ডা. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান
বাড়িতে পোষ্য প্রাণী রাখতে পছন্দ করেন অনেকে। এর মধ্যে ভালোবেসে কুকুর পোষেন এমন ব্যক্তির সংখ্যা নিছক কম নয়। তবে বিশ্বস্ত হিসেবে খ্যাত এই প্রাণীর বেশির ভাগের শরীরে রয়েছে র্যাবিস ভাইরাস। এই ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে হতে পারে জলাতঙ্ক রোগ।
শুধু কুকুর নয়, বিড়াল, শিয়াল ও অন্যান্য হিংস্র বন্য প্রাণী এবং বাদুড়—এগুলো সবই রেবিড অ্যানিমেল। রেবিড অ্যানিমেল হলো সেই সব প্রাণী, যাদের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগের জীবাণু থাকে। এদের কামড় বা আঁচড়ে এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি; বিশেষ করে র্যাবিসে আক্রান্ত কুকুর কামড় দিলে ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে জলাতঙ্ক রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তবে কুকুর কামড় দিলেই যে জলাতঙ্ক রোগ হবে, তা নয়। সেই কুকুরের মধ্যে জলাতঙ্কের জীবাণু থাকতে হবে। র্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুরের লালা থেকে ভাইরাসটি মানুষের শরীরে ছড়ায়। র্যাবিস ভাইরাসযুক্ত কুকুরের লালা যদি কামড়, আঁচড় বা শরীরের ক্ষতস্থানের সংস্পর্শে আসে, তাহলেই জলাতঙ্ক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই কুকুর কামড়ালে দেরি না করে এ রোগের টিকা নিতে হবে।
জলাতঙ্কের সময়কাল
কুকুরের কামড়ের কারণে র্যাবিস ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পর লক্ষণ বা উপসর্গ বিকাশে এক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে সাধারণত এই সময়কাল বা ইনকিউবেশন পিরিয়ড ৩ মাস ধরা হয়। অনেক ক্ষেত্রে এ সময় ক্ষতস্থানের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে।কুকুরের কামড় বা আঁচড় যদি ঘাড় কিংবা মাথায় হয়, তাহলে এই সময়কাল কমে আসবে; অর্থাৎ সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের কত কাছাকাছি কামড় বা আঁচড়ের অবস্থান, তার ওপর নির্ভর করবে সময়কাল বা ইনকিউবেশন পিরিয়ড।
জলাতঙ্কের লক্ষণ
কুকুর কামড়ালে বা আঁচড় দিলে করণীয়
কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে ক্ষত তৈরি হলে ক্ষতস্থান তাৎক্ষণিকভাবে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে কাপড় ধোয়ার ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে ফেনা উঠিয়ে ধুতে হবে। আতঙ্কিত না হয়ে অবশ্যই অতিদ্রুত টিকা নিতে হবে।
রাজধানীর মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল জলাতঙ্ক রোগীদের জন্য কেন্দ্রীয় সেন্টার। সেখান থেকে টিকা নেওয়া যাবে। পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ ৫টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়। ঢাকার বাইরে জেলা হাসপাতাল এবং প্রায় ২০০টি উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে বিনা মূল্যে জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী টিকা নিতে হবে।
ক্ষতস্থানের ক্যাটাগরি
কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে সৃষ্ট ক্ষতস্থানকে ৩টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়।
১. শরীরে কোনো ক্ষত থাকে না। কুকুরের সংস্পর্শে আসা, কুকুরকে খাওয়ানোর সময়, আদরের সময় লালা লেগে গেছে কিন্তু কোনো কামড় বা আঁচড় হয়নি বা শরীরের কোনো ক্ষতস্থানে লালা লাগেনি। এর জন্য টিকা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। জায়গাগুলো সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
২. এ ক্ষেত্রে কুকুরের কামড় বা আঁচড়ের ফলে শরীরে ক্ষত হয়, তবে রক্তপাত হয় না। এর জন্য অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন (এআরভি) নিতে হবে।
৩. এ ক্ষেত্রে শরীরে ক্ষত থাকে ও রক্তপাত হয়। এ ছাড়া মাথায়, বুকে বা ঘাড়ে কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে রক্তপাত হোক বা না হোক, সেটিকে ক্যাটাগরি ৩ ধরা হয়। কারণ, এই জায়গাগুলো মস্তিষ্কের একদম কাছাকাছি। র্যাবিস ভাইরাসটি মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে
প্রদাহ সৃষ্টি করে। এতে রোগীর মৃত্যু হয়। এ ক্ষেত্রে রোগীকে জলাতঙ্কের টিকা নিতে হবে; বিশেষ করে ক্যাটাগরি ৩-এর জন্য অ্যান্টি র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি) ইনজেকশনও নিতে হবে।
ডা. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক, কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, উত্তরা, ঢাকা
বাড়িতে পোষ্য প্রাণী রাখতে পছন্দ করেন অনেকে। এর মধ্যে ভালোবেসে কুকুর পোষেন এমন ব্যক্তির সংখ্যা নিছক কম নয়। তবে বিশ্বস্ত হিসেবে খ্যাত এই প্রাণীর বেশির ভাগের শরীরে রয়েছে র্যাবিস ভাইরাস। এই ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে হতে পারে জলাতঙ্ক রোগ।
শুধু কুকুর নয়, বিড়াল, শিয়াল ও অন্যান্য হিংস্র বন্য প্রাণী এবং বাদুড়—এগুলো সবই রেবিড অ্যানিমেল। রেবিড অ্যানিমেল হলো সেই সব প্রাণী, যাদের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগের জীবাণু থাকে। এদের কামড় বা আঁচড়ে এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি; বিশেষ করে র্যাবিসে আক্রান্ত কুকুর কামড় দিলে ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে জলাতঙ্ক রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তবে কুকুর কামড় দিলেই যে জলাতঙ্ক রোগ হবে, তা নয়। সেই কুকুরের মধ্যে জলাতঙ্কের জীবাণু থাকতে হবে। র্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুরের লালা থেকে ভাইরাসটি মানুষের শরীরে ছড়ায়। র্যাবিস ভাইরাসযুক্ত কুকুরের লালা যদি কামড়, আঁচড় বা শরীরের ক্ষতস্থানের সংস্পর্শে আসে, তাহলেই জলাতঙ্ক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই কুকুর কামড়ালে দেরি না করে এ রোগের টিকা নিতে হবে।
জলাতঙ্কের সময়কাল
কুকুরের কামড়ের কারণে র্যাবিস ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পর লক্ষণ বা উপসর্গ বিকাশে এক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে সাধারণত এই সময়কাল বা ইনকিউবেশন পিরিয়ড ৩ মাস ধরা হয়। অনেক ক্ষেত্রে এ সময় ক্ষতস্থানের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে।কুকুরের কামড় বা আঁচড় যদি ঘাড় কিংবা মাথায় হয়, তাহলে এই সময়কাল কমে আসবে; অর্থাৎ সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের কত কাছাকাছি কামড় বা আঁচড়ের অবস্থান, তার ওপর নির্ভর করবে সময়কাল বা ইনকিউবেশন পিরিয়ড।
জলাতঙ্কের লক্ষণ
কুকুর কামড়ালে বা আঁচড় দিলে করণীয়
কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে ক্ষত তৈরি হলে ক্ষতস্থান তাৎক্ষণিকভাবে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে কাপড় ধোয়ার ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে ফেনা উঠিয়ে ধুতে হবে। আতঙ্কিত না হয়ে অবশ্যই অতিদ্রুত টিকা নিতে হবে।
রাজধানীর মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল জলাতঙ্ক রোগীদের জন্য কেন্দ্রীয় সেন্টার। সেখান থেকে টিকা নেওয়া যাবে। পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ ৫টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়। ঢাকার বাইরে জেলা হাসপাতাল এবং প্রায় ২০০টি উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে বিনা মূল্যে জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী টিকা নিতে হবে।
ক্ষতস্থানের ক্যাটাগরি
কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে সৃষ্ট ক্ষতস্থানকে ৩টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়।
১. শরীরে কোনো ক্ষত থাকে না। কুকুরের সংস্পর্শে আসা, কুকুরকে খাওয়ানোর সময়, আদরের সময় লালা লেগে গেছে কিন্তু কোনো কামড় বা আঁচড় হয়নি বা শরীরের কোনো ক্ষতস্থানে লালা লাগেনি। এর জন্য টিকা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। জায়গাগুলো সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
২. এ ক্ষেত্রে কুকুরের কামড় বা আঁচড়ের ফলে শরীরে ক্ষত হয়, তবে রক্তপাত হয় না। এর জন্য অ্যান্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন (এআরভি) নিতে হবে।
৩. এ ক্ষেত্রে শরীরে ক্ষত থাকে ও রক্তপাত হয়। এ ছাড়া মাথায়, বুকে বা ঘাড়ে কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে রক্তপাত হোক বা না হোক, সেটিকে ক্যাটাগরি ৩ ধরা হয়। কারণ, এই জায়গাগুলো মস্তিষ্কের একদম কাছাকাছি। র্যাবিস ভাইরাসটি মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে
প্রদাহ সৃষ্টি করে। এতে রোগীর মৃত্যু হয়। এ ক্ষেত্রে রোগীকে জলাতঙ্কের টিকা নিতে হবে; বিশেষ করে ক্যাটাগরি ৩-এর জন্য অ্যান্টি র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি) ইনজেকশনও নিতে হবে।
ডা. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক, কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, উত্তরা, ঢাকা
পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের সিটি স্ক্যান মেশিনের ফিল্মসংকট দেখা দিয়েছে। এতে সিটি স্ক্যান করার প্রয়োজন এমন রোগী ও তাঁদের স্বজনদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে যাঁদের জরুরি ভিত্তিতে সিটি স্ক্যান করা প্রয়োজন, তাঁরা পড়ছেন সবচেয়ে বেশি...
৪ ঘণ্টা আগেআশার কথা হলো, পরিবর্তন আসছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক যুগান্তকারী পরীক্ষায় দেখা গেছে, তীব্রভাবে চিনাবাদামের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত দুই-তৃতীয়াংশ প্রাপ্তবয়স্ককে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে চিনাবাদাম খাইয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আনা সম্ভব হয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগেঅতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার বা ‘আল্ট্রা প্রসেসড ফুড’ (ইউপিএফ) বেশি খাওয়ার কারণে শুধু স্থূলতা, হতাশা, ডায়াবেটিস কিংবা হৃদরোগই নয়, বাড়ছে অকালমৃত্যুর ঝুঁকিও। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু ঘটছে।
১৬ ঘণ্টা আগেদেশের প্রায় পাঁচ লাখ শিশু সময়মতো টিকার সব ডোজ পাচ্ছে না। তাদের মধ্যে ৭০ হাজার শিশু কোনো টিকাই পায় না। টিকা না পাওয়ার হার শহরাঞ্চলে বেশি। টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও এসব তথ্য উঠে এসেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)...
১ দিন আগে