Ajker Patrika

ফ্যাক্টচেক /আধখণ্ড লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে রাখলে মশা পালায়—এই টোটকার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কী

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
আধখণ্ড লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে রাখলে মশা পালায়—এই টোটকার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কী

মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু এখন রীতিমতো আতঙ্কের নাম! প্রতি বছরই দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান বহু মানুষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৪৭১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গতকাল রোববার (৩ নভেম্বর) পর্যন্ত এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩১৪ জনের। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন। এ পরিস্থিতিতে মশা থেকে বাঁচতে মানুষের মধ্যে নানা ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, লেবু ও লবঙ্গের ব্যবহার।

আধা কাটা লেবুতে গেঁথে রাখা লবঙ্গ তাড়াবে মশা—এমন অবৈজ্ঞানিক টোটকা ওঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমও। ছবি: প্রথম আলো
আধা কাটা লেবুতে গেঁথে রাখা লবঙ্গ তাড়াবে মশা—এমন অবৈজ্ঞানিক টোটকা ওঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমও। ছবি: প্রথম আলো

এই টোটকা যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় এসেছে, তেমনি প্রচার হয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেও। মশা তাড়াতে টোটকাটি কতটা কার্যকর?

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই টোটকা ব্যবহারের নিয়ম বলা হয়েছে, একটা লেবু আধ খণ্ড করে কেটে কয়েকটি লবঙ্গ গেঁথে দিতে হবে। শুধু লবঙ্গের মাথার দিকের অংশ বাইরে থাকবে। এরপর লেবুর টুকরাগুলো একটি প্লেটে করে ঘরের কোনায় রেখে দিতে হবে। জানালার গ্রিলেও রাখা যেতে পারে। এতে মশার উপদ্রব কমে যাবে। টোটকাটি সম্পর্কে আরও বলা হয়, কিছুদিন পরপর লেবু বদলে নিলে আরও ভালো ফল পাওয়া যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল পেস্টিসাইড ইনফরমেশন সেন্টারের মতে, বিভিন্ন ধরনের মশা প্রতিরোধক মানবদেহের গন্ধ আড়াল করে। তখন মশা তাঁর অবস্থান শনাক্ত করতে পারে না, ফলে মশার কামড়ও খেতে হয় না। মশার ঘ্রাণেন্দ্রীয় খুব শক্তিশালী। এরা শিকার খোঁজে ঘ্রাণশক্তির মাধ্যমে। মানুষের ঘামের গন্ধ এবং নিশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসা কার্বন ডাই অক্সাইড এদের আকর্ষণ করে। তাই, যখন কোনো প্রতিরোধক ব্যবহার করা হয়, তখন সেটি ত্বকের ওপর একটি সুরক্ষা স্তর তৈরি করে, ফলে মশার জন্য শিকারের (মানুষ বা অন্যান্য প্রাণী) অবস্থান খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।

আধা কাটা লেবুতে গেঁথে রাখা লবঙ্গ তাড়াবে মশা—এমন অবৈজ্ঞানিক টোটকা ওঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমও। ছবি: ডেইলি স্টার
আধা কাটা লেবুতে গেঁথে রাখা লবঙ্গ তাড়াবে মশা—এমন অবৈজ্ঞানিক টোটকা ওঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমও। ছবি: ডেইলি স্টার

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে জানায়, মশা প্রতিরোধকের কার্যকারিতা এবং এর স্থায়ীত্বের ওপর বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কিত। এর মধ্যে—মশার প্রজাতি, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, ব্যক্তির ঘামের পরিমাণ এবং ওই ব্যক্তি মশাকে কতটা আকৃষ্ট করছেন ইত্যাদি।

এশিয়ান জার্নাল অব রিসার্চ ইন ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সে প্রকাশিত এক নিবন্ধ অনুসারে, লবঙ্গ এবং লেবুর খোসা থেকে প্রস্তুত এসেনশিয়াল ওয়েল মশা তাড়াতে কার্যকর। একাধিত পরীক্ষায় এটি প্রমাণিত। এ ছাড়া লেমন গ্রাস, ইউক্যালিপটাস, তুলসী, কমলাসহ কিছু উদ্ভিদেরও মশা প্রতিরোধক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গ থেকে প্রস্তুত তেল প্রায় ৭৬ মিনিট পর্যন্ত মশা থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। অন্য কিছু পরীক্ষায় এর কার্যকারিতার স্থায়ীত্ব দুই থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত পাওয়া গেছে। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, মশার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে লবঙ্গ থেকে প্রস্তুত তেলের ঘনত্ব সাধারণ তেলের প্রায় পাঁচ গুণ হওয়া প্রয়োজন।

আধা কাটা লেবুতে গেঁথে রাখা লবঙ্গ তাড়াবে মশা—এই টোটকার নেই বৈজ্ঞানিক ভিত্তি। ছবি: ইউএসএ টুডে
আধা কাটা লেবুতে গেঁথে রাখা লবঙ্গ তাড়াবে মশা—এই টোটকার নেই বৈজ্ঞানিক ভিত্তি। ছবি: ইউএসএ টুডে

আমেরিকার মশা নিয়ন্ত্রণ সংস্থার টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ও মার্কিন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কীটতত্ত্ববিদ জো কনলন ইউএসএ টুডেকে বলেন, ‘লেবু এবং লবঙ্গ থেকে প্রাপ্ত এসেনশিয়াল ওয়েল মশা তাড়াতে ভালো প্রতিরোধক। তবে সরাসরি লেবু এবং লবঙ্গের মিশ্রণ সমান কার্যকর হবে এমনটা নিশ্চিত নয়।’

জো কনলন বলেন, ‘লবঙ্গের তেল মশা তাড়াতে কার্যকর, তবে এটি শুধু তখনই কাজ করে যখন এই তেলের খুব বেশি ঘন হয়। অর্থাৎ তেলের ঘনত্ব এতটাই বেশি হতে হবে যে এটি ত্বকে লাগালে পোড়া বা ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। মশা তাড়াতে কার্যকর মাত্রায় লবঙ্গের তেল ব্যবহারের জন্য প্রায় ২৫ শতাংশ ঘনত্ব প্রয়োজন। তবে এটি বাস্তবসম্মত নয়, কারণ এত বেশি ঘন তেল ত্বকে লাগালে ক্ষতি হতে পারে। লেবুতে শুধু লবঙ্গ গেঁথে দিয়ে মশা তাড়ানো সম্ভব নয়।’

কনলন আরও বলেন, ‘যতক্ষণ না যুক্তরাষ্ট্রের এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি (ইপিএ) লেবু ও লবঙ্গের মিশ্রণ পরীক্ষা করে অনুমোদন দিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এটা সত্য বলে মানতে রাজি নই। ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস, জিকা, ম্যালেরিয়া এবং আরও অনেক মশাবাহিত রোগের কারণে এটি জীবন–মৃত্যুর বিষয়। তাই স্রেফ যেকোনো কিছু নিয়ে মশা প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক নয়।’

মশা তাড়াতে আধাকাটা লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে রাখার এই টোটকা কেবল বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশে প্রচলিত। ২০২৩ সালে টোটকাটি শ্রীলঙ্কা ও ভারতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় বার্তা সংস্থা এএফপি শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ইউনিটের (এনডিসিইউ) চিকিৎসক ডা. লাহিরু কোদিতুভাক্কুর সঙ্গে যোগাযোগ করে।

তিনি এএফপিকে জানান, দাবিটি অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর। লেবু ও লবঙ্গের ঘন তেলই কেবল ক্ষতিকর প্রাণী ও মশার বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরোধক হিসেবে বিবেচিত হয়। তবুও এগুলোর কার্যকারিতা মাত্র কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, মশা তাড়াতে আধকাটা লেবুতে লবঙ্গ গেঁথে রাখার এই টোটকার কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।

একই টোটকা সম্পর্কে আমেরিকার মশা নিয়ন্ত্রণ সংস্থার আরেকজন টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ড্যানিয়েল মার্কোস্কি এএফপিকে বলেন, ‘উদ্ভিদের নির্যাস বা এসেনশিয়াল ওয়েল মশা তাড়াতে কিছু পরিমাণে কার্যকরী হতে পারে। কিন্তু শুধু আস্ত লবঙ্গ বা অন্য কোনো ফলের সঙ্গে একত্রে বাড়ির চারপাশে রাখলে মশা তাড়ানো যাবে, এটি নিশ্চিত নয়।’

ভারতীয় ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান নিউজ মিটার টোটকাটি সম্পর্কে জানতে দেশটির একজন সিনিয়র কনসালটেন্ট ফিজিশিয়ান অধ্যাপক ড. এস. বিজয় মোহনের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

তিনি নিউজ মিটারকে বলেন, ‘হোয়াটসঅ্যাপ বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত স্বাস্থ্য টিপস বিশ্বাস করা ঠিক নয়। এই টিপসগুলো নিয়ে কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা নেই। তাই এসব টোটকার ওপর পুরোপুরি নির্ভর করা উল্টো ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।’

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের উন্মুক্ত পিয়ার রিভিউড জার্নাল পিএলওএস ওয়ানে ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে লবঙ্গ নির্ভর মশা প্রতিরোধকগুলোকে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা ভাইরাসবাহী মশার বিরুদ্ধে কম কার্যকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।

আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৪
মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।

বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’

ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি

বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।

বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ

এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত
এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।

একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৩
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৮
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।

ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই

ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত

ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।

সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল

এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

কথিত জেসিকা র‍্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত