Ajker Patrika

রশিদ চৌধুরী

সম্পাদকীয়
রশিদ চৌধুরী

বাংলাদেশে শিল্পী রশিদ চৌধুরী চিত্রকলায় ‘ট্যাপেস্ট্রি’ বা তাপিশ্রীশিল্পের (একধরনের বয়নশিল্প) অন্যতম পথিকৃৎ। তিনি এ দেশের ব্যতিক্রম চিত্রকরদের একজন, যিনি আঙ্গিক ও রীতিতে ইউরোপীয় হয়েও বক্তব্য ও বিষয়বস্তুতে পুরোপুরি বাঙালি ছিলেন। বাংলার শাশ্বত রূপকে তিনি তাঁর শিল্পে বিশেষ দক্ষতা, ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, লেখক, অধ্যাপক—এই পরিচয়গুলোও তাঁর।

রশিদ চৌধুরীর জন্ম ১৯৩২ সালের ১ এপ্রিল বর্তমানে রাজবাড়ীর রতনদিয়া গ্রামের একটি জমিদার পরিবারে। শৈশবে তিনি তেমন মেধার পরিচয় দিতে পারেননি। কলকাতার পার্ক সার্কাস হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান চারুকলা অনুষদে (তৎকালীন ঢাকা সরকারি আর্ট কলেজ) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন, কিন্তু অনুত্তীর্ণ হন। তিনি শিল্পী জয়নুল আবেদিনের তত্ত্বাবধানে প্রায় ছয় মাস অধ্যয়নের পর যোগ্যতা প্রমাণসাপেক্ষে ১৯৪৯ সালে এখানে ভর্তির সুযোগ পান। তিনি ছিলেন আর্ট কলেজের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী। এখান থেকে তিনি প্রথম বিভাগে স্নাতক শেষ করেন।

এরপর রশিদ চৌধুরী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ মিউজিয়ামে টিচার্স ট্রেনিং সার্টিফিকেট কোর্স সম্পন্ন করেন। সরকারি বৃত্তি নিয়ে যান স্পেনের মাদ্রিদে, পড়েন ভাস্কর্য বিষয়ে। তারপর চার বছরের জন্য বৃত্তি পেয়ে প্যারিসের আকাদেমি অব জুলিয়ান অ্যান্ড বোজ আর্টস থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকার তাঁকে রাষ্ট্রীয় পুরস্কারে ভূষিত করলে রশিদ চৌধুরী তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি শিক্ষকতা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান চারুকলা অনুষদে, বুয়েটে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে এবং বর্তমান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে। এ অনুষদটি প্রথম কলেজ হিসেবে যখন প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন এর মুখ্য উদ্যোক্তা ছিলেন রশিদ চৌধুরী। তিনি ঢাকায় বাংলাদেশের প্রথম তাপিশ্রী কারখানা স্থাপন করেন।

১৯৭৭ সালে তাপিশ্রীশিল্পে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত