Ajker Patrika

ফল ঘোষণা নিয়ে উত্তেজনা, গুলি

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ০৬
ফল ঘোষণা নিয়ে উত্তেজনা, গুলি

চতুর্থ ধাপে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। জৈনসার ইউনিয়নে নির্বাচনী ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পুলিশ-আনসারের ছোড়া গুলিতে এক কিশোরসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া একটি কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত একটি গ্রুপ। এতে পুলিশ দখলকারীদের হটাতে ৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। প্রায় ১৫ মিনিট এ ঘটনা ঘটলেও ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

উপজেলার ১৪ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের ৭ জন, বিদ্রোহী ৫ জন এবং স্বতন্ত্র ২ জন।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার জৈনসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট গণনা শেষে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ফল প্রকাশ না করেই সংশ্লিষ্টরা কেন্দ্র থেকে চলে যাচ্ছিলেন। এ সময় স্থানীয় ভোটাররা তাদের বাধা দিলে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হন তিনজন। গুলিবিদ্ধরা হলেন, জৈনসারের কাঠালতলী এলাকার জিয়াউল হকের ছেলে জামির (১৪), একই এলাকার জয়নাল শেখের ছেলে জাহাঙ্গীর ও পাশের খিলগাঁও এলাকার বারেক ব্যাপারীর ছেলে রাসেল (৩০)।

তবে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের আশঙ্কায় ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সিরাজদিখান থানার (ওসি) মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন জানান, ওই কেন্দ্র থেকে ভোট শেষে নির্বাচনী সরঞ্জাম উপজেলা নেওয়ার সময় উত্তেজিত জনতা সড়ক ব্যারিকেড দেয়। এ সময় ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের আশঙ্কায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও আনসার ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সিহাব আল মশিউর জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আহত তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের শরীরের বিভিন্ন অংশে ছোড়া গুলির আঘাত ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তিনজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়।

এদিকে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে পাশের কেরানীগঞ্জ উপজেলার আওয়ামী লীগের সমর্থিত বহিরাগতরা সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের খাসকান্দি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রটি দখলের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ তাঁদের হটিয়ে দেয়। কিন্তু দখল চেষ্টাকারীরা কেন্দ্রের পাশেই একটি জায়গায় জড়ো হয়ে কেন্দ্রটি আবারও দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশ, র‍্যাব ও ডিবি পুলিশ তাঁদের হটাতে গেলে দখল চেষ্টাকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে পুলিশের একটি গাড়ির সামনের গ্লাস ও বেনেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় পুলিশ তাঁদের হটাতে ৮ রাউন্ড ফাঁকা (রাবার বুলেট) গুলি ছোড়ে। তবে পুলিশের তৎপরতায় ১৫ মিনিটের মধ্যেই কেন্দ্রটিতে আবারও ভোট গ্রহণ শুরু হয়।

সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) রাশেদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘পুলিশ দখল চেষ্টাকারীদের হটাতে ৮ রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তাৎক্ষণিক ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসে এবং ভোট গ্রহণ স্বাভাবিকভাবে সম্পন্ন হয়।’

এ ছাড়া সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ১৪৪টি ভোটকেন্দ্র ভোটারের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে সরব হয়ে উঠেছিল। উৎসবমুখর পরিবেশে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম জানান, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। একটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা ছাড়া কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ভোটারদের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক। এই নির্বাচনে জনগণের সন্তুষ্টি নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত