Ajker Patrika

করোনা, এইডস ও ক্যানসার মেডিকেল টেস্টিং কিটও মেয়াদোত্তীর্ণ 

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১৯: ৫৪
করোনা, এইডস ও ক্যানসার মেডিকেল টেস্টিং কিটও মেয়াদোত্তীর্ণ 

২০১০ সাল থেকে মেডিকেল পণ্য সরবরাহ করে আসছে বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল। অবৈধ পথে বিদেশ থেকে কাঁচামাল ও টেস্টিং কিট এনে বাজারজাত করছে তারা। এই সব কিট ও রি-এজেন্টের অধিকাংশই অনুমোদনহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ।  

বায়োল্যাবের দুইটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান আছে। একটির নাম হাইটেক হেলথ কেয়ার ও অন্যটি এক্সন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড। এই তিন প্রতিষ্ঠান মিলে রাজধানীর সরকারি ও বেসরকারি একাধিক হাসপাতলে এসব মেডিকেল পণ্য সরবরাহ করে আসছে। হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। অতি স্বল্পমূল্যে নকল কিট সংগ্রহ করছে এসব হাসপাতালে কর্তাব্যক্তিরা।  

র‍্যাব-২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এই কিট সরবরাহ করতো। যেগুলো দিয়ে পরীক্ষা করলে রেজাল্ট ভুল আসতো। এর মধ্যে করোনাভাইরাস, এইচআইভি, ক্যান্সারের মত বড় রোগগুলোর পরীক্ষাও হতো। যার সবগুলো রি-এজেন্ট ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা টেম্পারিং করে মেয়াদ বাড়ানো।    

ইমরান উল্লাহ সরকার আরও বলেন, আমরা ওইসব হাসপাতালগুলোর বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করছি। তারা কতদিন যাবৎ এই তিন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কিট ও রি-এজেন্ট সংগ্রহ করছে, কোন কোন কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।     

প্রসঙ্গত, গতকাল বৃহস্পতিবার অননুমোদিত মেডিকেল ডিভাইস আমদানি, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ মেডিকেল টেস্টিং কিট এবং রি-এজেন্টে জালিয়াতির মাধ্যমে নতুন করে মেয়াদ বসিয়ে বিক্রি ও বাজারজাতকরণের অভিযানে রাজধানীর এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের মূলহোতাসহ নয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-২।     

এসময় প্রতিষ্ঠান তিনটির ওয়্যারহাউজে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ওষুধ প্রশাসন এ অভিযান চালিয়ে চার ট্রাকে প্রায় ১২ টন মেডিকেল পণ্য জব্দ করে। 

এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল এর স্বত্ত্বাধিকারী শামীম মোল্লা, ম্যানেজার   শহীদুল আলম, মাহমুদুল হাসান (এমডি, এক্সন টেকনলজিস এন্ড সার্ভিসেস লিমিটেড), এস এম মোস্তফা কামাল (এমডি, হাইটেক হেলথ কেয়ার লিমিটেড), আবদুল্লাহ আল বাকী ছাব্বির (ইঞ্জিনিয়ার, বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল), জিয়াউর রহমান (অফিস সহকারী, বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল), মো. সুমন (হিসাব রক্ষক, বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল), জাহিদুল আমিন পুলক (অফিস ক্লার্ক ও মার্কেটিং অফিসার, বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল) ও সোহেল রানা (সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার, বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল)।   

শুক্রবার র‍্যাব-২ সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে মোহাম্মদপুরে বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল অভিযান চলাই। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বনানী বাকি দুই প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়।  

প্রাথমিক অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা জানান, বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় টেস্ট কিট এবং রি-এজেন্টও তারা নিয়মিতই সরবরাহ করে। এমন কি এইডস, ক্যান্সার রোগ নির্ণয়ের জন্য নির্ধারিত প্যাথলোজিক্যাল টেস্ট কিট ও রি-এজেন্টও রয়েছে এই তালিকায়। যা তাদের সংরক্ষণে ২০২০ সালের মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় পাওয়া যায়।   

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, তারা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এই কিট সরবরাহ করতো। তদন্তে এই প্রতিষ্ঠানের নাম বের হয়ে আসবে। অধিকাংশ সামগ্রী তারা আমদানি করে চীন থেকে। আমদানি রফতানি চ্যানেলের মাধ্যমে তারা এসব সামগ্রী আনে। এছাড়া জার্মানি ও ইউরোপের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের থেকেও এই সামগ্রী আনতো। প্রতিষ্ঠানগুলোর একটিও স্বনামধন্য নয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই কিট ও মেডিকেল সরঞ্জাম  আমদানির কোন অনুমোদন দেয়নি।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিক্ষোভ থেকে সহিংসতায় উত্তাল ভাঙ্গা, মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন বেতনকাঠামো ৬ মাসের আগেই চূড়ান্ত করার আশ্বাস

১২ জেলায় বন্যার শঙ্কা, বৃষ্টি থাকবে কত দিন—জানাল আবহাওয়া অফিস

পদ্মা সেতু এলাকায় বসছে সোলার প্যানেল, ২৩ কোটি টাকার কাজ পেল ওমেরা

পাকিস্তানের জাতীয় সংগীতের সময় বাজল উৎসবের গান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত