Ajker Patrika

গরিবের অসুখ হতে নেই

সম্পাদকীয়
গরিবের অসুখ হতে নেই

ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসার জন্য দেশের একমাত্র বিশেষায়িত সরকারি চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইসিআরএইচ)। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানেচিকিৎসাসেবা নিতে এসে এখন রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই।

সাধারণত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন কয়েক শ রোগী এসে কাঙ্ক্ষিত সেবা নিতে পারছে না। মফস্বল থেকে আসা রোগীরা দীর্ঘ অপেক্ষা করেও থেরাপি নিতে পারছে না। থেরাপির তারিখ পাওয়ার আশায় মেঝে ও সিঁড়িতে বসে থাকতে দেখা হয় অনেক রোগীকে। ভাগ্যক্রমে কেউ হাসপাতালে ভর্তি হতে পারলেও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ছুটতে হয় আশপাশের বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে, গুনতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা। কেউ কেউ আক্ষেপ করে বলে, ‘এ দেশে গরিবদের অসুখ অইতে নাই।’

অথচ আগে এ হাসপাতালেই ক্যানসারের অধিকাংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা হতো। কিন্তু রোগনির্ণয় ও থেরাপির জন্য কেনা মূল্যবান যন্ত্রগুলোর বেশির ভাগ এখন অকেজো। আয়ুষ্কাল শেষ হয়েছে অনেক আগেই। নতুন যন্ত্র কেনার উদ্যোগ নেই। দু-একটি যন্ত্র সম্প্রতি নষ্ট হলেও মেরামতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে যেন ‘কার গোয়াল, কে দেয় ধুঁয়ো’।

২৪ নভেম্বর আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, দেড় যুগ আগে একটি ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) যন্ত্র যুক্ত করা হয়েছিল। দেড়-দুই বছর চলার পরই যন্ত্রটি বিকল হয়ে পড়লেও সেটি সারানো কিংবা নতুন যন্ত্র কেনা হয়নি। দুটি এক্স-রে যন্ত্রের একটি অনেক আগে থেকেই বিকল, অন্যটিও এক বছরের বেশি সময় ধরে নষ্ট। ফলে এক বছর ধরে হচ্ছে না এক্স-রে। দুটি সিটি স্ক্যান যন্ত্রের একটি নষ্ট বছরখানেক ধরে। এন্ডোস্কোপির দুটি যন্ত্রের মধ্যে একটি নষ্ট হয়েছিল কয়েক বছর আগে, অন্যটিও সম্প্রতি নষ্ট হয়েছে। ফলে এন্ডোস্কোপিও বন্ধ। কোলনোস্কোপির একটি যন্ত্র কয়েক বছর ধরে অকেজো, আরেকটি নষ্ট হয়েছে মাস ছয়েক আগে।

সরকারি এই হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা না থাকা বা কম থাকার ফায়দা নিচ্ছে আশপাশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো; বিশেষ করে সরকারি এই হাসপাতালের কাছাকাছি দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে বেশির ভাগ রোগীকে। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কারণে প্রয়োজনীয় যন্ত্র কিনতে সময় লাগার সুযোগে অনেক চিকিৎসক ও কর্মকর্তা বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে সেখানে রোগী পাঠান। এভাবে তাঁরা লোভনীয় কমিশন পান। এ জন্যই সম্ভবত সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা সরকারি হাসপাতালে জরুরি যন্ত্রপাতি সচল রাখতে তেমন উদ্যোগী হন না। বিষয়টি অনৈতিক।

হাসপাতালের রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নিজামুল হক সম্প্রতি হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্ব নিয়েছেন।তিনি দ্রুত হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা দূর করে নতুন যন্ত্র কেনা ও সচল করার উদ্যোগ নেবেন বলে আমরা আশা করছি। সাধারণ মানুষের কষ্ট না বাড়িয়ে কমানোর চেষ্টা করাই উত্তম। জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল নিয়ে যেসব অভিযোগ, এর একটি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

ধর্ষণে মেয়ে গর্ভবতী, বাবার আমৃত্যু কারাদণ্ড

ভারতসহ একসঙ্গে তিন দেশ সামলাবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত, দিল্লিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারীর সঙ্গে ঝগড়ার পর রূপসা সেতু থেকে নিচে লাফ দেন সাংবাদিক বুলু: কোস্ট গার্ড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত