যান্টিভেনম তৈরির লক্ষ্যে কাজ চলছে। সেখানে ইতিমধ্যে রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম তৈরির পর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হয়েছে। এতে সাফল্যও পাওয়া গেছে বলে সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা জানিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সমন্বয়ক ডা. আবদুল্লাহ আবু সাঈদ বলেন, ‘সেন্টারের কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি অনুমোদিত হলে আগামী তিন বছর অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা চালিয়ে একটা ফল পাওয়া যাবে। এরপর উৎপাদনে যেতে ইডিসিএলের হয়তো আরও কয়েক বছর সময় লাগবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ৪ লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে ২৪ শতাংশই, অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ মানুষ বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়। আর এই দংশনের কারণে বছরে মৃত্যু হয় ৭ হাজার ৫১১ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এরপরও জনস্বাস্থ্যে সাপের দংশনের সমস্যাটি উপেক্ষিত। প্রাথমিক চিকিৎসার সুযোগ সীমিত। জীবন বাঁচাতে অপরিহার্য অ্যান্টিভেনমের প্রাপ্যতা নিয়ে সমস্যা লেগেই থাকে। খোদ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সাপের দংশনকে বৈশ্বিকভাবে অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ২৪৪ জন সাপের দংশনের শিকার হয় এবং এতে ৫ জনের মৃত্যু ঘটে। মৃত্যু না হলেও সাপের দংশনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের ১১ শতাংশ বিষক্রিয়াজনিত পক্ষাঘাতে ভোগে। বছরে আড়াই হাজার গরুরও মৃত্যু হয় সাপের দংশনে, যা গ্রামীণ অর্থনীতির ওপর তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও একটি চাপ।
পেশাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাপের দংশনের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন গৃহবধূরা। তাঁরা মোট আক্রান্তের ৩২ শতাংশ। এরপর রয়েছে কৃষিশ্রমিক ২৬ শতাংশ ও শিক্ষার্থী ১৯ শতাংশ। বিভিন্ন মাধ্যমে দীর্ঘদিনের নানা প্রচারণার পরও চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে ৬১ শতাংশ ভুক্তভোগী এখনো ওঝার কাছে যায়। মাত্র ৩৫ শতাংশ যায় প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যসেবাদাতার কাছে। ওঝার অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রায়ই কাজে আসে না। এটি মৃত্যুহার ও স্বাস্থ্যের জটিলতা বাড়িয়ে দেয়।
ডব্লিউএইচওর হিসাবে, বছরে বিশ্বে প্রায় ৫৮ লাখ মানুষ সাপের দংশনের শিকার হয়। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ মারা যায়। এশিয়ায় আক্রান্ত হয় প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ। মৃত্যুর সংখ্যার প্রায় তিন গুণ মানুষ স্থায়ী শারীরিক অক্ষমতা বা অঙ্গচ্ছেদের শিকার হয়। সময়মতো সুচিকিৎসা না পেলে বিষধর সাপের দংশন পক্ষাঘাত (প্যারালাইসিস), রক্তপাতজনিত জটিলতা এবং কিডনি ও টিস্যুর ক্ষতি করতে পারে।
দেশজুড়ে সাপের দংশন ও চিকিৎসার চিত্র
উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত সরকারি চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরের শুরু থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সাপের দংশনের শিকার হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ১ হাজার ২০৫ জন। তাদের মধ্যে ২৬০ জন বিষধর সাপের দংশনে আক্রান্ত হয়েছিল। আর এতে মারা গেছে ৩০ জন। এর মধ্যে ১০ জন চন্দ্রবোড়া (রাসেলস ভাইপার) এবং বাকিরা কালাচ, কেউটে ও গোখরা সাপের দংশনের শিকার হয়েছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশেষায়িত সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সাপের দংশনের শিকার রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪১৪ জন। মারা গেছে ৭ জন।
দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাপের দংশনের ঘটনা ঘটে খুলনা বিভাগে; প্রতি লাখে ৬১৬ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বিভাগ, যেখানে প্রতি লাখে ৪২৯ জন সাপের দংশনের শিকার হয়। সারা দেশের ২৬টি জেলার সরকারি হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ওই সব এলাকায় সাড়ে ৯ হাজার সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একটা বড় অংশ বিষধর সাপের দংশনের শিকার। গত মাস পর্যন্ত ২ হাজার ৫২৭ রোগীর শরীরে সাপের বিষের প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনম) প্রয়োগ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাপে কাটা রোগীর শরীরে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের সময় তাঁর শ্বাসকষ্ট, কিডনি বিকল হওয়া, রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা, হৃদ্যন্ত্রের জটিলতা এবং অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসাকেন্দ্রে আইসিইউ, অক্সিজেন এবং ডায়ালাইসিস সুবিধা থাকা প্রয়োজন।
প্রতিষেধক ও তার কার্যকারিতা
বাংলাদেশের একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৮২ প্রজাতির সাপের মধ্যে ২৮টি বিষধর। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানভিত্তিক তথ্যসেবা প্রতিষ্ঠান প্রকুইস্টে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাটি। এতে বলা হয়েছে, সাপের ধরনভেদে অ্যান্টিভেনমের পরিমাণ ও প্রয়োগও ভিন্ন। যেমন গোখরার কামড়ে ১০০-২০০ মিলিলিটার এবং চন্দ্রবোড়ার ক্ষেত্রে ১০০-৮০০ মিলিলিটার।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রয়োগ করা অ্যান্টিভেনম কার্যকর হচ্ছে শুধু চন্দ্রবোড়া, গোখরা ও ক্রেইটজাতীয় সাপের বিষের বিরুদ্ধে। সামুদ্রিক সাপ, গ্রিন পিট ভাইপার, বিরলজাতের ক্রেইটসহ অন্য কিছু বিষধর সাপের দংশনে এটি অকার্যকর। বাংলাদেশে গোখরার তিনটি এবং ক্রেইটের পাঁচটি প্রজাতি রয়েছে। বর্তমানে দেশে গ্রিন পিট ভাইপারের বিষের প্রতিষেধক খুবই জরুরি। এটা কাছাকাছি দেশের মধ্যে থাইল্যান্ডে তৈরি হয়। তবে সেটা আমদানির অনুমতি নেই। অন্যদিকে সামুদ্রিক সব সাপের বিষ মারাত্মক ক্ষতিকর হলেও দেশে এর প্রতিষেধক পাওয়া যায় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাপের একক প্রজাতির জন্য মনোভ্যালেন্ট এবং দুই বা ততোধিক প্রজাতির জন্য পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম ব্যবহৃত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ব্যবহৃত পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম সব বিষধর সাপের ক্ষেত্রে শতভাগ কার্যকর নয়। এ জন্য স্থানীয় সাপের বিষের ভিত্তিতে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা অপরিহার্য। সার্বিকভাবে দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় সাপের দংশনের বিষক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে অপর্যাপ্ত বলে মূল্যায়ন করেছে ডব্লিউএইচও।
অ্যান্টিভেনমের প্রাপ্যতার সংকট
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর অ্যান্টিভেনমের দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে। দেশে এ প্রতিষেধক বাজারজাত করে একটিমাত্র ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। তাদের আমদানি করা অ্যান্টিভেনম ভারতের তামিলনাড়ুতে উৎপাদিত। ভারত থেকে বাল্ক পরিমাণে তরল আমদানি করে দেশীয় প্রতিষ্ঠানটি ভায়ালে ভরে বাজারজাত করে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, স্বাস্থ্যবিষয়ক সরকারি কার্যক্রমের কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) বিদ্যমান না থাকায় এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনম সরবরাহ করা হচ্ছে না। হাসপাতালগুলোকে নিজ উদ্যোগে কিনতে বলা হয়েছে। বিষধর সাপের দংশনে আহত রোগীদের চিকিৎসায় বছরে ১০ থেকে ২০ লাখ ভায়াল অ্যান্টিভেনমের প্রয়োজন।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ টক্সিকোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ ফায়েজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাধীনতার আগে ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্টিভেনম উৎপাদন করেছিল। বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের উদ্যোগ নেওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে। মুন্সিগঞ্জে সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) নতুন কারখানায় অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে।
অ্যান্টিভেনমের অসম প্রাপ্যতা প্রসঙ্গে ডা. ফায়েজ বলেন, চিকিৎসা খাতে সাপের দংশনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। হাসপাতালভিত্তিক তথ্যও আংশিক। কোথায় কত মানুষ সাপের দংশনে মারা যাচ্ছে, তা পূর্ণাঙ্গভাবে জানা নেই। ফলে অ্যান্টিভেনম সমানভাবে বিতরণ করা হয় না। আর আমদানিনির্ভরতা, বরাদ্দ ও দামে সংকট সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অ্যান্টিভেনমের ঘাটতি রয়েছে। উচ্চ আদালত গত আগস্টে উপজেলা পর্যায়ে অ্যান্টিভেনম সরবরাহের জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশনা দেন। ২৮ অক্টোবরের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। ওই নির্দেশনার পর দুই মাস পেরোলেও অনেক এলাকায় এখনো অ্যান্টিভেনম পাওয়া যাচ্ছে না বা খুব কম মজুত রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘অ্যান্টিভেনমের সংকট একেবারে নেই, তা বলা ঠিক হবে না। যেখানে ঘাটতি আছে, সেখানকার হাসপাতালকে পাশের উপজেলা থেকে সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। যে ওষুধ প্রতিষ্ঠান এটি তৈরি করছে, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা উৎপাদন বাড়াচ্ছে। দু-তিন মাসের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভেনম রিসার্চ সেন্টারে দেশীয় অ্যান্টিভেনম তৈরির লক্ষ্যে কাজ চলছে। সেখানে ইতিমধ্যে রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম তৈরির পর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হয়েছে। এতে সাফল্যও পাওয়া গেছে বলে সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা জানিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সমন্বয়ক ডা. আবদুল্লাহ আবু সাঈদ বলেন, ‘সেন্টারের কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি অনুমোদিত হলে আগামী তিন বছর অ্যান্টিভেনম উৎপাদনের লক্ষ্যে গবেষণা চালিয়ে একটা ফল পাওয়া যাবে। এরপর উৎপাদনে যেতে ইডিসিএলের হয়তো আরও কয়েক বছর সময় লাগবে।’

বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ জনস্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন, মশা নির্মূল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা ও কৌশলের পাশাপাশি মশা পরীক্ষা এবং গবেষণাগারও প্রয়োজন।
১৪ জুলাই ২০২৫
দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
২৫ মিনিট আগে
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রে অনিবন্ধিত ও অননুমোদিত ওষুধ লেখা হলে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের কাছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পছন্দ, বিসিএস ও মেধাক্রমসহ অন্যান্য বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অটোমেশন পদ্ধতিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবেদনের ভিত্তিতে বদলি-পদায়ন কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখা জরুরি।
৬ ঘণ্টা আগে