Ajker Patrika

করোনার ছুটি কাজে লাগিয়ে নার্সারি

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ২৭
করোনার ছুটি কাজে লাগিয়ে নার্সারি

করোনা মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থীই গড্ডলিকায় গা ভাসিয়েছেন। সময় কাটিয়েছেন মোবাইল ফোনে গেম খেলে কিংবা আড্ডা দিয়ে। তবে তাঁদের তুলনায় কিছুটা ব্যতিক্রম ডিপ্লোমা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আখি আক্তার। প্রশিক্ষণ নিয়েছেন নার্সারিতে। শিখেছেন গাছের চারা তৈরি ও পরিচর্যার কাজ।

প্রশিক্ষণ শেষে নিজের বাড়ির আঙিনাতেই ছোট পরিসরে গড়ে তুলেছেন নার্সারি। মাত্র ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে দেড় শতক জমিতে করা নার্সারি থেকে ৩ মাসে ১০ হাজার টাকার চারা বিক্রি করেছেন তিনি। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে নার্সারি ব্যবসায় বিপ্লব ঘটাতে চান আখি।

আখি আক্তার বাগেরহাট সদর উপজেলার বৈটপুর গ্রামের আলাউদ্দিন পাইকের মেয়ে। ২০২০ সালে এসএসসি পাশ করেন। পরে কচুয়ার গোয়ালমাঠের মাজেদা বেগম কৃষি প্রযুক্তি কলেজে কৃষি ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হন তিনি। এর কিছুদিনের মধ্যেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার।

বন্ধের সময়ে বাগেরহাট শহরের হাইব্রিড নার্সারিতে প্রশিক্ষণ নেন আখি। মাত্র তিন মাসের প্রশিক্ষণে নার্সারির কাজকর্ম আয়ত্তে চলে আসে তাঁর। মা-বাবার সম্মতি নিয়ে যশোরের বেনাপোল থেকে চারা সংগ্রহ করে গড়ে তোলেন নিজের নার্সারি।

এতে গোলাপ, নাইটকুইন, জবা, ড্রাগন, পেঁপে, বিভিন্ন জাতের পেয়ারা, করমচাসহ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ প্রকার চারা রয়েছে। স্থানীয় কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শৌখিন গাছ প্রেমিরাই আখি আক্তারের ক্রেতা। নিজের নার্সারির পরিচর্যা আখি নিজেই করেন।

মেয়ের স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন মা হেলেনা বেগম। তিনি বলেন, ‘করোনায় কলেজ বন্ধ থাকায় নার্সারিতে প্রশিক্ষণ নিতে অনুমতি চায় আখি। প্রথম দিকে না করলেও তাঁর অদম্য আগ্রহের কারণে রাজি হই।’

হেলেনা বলেন ‘আমরা। বাইরে কোথাও জমি না থাকায় ঘরের সামনের উঠোনের জায়গায় নার্সারি করে আখি। কোন টাকা ছিল না যে শ্রমিক নিয়ে জমি প্রস্তুত করব। রাতদিন পরিশ্রম করে জমি প্রস্তুত করেছে আমার মেয়ে।’

হেলেনা বেগম আরও বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমিও সহযোগিতা করেছি। উঠোনের ওপরের সতেজ চারা গুলো দেখে আমার খুব ভালো লাগে। এখন আমার একটাই চাওয়া মেয়েকে একজন সফল নার্সারি ব্যবসায়ী তৈরি করা। যেখানে এলাকার অনেক দুস্থ নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।’

স্থানীয় সামছ-উদ্দিন নাহার ট্রাস্টের চিফ ফ্যাসিলিটেটর সুব্রত কুমার মুখার্জি বলেন, ‘বিষয়টি খুবই ইতিবাচক।’

বাগেরহাট সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মাদ আজগর আলী বলেন, ‘আমি আখির নার্সারি পরিদর্শন করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত