Ajker Patrika

জনগণ পাশে আছে…

সম্পাদকীয়
জনগণ পাশে আছে…

বৃহস্পতিবার রাতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের মাঝে একটা আস্থা তৈরি হয়েছে। আমি তাদের জন্য কাজ করি। ওই আস্থা ও বিশ্বাসই আমার একমাত্র সম্বল। এই সম্বল নিয়ে আমি চলি। এ জন্য কাউকে পরোয়া করি না। যতক্ষণ আমার দেশবাসী পাশে আছে, কাউকে পরোয়া করি না।’

প্রশ্ন হলো, সত্যি সত্যি দেশের মানুষ সরকারের পাশে আছে কি না। শেখ হাসিনা যে মনোবল ও দৃঢ়তা নিয়ে কথা বলেন, তাতে তাঁর আত্মবিশ্বাসের পরিচয়ই ফুটে ওঠে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের যাঁরা সমালোচনা করেন, তাঁদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ভোগ করবেন সবাই আর কথায় কথায় ব্যঙ্গ করবেন আর প্রশ্ন তুলবেন…। প্রশ্ন তোলার আগে, নিজেরা কী করেছেন, কোন দল করেন, সেই দলের বৃত্তান্ত থেকে শুরু করে অপকর্মগুলো—একটু চিন্তা করে নেবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ঋণখেলাপি সংস্কৃতি ও ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু হয়েছিল জিয়াউর রহমান যখন অবৈধ ক্ষমতা দখল করে, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে, সেই সময় থেকে, যার ধারাবাহিকতা থেকে এখনো পূর্ণ মুক্তি পাওয়া যায়নি।’

সংসদ নেতা বলেন, ‘আজকে অনেকেই গণতন্ত্রের কথা বলে। গণতন্ত্রের প্রবক্তা হয়ে গেছে অনেকেই। আমার প্রশ্ন, তাদের জন্ম কি গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে হয়েছে? না, ওই রক্তাক্ত হাতে যারা ক্ষমতা দখল করেছিল, সেই সেনা কর্মকর্তাদের পকেট থেকে তৈরি করা রাজনৈতিক দল?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ মেট্রোরেল নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। আজ প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার মানুষ মেট্রোরেল দিয়ে চলতে পারেন। এতে যাঁরা চড়ছেন, তাঁরা সুফল পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘যারা এটা (মেট্রোরেল) নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, তারা লজ্জা পাচ্ছে কি না, জানি না।’

শেখ হাসিনা বলেছেন, কেউ কেউ বলেন, বাংলাদেশে রাস্তা বানাতে এত খরচ কেন? তাঁদের দেশের মাটি সম্পর্কে মোটেও ধারণা নেই। এ মাটি নরম। এখানে কোনো কিছু করতে গেলে, অর্থাৎ ওই যেনতেনভাবে করতে গেলে দু-চার দিনের বেশি থাকে না। সেখানে সরকার আধুনিক প্রযুক্তিতে রাস্তা তৈরি করছে। যেখানে শক্ত মাটি, সেখানে অত খরচ হয় না। নরম মাটি বলেই খরচ বেশি।

প্রধানমন্ত্রী হয়তো নতুন কোনো কথা বলেননি। সরকারপ্রধান হিসেবে এসব কথা তিনি আগেও একাধিকবার বলেছেন। তবে জনগণের ওপর আস্থার যে কথাটি তিনি বলেছেন, তার একটি ভিন্ন গুরুত্ব আছে। শত নেতিবাচক প্রচারণা ও বিরোধীদের এত আন্দোলনের হুমকির পরও যে সরকার শক্ত অবস্থানে আছে, তার একটি বড় কারণ হয়তো এটাই যে সত্যিকার অর্থেই জনগণ এই সরকারের পক্ষে আছে। হতে পারে সেটা উত্তম বিকল্প না থাকার কারণেই। তবে খারাপ নজির অনুসরণ করা ভালো লক্ষণ নয়। ভোটের প্রতি মানুষের অনাগ্রহের বিষয়টি সরকারপ্রধানের বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত