Ajker Patrika

ছাত্রলীগের কমিটি নেই

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২১, ১১: ১১
ছাত্রলীগের কমিটি নেই

জেলা ছাত্রলীগ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে নেই কোনো কার্যকরী কমিটি। এ কারণে নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা এবং দলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কয়েক দফায় জেলা ছাত্রলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষ থেকে সিভি নিলেও কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি চোখে পড়েনি। এমন পরিস্থিতিতে কমিটিতে নিজের পদ বাগিয়ে নিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন সবাই। মাসের পর মাস ঢাকায় অবস্থান করে তদবিরে ব্যস্ত আছেন জেলা ছাত্রলীগের কয়েক ডজন নেতা। এ ক্ষেত্রে অর্থ লেনদেন হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

২০১৭ সালের জুলাই মাসে হাসান সিকদারকে সভাপতি ও ওমর ফারুক ইকবাল হোসেন ভূঁইয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এক বছরের জন্য এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ অনুসারে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। পরে ২০১৯ সালের ২৯ জুন জেলা ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর পদপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে সিভি নিলেও জেলা কমিটি আর আলোর মুখ দেখেনি। বর্তমানে কয়েক ডজন ছাত্রলীগ নেতা রয়েছেন, যাঁরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক হতে আগ্রহী। প্রতি মাসেই দুই থেকে তিনবার ঢাকা সফর করছেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে তদবির চালাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মেহেদী হাসান কোয়েল, সাবেক সহসভাপতি সবুর খান, সাবেক সহসভাপতি সৈয়দ বেলাল হোসেন পাবেল, সাবেক সহসভাপতি আরিফ আল-আমিন, সাবেক সহসভাপতি বেল্লাল হোসেন, সাবেক সহসভাপতি তাসির মৃধা, সাবেক সহসভাপতি রকিবুল হাসান (রকি), সাবেক সহসভাপতি আশিষ হৃদয়, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান আরিফ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হক মুনসেফ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রিয়াদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাকিল মৃধা, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল ইসলাম ইমন প্রমুখ।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জেলার কমিটি সম্মেলন ছাড়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘোষণা করাটাকে অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলে মনে করছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা। অনেকে বলছেন সম্মেলন ছাড়া একটি জেলা কমিটি দেওয়া হলে অনেক সময় প্রকৃত ও যোগ্য নেতারা বঞ্চিত হন।

পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসান শিকদার বলেন, ‘আমরা ৪ বছর সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছি। গত ৮ মাস ধরে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি দেওয়ার কথা বলেছি। কমিটি বিহীন ছাত্রলীগ চলতে পারে না। অতি দ্রুত কমিটি দেওয়ার অনুরোধ করছি।’

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চন্দ্র শীল বলেন, ‘একটি জেলায় ছাত্রলীগের কমিটি না থাকলে সাংগঠনিক নেতা-কর্মীরা দুর্বল হয়ে যায়। সম্মেলন ছাড়া বর্ধিত সভা করে সিভি নিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটি দেওয়া আমার ১৭ বছরের ছাত্রলীগে কখনো শুনিনি। এটা কখনো গণতন্ত্রের মধ্যে পড়ে না। এখন গঠনতন্ত্র বলে কিছু নেই, টাকাই মূল। যাঁর টাকা আছে, তাঁর পক্ষে গঠনতন্ত্র। যাঁর টাকা নেই, তাঁর পক্ষে গঠনতন্ত্র নেই। এগুলো এখন সাংগঠনিক ধারায় আসা উচিত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত