জিন্নাত আরা ঋতু
শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ, বুলিং কিংবা সম্পর্কের টানাপোড়েন—ঘটনা যা-ই হোক, দায়ী কিন্তু নারীই। ধরুন কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হলেন, সমাজের একশ্রেণির লোক দুষবে ওই নারীকেই। তাদের বিবেক গিয়ে ঠেকবে নারীর পোশাকে। অথচ একজন ধর্ষকের চরিত্র নিয়ে সমালোচনা হলেও তা নামমাত্র। এ সমাজ কেন পুরুষকে প্রশ্নের সম্মুখীন করে না? কেন বারবার আঙুল তোলা হয় নারীদের দিকেই?
এটুকু পড়ে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। আমি আগেই বলেছি, ‘একশ্রেণির লোক’। অতএব সমাজের সবাইকে প্রশ্নবিদ্ধ করছি না। এটা বলারও সুযোগ নেই নারীরা বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে পারেন না, পুরুষেরাই দাঁড়াবেন। মানুষের ভুল হবে, এটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু সবকিছুতেই কেন নারীরা প্রশ্নবোধক চিহ্নে পরিণত হন। বোঝার সুবিধার জন্য একটু বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। রাস্তা, গণপরিবহন বা জনসমাগম হয় এমন স্থানে কোনো নারী বুলিং কিংবা শ্লীলতাহানির শিকার হলেন। এ ক্ষেত্রে দেখা যাবে সমাজের কিছু মানুষ প্রতিবাদ করবে। অনেকে নির্বাক হয়ে দেখবে আর কিছু অংশ অহেতুক প্রশ্ন করবে। নারীদের ভিড়ের মধ্যে কী? গণপরিবহনে চললে ধাক্কা লাগবেই, এটুকু সহ্য করতে না পারলে গণপরিবহনে কেন, প্রাইভেট কারে যান। আর অযাচিত চাহনি ও মন্তব্য তো আছেই।
পাবলিক প্লেসে নারীরা চললেই কি তাঁরা পাবলিক প্রপার্টি? নানান বাহানায় নারীদের স্পর্শ করা কোন ধরনের মানসিকতার পরিচয় দেয়। এটা কি ভব্যতা বা শালীনতার মধ্যে পড়ে?
এ তো গেল দৈনন্দিন মামুলি বিষয়। মামুলি বিষয় এ কারণে বলছি, সমাজের একাংশ ধর্ষণের শিকার নারীর দিকে আঙুল তোলে। বলা হয়, নিশ্চয় ওই নারীর কোনো সমস্যা ছিল। ধরেই নেওয়া হয় নারী বাইরে বের হলে পুরুষের নজরে পড়তেই পারেন। তাতে অঘটনও কিছু ঘটতেই পারে। নারীর মর্যাদার প্রতি সামাজিক উদাসীনতার কারণে এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে এবং আমরা অনেকেই এতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি বলে প্রতিবাদ করা খুব একটা হয়ে ওঠে না।
একজন নারী ধর্ষণের শিকার হলে ধর্ষকের অপরাধ না খুঁজে এমন কথা প্রায়ই বলা যে নারীদের এত বাইরে যাওয়ার কী দরকার? ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে এভাবে মেলামেশা করা কেন; এমন পোশাক পরলে ধর্ষণ তো হবেই, ইত্যাদি ইত্যাদি। রীতিমতো ভিকটিম ব্লেমিং।
নারীদের ঘরের বাইরে বের হওয়া বা পোশাক কখনো ধর্ষণের কারণ হতে পারে? যেসব পুরুষ নারীদের পরনের পোশাক দেখে নিজেদের সামাল দিতে পারে না, তাদের কেন দোষারোপ করা হয় না? পুরুষের মানসিক বৈকল্য বা নাজুক দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা কেন হবে না? একজন পুরুষের শিক্ষা, নীতি-নৈতিকতা কতটা তলানিতে ঠেকলে তারা নারীদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ আচরণ করতে পারে, সেটা কেন ভাবার বিষয় হয় না। নারীরাও যে মানুষ, চলাবলার স্বাধীনতা যে তাঁদের আছে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো নারীর শরীর স্পর্শ করা যে অন্যায়, এই বোধ-বুদ্ধি থেকে যারা দূরে, তারা আসলে কেমন মানুষ?
এবার সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে কিছু বলা যাক। চাওয়া-পাওয়ার তারতম্য থেকে বা পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে হোক, একটা সম্পর্কে টানাপোড়েন আসতেই পারে। সেটা হতে পারে প্রেমের কিংবা বিবাহের সম্পর্ক। সম্পর্ক বিচ্ছেদের ক্ষেত্রেও নারীদেরই বেশি কটাক্ষের শিকার হতে হয়। সেটা পরিবার অথবা সমাজ—উভয় ক্ষেত্র থেকেই। ঘটনার সূত্রপাত কী নিয়ে বা কীভাবে, কেন সম্পর্কের ইতি টানতে হয়েছে বা হচ্ছে, সেসব না জেনেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় নারীকে। সম্পর্ক ভাঙার সব দায় চাপানো হয় নারীর ওপর। যেন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার দায়ভার একা নারীর। পুরুষের কোনো ভূমিকা নেই?
এখানে দোষগুণ হিসাব করা হচ্ছে না। হতে পারে পুরুষ বা নারী দুজনের একজন সম্পর্ক রাখতে চাইছেন না। এমনও হতে পারে সম্পর্ক এমন অবস্থায় ঠেকেছে, দুজনের পক্ষ থেকেই ইতি টানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে; কিন্তু কিছু মানুষের বাঁকা মন্তব্য তির হয়ে বিঁধে নারীর ওপর। পুরুষদেরও প্রশ্নবিদ্ধ করার রেওয়াজটা
চালু হওয়া জরুরি।
নারীরা ভিনগ্রহের কোনো প্রাণী নয়। তারা এই সমাজেরই একটি অংশ। নারী-পুরুষ মিলেই তো সমাজ। নারী হওয়ার আগে তিনি একজন মানুষ। সুতরাং ঘটনা যা-ই হোক, এককভাবে নারীদের প্রশ্নবিদ্ধ না করি।
লেখক: সাংবাদিক
শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ, বুলিং কিংবা সম্পর্কের টানাপোড়েন—ঘটনা যা-ই হোক, দায়ী কিন্তু নারীই। ধরুন কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হলেন, সমাজের একশ্রেণির লোক দুষবে ওই নারীকেই। তাদের বিবেক গিয়ে ঠেকবে নারীর পোশাকে। অথচ একজন ধর্ষকের চরিত্র নিয়ে সমালোচনা হলেও তা নামমাত্র। এ সমাজ কেন পুরুষকে প্রশ্নের সম্মুখীন করে না? কেন বারবার আঙুল তোলা হয় নারীদের দিকেই?
এটুকু পড়ে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। আমি আগেই বলেছি, ‘একশ্রেণির লোক’। অতএব সমাজের সবাইকে প্রশ্নবিদ্ধ করছি না। এটা বলারও সুযোগ নেই নারীরা বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে পারেন না, পুরুষেরাই দাঁড়াবেন। মানুষের ভুল হবে, এটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু সবকিছুতেই কেন নারীরা প্রশ্নবোধক চিহ্নে পরিণত হন। বোঝার সুবিধার জন্য একটু বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। রাস্তা, গণপরিবহন বা জনসমাগম হয় এমন স্থানে কোনো নারী বুলিং কিংবা শ্লীলতাহানির শিকার হলেন। এ ক্ষেত্রে দেখা যাবে সমাজের কিছু মানুষ প্রতিবাদ করবে। অনেকে নির্বাক হয়ে দেখবে আর কিছু অংশ অহেতুক প্রশ্ন করবে। নারীদের ভিড়ের মধ্যে কী? গণপরিবহনে চললে ধাক্কা লাগবেই, এটুকু সহ্য করতে না পারলে গণপরিবহনে কেন, প্রাইভেট কারে যান। আর অযাচিত চাহনি ও মন্তব্য তো আছেই।
পাবলিক প্লেসে নারীরা চললেই কি তাঁরা পাবলিক প্রপার্টি? নানান বাহানায় নারীদের স্পর্শ করা কোন ধরনের মানসিকতার পরিচয় দেয়। এটা কি ভব্যতা বা শালীনতার মধ্যে পড়ে?
এ তো গেল দৈনন্দিন মামুলি বিষয়। মামুলি বিষয় এ কারণে বলছি, সমাজের একাংশ ধর্ষণের শিকার নারীর দিকে আঙুল তোলে। বলা হয়, নিশ্চয় ওই নারীর কোনো সমস্যা ছিল। ধরেই নেওয়া হয় নারী বাইরে বের হলে পুরুষের নজরে পড়তেই পারেন। তাতে অঘটনও কিছু ঘটতেই পারে। নারীর মর্যাদার প্রতি সামাজিক উদাসীনতার কারণে এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে এবং আমরা অনেকেই এতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি বলে প্রতিবাদ করা খুব একটা হয়ে ওঠে না।
একজন নারী ধর্ষণের শিকার হলে ধর্ষকের অপরাধ না খুঁজে এমন কথা প্রায়ই বলা যে নারীদের এত বাইরে যাওয়ার কী দরকার? ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে এভাবে মেলামেশা করা কেন; এমন পোশাক পরলে ধর্ষণ তো হবেই, ইত্যাদি ইত্যাদি। রীতিমতো ভিকটিম ব্লেমিং।
নারীদের ঘরের বাইরে বের হওয়া বা পোশাক কখনো ধর্ষণের কারণ হতে পারে? যেসব পুরুষ নারীদের পরনের পোশাক দেখে নিজেদের সামাল দিতে পারে না, তাদের কেন দোষারোপ করা হয় না? পুরুষের মানসিক বৈকল্য বা নাজুক দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা কেন হবে না? একজন পুরুষের শিক্ষা, নীতি-নৈতিকতা কতটা তলানিতে ঠেকলে তারা নারীদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ আচরণ করতে পারে, সেটা কেন ভাবার বিষয় হয় না। নারীরাও যে মানুষ, চলাবলার স্বাধীনতা যে তাঁদের আছে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো নারীর শরীর স্পর্শ করা যে অন্যায়, এই বোধ-বুদ্ধি থেকে যারা দূরে, তারা আসলে কেমন মানুষ?
এবার সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে কিছু বলা যাক। চাওয়া-পাওয়ার তারতম্য থেকে বা পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে হোক, একটা সম্পর্কে টানাপোড়েন আসতেই পারে। সেটা হতে পারে প্রেমের কিংবা বিবাহের সম্পর্ক। সম্পর্ক বিচ্ছেদের ক্ষেত্রেও নারীদেরই বেশি কটাক্ষের শিকার হতে হয়। সেটা পরিবার অথবা সমাজ—উভয় ক্ষেত্র থেকেই। ঘটনার সূত্রপাত কী নিয়ে বা কীভাবে, কেন সম্পর্কের ইতি টানতে হয়েছে বা হচ্ছে, সেসব না জেনেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় নারীকে। সম্পর্ক ভাঙার সব দায় চাপানো হয় নারীর ওপর। যেন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার দায়ভার একা নারীর। পুরুষের কোনো ভূমিকা নেই?
এখানে দোষগুণ হিসাব করা হচ্ছে না। হতে পারে পুরুষ বা নারী দুজনের একজন সম্পর্ক রাখতে চাইছেন না। এমনও হতে পারে সম্পর্ক এমন অবস্থায় ঠেকেছে, দুজনের পক্ষ থেকেই ইতি টানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে; কিন্তু কিছু মানুষের বাঁকা মন্তব্য তির হয়ে বিঁধে নারীর ওপর। পুরুষদেরও প্রশ্নবিদ্ধ করার রেওয়াজটা
চালু হওয়া জরুরি।
নারীরা ভিনগ্রহের কোনো প্রাণী নয়। তারা এই সমাজেরই একটি অংশ। নারী-পুরুষ মিলেই তো সমাজ। নারী হওয়ার আগে তিনি একজন মানুষ। সুতরাং ঘটনা যা-ই হোক, এককভাবে নারীদের প্রশ্নবিদ্ধ না করি।
লেখক: সাংবাদিক
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪