Ajker Patrika

নরসিংদীর মেঘনার পাড়ে জমে উঠেছে বাউল মেলা

নরসিংদী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬: ২৫
নরসিংদীর মেঘনার পাড়ে জমে উঠেছে বাউল মেলা

নরসিংদীতে গত বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলা। শহরের কাউরিয়াপাড়ায় মেঘনা নদীর তীরে বাউল আখড়াধামে বুধবার সকাল থেকে মেলা শুরু হয়। শেষ হওয়ায় কথা ছিল আগামী বুধবার। তবে করোনার কারণে শেষ হবে আজ শুক্রবার। মেলায় এরই মধ্যে সমবেত হয়েছেন দেশ-বিদেশের শতাধিক বাউল। মেলা উপলক্ষে মেঘনার পাড়ে খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যের স্টল বসিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাউল ঠাকুরের আখড়াবাড়িতে প্রায় ৫০০ বছর ধরে এই বাউল উৎসব হয়। ৫০০ বছর আগে নরসিংদীতে এক বাউল ঠাকুর ছিলেন। তিনি নিজেকে শুধু বাউল বলেই পরিচয় দিতেন। এ জন্য বাউল ঠাকুরের প্রকৃত নাম জানেন না এখানকার কেউই। সেই বাউল ঠাকুরের স্মরণে আখড়াধামে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই বাউল মেলা। তবে কে প্রথম এখানে বাউল মেলার আয়োজন করেন, সে তথ্য জানা নেই কারও। তবে ব্রিটিশ শাসনামল থেকে এখন পর্যন্ত মেলার আয়োজন করছে রাম বাউল ও তাঁর পরবর্তী প্রজন্ম। সম্প্রতি নরসিংদীর বাউল আখড়াবাড়ির সেবায়েত তত্ত্বাবধায়ক প্রাণেশ কুমার ঝন্টু বাউল মারা গেছেন। এ বছর মেলার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মৃদুল বাউল মিন্টু। প্রতিবছরের মতো এবারও মেলা উপলক্ষে আখড়াধামে হাজির হয়েছেন পাশের দেশ ভারতসহ দেশ-বিদেশের শতাধিক বাউল সাধক। এসব সাধকের কাছে সাধনাই মূল ধর্ম। আত্মশুদ্ধি আর আত্মমুক্তির জন্য এই মেলায় আসেন তাঁরা।

এদিকে বাউল মেলা উপলক্ষে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা বাঙালির চিরচেনা মুখরোচক খাবার ও বাহারি পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে জিলাপি, সন্দেশ, বারোমিঠাই, দই, মুড়ালি, গুড়ের তৈরি মুড়ি ও চিড়ার মোয়া, তিলের মোয়া, তিলের সন্দেশ, খাস্তা, কদমা, নারকেলের নাড়ু, তিলের নাড়ু, খাজা, গজা, নিমকি, মনাক্কা, গাজরের হালুয়া, পিঠাসহ রকমারি খাবার। এ ছাড়া খেলনা, ঘরের তৈজসপত্র, আসবাব, বিভিন্ন ধরনের তৈরি পোশাক, মাটি ও বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রসহ নানা ধরনের পণ্যের স্টল নিয়ে বসেছেন তাঁরা।

বাউল আখড়াবাড়ির বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক মৃদুল বাউল মিন্টু বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও ঐতিহ্যবাহী এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে যজ্ঞানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। কোনো ধরনের প্রচার ছাড়াই প্রতিবছর ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে ওঠে এ মেলা। আগামী বুধবার মেলা শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে সাতদিনের পরিবর্তে তিনদিন মেলা হবে। তাই আজ মেলা শেষ হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত