Ajker Patrika

ইলিশের আকাল, দাম চড়া

শিমুল চৌধুরী, ভোলা
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২১, ১১: ৩১
ইলিশের আকাল, দাম চড়া

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না। নদীতে জাল ফেলে আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ায় হতাশ জেলেরা।

ভোলার জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জালে ধরা পড়ছে কিছু কিছু জাটকা ও মা ইলিশ। নদীতে সামান্য ইলিশ ধরা পড়লেও অধিকাংশ ইলিশের পেটে ডিম দেখা যাচ্ছে। নদীতে ইলিশ ধরা না পড়ায় প্রভাব পড়ছে বাজারে। এ কারণে বাজারগুলোতে ইলিশের দাম বেশ চড়া। ফলে চলতি বছর অনেকটা হতাশার মধ্য দিয়ে দিন কাটছে জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের। চড়া দামের কারণে ইলিশ এখন স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর আমার বাবা বেশ চড়া দামে কয়েকটি ইলিশ কিনেছেন। কিন্তু ক্রয় করা অধিকাংশ মাছের পেটেই ডিম ছিল।’

ভোলা শহরের কিচেন মার্কেটের নিচ তলায় মাছ বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, পাঙাশ, রুইকাতলা, পোয়া, কই, শিং, মাগুর, বাইলা, কোড়াল, চুলেরডাটি, চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বেচাকেনা চলছে। কিছু ইলিশ চোখে পড়লেও এর মধ্যে অধিকাংশ মাছই ছোট আকারের ও মা ইলিশ। এ সময় মাছ বিক্রেতা মো. মোস্তফার সঙ্গে কথা হয়। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও নদীতে আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়েনি। তাই বাজারে ইলিশের দাম বেশি। তিনি বলেন, ‘নদীতে যে পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ছে তাঁর অধিকাংশ ইলিশের পেটে ডিম দেখা গেছে।’

মাছ বিক্রেতা মো. হোসেন জানান, নদীতে ইলিশ মাছ কম ধরা পড়ছে। তাই ইলিশের দাম বেশি। তিনি বলেন, ‘৯টা জাটকা ইলিশ বিক্রি করেছি ৮০০ টাকায়। ১১টা জাটকা ইলিশ ঘাট থেকে কিনে এনেছি সাড়ে ৮০০ টাকায়।’ শিবপুর ইউনিয়নের সিরাজ নামের এক মাছ বিক্রেতা প্রায় এক কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের এক হালি মা ইলিশের দাম চান ৮ হাজার টাকা।

জানতে চাওয়া হলে ইলিশ কিনতে আসা এক স্কুলশিক্ষক ছোটন সাহা বলেন, ‘ভোলার বাজারে ইলিশের দাম অনেক বেশি। ভাই, এ বিষয়ে নিউজ করেন। ইলিশের দাম এখন আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।’

শিবপুর এলাকার মাছঘাটের আড়তদার সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা নদীতে মাছ শিকারে গেলেও আশানুরূপ ইলিশ পাচ্ছে না। তাই, বাজারেও এখন ইলিশের দাম বেশি।’

ভোলা জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি এরশাদ ফরাজি বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষায় ৪ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত সরকার নদীতে মাছ ধরার ওপরে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ওই নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা এখন নদীতে নেমেছেন। কিন্তু এ বছর নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ছে না। যা পাওয়া যাচ্ছে তাঁর মধ্যে কিছু জাটকা ও কিছু মা ইলিশ।’ তিনি বলেন, ‘এ বছর আগেভাগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করায় প্রায় ১৫ ভাগ ইলিশ ডিম ছাড়তে পারেনি। তাই এখনো কিছু ডিমওয়ালা ইলিশ ধরা পড়ছে। নদীতে ইলিশ কম ধরা পড়ায় বাজারেও দাম চওড়া।’

ভোলা সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা জামাল হোসাইন গতকাল শুক্রবার সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইলিশ মাছ সারা বছরই ডিম ছাড়ে। তাই জেলেদের জালে মা ইলিশ ধরা পড়তেই পারে। তবে, ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ মাছ অধিক ডিম ছাড়ে। এ বছর নদীতে ইলিশ কম। তাই বাজারে এর দামও চড়া।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত