Ajker Patrika

তিস্তার বুকে নজর কাড়ছে ভাসমান স্বপ্নতরী রেস্তোরাঁ

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া
আপডেট : ১৬ মে ২০২২, ১৫: ৩৪
তিস্তার বুকে নজর কাড়ছে ভাসমান স্বপ্নতরী রেস্তোরাঁ

গঙ্গাচড়ায় শেখ হাসিনা সেতুর নিচে তিস্তা নদীর বুকে সম্প্রতি চালু হয়েছে এক ব্যতিক্রমী রেস্তোরাঁ। মনোমুগ্ধকর এই ‘স্বপ্নতরী ভাসমান রেস্তোরাঁ’ তৈরি করা হয়েছে প্লাস্টিকের ড্রাম, কাঠ, টিন ও লোহার কাঠামো ব্যবহার করে।

দৃষ্টিনন্দন রেস্তোরাঁটি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অনেকে ছুটে আসছেন, জমাচ্ছেন আড্ডা, উপভোগ করছেন পছন্দের খাবার ও পানীয়। নিরিবিলি ও মনোরম পরিবেশ থাকায় শহরের বাসিন্দারা পরিবারসহ ঘুরতে আসছেন এখানে।

উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের ১০ যুবক এই রেস্তোরাঁ পরিচালনা করছেন। প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে ইউনিয়নের মহিপুরে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর নদীর তীরে এটি চালু করা হয়। ছুটির দিনগুলোতে এখানে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। উত্তরাঞ্চলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এটি।

রেস্তোরাঁটি বানানোর জন্য ১০০টি প্লাস্টিকের ড্রামের ওপর টিনের ঘর ও বারান্দা তৈরি করা হয়েছে। আগতদের বসার জন্য পুরো ঘর ও বারান্দায় দৃষ্টিনন্দন ১০টি টেবিল বসানো রয়েছে। পানির স্রোতে ড্রামের ভারসাম্য রক্ষায় ব্যবহার করা হয়েছে লোহার অ্যাঙ্গেল। হেঁটে যাওয়ার জন্য অ্যাঙ্গেলের ওপর তৈরি করা হয়েছে কাঠের মাচা। মাচার ওপরে দেওয়া হয়েছে টিনের ছাউনি। তিস্তার পানি যত বৃদ্ধি পায় রেস্তোরাঁটি তত ওপরে ভেসে আসে। আবার ভাটার সময় নেমে যায়। রাতের বেলা এটি সাজে বর্ণিল আলোকসজ্জায়।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীতে বাতাস বইছে আর চলছে নৌকা। ঢেউয়ে দোল খাচ্ছে রেস্তোরাঁটি। তৈরি হয়েছে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। অনেকে রেস্তোরাঁর চার পাশ ঘুরে দেখছেন, কেউ আবার সেলফি তুলছেন। অনেকে পছন্দ মতো খাবার খাচ্ছেন।

লালমনিরহাটের কলেজ শিক্ষার্থী মেহেদী বলেন, ‘রংপুর শহরে যাওয়ার পথে এখানে ঘুরতে এলাম। রেস্তোরাঁটির সম্পূর্ণটা পানির ওপরে। আরও সুন্দর লাগছে আলোকসজ্জা করায়। পানিতে দোল খাচ্ছে, বাতাস বইছে। এক অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে।’

রেস্তোরাঁর উদ্যোক্তাদের একজন তারিকুজ্জামান তমিজ বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলের মধ্যে একমাত্র ভাসমান রেস্তোরাঁ এটি। শেখ হাসিনা সেতু দেখে এটি তৈরি করার পরিকল্পনা আসে আমাদের ১০ জনের মাথায়।’

উদ্যোক্তা মহব্বত হোসেন বলেন, ‘আমরা এখানে ফাস্টফুড থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের খাবার বিক্রি করি। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে লোকজনের সমাগম বাড়তে থাকে। রাত যত বাড়তে থাকে নদীর পানির শব্দ শুনতে তত ভালো লাগে। এ জন্য দর্শনার্থীরাও আসেন এখানে।’

আরেক উদ্যোক্তা নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, রেস্তোরাঁটি তৈরিতে সব মিলিয়ে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এর পরিসর আরও বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের।

গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, ‘ভাসমান রেস্তোরাঁটি নজর কাড়ছে সবার। আমি উদ্যোক্তাদের সাধুবাদ জানাই। তারা চাকরির পেছনে না ছুটে নিজ উদ্যোগে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন এখানে আসতে পেরে খুশি। আমি প্রায়ই এই রেস্তোরাঁটিতে যাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত