Ajker Patrika

হরিণ শিকার

সম্পাদকীয়
হরিণ শিকার

বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের অনেক কিছুর পরিচিতি না থাকলেও সুন্দরবন একটি গর্বের জায়গা। গর্বের জায়গা নিয়ে যখন কোনো নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়, তখন দেশের সচেতন মানুষের কাছে একটু খারাপ লাগারই কথা। মাঝেমধ্যে যেমন সংবাদ প্রকাশিত হয় সুন্দরবনের হরিণ শিকার নিয়ে। আজকের পত্রিকায়ও এমন একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে।

মূলত মাংস ও চামড়ার জন্য শিকারিরা হরিণ শিকার করে থাকেন। এ জন্য তাঁরা গভীর বনের মধ্যে নাইলনের ফাঁদ পাতেন। আর কাঁকড়া শিকারের টোপ বানাতে ব্যবহার করে থাকেন হরিণের মাংস। হরিণ শিকারের মতো আইনবহির্ভূত কাজগুলো করার জন্য স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়া অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে। অনেক সময় বনরক্ষীদের হাতে হরিণ পাচারের ঘটনাও ঘটে থাকে।

পূর্ব সুন্দরবনের বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা, পানিরঘাট, রাজাপুর, রসুলপুর; মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা এবং সুপতি, দুবলা, কটকা, কচিখালী, বাদামতলা, চান্দেশ্বর, টিয়ারচর, কোকিলমুনি, আন্ধারমানিক এলাকা দিয়ে জেলের বেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করে হরিণ শিকারের মতো অন্যায় কাজটি করে থাকেন শিকারিরা। তাঁরা অতি চালাক বলে বন কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য মাছের পেটিতে বরফ দিয়ে অভিনব এক পদ্ধতিতে হরিণের মাংস লোকালয়ে পাচার করেন। কথায় আছে, মানুষের নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি দুর্বার আকর্ষণ থাকে। আমাদের দেশের কিছু লোকও এমন, কৌতূহলবশত হরিণের মাংস খাওয়ার ইচ্ছা পোষন করেন। এ কারণে দেশে উচ্চমূল্যের বাজার আছে হরিণের মাংসের। তাই টাকার লোভের কারণে শিকারিরা যে এ কাজটি করে থাকেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

অর্থলোভীর কাছে অর্থই বড় কথা। তাঁদের কাছে সুন্দরবনের গুরুত্ব কেন থাকবে? শিকারিদের হয়তো জানা নেই পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবনের খ্যাতি আছে বিশ্বজুড়ে। ইউনেসকো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ বলে ঘোষণা দিয়েছে। তাই যুগ যুগ ধরে মানুষের কাছে রোমাঞ্চকর ও আকর্ষণীয় জায়গা হিসেবে এ বনটির গুরুত্ব আছে। ফলে প্রকৃতির এ লীলাভূমি দর্শনের উদ্দেশ্যে প্রতিবছর হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক ছুটে যান সেখানে। অর্থনীতির ক্ষেত্রেও সুন্দরবনের অবদান অপরিসীম। পর্যটন খাতে আমরা প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি মাছ, মধু, গোলপাতা ও জ্বালানি কাঠ থেকে শুরু করে প্রাত্যহিক ব্যবহৃত বহুবিধ জিনিস পাওয়া যায় এ বন থেকে। সরকারি কোষাগারে জমা হয় বিশাল অঙ্কের রাজস্বও। 
রয়েল বেঙ্গল টাইগারের পরেই মায়া হরিণের জন্য এ বনের সুনাম আছে। তাই হরিণ শিকার রোধে বন বিভাগের দায়িত্ব অন্যতম। বন বিভাগকে শিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বন্য প্রাণী নিধন আইনের প্রয়োগ ঘটাতে হবে যথাযথ। জেল-জরিমানার পাশাপাশি পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে, মুক্তি পেয়ে যেন বেপরোয়া না হয়ে ওঠেন শিকারিরা। বিষয়টি নিয়ে 
খুব দ্রুত ভাবতে না পারলে প্রজাতির অস্তিত্ব বিলীন ঠেকানো মুশকিল হয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে লতিফ সিদ্দিকী অবরুদ্ধ, নেওয়া হলো পুলিশি হেফাজতে

রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত