Ajker Patrika

একজন ভোটারের ব্যতিক্রমী চিঠি

সম্পাদকীয়
একজন ভোটারের ব্যতিক্রমী চিঠি

সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হয়েছে কি না, তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা আছে। তবে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেরই ভূমিধস বিজয় হয়েছে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইতিমধ্যেই নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের বিজয়কে গণতন্ত্র ও জনগণের বিজয় বলে উল্লেখ করে সমৃদ্ধির পথে দেশের অগ্রযাত্রা ধরে রাখার অঙ্গীকার করেছেন।

আবার যাঁরা নির্বাচনের বিরুদ্ধে ছিলেন, তাঁরা এই নির্বাচনকে নিয়ে তামাশা করছেন, সাজানো-পাতানো বলছেন। কেউ কেউ বলছেন, এই নির্বাচন রাজনৈতিক সংকট না কমিয়ে বাড়াতে পারে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রভাবশালী মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নতুন সরকারের সামনে তিনটি চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন। চ্যালেঞ্জগুলো হলো: রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক। তবে এটাও ঠিক, সবার নজর শেখ হাসিনার দিকেই। তিনি আগে পেরেছেন, এবারও পারবেন তরি তীরে ভেড়াতে। এখানে তরি হলো নির্বাচনী অঙ্গীকার।

নির্বাচনের পর জামালপুর-৫ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের কাছে ভোটারদের পক্ষ থেকে একটি চিঠি লেখা হয়েছে। ব্যতিক্রমী প্রত্যাশার কথা তুলে ধরা চিঠিটি আজকের পত্রিকায় শনিবার প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে: ‘আমাদের জেলায় কোনো কর্মসংস্থান নেই। আমরা বেশির ভাগ শিক্ষিত মানুষ কর্মহীন, বেকার। যোগ্য ব্যক্তির যোগ্য কাজ নেই।

একমাত্র আশীর্বাদ সরকারি চাকরি, সেটারও দেখা মেলে কালেভদ্রে। তাও আবার সেখানে যোগ্যতার মাপকাঠি হয় টাকা! অতএব, সেই হরিণ জোটে না সবার কপালে।’

চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘সরকারি হাসপাতালগুলোতে টাকা ছাড়া মেলে না চিকিৎসা! তারপরও সময়ের ডাক্তার আসেন না সময়ে। সিজারিয়ানের কবল থেকে রেহাই পাচ্ছেন না মায়েরা। কমছে না ইমার্জেন্সি রোগীদের ময়মনসিংহমুখী রেফার্ডপ্রবণতা। নার্সের সেবার কথা নাইবা বললাম।...শিক্ষা তো এখন বড় বাণিজ্য। স্কুলের শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট কোচিং না করলে মেলে না প্রাপ্য নম্বর। শিক্ষকেরা এখন স্কুলে পাঠদানের চাইতে টাকা কামানোর প্রতিযোগিতায় বেশি মনোযোগী। আছে একই স্কুলে প্রতিবছর ভর্তির বাধ্যবাধকতা।’

চিঠির লেখক মোহাম্মদ আলী পেশায় সাংবাদিক। জামালপুর পৌর শহরের পাথালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। চিঠিতে নাগরিকদের নানা ভোগান্তি-দুর্দশার কথা তুলে ধরে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যকে উদ্দেশ করে বলা হয়েছে, ‘আপনাকে আমরা অনেক আশা-ভরসা নিয়ে ঋণ (ভোট) দিয়েছি। আশা করি, আমাদের ইট-পাথরের পথগুলো মেরামতের পাশাপাশি জীবন চলার পথগুলো মেরামত করে দেবেন।

ভেঙেচুরে ঠিক করে দেবেন দুর্নীতি, অনিয়ম, সুদ-ঘুষে জর্জরিত ঘুণে ধরা সমাজটাকে।’

চিঠির শেষে বলা হয়েছে, ‘এ জেলার প্রতিটি মানুষ যেন তাঁদের জন্মগত, মৌলিক ও নাগরিক অধিকার সমানভাবে ভোগ করতে পারেন। নিবেদক, আপনার পাওনাদারদের একজন, মোহাম্মদ আলী।’

ভোটকে ঋণ হিসেবে দেখা ব্যতিক্রমী চিন্তা বৈকি! যিনি ঋণ দেন, তিনি তো পাওনাদারই। নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা ঋণমুক্ত হওয়ার যথাযথ উদ্যোগ নিলেই নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের অবসান হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

পাকিস্তানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংসে ভারত-ইসরায়েলের যৌথ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় যেভাবে

খামেনি কোথায়, কেমন আছেন—উৎকণ্ঠিত ইরানিদের প্রশ্নের বন্যা

এই বিজয় বাংলাদেশি আন্টিদের বিজয়: জোহরান মামদানি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত