Ajker Patrika

ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদকীয়
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়

‘ঢাকার ভানু’ নামে পরিচিত ছিলেন কৌতুক অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আসল নাম সাম্যময় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকার সেন্ট গ্রেগরিজ হাইস্কুল এবং জগন্নাথ কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন।

১৯৪১ সালে তিনি কলকাতায় গিয়ে আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি নামে একটি সরকারি সংস্থায় চাকরি শুরু করেন। তাঁর অভিনয়জীবন শুরু হয় ১৯৪৭ সালে ‘জাগরণ’ সিনেমার মাধ্যমে। এরপর ‘মন্ত্রমুগ্ধ’, ‘বর‍যাত্রী’, ‘পাশের বাড়ী’, ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ প্রভৃতি কালজয়ী সিনেমায় তিনি অসাধারণ অভিনয় করেন। ‘মিস প্রিয়ংবদা’ ছবিতে তিনি নারী সেজে অভিনয় করেছিলেন এবং যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

মৃত্যুর আগপর্যন্ত তিনি ২৩১টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে দুটি হিন্দি ‘বন্দিশ’ ও ‘এক গাঁও কি কাহানি’ সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন।

মানুষকে হাসানো জগতের সবচেয়ে কঠিন কাজের একটি। ভানুর কৌতুকাভিনয়ে নির্মল আনন্দে হাসত মানুষ। সংলাপ উচ্চারণে তিনি ব্যবহার করতেন ঢাকাইয়া ভঙ্গি, যা একই সঙ্গে তাঁর অভিনয়কে জীবন্ত ও স্বতন্ত্র করে তুলেছে।

নিজে যেমন অসাধারণ কৌতুক অভিনয় করতেন, তেমনি তাঁর ‘সেন্স অব হিউমার’ও ছিল অতুলনীয়। বিশ্ববরেণ্য পরিচালক হয়ে ওঠার আগে থেকে সত্যজিৎ রায়কে চিনতেন তিনি। একদিন এক সিনেমার অফিসঘরে ঢুকে দেখেন সিনেমা হলের মালিকসহ কয়েকজনের সঙ্গে বসে আছেন সত্যজিৎ রায়। ঘরে ঢুকেই ভানু চেঁচিয়ে বললেন, ‘আরে, এই সত্যজিৎ রায়টি কে? এ তো সাংঘাতিক ছবি বানিয়েছে।’

তৎক্ষণাৎ মালিক বললেন, ‘আরে, মানিকবাবুই তো সত্যজিৎ রায়।’ সঙ্গে সঙ্গে ভানুর কণ্ঠ থেকে অমোঘ ভবিষ্যদ্বাণী বেরোয়, ‘আরে মশাই, কী ছবি বানিয়েছেন। আপনি তো কাননবালার চেয়ে বেশি পপুলার হয়ে যাবেন।’

ভানু ঢাকা ছেড়েছিলেন ১৯৪১ সালে, কিন্তু বুকের মধ্যে করে নিয়ে যান ঢাকাকে। সেই পরিচয় নিয়েই ১৯৮৩ সালের ৪ মার্চ তিনি চলে যান পৃথিবী ছেড়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত