Ajker Patrika

রূপকথার গল্পের মতো রাজনীতি

সম্পাদকীয়
রূপকথার গল্পের মতো রাজনীতি

শৈশবে নিশ্চয়ই অনেকের রূপকথার গল্প পড়া হয়েছে। পড়া না হলেও পরিবারের বড়দের কাছে হয়তো শুনে থাকবেন। সেই সব গল্প থেকেই আমরা জানি, রাক্ষস এসে ঘাড় মটকে দেয় কিংবা মটকানোর আগে হুমকি দেয়। কিন্তু মানুষও যে ঘাড় মটকে দেওয়ার হুমকি দিতে পারে, সে কথা কোনো রূপকথার গল্পে পড়া বা শোনা হয়েছে কি না, এ নিয়ে সন্দেহ আছে। বর্তমানে রাজনীতির হালচাল দেখে মনে হচ্ছে নেতা-কর্মীরা রূপকথার জগতে বাস করছেন। নইলে খুব সহজেই কাউকে ঘাড় মটকে দেওয়ার, বেঁধে রাখার কিংবা কারও বাসা উঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতে পারতেন না।

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও কালীগঞ্জের ভোটমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মর্তুজা হানিফকে লালমনিরহাট-২ আসনের নৌকার প্রার্থী সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ঘাড় মটকে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। কেন দিয়েছেন? কারণ, হানিফ এক জনসভায় নুরুজ্জামানকে নিয়ে ‘বাজে’ কথা বলেছেন। বলেছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা।

এদিকে মেহেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাসকে হুমকি দিয়েছেন মেহেরপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান। তিনি এমপি হোন বা না হোন, অলোক কুমার দাসের বাসা উঠিয়ে দেবেন মেহেরপুর থেকে। কারণ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে অলোক কুমার দাস নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন এবং সেটা করেছেন আব্দুল মান্নানের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফরহাদ হোসেনের পক্ষে। অলোক যদি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। আব্দুল মান্নান তাঁকে হুমকি দিতে পারেন না। এ-ও কি আচরণবিধির লঙ্ঘন নয়?

আজকের পত্রিকার প্রিন্ট ও অনলাইন সংস্করণে আরও এমন হুমকি-ধমকির খবর প্রকাশিত হয়েছে। যেমন নৌকা ছাড়া অন্য কোনো প্রতীকের লোককে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিয়েছেন লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের ব্যক্তিগত সহকারী এবং হাতীবান্ধার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল। আবার নাটোর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কোনো মেম্বার-চেয়ারম্যান ভোট চাইলে তাঁকে ‘পিছমোড়া’ করে বেঁধে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন নৌকার প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী।

নির্বাচনের এই সময়টায় 
একজন প্রার্থীর সদাচরণই কিন্তু তাঁকে জনগণের প্রিয় পাত্রে পরিণত করতে পারে। অথচ অনেকেই কথাবার্তা বলার সময় যে সংযত থাকছেন না, এ খবরগুলো তার প্রমাণ। সন্দেহ জাগে—তাঁরা আদতে জনগণের জন্য কতটা স্পর্শকাতর, আর কতটা এগিয়ে আসবেন জনগণের সেবায়?

আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো বড় কোনো দলের শক্ত প্রার্থী নেই। তাই সংঘাতময় পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ারও কথা নয়। কিন্তু নির্বাচনের আচরণবিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শনে পিছপা হচ্ছেন না অনেক প্রার্থী। যেমনটা পাড়ার মাস্তানরা করে। নিজেরাই যদি নিজেদের শাসিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা নির্বাচন কমিশনের আর দরকার কী?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

২০২৬ সালের পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে গণহত্যাকারী, ফেসবুকে আসিফ মাহমুদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত