Ajker Patrika

ফ্যাক্টচেক /পটুয়াখালীতে তরুণীকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক  
আপডেট : ২৯ জুন ২০২৫, ১৬: ০৪
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নে এক তরুণীকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নে এক তরুণীকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নে এক তরুণীকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবেও ছড়িয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, রাতের বেলা একজন তরুণীকে তিন থেকে চারজন পুরুষ মিলে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। ওই তরুণী, ‘আমাকে বাঁচান’ বলে চিৎকার করছেন।

কামাল গাজী নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গতকাল শনিবার (২৮ জুন) দিবাগত রাত ১টা ৪১ মিনিটে পোস্ট করা ভিডিওটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। এই পোস্টে ভিডিওর তরুণীকে তিনি নিজের স্ত্রী উল্লেখ করেছেন। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘আমার বাড়িতে গিয়ে আমার কলিজা বউকে এভাবে মাড়তে মাড়তে হাত পা বেধে নিয়ে গেছে একটু আগে। দেশ বাসির সহযোগিতা কামনা করছি। আমার কলিজাটাকে বাঁচান। স্থানঃ পটুয়াখালী জেলা, রাঙ্গাবালী উপজেলা, মৌডুবী ইউনিয়ন, ০৯ নং ওয়ার্ড। সময় রাত ১টা।’ (বানান অপরিবর্তিত)

আজ রোববার বেলা ১২টা পর্যন্ত ভিডিওটি ৭০ লাখ বার দেখা হয়েছে এবং ১৬ হাজার রিঅ্যাকশন পড়েছে। এতে ৪ হাজার ৬০০টি কমেন্ট পড়েছে এবং শেয়ার হয়েছে ১২ হাজার বার।

আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ এবং ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানির ফেসবুক পেজ থেকেও ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে। ছাত্রলীগের পেজে ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশে সবচেয়ে সহজ হলো এই ধরনের নির্মম অত্যাচার (রাঙ্গাবালি) ও গণধর্ষণ (মুরাদনগর) করে পার পাওয়া।’ (বানান অপরিবর্তিত)

ভিডিওটির সত্যতা ও ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। ঘটনাস্থল পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়ন উল্লেখ থাকায় রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমারত হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়।

ঘটনার বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনা নিয়ে আমি অবগত আছি। ভাইরাল ভিডিওর মেয়েটির নাম তন্বী। কামাল গাজীর সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কামাল গাজী তাঁকে স্ত্রী দাবি করলেও তাঁদের মধ্যে আসলে বিয়ে বা কাবিন হয়েছে কিনা তা এলাকাবাসী কেউ জানে না। কামাল গাজীর বাবা বেঁচে নেই। কামাল গাজী নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন এবং স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ করতেন। ৫ আগস্টের পর কামাল গাজী এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন এবং পলাতক আছেন। এলাকায় আর ফিরেননি।’

ওসি আরও বলেন, ‘কামাল গাজী ও তন্বীদের বাড়ি পাশাপাশি গ্রামে। কামাল গাজীর বাড়ি মৌডুবী ইউনিয়নের মাজদেওর গ্রমে আর তন্বীর বাসা একই ইউনিয়নের বালিয়াবুনিয়া গ্রামে। ৭-৮ দিন আগে তন্বী কামাল গাজীর বাড়টিতে এসে উঠেছিলেন। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর বাবা, চাচা ও মামারা এসে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে নিয়ে যেতে এসেছিল। তবে তন্বী যেতে ইচ্ছুক ছিলেন না।’

ওসি মো. এমারত হোসেন বলেন, ‘পরবর্তীতে মেয়ের পরিবারের লোকজন টেনেহিঁচড়ে, জোর জবরদস্তি করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় মেয়েটি চিৎকার করেছিল। সেই ঘটনারই ভিডিও কেউ ধারণ করে কামাল গাজীকে পাঠায়। পরবর্তীতে কামাল গাজী এটিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে। আসলে তুলে নিয়েছে মেয়ের বাবা, চাচা ও মামারা। তাঁদের কথা ছিল, মেয়ের বয়স কম, আমরা এই ছেলের সঙ্গে আমাদের মেয়ের বিয়ে দেব না।’

কামাল গাজীর ভাইরাল পোস্টে উম্মে সুলতানা তন্বী নামে একটি অ্যাকাউন্টকে ট্যাগ করা হয়েছে। উম্মে সুলতানা তন্বীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত ২৫ জুন কামাল গাজীর ফেসবুক অ্যকাউন্টের একটি স্ট্যাটাস আপডেট শেয়ার করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ১১ মার্চ স্ট্যাটাস আপডেটে ‘ম্যারিড উম্মে সুলতানা তন্বী, ১০ মার্চ, ২০২৪’ লেখা রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিৎকার শুনে ছুটে আসা স্থানীয়রা ধর্ষণের শিকার নারীকেই মারধর করে

বিমানবন্দরের প্রকল্পে ‘অসম’ চুক্তি, স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়েছেন ঢাকায় ইউএই রাষ্ট্রদূত

মন্ত্রীর আত্মীয়তাই ‘যোগ্যতা’

আদানিকে আরও ৩৮৪ মিলিয়ন ডলার দিল বাংলাদেশ, মোট পরিশোধ ১.৫ বিলিয়ন

অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দুই বন্ধুর ধর্ষণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত