আজকের পত্রিকা ডেস্ক
করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত না হলেও মহামারির সময়ে মানসিক, সামাজিক ও আর্থিক চাপ মানুষের মস্তিষ্কের বয়স বাড়িয়েছে। এমন উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যামের নেতৃত্বে পরিচালিত এক নতুন গবেষণায়।
গবেষকেরা দেখিয়েছেন, কোভিড মহামারির সময় মানুষের মস্তিষ্ক গড়ে পাঁচ মাসের বেশি বেড়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই পরিবর্তনটি দেখা গেছে যারা কোভিডে আক্রান্ত হয়নি, তাদের মধ্যেও। বিশেষ করে বয়স্ক, পুরুষ এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
মস্তিষ্ক কতটা বয়স্ক হয়েছে তা নির্ণয়ের জন্য গবেষকেরা ‘ব্রেইন এজ’ নামের মেশিন লার্নিং মডেল তৈরি করেন। এতে এক ব্যক্তির মস্তিষ্ক তার প্রকৃত বয়সের তুলনায় কতটা বয়স্ক দেখায় তা হিসাব করা হয়। এই মডেল তৈরিতে ১৫ হাজার সুস্থ ব্যক্তির ডেটা ব্যবহার করা হয়।
এরপর এআই মডেলটি ব্যবহার করে তাঁরা দুটি গ্রুপের মস্তিষ্ক স্ক্যান বিশ্লেষণ করেন। একটি গ্রুপের মানুষের কোভিড মহামারির আগে মস্তিষ্ক স্ক্যান করা হয়। আরেকটি গ্রুপের মানুষের মস্তিষ্ক কোভিড মহামারির আগে ও পরে উভয় সময়ে স্ক্যান করা হয়েছিল। এর ফলে মহামারির প্রভাব বুঝতে আরও নির্ভুল অনুমান সম্ভব হয়।
বিশেষভাবে, পুরুষ এবং যারা সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত তাদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বার্ধক্যের হার ছিল আরও তীব্র। তবে, কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মস্তিষ্কের এই বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে কিছু কগনিটিভ (জ্ঞানতাত্ত্বিক) দক্ষতা (বিশেষ করে চিন্তার নমনীয়তা ও কাজের গতি) ক্ষীণভাবে হ্রাস পেতে দেখা যায়।
গবেষণার প্রধান নিউরোলজিস্ট ড. আলি-রেজা মোহাম্মাদি-নেজাদ বলেন, ‘সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় ছিল—যারা কখনো কোভিডে আক্রান্ত হয়নি, তাদের মস্তিষ্কেও বয়স বৃদ্ধির লক্ষণ দেখা গেছে। এটি দেখায় বিচ্ছিন্নতা, অনিশ্চয়তা ইত্যাদির মতো মহামারির অভিজ্ঞতা আমাদের মস্তিষ্কে কতটা প্রভাব ফেলেছে।’
তবে গবেষকদের আশার কথা হলো, এই পরিবর্তনগুলো স্থায়ী না-ও হতে পারে। সময়ের সঙ্গে মস্তিষ্ক আগের অবস্থায় ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
অধ্যয়নে মাত্র দুটি সময়ের মস্তিষ্ক স্ক্যান বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যার মানে হলো—পরবর্তী সময়ে কোনো পুনরুদ্ধার ঘটেছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিউরোলজিস্ট ড. ডরোথি আউয়ার বলেন, ‘আমরা এখনই বলতে পারি না পরিবর্তনগুলো উল্টে যাবে কি না, তবে এটা সম্ভব এবং সেই ভাবনাটা আশাব্যঞ্জক।’
মহামারির শুরুর কয়েক বছরে লাখ লাখ মানুষ মারা যায়, আর কোটি কোটি মানুষ শোক, একাকিত্ব, হতাশা, দুশ্চিন্তা, আর্থিক টানাপোড়েন ও ঘুমের সমস্যায় ভুগেছে।
এর আগে আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-পরবর্তী সময়ে কিশোর-কিশোরীদের মস্তিষ্ক দ্রুত পরিণত (mature) হয়ে ওঠে, এমনকি তাদের মস্তিষ্কে এমন পরিবর্তন দেখা গেছে, যা সাধারণত শিশু নির্যাতন, অবহেলা বা পারিবারিক অশান্তিতে ভোগা কিশোরদের মধ্যেই দেখা যায়।
বিশেষ করে মেয়েদের মস্তিষ্কে কর্টেক্সের উল্লেখযোগ্য পাতলা হয়ে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে, যা একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। কর্টেক্স হলো মস্তিষ্কের সেই অংশ যা অনুভূতি, চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নতুন এই গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স্ক মানুষ এবং আর্থসামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যেও মস্তিষ্কে বয়স বৃদ্ধির লক্ষণ বেশি দেখা গেছে।
এর আগেও গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ও দারিদ্র্য—দুটিই মানুষের মস্তিষ্কে গঠনগত পরিবর্তন আনতে পারে। সেগুলোই হয়তো এই পরিবর্তনের কারণ হয়ে থাকতে পারে।
গবেষক ড. আউয়ার বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—আমাদের মস্তিষ্কের সুস্থতা শুধু রোগের ওপর নির্ভর করে না, বরং আমাদের প্রতিদিনের পরিবেশ ও অভিজ্ঞতার ওপরও নির্ভর করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মহামারি মানুষের জীবনে চাপ তৈরি করেছিল, বিশেষ করে যারা আগে থেকেই বৈষম্যের শিকার ছিল।’
গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার কমিউনিকেশনসে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত না হলেও মহামারির সময়ে মানসিক, সামাজিক ও আর্থিক চাপ মানুষের মস্তিষ্কের বয়স বাড়িয়েছে। এমন উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যামের নেতৃত্বে পরিচালিত এক নতুন গবেষণায়।
গবেষকেরা দেখিয়েছেন, কোভিড মহামারির সময় মানুষের মস্তিষ্ক গড়ে পাঁচ মাসের বেশি বেড়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই পরিবর্তনটি দেখা গেছে যারা কোভিডে আক্রান্ত হয়নি, তাদের মধ্যেও। বিশেষ করে বয়স্ক, পুরুষ এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
মস্তিষ্ক কতটা বয়স্ক হয়েছে তা নির্ণয়ের জন্য গবেষকেরা ‘ব্রেইন এজ’ নামের মেশিন লার্নিং মডেল তৈরি করেন। এতে এক ব্যক্তির মস্তিষ্ক তার প্রকৃত বয়সের তুলনায় কতটা বয়স্ক দেখায় তা হিসাব করা হয়। এই মডেল তৈরিতে ১৫ হাজার সুস্থ ব্যক্তির ডেটা ব্যবহার করা হয়।
এরপর এআই মডেলটি ব্যবহার করে তাঁরা দুটি গ্রুপের মস্তিষ্ক স্ক্যান বিশ্লেষণ করেন। একটি গ্রুপের মানুষের কোভিড মহামারির আগে মস্তিষ্ক স্ক্যান করা হয়। আরেকটি গ্রুপের মানুষের মস্তিষ্ক কোভিড মহামারির আগে ও পরে উভয় সময়ে স্ক্যান করা হয়েছিল। এর ফলে মহামারির প্রভাব বুঝতে আরও নির্ভুল অনুমান সম্ভব হয়।
বিশেষভাবে, পুরুষ এবং যারা সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত তাদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বার্ধক্যের হার ছিল আরও তীব্র। তবে, কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মস্তিষ্কের এই বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে কিছু কগনিটিভ (জ্ঞানতাত্ত্বিক) দক্ষতা (বিশেষ করে চিন্তার নমনীয়তা ও কাজের গতি) ক্ষীণভাবে হ্রাস পেতে দেখা যায়।
গবেষণার প্রধান নিউরোলজিস্ট ড. আলি-রেজা মোহাম্মাদি-নেজাদ বলেন, ‘সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় ছিল—যারা কখনো কোভিডে আক্রান্ত হয়নি, তাদের মস্তিষ্কেও বয়স বৃদ্ধির লক্ষণ দেখা গেছে। এটি দেখায় বিচ্ছিন্নতা, অনিশ্চয়তা ইত্যাদির মতো মহামারির অভিজ্ঞতা আমাদের মস্তিষ্কে কতটা প্রভাব ফেলেছে।’
তবে গবেষকদের আশার কথা হলো, এই পরিবর্তনগুলো স্থায়ী না-ও হতে পারে। সময়ের সঙ্গে মস্তিষ্ক আগের অবস্থায় ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
অধ্যয়নে মাত্র দুটি সময়ের মস্তিষ্ক স্ক্যান বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যার মানে হলো—পরবর্তী সময়ে কোনো পুনরুদ্ধার ঘটেছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিউরোলজিস্ট ড. ডরোথি আউয়ার বলেন, ‘আমরা এখনই বলতে পারি না পরিবর্তনগুলো উল্টে যাবে কি না, তবে এটা সম্ভব এবং সেই ভাবনাটা আশাব্যঞ্জক।’
মহামারির শুরুর কয়েক বছরে লাখ লাখ মানুষ মারা যায়, আর কোটি কোটি মানুষ শোক, একাকিত্ব, হতাশা, দুশ্চিন্তা, আর্থিক টানাপোড়েন ও ঘুমের সমস্যায় ভুগেছে।
এর আগে আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-পরবর্তী সময়ে কিশোর-কিশোরীদের মস্তিষ্ক দ্রুত পরিণত (mature) হয়ে ওঠে, এমনকি তাদের মস্তিষ্কে এমন পরিবর্তন দেখা গেছে, যা সাধারণত শিশু নির্যাতন, অবহেলা বা পারিবারিক অশান্তিতে ভোগা কিশোরদের মধ্যেই দেখা যায়।
বিশেষ করে মেয়েদের মস্তিষ্কে কর্টেক্সের উল্লেখযোগ্য পাতলা হয়ে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে, যা একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। কর্টেক্স হলো মস্তিষ্কের সেই অংশ যা অনুভূতি, চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নতুন এই গবেষণায় দেখা গেছে, বয়স্ক মানুষ এবং আর্থসামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যেও মস্তিষ্কে বয়স বৃদ্ধির লক্ষণ বেশি দেখা গেছে।
এর আগেও গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ও দারিদ্র্য—দুটিই মানুষের মস্তিষ্কে গঠনগত পরিবর্তন আনতে পারে। সেগুলোই হয়তো এই পরিবর্তনের কারণ হয়ে থাকতে পারে।
গবেষক ড. আউয়ার বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—আমাদের মস্তিষ্কের সুস্থতা শুধু রোগের ওপর নির্ভর করে না, বরং আমাদের প্রতিদিনের পরিবেশ ও অভিজ্ঞতার ওপরও নির্ভর করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মহামারি মানুষের জীবনে চাপ তৈরি করেছিল, বিশেষ করে যারা আগে থেকেই বৈষম্যের শিকার ছিল।’
গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার কমিউনিকেশনসে।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
দেশে বর্তমানে যেসব ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাচ্ছে, তাদের বেশির ভাগের মৃত্যুর কারণ শক সিনড্রোম। এসব রোগীর অর্ধেকের বেশি মারা যাচ্ছে হাসপাতালে ভর্তির এক দিনের মধ্যে। দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আজ সোমবার বিকেলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর...
১৫ ঘণ্টা আগেদেশে ডেঙ্গু ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চলতি সেপ্টেম্বরে মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রতিদিন নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। সর্বশেষ গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এ সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৪০ জন রোগী।
১ দিন আগেদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে; যা এক দিনের মধ্যে এ বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যা। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৪০ জন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও এক দিনে সর্বোচ্চ।
২ দিন আগেডেঙ্গুতে দুদিনে মারা যাওয়া ১২ জনের মধ্যে ছয়জন নারী ও ছয়জন পুরুষ। তাদের মধ্যে বরিশাল বিভাগের পাঁচজন, চট্টগ্রাম বিভাগের একজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তিনজন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দুজন ও ময়মনসিংহ বিভাগের একজন রয়েছে।
২ দিন আগে