Ajker Patrika

মন্ত্রণালয়ে আমলাদের প্রভাব নিয়ে চিকিৎসকদের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২২, ১০: ১৫
মন্ত্রণালয়ে আমলাদের প্রভাব নিয়ে চিকিৎসকদের ক্ষোভ

দেশের স্বাস্থ্য খাতের বিদ্যমান সংকট ও সমস্যা নিরসনের জন্য এ খাতে খুব শিগগির আমূল সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন চিকিৎসক সংগঠনের নেতারা। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদে চিকিৎসকদের নেতৃত্বে আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

গতকাল রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের ২১তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে চিকিৎসক সংগঠনের নেতারা এসব দাবির কথা জানান। এ সময় চিকিৎসকদের পদায়নে জটিলতা এবং আন্তক্যাডার বৈষম্য নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। তাঁদের ক্ষোভ ও দাবির মুখে সম্মেলনের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, দেশে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নেই। আন্তক্যাডার বৈষম্য বিদ্যমান। সরকারের আমলারা একদিকে বন্দুকসহ নিরাপত্তা পাচ্ছেন, অন্যদিকে চিকিৎসকদের কলার চেপে ধরছেন রোগীর স্বজনেরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশ দিয়েছেন উল্লেখ করে বিএমএ মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমরা দয়া চাই না, দাক্ষিণ্য চাই না। আমাদের অধিকার দিতে হবে। সংবিধানে বলা আছে ক্যাডার-বৈষম্য থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীও বৈষম্য নিরসনের কথা বলেছেন। কিন্তু যাঁরা নিরসন করবেন; তাঁরা তেলে তৈলাক্ত হয়ে বসে আছেন। এই দিন দিন নয়, আরও দিন আছে। চিকিৎসকদের সঠিক মূল্যায়ন করুন।’

আমলাদের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বিএমএ মহাসচিব বলেন, ‘একজন চিকিৎসক ছুটি চাওয়ায় একজন আমলা কী করে শোকজ করতে পারেন? শোকজ করে জানতে চাওয়া হয়, আপনি ছুটি চান কেন? কিন্তু শোকজ করবেন কোন শক্তিতে? যিনি এই কাজ করেছেন সেই কর্মকর্তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

জুনিয়র চিকিৎসকদের দেড় বছরেও পদায়ন হয় না জানিয়ে ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, পদায়নের জন্য তাঁদের কেন দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে? এ রকম বৈষম্য থাকবে কেন?

স্বাস্থ্য খাতে ক্যাডার-ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, ‘চিকিৎসাব্যবস্থায় অনেক মৌলিক

সমস্যা বিদ্যমান রয়েছে। সেগুলো অতি দ্রুত সমাধান না করলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যা তৈরি হবে। অনেক বিষয়ে ক্যাডার-ব্যবস্থা রাখা সম্ভব নয়। স্বাস্থ্যে ক্যাডার- ব্যবস্থা নিলে হবে না। এটা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। তা না হলে চিকিৎসাব্যবস্থার সমাধান হবে না।’

স্বাচিপ মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বলেন, চিকিৎসকদের মধ্যে থাকা বৈষম্য নিরসন করতে হবে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে জান বাজি রেখে কাজ করেছেন চিকিৎসকেরা। মন্ত্রণালয়ের অনেক নেতিবাচক ভূমিকা দেখা যাচ্ছে। পেশাজীবী মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। এ ছাড়া কাজের ক্ষেত্রে অনেক সমস্যা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম তাঁর বক্তব্যে চিকিৎসকদের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।

চিকিৎসক সংগঠনের নেতারা যখন এসব কথা বলছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক তখন মঞ্চেই বসা ছিলেন। পরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন দেশে চিকিৎসক ছিলেন ১৮ হাজার। বর্তমানে যা দ্বিগুণ হয়েছে। বর্তমান সরকারের টানা তিন মেয়াদে ১৮ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ পেয়েছেন। একই সঙ্গে যেখানে নার্স ছিলেন ১৮ হাজার, বর্তমানে তা বেড়ে ৪৭ হাজারে পৌঁছেছে।

চিকিৎসকের বিভিন্ন দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন করে আটটি বিভাগে মেডিকেল কলেজ হচ্ছে। এসব কলেজে অন্যান্য বিভাগের পাশাপাশি বার্ন, নিউরোসায়েন্স, অর্থোপেডিক, স্কিন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবাও চলবে। মেডিকেল কলেজগুলোতেও আসন বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থী বাড়ানোর পাশাপাশি চিকিৎসকদের পদও বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

বিদায় বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত