Ajker Patrika

সংঘাত নয়, শুভবুদ্ধির পরিচয় চাই

সম্পাদকীয়
সংঘাত নয়, শুভবুদ্ধির পরিচয় চাই

দেশের বড় দুটি রাজনৈতিক দল এখন একেবারেই মুখোমুখি অবস্থানে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপিকে মাঠের রাজনীতির দখল নিতে দেবে না। আবার ১৬ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থেকে মাঠের রাজনীতিতেও দুর্বল হয়ে পড়া বিএনপিও মাঠে নিজেদের শক্তি দেখাতে মরিয়া। দুই দলের কেউ কাউকে ছাড় না দেওয়ার যে মহড়া শুরু হয়েছে, তাতে দেশে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

কোনো খোলা ময়দানে ঘোষণা দিয়ে দুই দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ-আতঙ্কের কিছু থাকত না। কিন্তু সে রকম তো ঘটবে না। সংঘর্ষ হবে রাস্তাঘাটে বা যেখানে সমাবেশ থাকবে। ফলে কার নিক্ষেপ করা ঢিল কার মাথা ফাটাবে কিংবা কার কোমরে গুঁজে রাখা অস্ত্র তাক করে ছোড়া গুলি কার বুক ঝাঁজরা করবে, তা আগে থেকে বলা মুশকিল। বাঘে-মোষের লড়াইয়ে উলুখাগড়ার প্রাণ যাবে।

রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ-আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের পথে হাঁটবে না। তারা শক্তি পরীক্ষায় নামতে চায়, আর তাতে বিপদ বাড়ে অতিনিরীহ নুন আনতে পান্তা ফুরায় গোছের মানুষের।

বিএনপির যদি এই ভরসা দৃঢ় থাকে যে সরকার তার জনপ্রিয়তা হারিয়েছে, সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই, মানুষের সমর্থন বিএনপির দিকেই, তাহলেও বিএনপির উচিত অযথা উত্তেজনা তৈরি না করে ভোটের প্রস্তুতি নেওয়া এবং মানুষের কাছে এই বাণী পৌঁছে দেওয়া যে ভোটের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার যেকোনো মেকানিজম ঐক্যবদ্ধভাবেই রুখে দেওয়া হবে। মিছিল-মিটিং-সমাবেশ করা ছাড়াও এখন মানুষকে সচেতন করার শান্তিপূর্ণ অনেক বিকল্প উপায় আছে। সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম ছাড়াও মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছানোর অনেক উপায় এখন আছে। তা সত্ত্বেও বিএনপি কেন পুরোনো ধারার আন্দোলনেই নিজেদের সীমিত রাখতে চাইছে?

শনিবার ছিল ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি। বিএনপি এই কর্মসূচি ঘোষণার পর আওয়ামী লীগও ইউনিয়ন পর্যায়ে একই ধরনের কর্মসূচি দেয়। আওয়ামী লীগ অবশ্য স্বীকার করে না যে তারা বিএনপির পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। দুই দলের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছিল, কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বিএনপি দাবি করছে, প্রতি জেলায় তাদের কর্মসূচিতে হামলা হয়েছে। আবার আওয়ামী লীগ বলেছে, কয়েকটি জেলায় তাদের শান্তি সমাবেশে বিএনপি হামলা করেছে।

রোববার প্রায় সবগুলো জাতীয় দৈনিকে বিভিন্ন স্থানে দুই দলের হামলা ও সংঘর্ষের খবর ছাপা হয়েছে। আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় বিএনপির পদযাত্রায় শ্রীপুর উপজেলার বরমীবাজারে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এক যুবকের ছবিও ছাপা হয়েছে। এই যুবককে শনাক্ত করা গেলে তার রাজনৈতিক পরিচয়ও জানা যাবে। তবে হামলা বা সংঘর্ষের জন্য কোন দল বেশি দায়ী, কোন দলের দায় কম—সেই বিতর্কে না গিয়ে আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্বের শুভবুদ্ধির প্রতি আস্থা রেখে বলতে চাই, অনেক হয়েছে, সাধারণ মানুষকে ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার না করে আপনাদের শক্তি পরীক্ষার ভিন্ন উপায় খুঁজুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত