Ajker Patrika

কাঁচা রাস্তা পাকা হয়নি ৫০ বছরেও, দুর্ভোগ গারোদের

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২২, ১১: ০৬
কাঁচা রাস্তা পাকা হয়নি ৫০ বছরেও, দুর্ভোগ গারোদের

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়ন। শত বছরেরও বেশি সময় ধরে পাহাড়ি এই জনপদে বসবাস করছেন ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী গারো সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা। পাহাড়ের দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে লোকালয়ে যাওয়া-আসা করতে হয় তাঁদের। তবে যোগাযোগের সবগুলো রাস্তাই কাঁচা থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ জনপদের বাসিন্দাদের। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের অভাবে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন এখানকার ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর প্রায় তিন হাজার মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত থাকায় এবং কাঁচা রাস্তাগুলো দীর্ঘদিন ধরে মেরামত না করায় ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের পাহাড়ি অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর প্রায় তিন হাজার সদস্যকে পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় দুর্ভোগ। ভালো সড়কের অভাবে গ্রীষ্মকালে কিছুটা কষ্ট হলেও বর্ষাকালে কাদামাটির কারণে সড়কে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সামান্য বৃষ্টিতেই পিচ্ছিল হয়ে পড়ে সড়ক। এ কারণে অতি দ্রুত পাহাড়ি এই জনপদের সড়কটি পাকা করাসহ কাঁচা রাস্তাগুলো দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

পাহাড়ি অঞ্চলের বাসিন্দা বিন্দু মারাক বলেন, বকশীগঞ্জে পাহাড়ি সড়ক দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল। রাস্তার কোনো কাজ হয় না। আমার জন্মের পর থেকে এই রাস্তা দিয়ে অনেক কষ্টে চলাফেরা করছি। অনেক সরকার আসে আর যায়, কিন্তু আমাদের রাস্তার কাজ কেউ করেন না।

শুধু বিন্দু মারাক নন বরং একই অভিযোগ এখানকার অন্য বাসিন্দাদের। যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত থাকায় এবং কাঁচা রাস্তাগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের পাহাড়ি অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সদস্যদের পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় দুর্ভোগ।

পাহাড়ি অঞ্চলের শিক্ষার্থী তৃষা দাংগো বলেন, গ্রীষ্মকালে আমরা স্কুলে আসতে পারলেও বর্ষাকালে রাস্তা খারাপ থাকায় স্কুলে আসা সম্ভব হয় না। আমরা চাই আমাদের এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হোক।

দিঘলাকোনা গ্রামের লিটন সাংমা বলেন, ‘গ্রীষ্মকালে কিছুটা কষ্ট হলেও বর্ষাকালে এই রাস্তা দিয়ে একদম চলাফেরা করা যায় না। বর্ষাকালে একজন রোগীকে বকশীগঞ্জে নিয়ে যাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। সদরে নিয়ে যেতে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়।

ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পিটিশন সাংমা বলেন, ‘এই পাহাড়ের সব রাস্তাই কাঁচা। সরকার যদি এই কাঁচা রাস্তাগুলো পাকা করে দিত এবং পুরোনো রাস্তাগুলো সংস্কার করে দিলে আমাদের জন্য অনেক উপকার হতো। এই পাহাড়ে চলাফেরা করা খুবই কষ্টসাধ্য।’

দিঘলাকোনা গ্রামের সাধু আন্দ্রে ধর্মপল্লীর গুরু ফাদার ডোমিনিক সরকার বলেন, বিশ্ব যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই তুলনায় আমরা একেবারেই জিরো। আমাদের গ্রামগুলোর রাস্তার কোনো উন্নয়ন হয়নি। সরকার যদি আন্তরিক হয়, তবে এই পাহাড়ি এলাকার রাস্তাগুলো একটু উন্নত হবে। ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর জনগণ একটু শান্তিতে চলাফেরা করতে পারবে।

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুন মুন জাহান লিজা বলেন, ‘পাহাড়ি অঞ্চলের যে রাস্তাগুলো সংস্কার প্রয়োজন সেগুলো সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সংস্কার করা হবে। আর কোনো জায়গায় যদি নতুন রাস্তার প্রয়োজন হয় তাহলে স্থানীয়দের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে নতুন রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত