Ajker Patrika

বিষাক্ত বর্জ্যে বাড়ছে দূষণ

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ২৩
বিষাক্ত বর্জ্যে বাড়ছে দূষণ

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনা সার কারখানার বিষাক্ত তরল বর্জ্য ও অ্যামোনিয়া গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের এলাকায়। সার কারখানার তরল বর্জ্যে বাড়ছে দূষণ। আশপাশের পুকুরের মাছ যাচ্ছে মরে। জমির ফসল, ফলদ ও বনজ গাছপালা রেহাই পাচ্ছে না তরল বর্জ্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে। সার কারখানার বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না করায় ১০ গ্রামবাসীর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে।

সার কারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম দ্রুতই করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মঈনুল হক। তিনি বলেন, ‘সার কারখানা থেকে নির্গত পানির কারণে আশপাশের পরিবেশ দূষিত হওয়ার বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। সার কারখানার তরল বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলছে।’

জানা গেছে, জেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দিতে ১৯৯১ সালে যমুনা সার কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন সার উৎপাদন হয় এই কারখানায়। তবে নেই কোনো শোধনাগার। ফলে কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা থাকলেও তার অধিকাংশ মাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। কারখানা প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় ৩০ বছর ধরে ওই ড্রেনগুলোর কোনো সংস্কার করা হয়নি। ফলে প্রতিদিন কারখানা থেকে নির্গত তরল বর্জ্য ড্রেন থেকে উপচে চারপাশের পুকুর, ফসলি জমি, বসতবাড়ি ও বিদ্যালয় মাঠসহ প্রধান সড়কে ছড়িয়ে পড়ছে। বিষাক্ত বর্জ্য পুকুরের পানিতে মিশে মরে যাচ্ছে মাছ। বাদ যাচ্ছে না জমির ফসল, ফলদ ও বনজ গাছপালা।

এ ছাড়া কারখানা থেকে প্রতিনিয়ত অ্যামোনিয়া গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে। এই গ্যাসের কারণে কারখানার চারপাশের প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছেন। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। কারখানার কাছের বসতবাড়িগুলোর নলকূপের পানি পানের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কল চাপলেই বেরিয়ে আসছে দুর্গন্ধযুক্ত বিষাক্ত পানি। পোগলদিঘা ইউনিয়নের চরপাড়া, পলিশা, কান্দারপাড়া, তারাকান্দি, পাখিমারা, পোগলদিঘা, জগন্নাথগঞ্জ, বয়ড়াসহ প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী কারখানা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে।

পোগলদিঘা ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মিজান জানান, যমুনা সার কারখানার বিষাক্ত তরল বর্জ্য আর অ্যামোনিয়া গ্যাস চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বাড়ছে দূষণ। ফলে প্রতিনিয়ত মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

পোগলদিঘা ইউপি চেয়ারম্যান সামস উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে বিসিআইসি ও সার কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তাতেও কোনো কাজ হয়নি।’

তবে স্থানীয় প্রশাসন বলছে দ্রুতই এ সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত