Ajker Patrika

নির্দেশ অমান্য, চলছে কোচিং

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ০০
নির্দেশ অমান্য, চলছে কোচিং

সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে ময়মনসিংহের অধিকাংশ কোচিং সেন্টারই চালু রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে ক্লাসে দেখা গেছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, কোচিং সেন্টার বন্ধে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।

সম্প্রতি ময়মনসিংহ নগরী ও ত্রিশালে দেখা গেছে, অনেকে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে কোচিং সেন্টার খোলা রেখেছেন। কোচিং সেন্টারের জন্য পরিচিত নগরীর সাহেব আলী রোড, নতুন বাজার, নাহা রোড, বাউন্ডারি রোড, পিয়ন পাড়া ও জিলা স্কুল রোডে গিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগ কোচিং সেন্টার চালু রয়েছে। নগরীর বাউন্ডারি রোডে গিয়ে দেখা যায়, ইংরেজি প্রাইভেট প্রোগ্রামে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাচ্ছেন মোশাররফ হোসেন।

নির্দেশনা দেওয়ার পরও কেন কোচিং সেন্টার চালু রেখেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সবাই কোচিং সেন্টার খোলা রেখেছে, তাই আমিও ক্লাস করাচ্ছি। সবাই বন্ধ রাখলে আমিও বন্ধ রাখব। করোনার জন্য আমরা দুই বছর কোচিং বন্ধ রেখেছি। এখন অভাবের তাড়নায় আর পারছি না।’

অন্যদিকে ত্রিশালে দিনের পরিবর্তে রাতে চালু রাখা হচ্ছে সেন্টার। এসব কোচিং পরিচালনায় জড়িত রয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। রাতে গিয়ে দেখা যায়, ত্রিশাল থানার সামনে টিচারস কোচিং সেন্টার এবং সায়েন্স ল্যাব কোচিং সেন্টার চালু রয়েছে। এসব কোচিংয়ে শিশুদের ক্লাস করাচ্ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক।

শিক্ষকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘সামান্য বেতনে সরকারি চাকরি করছি। যা বেতন পাই তা দিয়ে কোনো মতে সংসার চলে। তাই কিছুটা বাড়তি সুবিধার জন্য কোচিংয়ে ক্লাস নেই। শুধু আমি নই, সরকারি বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকে কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িত।’

সায়েন্স ল্যাব কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী আফরোজা তাবাসসুম বলেন, ‘করোনার মধ্যে স্কুল বন্ধ থাকায় ক্লাস হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে কোচিং করতে হচ্ছে। তবে স্যাররা যদি কোচিং চালু না রাখত, তাহলে আমরা আসতাম না।’

ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ফারিয়া জান্নাত বলেন, ‘কোচিং চালু থাকলে আমাদের আসতে হয়। তা না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। তাই যতটুকু সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাসে আসছি।’

কোচিং সেন্টার শিক্ষক সমিতি জেলা শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান নয়ন বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা মূল ধারার শিক্ষকেরা কোচিং সেন্টার বন্ধ রেখেছি। তবে অনেক শিক্ষক কোচিং সেন্টার চালু রাখায় আমাদেরও সমস্যা হচ্ছে। এ কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের মনিটরিং জোরদার করা প্রয়োজন।’

জেলা জন-উদ্যোগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চন্নু বলেন, ‘সরকার ভালোর জন্যই পরীক্ষা চলাকালে কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। এ সিদ্ধান্তকে শিক্ষকদের স্বাগত জানানো উচিত। যাঁরা নির্দেশনা মানছেন না তাঁদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পরীক্ষার জন্য সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে। তারপরও বিভিন্ন জায়গা থেকে কোচিং সেন্টার চালু রাখার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত