Ajker Patrika

চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য

সম্পাদকীয়
চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য

দেশে চাঁদাবাজি হয় না, সেটা নিশ্চয়ই কেউ বলবেন না। চাঁদাবাজির তালিকায় শীর্ষে থাকে সরকারি দলের নাম-পরিচয় ব্যবহারকারীদের। ছাত্রলীগ বা যুবলীগ বা ক্ষমতাসীন মূল দল আওয়ামী লীগের হয়েও নানা ধরনের চাঁদাবাজির খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে ছাপা হয়। কোথাও কোনো নির্মাণকাজ শুরু হলে চাঁদাবাজেরা গিয়ে হাজির হয়। এরা সাধারণত সরকারি বা ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক হওয়ায় নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বা ঠিকাদারেরা কিছু বখরা দিয়ে ঝামেলামুক্ত থাকার চেষ্টা করেন। নির্মাণকাজে রড, সিমেন্ট, বালু, শ্রমিকের মজুরি ছাড়াও ‘চাঁদা’ খাতেও একটি বরাদ্দ অনানুষ্ঠানিকভাবে হলেও সম্ভবত রাখা হয়।

সরকারি দলেরই একজন নেতা, যিনি একজন শিল্পপতিও বটে, তাঁর নির্মাণাধীন কারখানায় কেউ চাঁদার দাবিতে হামলা চালাতে পারে, ভাঙচুর করতে পারে—এটা অভাবনীয় হলেও এমন ঘটনাও ঘটেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক উপকমিটির সদস্য এম তমিজ উদ্দীন ভূঁইয়া সেলিম কুমিল্লার পদুয়ায় একটি কারখানা তৈরি করছেন।

শুক্রবার আজকের পত্রিকার চট্টগ্রাম সংস্করণে ‘চৌদ্দগ্রামে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর’ শিরোনামে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের সোনাইছা এলাকায় সাসটেইনেবল অ্যাপারেলস লিমিটেডের নির্মাণকাজ চলছে। স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী একজন রাজনৈতিক নেতার আশ্রয়ে থেকে বহুদিন যাবৎ কারখানার মালিকের কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা না পেয়ে সোমবার দুই দফা হামলা চালিয়ে দুটি ভেকু, অফিসকক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর ও মূল্যবান মালামাল লুটপাট করায় প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এ প্লাস গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান সাসটেইনেবল অ্যাপারেলস। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এ প্লাস গ্রুপ। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৪১৭.৪৫ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে এই কোম্পানির অধীনে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন।

এই কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজ বা ঋণখেলাপির অভিযোগের কথা শোনা যায় না। শিল্পকারখানা সম্প্রসারণের মাধ্যমে মানুষের চাকরি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রেখে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় থাকার পরও নিজ দলের চাঁদাবাজদের খপ্পর থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। চাঁদাবাজেরা আপন-পরও বোঝে না।

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে কুমিল্লার দ্রুত বিচার আদালতে মামলা করেছেন কোম্পানির সিকিউরিটি ইনচার্জ। বৃহস্পতিবার মামলাটি আমলে নিয়ে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে শিল্পাঞ্চল-৭ কুমিল্লাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ ঘটনার মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের শিলরী গ্রামের মামুন, লক্ষ্মীপুর গ্রামের রাজু, আশফালিয়া গ্রামের টুটুল, কুলাসার গ্রামের নয়ন, সোনাইছা গ্রামের কামাল, শিলরী গ্রামের শুভ। তাঁরা এই সাহস কোথায় পেলেন, তা খুঁজে বের করতে হবে। আমরা আশা করব, সাসটেইনেবল কারখানায় হামলার পেছনে কোনো ক্ষমতাধর ব্যক্তি থাকলেও তাঁর মুখোশ উন্মোচিত হওয়া দরকার। কয়েকজন সন্ত্রাসী নিশ্চয়ই কারও মদদ না পেয়ে এই অপরাধ করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল

গাজীপুরে রাস্তা বন্ধ করে চলাচল করা সেই পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার

ধর্ষণে মেয়ে গর্ভবতী, বাবার আমৃত্যু কারাদণ্ড

ভারতসহ একসঙ্গে তিন দেশ সামলাবেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত, দিল্লিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

নারীর সঙ্গে ঝগড়ার পর রূপসা সেতু থেকে নিচে লাফ দেন সাংবাদিক বুলু: কোস্ট গার্ড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত