Ajker Patrika

বাল্যবিবাহকে ‘না’ বলি, সঞ্চয়ে ভবিষ্যৎ গড়ি

বাল্যবিবাহকে ‘না’ বলি, সঞ্চয়ে ভবিষ্যৎ গড়ি

‘বাল্যবিবাহ করব না। নিজের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করব।’ এভাবে নিজের মনোভাব ব্যক্ত করেছে জান্নাতুল আক্তার স্বপ্না। সে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কায়েমকোলার আলিমননেছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

শুধু স্বপ্না নয়, একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ১০০ জন ছাত্রী একই মনোভাব ব্যক্ত করেছে। আলিমননেছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজের এসব শিক্ষার্থী কিশোরী সংঘের সদস্য। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) দরিদ্র নারীদের জন্য সমন্বিত পল্লি কর্মসংস্থানের সহায়তা প্রকল্প (ইরেসপো-২য় পর্যায়) কিশোরী সংঘের কার্যক্রম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়নে কাজ করছে। এখানে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকাল সম্পর্কে সচেতন করা হয়। পাশাপাশি বাল্যবিবাহ রোধের জন্য ১৮ বছরের নিচে বিয়ে না করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এ ছাড়া যৌতুক, নারী নির্যাতন ও ইভটিজিং প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে এ সংঘের সদস্যদের আত্মপ্রত্যয়ী করে গড়ে তোলা হচ্ছে।

বিআরডিবির উপজেলা সহকারী পল্লি উন্নয়ন কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ লিমন বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে গত জানুয়ারি মাসে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ১০০ জন ছাত্রী নিয়ে গঠন করা হয়েছে পল্লি উন্নয়ন কিশোরী সংঘ। সংঘের সদস্যরা প্রতি মাসে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় করে থাকে। এ ছাত্রীদের প্রতি মাসে প্রশিক্ষণ, বিনা মূল্যে স্যানিটেশন ও শিক্ষাসামগ্রী দেওয়া হয়।

এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষানুরাগী সদস্য আশরাফ হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়ে কিশোরী সংঘের সদস্য। সে এখন বাল্যবিবাহ রোধে দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এ সংঘে সে প্রতি মাসে সঞ্চয় করে।’

ঝিকরগাছা উপজেলা পল্লি উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, নারীদের শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে, স্বাবলম্বী ও আত্মনির্ভরশীল করে উন্নয়নের মূল ধারায় যুক্ত করাই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

অধ্যক্ষ শাহানারা খাতুন বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানটি অজপাড়াগাঁয়ে হওয়ায় বাল্যবিবাহের হার ছিল অনেক বেশি। কলেজটিতে কিশোরী সংঘ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ হার বেশ খানিক কমেছে। সদস্যরা কিশোরী বয়সে যে সঞ্চয় করছে তা ১৮ বছরের নিচে তুলতে পারবে না। ফলে শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া ও বাল্যবিবাহ অনেকাংশে কমে আসছে। তা ছাড়া, মেয়েরা প্রতি মাসে প্রশিক্ষণ পাচ্ছে।’

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) যশোরের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, এ জেলার প্রতি উপজেলায় দুটি করে ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শুধু ছাত্রীদের নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এই কিশোরী সংঘ। এ সংঘের সদস্যদের সঞ্চয়ের ওপর বছর শেষে ২০০ শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত