Ajker Patrika

ভক্তদের পদচারণায় মুখর শতবর্ষী মন্দির

মো. খায়রুল ইসলাম, গৌরনদী
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১০: ০৯
ভক্তদের পদচারণায় মুখর শতবর্ষী মন্দির

প্রয়াত জমিদার মোহন লাল সাহার বাড়ির মন্দিরে মহা ধুমধামের মধ্য দিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। ধারণা করা হয় সিংহ মূর্তি খচিতজমিদার বাড়ির এ মন্দিরটি ১৭১ বছরের পুরোনো। কারও কারও মতে তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশে এত বড় দুর্গা মন্দির আর ছিল না।

গৌরনদী উপজেলার আশোকাঠী গ্রামের জমিদার বাড়ির সামনে অবস্থিত এ দুর্গা মন্দিরটি প্রতি বছরের মতো এবারও প্রচুর ভক্তের উপস্থিতি চোখে পড়েছে।

জমিদার বাড়ির উত্তরসূরিদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ১৮৫০ সালে খ্যাতিমান জমিদার মোহন লাল সাহার বাবা জমিদার প্রসন্ন কুমার সাহার উদ্যোগে মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। কারুকাজ খচিত ঐতিহাসিক এ মন্দিরের ছাদের ওপরের চারপাশে সিংহ মূর্তিগুলো আজও যেন কালের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। সূত্রমতে, তৎকালীন সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা পূজা অর্চনা করতে ভিড় জমাতেন। প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার দুর্গা প্রতিমার এ মন্দিরটিতে এখনো পূর্বের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। ৩০ গজ দৈর্ঘ্যের ও ২০ গজ প্রস্থ মন্দিরটিতে রয়েছে নকশা করা ৪৫টি স্তম্ভ।

জমিদার মোহল লাল সাহার নাতি প্রভাষক রাজা রাম সাহা জানান, ১৯৭১ সালে পাক হানাদার ও তাদের স্থানীয় সহযোগী রাজাকারেরা তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক লুটপাট করেছিলো। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল পাইক পেয়াদাদের ঘরবাড়ি। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল দুর্গা মন্দিরের অসংখ্য কারুকাজ খচিত অলংকরণ।

গৌরনদী উপজেলার সদরের আড়িয়ল খাঁ নদীর শাখা গৌরনদী-মীরেরহাট নদীর তীরে আশোকাঠী গ্রামে জমিদার মোহন লাল সাহার বাড়ি। বাড়ির সামনেই রয়েছে সান বাঁধানো সু-বিশাল দিঘি। জমিদার থাকতেন প্রসন্ন ভবনে। বাড়ির প্রবেশদ্বারে এই প্রাচীন সু-বৃহৎ দুর্গা মন্দির।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, এক সময় জমিদার বাড়িতে এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের জন্য প্রায় বারো মাস যাত্রা, জারি, সারি ও পালা গানের আয়োজন করা হতো। হাজার-হাজার মানুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল এ বাড়িটি। পুরোনো দিনের সেই জৌলুশ এখন অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত