ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

পূর্ব এশিয়ার দ্বীপদেশ জাপানে গতকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হানে। জাপানের মেটেরোলজিক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) জানিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬, অপর একটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬। এই ভূমিকম্পের পর আর্থকোয়েক নিউজ এভরিডে (Earthquake News Everyday) নামের একটি বাংলাদেশি ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করে দাবি করা হয়, এই ভূমিকম্প নিয়ে পেজটি গত ২২ ডিসেম্বর সতর্কতা জানিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিল।
পোস্টে ২২ ডিসেম্বরের ওই পোস্টের একটি স্ক্রিনশটও যোগ করে দেওয়া হয়েছে। স্ক্রিনশটটি পড়ে দেখা যায়, পোস্টটিতে আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে এবং ওশেনিয়া অঞ্চলে ৮০টির বেশি মৃদু ভূমিকম্প ও ৫ থেকে ৬টি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হতে পারে। এবারই প্রথম নয়, গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রা ও ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি বড় ভূমিকম্পের পরেও ইন্টারনেটে আগেই এই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল এমন দাবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। তাতে দাবি করা হয়, নেদারল্যান্ডসের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পটি নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এভাবে কি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব? একটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের মানদণ্ড কী কী?
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ প্রতিষ্ঠান ইউএসজিসি জানায়, ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। ইউএসজিসি বা অন্য কোনো বিজ্ঞানীর পক্ষেই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা আসলে জানি না ভবিষ্যতে কখন, কীভাবে ভূমিকম্প হবে। ইউএসজিসির বিজ্ঞানীরা হ্যাজার্ড ম্যাপ ব্যবহার করে শুধু নির্দিষ্টসংখ্যক বছরের মধ্যে নির্দিষ্ট এলাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটতে পারে—এমন সম্ভাব্যতা ঘোষণা করতে পারে।
একটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য তিনটি উপাদান থাকা আবশ্যক—
১। নির্দিষ্ট সময় ও তারিখ
২। স্থানের নির্দিষ্ট উল্লেখ এবং
৩। ভূমিকম্পের মাত্রা
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, কেউ কেউ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়। কিন্তু তাদের এই পূর্বাভাস কয়েকটি কারণে মিথ্যা হিসেবে প্রমাণিত হয়। কারণ, এগুলো পূর্বাভাসের জন্য প্রয়োজনীয় তিনটি শর্তের কোনোটিই পূরণ করে না। এসব পূর্বাভাসের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকে না। এই পূর্বাভাসগুলো খুব সাধারণ হয়ে থাকে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হবে বা অনেকটা এমন যে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে আজ ২ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হবে। এ ছাড়া ভূমিকম্প পুরোটাই বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে মেঘ, শারীরিক ব্যথা-যন্ত্রণা বা অলৌকিক কোনো ঘটনার সম্পর্ক নেই।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ২০২৩ সালে হওয়া ভূমিকম্পের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের দাবি নিয়ে কাজ করে বার্তা সংস্থা এপি। প্রতিষ্ঠানটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব কি না, তা যাচাইয়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের বক্তব্য নেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ভূমিকম্প প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ মিশেল ব্রুনো জানান, এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পের সুনির্দিষ্ট পূর্বাভাস দিতে পারে, এমন কোনো বিজ্ঞান নেই। বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্টভাবে এখনো ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার মতো কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পারেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জিওফিজিকসের গবেষক অধ্যাপক এগিল হাকসন একই প্রসঙ্গে এপিকে বলেন, কখন ভূমিকম্প হবে, তার সুনির্দিষ্ট সময় বলা এখন পর্যন্ত সম্ভব নয়। সার্বিক মূল্যায়নে এপি জানায়, বিশেষজ্ঞদের মতে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। বিজ্ঞানীরা কেবল বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প হওয়ার ব্যাপারে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে পারেন। ভূমিকম্প কখন, কোথায় হবে, তার পূর্বাভাস দেওয়ার কোনো উপায় নেই।
বিজ্ঞানবিষয়ক ম্যাগাজিন সায়েন্টিফিক আমেরিকানের এক প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত এমন কোনো পন্থা বের করতে পারেনি, যার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গভাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব। একটি পূর্ণাঙ্গ ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের জন্য সময়, স্থান ও ভূমিকম্পের মাত্রা সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন।
উদাহরণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়, কেউ পূর্বাভাস দিল, ২০২৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় ভূমিকম্প হলো। এটা সত্য হতে পারে, কিন্তু এটি সঠিক পূর্বাভাস নয়। কারণ, ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিদিনই ছোট ছোট ভূমিকম্প হয় অথবা কেউ পূর্বাভাস দিল, উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৮ বা তার চেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হবে। এটাও সত্য হতে পারে। কিন্তু সময় নির্দিষ্ট না করায় এটিও পূর্ণাঙ্গ পূর্বাভাস নয়। কারণ, পূর্ণাঙ্গ পূর্বাভাসের জন্য এই বিষয়গুলো সুনির্দিষ্ট করা জরুরি।
জাপানের ভূমিকম্প নিয়ে বাংলাদেশি পেজটিতে গত ২২ ডিসেম্বর দেওয়া পোস্টটিও ইউএসজিসির উল্লিখিত তিনটি উপাদানের কোনোটিই অনুসরণ করে না। অর্থাৎ পোস্টটিতে জাপানের ভূমিকম্পের নির্দিষ্ট সময়, তারিখ, স্থান ও ভূমিকম্পের মাত্রা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ ছিল না।
পোস্টটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভূমিকম্প সংঘটনের স্থান কেবল জাপানকেন্দ্রিক ছিল না; সেখানে জাপান ছাড়াও আরও বিস্তৃত অঞ্চলের কথা উল্লেখ করা হয়। সময় এবং ভূমিকম্পের মাত্রার বিষয়েও কোনো নির্দিষ্ট তথ্য ছিল না। ন্যাশনাল আর্থকোয়েক ইনফরমেশন সেন্টারের বরাত দিয়ে ইউএসজিসি জানায়, বিশ্বে দৈনিক প্রায় ৫৫টি এবং বছরে প্রায় ২০ হাজার ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। তাই কথিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, ওই সব অঞ্চলে ভূমিকম্প হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। যদিও নাসার ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এসব ভূমিকম্পের অধিকাংশই দুর্বল। তবে কখনো কখনো এসব ভূমিকম্পের কোনোটি প্রাণহানি ও সম্পদ ধ্বংসের মতো শক্তিশালী হয়।
ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পকেন্দ্রিক পূর্বাভাসটি কেমন ছিল
২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস তাঁর ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে টুইট করে দাবি করেন, খুব শিগগির বা দেরিতে হলেও তুরস্কের দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চল, জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হবে।
পরে ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রা ও ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি বড় ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর তাঁর টুইটটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর এই টুইট ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত জার্মানির ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান মিথ ডিটেক্টর। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের ওই পূর্বাভাসের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তিনি আগেও বেশ কিছু বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিলেও সেগুলো ঘটেনি। এ ছাড়া তিনি তাঁর টুইটে ভূমিকম্পের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেননি। খুব শিগগির বা দেরিতে যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগই ঘটতে পারে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপের সিসমিক হ্যাজার্ডস এবং আর্কাইভের সাবেক প্রধান ভূকম্প বিশেষজ্ঞ রজার মুসনের বরাত দিয়ে মিথ ডিটেক্টর জানায়, যে পূর্বাভাসে সঠিক সময় নির্দিষ্ট করা থাকে না, সেটি ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। একটি ভবিষ্যদ্বাণীতে সময়, স্থান এবং ভূমিকম্পের মাত্রা উল্লেখ করা আবশ্যক। ‘শিগগির বা পরে’ নির্দিষ্ট সময়কে ইঙ্গিত করে না। তাই ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের ভূমিকম্পের পূর্বাভাসটির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট, ভূমিকম্প এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেটির সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। তবে ভূমিকম্প যে কারণে হয়, অর্থাৎ টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ বা নড়াচড়াকে বর্তমানে বিজ্ঞানীরা জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিমাপ করতে পারেন।

পূর্ব এশিয়ার দ্বীপদেশ জাপানে গতকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হানে। জাপানের মেটেরোলজিক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) জানিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬, অপর একটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬। এই ভূমিকম্পের পর আর্থকোয়েক নিউজ এভরিডে (Earthquake News Everyday) নামের একটি বাংলাদেশি ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করে দাবি করা হয়, এই ভূমিকম্প নিয়ে পেজটি গত ২২ ডিসেম্বর সতর্কতা জানিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিল।
পোস্টে ২২ ডিসেম্বরের ওই পোস্টের একটি স্ক্রিনশটও যোগ করে দেওয়া হয়েছে। স্ক্রিনশটটি পড়ে দেখা যায়, পোস্টটিতে আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে এবং ওশেনিয়া অঞ্চলে ৮০টির বেশি মৃদু ভূমিকম্প ও ৫ থেকে ৬টি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হতে পারে। এবারই প্রথম নয়, গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রা ও ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি বড় ভূমিকম্পের পরেও ইন্টারনেটে আগেই এই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল এমন দাবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। তাতে দাবি করা হয়, নেদারল্যান্ডসের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পটি নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এভাবে কি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব? একটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের মানদণ্ড কী কী?
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ প্রতিষ্ঠান ইউএসজিসি জানায়, ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। ইউএসজিসি বা অন্য কোনো বিজ্ঞানীর পক্ষেই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা আসলে জানি না ভবিষ্যতে কখন, কীভাবে ভূমিকম্প হবে। ইউএসজিসির বিজ্ঞানীরা হ্যাজার্ড ম্যাপ ব্যবহার করে শুধু নির্দিষ্টসংখ্যক বছরের মধ্যে নির্দিষ্ট এলাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটতে পারে—এমন সম্ভাব্যতা ঘোষণা করতে পারে।
একটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য তিনটি উপাদান থাকা আবশ্যক—
১। নির্দিষ্ট সময় ও তারিখ
২। স্থানের নির্দিষ্ট উল্লেখ এবং
৩। ভূমিকম্পের মাত্রা
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, কেউ কেউ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়। কিন্তু তাদের এই পূর্বাভাস কয়েকটি কারণে মিথ্যা হিসেবে প্রমাণিত হয়। কারণ, এগুলো পূর্বাভাসের জন্য প্রয়োজনীয় তিনটি শর্তের কোনোটিই পূরণ করে না। এসব পূর্বাভাসের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকে না। এই পূর্বাভাসগুলো খুব সাধারণ হয়ে থাকে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হবে বা অনেকটা এমন যে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে আজ ২ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হবে। এ ছাড়া ভূমিকম্প পুরোটাই বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে মেঘ, শারীরিক ব্যথা-যন্ত্রণা বা অলৌকিক কোনো ঘটনার সম্পর্ক নেই।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ২০২৩ সালে হওয়া ভূমিকম্পের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের দাবি নিয়ে কাজ করে বার্তা সংস্থা এপি। প্রতিষ্ঠানটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব কি না, তা যাচাইয়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের বক্তব্য নেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ভূমিকম্প প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ মিশেল ব্রুনো জানান, এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পের সুনির্দিষ্ট পূর্বাভাস দিতে পারে, এমন কোনো বিজ্ঞান নেই। বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্টভাবে এখনো ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার মতো কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পারেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জিওফিজিকসের গবেষক অধ্যাপক এগিল হাকসন একই প্রসঙ্গে এপিকে বলেন, কখন ভূমিকম্প হবে, তার সুনির্দিষ্ট সময় বলা এখন পর্যন্ত সম্ভব নয়। সার্বিক মূল্যায়নে এপি জানায়, বিশেষজ্ঞদের মতে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। বিজ্ঞানীরা কেবল বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প হওয়ার ব্যাপারে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে পারেন। ভূমিকম্প কখন, কোথায় হবে, তার পূর্বাভাস দেওয়ার কোনো উপায় নেই।
বিজ্ঞানবিষয়ক ম্যাগাজিন সায়েন্টিফিক আমেরিকানের এক প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত এমন কোনো পন্থা বের করতে পারেনি, যার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গভাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব। একটি পূর্ণাঙ্গ ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের জন্য সময়, স্থান ও ভূমিকম্পের মাত্রা সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন।
উদাহরণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়, কেউ পূর্বাভাস দিল, ২০২৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় ভূমিকম্প হলো। এটা সত্য হতে পারে, কিন্তু এটি সঠিক পূর্বাভাস নয়। কারণ, ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিদিনই ছোট ছোট ভূমিকম্প হয় অথবা কেউ পূর্বাভাস দিল, উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৮ বা তার চেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হবে। এটাও সত্য হতে পারে। কিন্তু সময় নির্দিষ্ট না করায় এটিও পূর্ণাঙ্গ পূর্বাভাস নয়। কারণ, পূর্ণাঙ্গ পূর্বাভাসের জন্য এই বিষয়গুলো সুনির্দিষ্ট করা জরুরি।
জাপানের ভূমিকম্প নিয়ে বাংলাদেশি পেজটিতে গত ২২ ডিসেম্বর দেওয়া পোস্টটিও ইউএসজিসির উল্লিখিত তিনটি উপাদানের কোনোটিই অনুসরণ করে না। অর্থাৎ পোস্টটিতে জাপানের ভূমিকম্পের নির্দিষ্ট সময়, তারিখ, স্থান ও ভূমিকম্পের মাত্রা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ ছিল না।
পোস্টটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভূমিকম্প সংঘটনের স্থান কেবল জাপানকেন্দ্রিক ছিল না; সেখানে জাপান ছাড়াও আরও বিস্তৃত অঞ্চলের কথা উল্লেখ করা হয়। সময় এবং ভূমিকম্পের মাত্রার বিষয়েও কোনো নির্দিষ্ট তথ্য ছিল না। ন্যাশনাল আর্থকোয়েক ইনফরমেশন সেন্টারের বরাত দিয়ে ইউএসজিসি জানায়, বিশ্বে দৈনিক প্রায় ৫৫টি এবং বছরে প্রায় ২০ হাজার ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। তাই কথিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, ওই সব অঞ্চলে ভূমিকম্প হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। যদিও নাসার ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এসব ভূমিকম্পের অধিকাংশই দুর্বল। তবে কখনো কখনো এসব ভূমিকম্পের কোনোটি প্রাণহানি ও সম্পদ ধ্বংসের মতো শক্তিশালী হয়।
ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পকেন্দ্রিক পূর্বাভাসটি কেমন ছিল
২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস তাঁর ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে টুইট করে দাবি করেন, খুব শিগগির বা দেরিতে হলেও তুরস্কের দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চল, জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হবে।
পরে ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রা ও ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি বড় ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর তাঁর টুইটটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর এই টুইট ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত জার্মানির ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান মিথ ডিটেক্টর। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের ওই পূর্বাভাসের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তিনি আগেও বেশ কিছু বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিলেও সেগুলো ঘটেনি। এ ছাড়া তিনি তাঁর টুইটে ভূমিকম্পের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেননি। খুব শিগগির বা দেরিতে যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগই ঘটতে পারে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপের সিসমিক হ্যাজার্ডস এবং আর্কাইভের সাবেক প্রধান ভূকম্প বিশেষজ্ঞ রজার মুসনের বরাত দিয়ে মিথ ডিটেক্টর জানায়, যে পূর্বাভাসে সঠিক সময় নির্দিষ্ট করা থাকে না, সেটি ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। একটি ভবিষ্যদ্বাণীতে সময়, স্থান এবং ভূমিকম্পের মাত্রা উল্লেখ করা আবশ্যক। ‘শিগগির বা পরে’ নির্দিষ্ট সময়কে ইঙ্গিত করে না। তাই ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের ভূমিকম্পের পূর্বাভাসটির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট, ভূমিকম্প এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেটির সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। তবে ভূমিকম্প যে কারণে হয়, অর্থাৎ টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ বা নড়াচড়াকে বর্তমানে বিজ্ঞানীরা জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিমাপ করতে পারেন।
ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

পূর্ব এশিয়ার দ্বীপদেশ জাপানে গতকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হানে। জাপানের মেটেরোলজিক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) জানিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬, অপর একটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬। এই ভূমিকম্পের পর আর্থকোয়েক নিউজ এভরিডে (Earthquake News Everyday) নামের একটি বাংলাদেশি ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করে দাবি করা হয়, এই ভূমিকম্প নিয়ে পেজটি গত ২২ ডিসেম্বর সতর্কতা জানিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিল।
পোস্টে ২২ ডিসেম্বরের ওই পোস্টের একটি স্ক্রিনশটও যোগ করে দেওয়া হয়েছে। স্ক্রিনশটটি পড়ে দেখা যায়, পোস্টটিতে আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে এবং ওশেনিয়া অঞ্চলে ৮০টির বেশি মৃদু ভূমিকম্প ও ৫ থেকে ৬টি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হতে পারে। এবারই প্রথম নয়, গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রা ও ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি বড় ভূমিকম্পের পরেও ইন্টারনেটে আগেই এই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল এমন দাবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। তাতে দাবি করা হয়, নেদারল্যান্ডসের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পটি নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এভাবে কি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব? একটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের মানদণ্ড কী কী?
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ প্রতিষ্ঠান ইউএসজিসি জানায়, ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। ইউএসজিসি বা অন্য কোনো বিজ্ঞানীর পক্ষেই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা আসলে জানি না ভবিষ্যতে কখন, কীভাবে ভূমিকম্প হবে। ইউএসজিসির বিজ্ঞানীরা হ্যাজার্ড ম্যাপ ব্যবহার করে শুধু নির্দিষ্টসংখ্যক বছরের মধ্যে নির্দিষ্ট এলাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটতে পারে—এমন সম্ভাব্যতা ঘোষণা করতে পারে।
একটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য তিনটি উপাদান থাকা আবশ্যক—
১। নির্দিষ্ট সময় ও তারিখ
২। স্থানের নির্দিষ্ট উল্লেখ এবং
৩। ভূমিকম্পের মাত্রা
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, কেউ কেউ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়। কিন্তু তাদের এই পূর্বাভাস কয়েকটি কারণে মিথ্যা হিসেবে প্রমাণিত হয়। কারণ, এগুলো পূর্বাভাসের জন্য প্রয়োজনীয় তিনটি শর্তের কোনোটিই পূরণ করে না। এসব পূর্বাভাসের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকে না। এই পূর্বাভাসগুলো খুব সাধারণ হয়ে থাকে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হবে বা অনেকটা এমন যে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে আজ ২ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হবে। এ ছাড়া ভূমিকম্প পুরোটাই বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে মেঘ, শারীরিক ব্যথা-যন্ত্রণা বা অলৌকিক কোনো ঘটনার সম্পর্ক নেই।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ২০২৩ সালে হওয়া ভূমিকম্পের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের দাবি নিয়ে কাজ করে বার্তা সংস্থা এপি। প্রতিষ্ঠানটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব কি না, তা যাচাইয়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের বক্তব্য নেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ভূমিকম্প প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ মিশেল ব্রুনো জানান, এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পের সুনির্দিষ্ট পূর্বাভাস দিতে পারে, এমন কোনো বিজ্ঞান নেই। বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্টভাবে এখনো ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার মতো কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পারেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জিওফিজিকসের গবেষক অধ্যাপক এগিল হাকসন একই প্রসঙ্গে এপিকে বলেন, কখন ভূমিকম্প হবে, তার সুনির্দিষ্ট সময় বলা এখন পর্যন্ত সম্ভব নয়। সার্বিক মূল্যায়নে এপি জানায়, বিশেষজ্ঞদের মতে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। বিজ্ঞানীরা কেবল বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প হওয়ার ব্যাপারে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে পারেন। ভূমিকম্প কখন, কোথায় হবে, তার পূর্বাভাস দেওয়ার কোনো উপায় নেই।
বিজ্ঞানবিষয়ক ম্যাগাজিন সায়েন্টিফিক আমেরিকানের এক প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত এমন কোনো পন্থা বের করতে পারেনি, যার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গভাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব। একটি পূর্ণাঙ্গ ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের জন্য সময়, স্থান ও ভূমিকম্পের মাত্রা সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন।
উদাহরণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়, কেউ পূর্বাভাস দিল, ২০২৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় ভূমিকম্প হলো। এটা সত্য হতে পারে, কিন্তু এটি সঠিক পূর্বাভাস নয়। কারণ, ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিদিনই ছোট ছোট ভূমিকম্প হয় অথবা কেউ পূর্বাভাস দিল, উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৮ বা তার চেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হবে। এটাও সত্য হতে পারে। কিন্তু সময় নির্দিষ্ট না করায় এটিও পূর্ণাঙ্গ পূর্বাভাস নয়। কারণ, পূর্ণাঙ্গ পূর্বাভাসের জন্য এই বিষয়গুলো সুনির্দিষ্ট করা জরুরি।
জাপানের ভূমিকম্প নিয়ে বাংলাদেশি পেজটিতে গত ২২ ডিসেম্বর দেওয়া পোস্টটিও ইউএসজিসির উল্লিখিত তিনটি উপাদানের কোনোটিই অনুসরণ করে না। অর্থাৎ পোস্টটিতে জাপানের ভূমিকম্পের নির্দিষ্ট সময়, তারিখ, স্থান ও ভূমিকম্পের মাত্রা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ ছিল না।
পোস্টটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভূমিকম্প সংঘটনের স্থান কেবল জাপানকেন্দ্রিক ছিল না; সেখানে জাপান ছাড়াও আরও বিস্তৃত অঞ্চলের কথা উল্লেখ করা হয়। সময় এবং ভূমিকম্পের মাত্রার বিষয়েও কোনো নির্দিষ্ট তথ্য ছিল না। ন্যাশনাল আর্থকোয়েক ইনফরমেশন সেন্টারের বরাত দিয়ে ইউএসজিসি জানায়, বিশ্বে দৈনিক প্রায় ৫৫টি এবং বছরে প্রায় ২০ হাজার ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। তাই কথিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, ওই সব অঞ্চলে ভূমিকম্প হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। যদিও নাসার ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এসব ভূমিকম্পের অধিকাংশই দুর্বল। তবে কখনো কখনো এসব ভূমিকম্পের কোনোটি প্রাণহানি ও সম্পদ ধ্বংসের মতো শক্তিশালী হয়।
ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পকেন্দ্রিক পূর্বাভাসটি কেমন ছিল
২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস তাঁর ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে টুইট করে দাবি করেন, খুব শিগগির বা দেরিতে হলেও তুরস্কের দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চল, জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হবে।
পরে ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রা ও ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি বড় ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর তাঁর টুইটটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর এই টুইট ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত জার্মানির ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান মিথ ডিটেক্টর। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের ওই পূর্বাভাসের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তিনি আগেও বেশ কিছু বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিলেও সেগুলো ঘটেনি। এ ছাড়া তিনি তাঁর টুইটে ভূমিকম্পের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেননি। খুব শিগগির বা দেরিতে যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগই ঘটতে পারে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপের সিসমিক হ্যাজার্ডস এবং আর্কাইভের সাবেক প্রধান ভূকম্প বিশেষজ্ঞ রজার মুসনের বরাত দিয়ে মিথ ডিটেক্টর জানায়, যে পূর্বাভাসে সঠিক সময় নির্দিষ্ট করা থাকে না, সেটি ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। একটি ভবিষ্যদ্বাণীতে সময়, স্থান এবং ভূমিকম্পের মাত্রা উল্লেখ করা আবশ্যক। ‘শিগগির বা পরে’ নির্দিষ্ট সময়কে ইঙ্গিত করে না। তাই ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের ভূমিকম্পের পূর্বাভাসটির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট, ভূমিকম্প এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেটির সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। তবে ভূমিকম্প যে কারণে হয়, অর্থাৎ টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ বা নড়াচড়াকে বর্তমানে বিজ্ঞানীরা জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিমাপ করতে পারেন।

পূর্ব এশিয়ার দ্বীপদেশ জাপানে গতকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হানে। জাপানের মেটেরোলজিক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) জানিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬, অপর একটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬। এই ভূমিকম্পের পর আর্থকোয়েক নিউজ এভরিডে (Earthquake News Everyday) নামের একটি বাংলাদেশি ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট করে দাবি করা হয়, এই ভূমিকম্প নিয়ে পেজটি গত ২২ ডিসেম্বর সতর্কতা জানিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিল।
পোস্টে ২২ ডিসেম্বরের ওই পোস্টের একটি স্ক্রিনশটও যোগ করে দেওয়া হয়েছে। স্ক্রিনশটটি পড়ে দেখা যায়, পোস্টটিতে আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে এবং ওশেনিয়া অঞ্চলে ৮০টির বেশি মৃদু ভূমিকম্প ও ৫ থেকে ৬টি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হতে পারে। এবারই প্রথম নয়, গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রা ও ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি বড় ভূমিকম্পের পরেও ইন্টারনেটে আগেই এই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল এমন দাবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। তাতে দাবি করা হয়, নেদারল্যান্ডসের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পটি নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এভাবে কি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব? একটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের মানদণ্ড কী কী?
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ প্রতিষ্ঠান ইউএসজিসি জানায়, ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। ইউএসজিসি বা অন্য কোনো বিজ্ঞানীর পক্ষেই ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা আসলে জানি না ভবিষ্যতে কখন, কীভাবে ভূমিকম্প হবে। ইউএসজিসির বিজ্ঞানীরা হ্যাজার্ড ম্যাপ ব্যবহার করে শুধু নির্দিষ্টসংখ্যক বছরের মধ্যে নির্দিষ্ট এলাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটতে পারে—এমন সম্ভাব্যতা ঘোষণা করতে পারে।
একটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য তিনটি উপাদান থাকা আবশ্যক—
১। নির্দিষ্ট সময় ও তারিখ
২। স্থানের নির্দিষ্ট উল্লেখ এবং
৩। ভূমিকম্পের মাত্রা
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, কেউ কেউ ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়। কিন্তু তাদের এই পূর্বাভাস কয়েকটি কারণে মিথ্যা হিসেবে প্রমাণিত হয়। কারণ, এগুলো পূর্বাভাসের জন্য প্রয়োজনীয় তিনটি শর্তের কোনোটিই পূরণ করে না। এসব পূর্বাভাসের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকে না। এই পূর্বাভাসগুলো খুব সাধারণ হয়ে থাকে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হবে বা অনেকটা এমন যে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে আজ ২ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হবে। এ ছাড়া ভূমিকম্প পুরোটাই বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে মেঘ, শারীরিক ব্যথা-যন্ত্রণা বা অলৌকিক কোনো ঘটনার সম্পর্ক নেই।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ২০২৩ সালে হওয়া ভূমিকম্পের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের দাবি নিয়ে কাজ করে বার্তা সংস্থা এপি। প্রতিষ্ঠানটি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব কি না, তা যাচাইয়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের বক্তব্য নেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ভূমিকম্প প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ মিশেল ব্রুনো জানান, এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পের সুনির্দিষ্ট পূর্বাভাস দিতে পারে, এমন কোনো বিজ্ঞান নেই। বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্টভাবে এখনো ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়ার মতো কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পারেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জিওফিজিকসের গবেষক অধ্যাপক এগিল হাকসন একই প্রসঙ্গে এপিকে বলেন, কখন ভূমিকম্প হবে, তার সুনির্দিষ্ট সময় বলা এখন পর্যন্ত সম্ভব নয়। সার্বিক মূল্যায়নে এপি জানায়, বিশেষজ্ঞদের মতে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। বিজ্ঞানীরা কেবল বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্প হওয়ার ব্যাপারে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে পারেন। ভূমিকম্প কখন, কোথায় হবে, তার পূর্বাভাস দেওয়ার কোনো উপায় নেই।
বিজ্ঞানবিষয়ক ম্যাগাজিন সায়েন্টিফিক আমেরিকানের এক প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত এমন কোনো পন্থা বের করতে পারেনি, যার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গভাবে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব। একটি পূর্ণাঙ্গ ভূমিকম্পের পূর্বাভাসের জন্য সময়, স্থান ও ভূমিকম্পের মাত্রা সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন।
উদাহরণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়, কেউ পূর্বাভাস দিল, ২০২৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় ভূমিকম্প হলো। এটা সত্য হতে পারে, কিন্তু এটি সঠিক পূর্বাভাস নয়। কারণ, ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিদিনই ছোট ছোট ভূমিকম্প হয় অথবা কেউ পূর্বাভাস দিল, উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৮ বা তার চেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হবে। এটাও সত্য হতে পারে। কিন্তু সময় নির্দিষ্ট না করায় এটিও পূর্ণাঙ্গ পূর্বাভাস নয়। কারণ, পূর্ণাঙ্গ পূর্বাভাসের জন্য এই বিষয়গুলো সুনির্দিষ্ট করা জরুরি।
জাপানের ভূমিকম্প নিয়ে বাংলাদেশি পেজটিতে গত ২২ ডিসেম্বর দেওয়া পোস্টটিও ইউএসজিসির উল্লিখিত তিনটি উপাদানের কোনোটিই অনুসরণ করে না। অর্থাৎ পোস্টটিতে জাপানের ভূমিকম্পের নির্দিষ্ট সময়, তারিখ, স্থান ও ভূমিকম্পের মাত্রা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ ছিল না।
পোস্টটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ভূমিকম্প সংঘটনের স্থান কেবল জাপানকেন্দ্রিক ছিল না; সেখানে জাপান ছাড়াও আরও বিস্তৃত অঞ্চলের কথা উল্লেখ করা হয়। সময় এবং ভূমিকম্পের মাত্রার বিষয়েও কোনো নির্দিষ্ট তথ্য ছিল না। ন্যাশনাল আর্থকোয়েক ইনফরমেশন সেন্টারের বরাত দিয়ে ইউএসজিসি জানায়, বিশ্বে দৈনিক প্রায় ৫৫টি এবং বছরে প্রায় ২০ হাজার ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। তাই কথিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, ওই সব অঞ্চলে ভূমিকম্প হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। যদিও নাসার ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, এসব ভূমিকম্পের অধিকাংশই দুর্বল। তবে কখনো কখনো এসব ভূমিকম্পের কোনোটি প্রাণহানি ও সম্পদ ধ্বংসের মতো শক্তিশালী হয়।
ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পকেন্দ্রিক পূর্বাভাসটি কেমন ছিল
২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ফ্রাঙ্ক হুগারবিটস তাঁর ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে টুইট করে দাবি করেন, খুব শিগগির বা দেরিতে হলেও তুরস্কের দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চল, জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হবে।
পরে ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রা ও ৭ দশমিক ৫ মাত্রার দুটি বড় ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর তাঁর টুইটটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর এই টুইট ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত জার্মানির ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান মিথ ডিটেক্টর। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের ওই পূর্বাভাসের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তিনি আগেও বেশ কিছু বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিলেও সেগুলো ঘটেনি। এ ছাড়া তিনি তাঁর টুইটে ভূমিকম্পের কোনো নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেননি। খুব শিগগির বা দেরিতে যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগই ঘটতে পারে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপের সিসমিক হ্যাজার্ডস এবং আর্কাইভের সাবেক প্রধান ভূকম্প বিশেষজ্ঞ রজার মুসনের বরাত দিয়ে মিথ ডিটেক্টর জানায়, যে পূর্বাভাসে সঠিক সময় নির্দিষ্ট করা থাকে না, সেটি ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে বিবেচিত হতে পারে না। একটি ভবিষ্যদ্বাণীতে সময়, স্থান এবং ভূমিকম্পের মাত্রা উল্লেখ করা আবশ্যক। ‘শিগগির বা পরে’ নির্দিষ্ট সময়কে ইঙ্গিত করে না। তাই ফ্রাঙ্ক হুগারবিটসের ভূমিকম্পের পূর্বাভাসটির বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট, ভূমিকম্প এমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেটির সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। তবে ভূমিকম্প যে কারণে হয়, অর্থাৎ টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ বা নড়াচড়াকে বর্তমানে বিজ্ঞানীরা জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিমাপ করতে পারেন।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

পূর্ব এশিয়ার দ্বীপদেশ জাপানে গতকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হানে। জাপানের মেটেরোলজিক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) জানিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬, অপর একটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬।
০৪ জানুয়ারি ২০২৪
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

পূর্ব এশিয়ার দ্বীপদেশ জাপানে গতকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হানে। জাপানের মেটেরোলজিক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) জানিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬, অপর একটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬।
০৪ জানুয়ারি ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

পূর্ব এশিয়ার দ্বীপদেশ জাপানে গতকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হানে। জাপানের মেটেরোলজিক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) জানিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬, অপর একটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬।
০৪ জানুয়ারি ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

পূর্ব এশিয়ার দ্বীপদেশ জাপানে গতকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হানে। জাপানের মেটেরোলজিক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) জানিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬, অপর একটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬।
০৪ জানুয়ারি ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫