Ajker Patrika

সুইমিংপুলে শিশু-কিশোরের স্বপ্নহীন সাঁতার শেখা

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
সুইমিংপুলে শিশু-কিশোরের স্বপ্নহীন সাঁতার শেখা

সুইমিংপুল আছে। সাঁতার শেখায় শিশু-কিশোরদের আগ্রহও প্রবল। কিন্তু উদ্যোগের অভাবে তৈরি হচ্ছে না সাঁতারু দল। এমন অভিযোগ ময়মনসিংহের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে আসা শিশু-কিশোরদের অভিভাবকদের। তবে সাঁতারু দল তৈরিতে আশার কথা শুনিয়েছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি।

জানা গেছে, ২০০১ সালে ময়মনসিংহ নগরীর টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্থাপন করা হয় সুইমিং কমপ্লেক্স। সুইমিংপুল লম্বায় ৫০ মিটার ও প্রস্থে ২৫ মিটার।

নিয়মিত একজন অফিস সহায়ক এটি দেখাশোনা করেন। দিনে দুই ঘণ্টা সকাল-বিকেল সুইমিংপুলে শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণার্থী রয়েছে প্রায় ৫০ জন।

২০০৯ সাল থেকে সাঁতার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয় এখানে। শুরুতে জনপ্রতি ভর্তি ফি ৫০০ টাকা এবং মাসিক বেতন ছিল ২০০ টাকা। তা বেড়ে বর্তমানে জনপ্রতি ভর্তি ফি ২ হাজার ৬০০ টাকা এবং মাসিক বেতন ৫০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। সরকারি সুইমিংপুলে টাকার বিনিময়ে সন্তানদের সাঁতার শেখাতে আসা অভিভাবকদের তেমন কোনো অভিযোগ না থাকলেও জেলায় কোনো সাঁতারু দল না থাকায় আক্ষেপ করেন তাঁরা।

সন্তানকে সাঁতার শেখাতে আসা ঠিকাদার বিমল বর্মণের স্ত্রী রাখী বর্মণ বলেন, ‘কিছুদিন আগে এখান থেকে আমার এক ছেলে সাঁতার শিখেছে। এখন নিয়মিত মেয়েকে সাঁতার শেখাতে নিয়ে আসছি।’

ব্যাংক কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ‘ছেলেকে এখানে সাঁতার শিখাতে ভর্তি ফি ২ হাজার টাকা ও ১ মাসের ৫০০ টাকা অগ্রিমসহ আড়াই হাজার টাকায় ভর্তি করিয়েছি।

কারণ, ছেলে-মেয়েদের সাঁতার শেখানো অভিভাবক হিসেবে আমার দায়িত্ব। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘এমন সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও জেলায় কোনো সাঁতারু দল নেই। কর্তৃপক্ষ একটু ইচ্ছা করলে সাঁতারু দল তৈরি করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে পারে।’

সাঁতারু তামজিদ সামাদ বেশ কয়েকটি সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। সে ময়মনসিংহ ল্যাবরেটরি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তামজিদ বলে, ‘আমার বাবা একজন সাঁতারু। তাই, সাঁতারের প্রতি আগ্রহ আগে থেকেই। আমি বিভিন্ন সাঁতার প্রতিযোগীয় অংশ নিয়েছি। আমাদের ভালো একটা সুইমিংপুল আছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সাঁতারু দল তৈরিতে কম আন্তরিক।’

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাঁতার প্রশিক্ষক মো. আব্দুস সামাদ কাজল বলেন, ‘এই সুইমিংপুলের যাত্রা শুরু হয় আমার হাত ধরে। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত শুধু টিএ-ডিএর বিনিময়ে কাজ করে আসছি। বাবা মৃত্যুর সময় বলেছিলেন, আমি যেন এই সুইমিংপুল না ছাড়ি। তাই, এখনো এখানে সাঁতার প্রশিক্ষণ করিয়ে যাচ্ছি। বাবার রেখে যাওয়া বাড়ি ভাড়ার টাকায় টেনেটুনে সংসার চলে। এই চাকরি স্থায়ী হবে আশায় ১৩ বছর ধরে অস্থায়ীভাবে কাজ করে আসছি।’

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল আলম বলেন, ‘আনুমানিক পাঁচ মাস হয়েছে আমি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। আগে সুইমিংপুলের অবস্থা খারাপ ছিল। এখানে নিয়মিত একজন কোচ দিয়ে শিশু-কিশোরীদের সাঁতার শেখানো হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করব।’

জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘একটি সাঁতারু টিম গঠন করা হবে। যারা জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সমঝোতায় এক দিনে ১০০ ডলার কমল সোনার দাম

যুদ্ধ বলিউডের সিনেমা নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

টাকা চুরি করতে দেখে ফেলায় দুই খালাকে হত্যা করে কিশোর: ডিবি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত