Ajker Patrika

কথা রাখলেন না বিএমডিএ চেয়ারম্যান

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৫৫
কথা রাখলেন না বিএমডিএ চেয়ারম্যান

রাজশাহীর গোদাগাড়ীর নিমঘুটু গ্রামে সেচের পানি না পেয়ে দুই সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যার তিন সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। এ ঘটনা আলোড়ন ফেলে দেশব্যাপী। ঢাকা থেকে অনেকে গেছেন দুই কৃষকের বাড়ি। কিন্তু গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থলেই যাননি গভীর নলকূপের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান। শনিবার ঘটনাস্থলে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। কথা দিয়ে না রাখায় এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের।

দুই কৃষকের মৃত্যুর জন্য দুঃখ প্রকাশ করে গত বৃহস্পতিবার বিএমডিএ চেয়ারম্যান বলেছিলেন, শনিবার তিনি নিমঘুটু যাবেন। তবে তিনি যাননি।

দুই কৃষকের মৃত্যুর পর ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে বলা হচ্ছিল, তাঁরা চোলাই মদ পানে মারা গেছেন। কিন্তু গত শনিবার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চোলাই মদ নয়, বিষপানেই মারা যান ক্ষুদ্র জাতিসত্তার দুই কৃষক।

গত ২৩ মার্চ গোদাগাড়ীর নিমঘুটু গ্রামের কৃষক অভিনাথ মারান্ডি ও তাঁর চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি বিষপান করেন। এতে তাঁদের মৃত্যু হয়।

ঘটনার পর থেকে নানা সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটিও কর্মসূচি পালন করছে। তারা ঘটনার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। ৩৫ গ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারের কৃষাণ-কৃষাণিরা বরেন্দ্র ভবনও ঘেরাও করেছেন। তারপর রক্ষাগোলার সঙ্গে ১৪ এপ্রিল নিজের দপ্তরে বসেছিলেন বিএমডিএ চেয়ারম্যান আখতার জাহান। সেদিন তিনি বলেছিলেন, কৃষকদের সঙ্গে বিএমডিএর যোগাযোগের ঘাটতির কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটে গেছে। নিবিড় যোগাযোগ থাকলে এটা হতো না। ঘটনার দিন তিনি ঢাকায় ছিলেন। পরেও তাঁকে দাপ্তরিক কাজে ঢাকায় থাকতে হয়েছে। তাই তিনি ঘটনাস্থলে যেতে পারেননি। তবে ১৬ এপ্রিল তিনি ঘটনাস্থলে যাবেন। শেষ পর্যন্ত তিনি যাননি।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির সদস্য নিরঞ্জন কুজুর, কাথারিনা হাঁসদা ও রঞ্জিত পাহাড়িয়া। তাঁরা বলেন, ঘটনার পর এখনো বিএমডিএর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা নিমঘুটু যাননি। অথচ ঢাকা থেকে অনেকে এ গ্রামে এসেছেন, ওই দুই পরিবারকে সান্ত্বনা জানিয়েছেন। বিএমডিএ’র চেয়ারম্যানের সেখানে না যাওয়াটা কৃষকদের প্রতি অবহেলার প্রকাশ।

একই কথা বলেছেন রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির সদস্যসচিব আরিফ ইথার। তিনি বলেন, ‘বিএমডিএর চেয়ারম্যান ম্যাডাম আমাদের ডেকে বলেছিলেন তিনি নিমঘুটু যেতে চান। দিনক্ষণও ঠিক হয়েছিল। পরে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী ফোন করে জানিয়েছেন, শনিবার যাওয়া হচ্ছে না। পরে গেলে জানানো হবে। কিন্তু আর কিছু জানানো হয়নি।’

এ বিষয়ে কথা বলতে বিএমডিএ চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহানকে মোবাইল ফোনে কল করা হলেও পাওয়া যায়নি তাঁকে।

বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক আবদুর রশীদ বলেন, ‘একটু ব্যস্ততার কারণে চেয়ারম্যান ম্যাডাম গোদাগাড়ী যেতে পারেননি। তবে যাবেন।’ কবে যাবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দিন ঠিক হলে আপনাদের জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত