Ajker Patrika

বন্যাকবলিত বুড়িচংয়ে পাতিলে থাকা শিশুর ছবি নিয়ে গালগল্প, যা বললেন চিত্রগ্রাহক

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ২২: ৪৩
বন্যাকবলিত বুড়িচংয়ে পাতিলে থাকা শিশুর ছবি নিয়ে গালগল্প, যা বললেন চিত্রগ্রাহক

একটি বৃহৎ আকারের পাতিলে শুয়ে আছে একটি শিশু। মাথার নিচে একটি তোয়ালে, পাতিলে একটি ব্যাগও দেখা যাচ্ছে। আশপাশে মানুষজন পাতিলটি ঘিরে আছে—এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, শিশুটির পরিবারের সব সদস্য মারা গেছে। শুধু আধমরা অবস্থায় শিশুটি জড়সড় হয়ে আছে একটি পাতিলের মধ্যে। পাশে রাখা ব্যাগে শিশুর প্রয়োজনীয় খাবারসহ সবকিছু রাখা।

ফেসবুক পোস্টগুলোতে ঘটনার স্থান উল্লেখ করা হয়েছে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের খারাতাইয়া এলাকা। ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানে ভারত থেকে আসা ঢলের কারণে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে যে কটি জেলা বিপর্যস্ত তার মধ্যে কুমিল্লা একটি।

ফেসবুকে ভাইরাল পোস্টগুলোতে থাকা স্থানের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নাজমুল হাসান তপন নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ছবিটি পাওয়া যায়। আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় ওই অ্যাকাউন্টে ছবিটি পোস্ট করা হয়। ছবিটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘এই কি তবে অস্তিত্ব? খারাতাইয়া, বুড়িচং থেকে বলছি। ছবিটি আমি নিজে তুলেছি।’

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বন্যায় পাতিলে শুয়ে থাকা শিশুটি সম্পর্কে চিত্রগ্রাহকের ফেসবুক পোস্ট। ছবি: ফেসবুক নাজমুল হাসান তপনের দেওয়া পোস্টটি রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার শেয়ার হয়েছে, রিঅ্যাকশন পড়েছে ২ হাজার। ছবিটির কমেন্টবক্সে সন্ধ্যা ৬টায় তপন লিখেছেন, ‘বাচ্চা এবং তার পরিবার এখন নিরাপদ ও সুস্থ আছেন।’ ৬টা ২৩ মিনিটে দেওয়া আরেকটি কমেন্টে তপন লিখেছেন, ‘কেউ গুজবে কান দেবেন না। বাচ্চা ও তার পরিবার সুস্থ আছে। ছবিটা আমার নিজ মোবাইলে আমি নিজে তুলেছি।’ কমেন্টটিতে ছবিটি যে তাঁর তোলা, সেটির প্রমাণ হিসেবে ছবির মেটা ডেটা শেয়ার করেছেন। এতে দেখা যাচ্ছে, ছবিটি তিনি আজ বেলা ২টা ২৭ মিনিটে তুলেছেন। 

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বন্যায় পাতিলে শুয়ে থাকা শিশুটি সম্পর্কে চিত্রগ্রাহকের কমেন্ট। ছবি: ফেসবুক পরে ছবিটি সম্পর্কে জানতে নাজমুল হাসান তপনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২–২৩ সেশনের শিক্ষার্থী। আমার বাসা হচ্ছে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে গোমতীর দক্ষিণ তীর। যেহেতু গোমতীর উত্তরে বন্যা হচ্ছে, আমরা সকালের দিকে ওদিকে উদ্ধার কাজে যাই। উদ্ধারকাজে পর্যাপ্তসংখ্যক মানুষ থাকায় আমরা পরে ত্রাণ নিয়ে কাজ শুরু করি। আমরা খাড়াতাইয়া নতুন বাজার ব্রিজের ওপরে ছিলাম। ওই সময় ট্রলারে করে বাচ্চাটা আসে। বাচ্চাটা তখন পাতিলে ছিল, সঙ্গে মা ছিল। আমি শতভাগ শিওর। আর সম্ভবত দাদি ছিল।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ট্রলার থেকে বাচ্চাটাকে নামিয়ে নতুন বাজার ব্রিজের ওপর রাখা হয়, তখন ওর মা পাশে লাগেজ রেখে যখন ওকে পাতিল থেকে কোলে নিতে যাবে, তখনই আমি ছবিটি তুলি। বাচ্চা ও তার পরিবার নিরাপদে এবং সুস্থ আছে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত