Ajker Patrika

ইন্টারনেটে অপতথ্যের রমরমা: কারা করে, কীভাবে ছড়ায়

আপডেট : ০৭ মে ২০২৪, ১৯: ৩২
ইন্টারনেটে অপতথ্যের রমরমা: কারা করে, কীভাবে ছড়ায়

ডিজিটাল দুনিয়ার অন্যতম চ্যালেঞ্জ অপতথ্যের বিস্তার ঠেকানো। বিভিন্ন দেশের সরকার এবং টেক জায়ান্টগুলো এই অপতথ্যের স্রোত ঠেকানোর চেষ্টা করলেও তা এখনো প্রায় অপ্রতিরোধ্য। সম্প্রতি ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট অপতথ্যের বিকাশ, বিস্তার এবং এর প্রভাব নিয়ে একটি সংখ্যা করেছে। সেখান থেকে নির্বাচিত কয়েকটি নিবন্ধ আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান। 

ইন্টারনেটের হাত ধরে প্রসারিত হয়েছে ডিজিটাল দুনিয়া। এই দুনিয়ায় তথ্যের প্রবাহ এতটাই বেশি যে, কোনটি তথ্য আর কোনটি অপতথ্য সেটি নিশ্চিত হওয়াই কঠিন। আধুনিক দুনিয়ায় অপতথ্য চিহ্নিত করা এবং তা ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোই এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। তবে সেই চ্যালেঞ্জে নামার আগে অপতথ্য কীভাবে কাজ করে, কীভাবে ছড়ায় সেটি বোঝা জরুরি।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণের প্রাক্কালে ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এক্স ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘সাই ইং-ওয়েনের গোপন ইতিহাস’ নামে হাজারো ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওগুলোতে উপস্থাপকেরা ইংরেজি ও চীনা ভাষায় সাই ও তাঁর দল সম্পর্কে একাধিক মিথ্যা তথ্য হাজির করে। 

এমনকি নির্বাচনের দিন চীনপন্থী বলে পরিচিত তেরি গৌয়ের একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে গৌকে বলতে শোনা যায়, তিনি নির্বাচনে চীনপন্থী প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। অথচ, তেরি গৌ এমন কোনো বক্তব্য দেননি বলে নিজেই জানিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, তেরি গৌ নিজেও প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন। পরে অবশ্য নভেম্বরে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন তিনি। 

এসব ভিডিও ও অডিও ক্লিপ সম্ভবত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। এই ভিডিও ও অডিও ক্লিপগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছিল চীনা প্রোপাগান্ডা প্ল্যাটফর্ম স্প্যামোফ্লাজ, ড্রাগনব্রিজ ও স্টর্ম–১৩৭৬ থেকে। চলতি বছরের এপ্রিলে মাইক্রোসফটের থ্রেট ইন্টেলিজেন্স নামের একটি দল উল্লেখ করে, এই প্রথমবারের মতো তাঁরা প্রমাণ পেয়েছেন যে—একটি রাষ্ট্র এআই ব্যবহার করে বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছে। 

সাই ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে যেসব ভিডিও ছড়ানো হয়েছিল, সেখানে যেসব উপস্থাপককে হাজির করা হয়েছিল সেগুলোও বাস্তব কোনো চরিত্র নয়। এগুলো তৈরি করা হয়েছিল ক্যাপকাট নামে একটি অ্যাপ ব্যবহার করে। যার মালিক প্রতিষ্ঠান চীনের বাইটড্যান্স; এটি আবার টিকটকেরও মাতৃপ্রতিষ্ঠান। এই ভিডিওগুলো এত দ্রুত ছড়িয়েছিল যে, একটা সময় প্রতি মিনিটে ১০০ বারেরও বেশি ছড়ানো হয়েছিল। কিন্তু পরে বিষয়টি জানাজানি হলে খুব দ্রুতই সেগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপরও কিছু মানুষ হয়তো সেই ভিডিওগুলো দেখেছেন। 

তাইওয়ানের এক কর্মকর্তা তাইপেই টাইমসকে বলেন, চীন সম্ভবত এই ‘অপতথ্য’ ছড়ানোর কৌশলটি অন্যত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাইওয়ানকে পরীক্ষাক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। 

তাইওয়ানের নির্বাচন সম্ভবত এআই দিয়ে তৈরি বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়ার একটি নমুনামাত্র। তাইওয়ানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো যেমন অন্য রাষ্ট্রের অপতথ্য দিয়ে ভরে গিয়েছিল, একই অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রেরও। 

চলতি বছরে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে। ঠিক এই সময়ে বিভ্রান্তি তৈরি ও ছড়িয়ে দেওয়া আগের তুলনায় অনেক সহজ করে তুলছে নতুন প্রযুক্তি। ফলে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে সমস্যাটি মোকাবিলা করার প্রয়োজনীয়তা বর্তমানে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি অনুভূত হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বলেছেন, বিভ্রান্তিকর ও ভুল তথ্য আগামী দুই বছরে সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক ঝুঁকি হিসেবে আবির্ভূত হবে। এমনকি যুদ্ধ, চরম আবহাওয়া বা মূল্যস্ফীতির চেয়েও বেশি বিপজ্জনক হবে। 
 
এই বিষয়টি এখনো অস্পষ্ট যে, বর্তমান সময়ে ঠিক কী পরিমাণ অপতথ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এবং তা কীভাবে ব্যক্তির মতামত বা আচরণকে প্রভাবিত করে। তবে গবেষকেরা বিভ্রান্তিকর তথ্যের নেটওয়ার্কগুলো কীভাবে কাজ করে এবং জোয়ারের মতো বাড়তে থাকা অপতথ্য কীভাবে শনাক্ত ও পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব সে উপায়গুলোর বিকাশ ঘটাচ্ছেন। তাইওয়ান, সুইডেন ও ব্রাজিলের মতো কিছু দেশ অপতথ্যের সমস্যা মোকাবিলায় বেশ কিছু নীতি প্রয়োগ করেছে যা অন্যদের জন্য দরকারি শিক্ষা হতে পারে। 

অপতথ্য অনেক রূপ ধারণ করতে পারে এবং তা অনেকগুলো দিককে প্রভাবিত করতে পারে। এ বিষয়ে সাবেক সাংবাদিক ও বর্তমানে অপতথ্য নিয়ে কাজ করা আমিল খান বলেন, অনেক বছর ধরেই অপতথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে লাখ লাখ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। একটিমাত্র নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করে একই বার্তা লাইক, শেয়ারের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব। 
 
আমিল খান জানান, বড় পরিসরে এই ‘কো–অর্ডিনেটেড ইন–অথেনটিক বিহেভিয়র (সিআইবি) ’ বা সমন্বিত অনির্ভরযোগ্য তথ্য ছড়ানোর কৌশল ফেসবুক বা এক্সের কিউরেশন অ্যালগরিদমকে বোকা বানাতে পারে। যার ফলে, এই প্ল্যাটফর্মগুলো মনে করে, অপতথ্য ছড়ানোর কনটেন্টগুলোর প্রতি মানুষের আগ্রহ আছে। ফলে অ্যালগরিদম নিজ থেকেই এই কনটেন্টগুলোকে প্রকৃত ব্যবহারকারীদের কাছে আরও বেশি বেশি উপস্থাপন করে। 

আমিল খানের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ভ্যালেন্ট প্রজেক্ট সিআইবির একটি উদাহরণ হাজির করেছে। কিছুদিন আগে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান ডেওউও ইরাক সরকারের একটি নির্মাণকাজের ঠিকাদারি পায় ২৬০ কোটি ডলারে। কিন্তু চীনা অপতথ্যের প্ল্যাটফর্মগুলো এই কোম্পানিটির বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে এবং নেতিবাচক তথ্য প্রচার শুরু করে। যাতে করে, ডেওউও-এর ঠিকাদারি বাতিল হয় এবং শেষ পর্যন্ত কাজটি চীনা কোম্পানি পায়। 

ওইসব প্রচারণায় ডেওউওকে ‘ইরাকি সম্পদ শোষণের মার্কিন ফ্রন্ট’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। এসব ভিডিওতে কিছু বানোয়াট বক্তব্য মার্কিন কর্মকর্তাদের নামে হাজির করে বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে, আমেরিকা সিনো-ইরাকি সম্পর্ক বিনষ্ট করার অপচেষ্টা করছে। যদিও ইরাক ও কাতারের বিভিন্ন ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান এসব অপতথ্যের ব্যাপারে কাজ করে ভুল ভাঙানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে খুব একটা ফায়দা হয়নি। 

আমিল খানের মতে, প্রযুক্তির কল্যাণে আজকাল এসব সিআইবি কর্মকাণ্ড শনাক্ত করা খুব সহজ হয়ে গেছে। ফেসবুকের মাতৃপ্রতিষ্ঠান মেটা ইদানীং এই কাজটি বেশ সফলতার সঙ্গে করছে। ধীর গতিতে হলেও এক্সও একই কাজ করছে। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মেটা অন্তত তিনটি সিআইবি অপারেশনের ব্যাপারে তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেছে। এসব সিআইবি অপারেশনের উৎস ছিল চীন, ইউক্রেন ও মিয়ানমার। মেটার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন থেকে যেসব সিআইবি অপারেশন চালানো হয়েছে, তা রুশ ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসগুলো খুব দ্রুতই শনাক্ত করে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। 

কিন্তু ২০২২ সালের পর থেকে অপতথ্য ছড়ানোর বিষয়টি নতুন রূপ ধারণ করেছে। এই সময় বিভিন্ন ‘ডিনায়াবল এনটিটি’ যেমন, বিভিন্ন মার্কেটিং কোম্পানি এবং ট্রল ফার্ম—যেগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ কোনো যোগসূত্র নেই—এরা ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা বিভিন্ন ব্লগিং প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট কনটেন্ট শেয়ার করে। 

অপতথ্য নিয়ে কাজ করা মার্কিন সংস্থা নিউজগার্ড জানিয়েছে, ২০২৩ সালের মে মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে অপতথ্য ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এআই দিয়ে ওয়েবসাইটের সংখ্যা ৪৯ থেকে বেড়ে ৮০২–এ পৌঁছেছে। এই সাইটগুলোর বেশির ভাগের কনটেন্ট খুবই নিরীহ গোছের, কিন্তু তাতে মিথ্যা তথ্য মিশ্রিত থাকে, যা পাঠক বা দর্শককে সহজেই বিভ্রান্ত করতে পারে। 

উদাহরণ হিসেবে ডিসি উইকলি নামের ওয়েবসাইটের কথাই ধরা যাক। দেখতে মার্কিন মনে হলেও এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রে রুশ অপতথ্য প্রচারণার কেন্দ্রে ছিল। এই ওয়েবসাইট থেকেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির স্ত্রী ওলেনা জেলেনস্কার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয়েছিল যে, যুদ্ধের দুর্দশার মধ্যেও ওলেনা যুক্তরাষ্ট্রে এক দিনে ১১ লাখ ডলারের কেনাকাটা করেছেন। 

পরে অবশ্য সাউথ ক্যালিফোর্নিয়ার ক্লেমসন ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা এই প্রচারণাকে ভুয়া প্রমাণ করেন। গবেষকেরা দেখেছেন, ওলেনার বিরুদ্ধে এই প্রোপাগান্ডা ইউটিউবের একটি ভিডিওর মাধ্যমে শুরু হয়েছিল এবং পরে তা বেশ কয়েকটি আফ্রিকান ফেক নিউজ ওয়েবসাইট এবং এআই দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রচারিত/প্রকাশিত হয়। এরপর রুশ প্রোপাগান্ডা প্ল্যাটফর্মগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেগুলো ছড়িয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। ওলেনাকে নিয়ে এ সংক্রান্ত কনটেন্টগুলো অন্তত ২০ হাজারবার শেয়ার হয়। 

যেসব সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট এবং ওয়েবসাইট প্রাথমিকভাবে এসব অপতথ্য উৎপাদন ও শেয়ার শুরু করছে সেগুলোকে আমিল খান ‘সিডারস’ বা সূত্রপাতকারী বলে উল্লেখ করছেন এবং যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে কনটেন্টগুলো ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে সেগুলোকে ‘স্প্রেডার’ বা বিস্তারকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন। অপতথ্য উৎপাদকেরা এ ধরনের স্প্রেডার ব্যবহার করেই অপতথ্যকে বানের জলের মতো ডিজিটাল পরিসরে ছড়িয়ে দিচ্ছে। 

আমিল খানের মতে, এ ধরনের স্প্রেডার অ্যাকাউন্টগুলো প্রথম দিকে মূলত খেলাধুলা ও স্বল্পবসনা নারীদের ছবি/ভিডিও ব্যবহার করে ফলোয়ার সংগ্রহ করে। এরপর হঠাৎ একদিন সেগুলো ভোল পাল্টে ফেলে এবং সিডার অ্যাকাউন্টগুলোর কনটেন্ট লাইক বা শেয়ার করার মাধ্যমে অপতথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার সহযোগী হয়ে ওঠে। 

গত বছরের নভেম্বরে প্রকাশিত মেটার থ্রেট রিপোর্টে (ঝুঁকি বিষয়ক প্রতিবেদন) উল্লেখ করা হয়, চীনের স্প্যামোফ্লাজ, স্টর্ম-১৩৭৬-এর মতো অর্ধশতাধিক প্ল্যাটফর্ম মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোতে তাদের অপতথ্যের কনটেন্ট শেয়ার করার আগে বিভিন্ন ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম—মিডিয়াম, রেডিট ও কৌরায় শেয়ার করেছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর কম বয়সী ও প্রযুক্তি বোঝা তরুণেরা স্প্রেডার অ্যাকাউন্ট তৈরির বড় উৎস। আমিল খান বলছেন, দরিদ্র দেশগুলোতে অপতথ্যের কনটেন্ট ছড়ানোর ক্ষেত্রে রীতিমতো ‘কুটির শিল্প’ দাঁড়িয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যেমন, এই তরুণেরা বিভিন্ন পেজ তৈরি করে এবং সেগুলোর ফলোয়ার ১ লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর তারা টাকার বিনিময়ে সেই অ্যাকাউন্ট বিভিন্ন অপতথ্য শেয়ারকারী সিডারের কাছে বিক্রি করে। 

এই প্রক্রিয়াটিই অপতথ্যের মূল উৎস খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তোলে। কারণ, স্প্রেডার অ্যাকাউন্টগুলোর মালিকেরা প্রায়ই প্রযুক্তি বিষয়ে অতটা দক্ষ হয় না। এ ছাড়া যে অপতথ্য শেয়ারের মাধ্যমে উপার্জন করে সেটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রায়ই তারা অবগত থাকে না বা থাকার প্রয়োজনও মনে করে না। 

স্প্রেডারদে শনাক্ত করা বেশ কঠিন, কারণ তাদের আচরণে কোনো উদ্দেশ্য বা সন্দেহ করার মতো উপাদান থাকে না। অন্তত একটি স্প্রেডার অ্যাকাউন্ট তৈরির শুরুটা নিছক কনটেন্ট শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মই থাকে। এই স্প্রেডাররা অপতথ্যের উৎসও নয়। এরা মূলত বড় পরিসরে কনটেন্টের প্রচারকারী। আবার সচেতনভাবে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে অপতথ্য ছড়ানো হয়, সেগুলো একই সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ে কনটেন্টও শেয়ার করে এবং ধরা পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি এড়াতে মাঝে মাঝে অপতথ্য ও অন্যান্য কনটেন্ট মিশিয়ে শেয়ার করে। 

চলবে...

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
আজকের পত্রিকার নামে ছড়িয়ে পড়া এই ফটোকার্ডটি ভুয়া

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।

আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৫
মধ্যরাতে মাঝরাস্তায় বাঘকে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে মাতাল—ভাইরাল ভিডিওটি ফেক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত
বাঘকে বোতল থেকে মদ খাওয়ার দাবি করা ভিডিওর ক্যাপশন, যেখান থেকেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।

বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’

ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি

বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।

বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ

এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত
এআই টুল দিয়ে ভিডিওটির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রমাণ পরীক্ষার ফলাফল। ছবি: সংগৃহীত

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।

একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানি জেনারেলকে ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলযুক্ত বাংলাদেশের পতাকা উপহারে’র দাবি নিয়ে যা বলল সিএ ফ্যাক্ট চেক

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং
ছবি : সিএ ফ্যাক্ট চেকিং

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।

ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।

‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।

গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফ্যাক্টচেক /অরকার আক্রমণে তরুণী প্রশিক্ষকের মৃত্যু, ভাইরাল ভিডিওটি সম্পর্কে যা জানা গেল

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫০
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র‍্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।

ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।

ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে

ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।

ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই

ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র‍্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
এক্স-এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত

ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।

সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল

এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র‍্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।

কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়

বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।

কথিত জেসিকা র‍্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত