জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
একুশ এলেই কিছু গৎবাঁধা কথা বলে যাই আমরা। ইতিহাসের কিছু বর্ণনা, একুশের চাওয়া-পাওয়ার খতিয়ান করা এবং সাফল্যের পথে এগোতে গিয়ে হোঁচট খাওয়ার প্রতিবেদন হয়ে ওঠে প্রতিটি বছরের মানচিত্র। এমনকি এই রক্তাক্ত তারিখটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেলেও আমরা দেখতে পাই, ভাষার প্রশ্নে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথটি বন্ধুর।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হবে কি হবে না, সে প্রশ্নের মীমাংসা হয়ে গিয়েছিল আমতলার বৈঠকে। গাজীউল হকের সভাপতিত্বে শিক্ষার্থীদের সে বৈঠক থেকেই বেরিয়ে এসেছিল দশজনি মিছিলগুলো। ছাত্ররা গ্রেপ্তার হয়েছিল অকাতরে। বিকেলে ছিল পরিষদের সভা। ছাত্ররা পরিষদ ভবনে পৌঁছে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানাতে চেয়েছিল। এবং সে সময়েই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে গুলি চলল। আর গুলিবর্ষণের ঘটনাই পাল্টে দিল এই বাংলার ইতিহাস। বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা আন্দোলনের বারুদে যেন আগুন লাগল। তৈরি হলো একুশের পথ।
একুশের পথ ধরেই দেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ। ১৯৪৭ সালের কিছু সময় আগে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য যে বাঙালি মুসলমান এককাট্টা হয়েছিল, এত কম সময়ের মধ্যে কী করে তারা পূর্ণভাবে নিজ অধিকার আদায়ের প্রশ্নে ঘুরে দাঁড়াল, পাটাতন হিসেবে পেল নিজ সংস্কৃতিকে—সেটা ইতিহাসের এক মহাবিস্ময়। সে সময়ের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় জন্ম নিয়েছে একটি দেশ—বাংলাদেশ যার নাম। ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত বাঙালির এই অভিযাত্রার স্বর্ণালি আভায় আমরা উদ্ভাসিত হই। কিন্তু মূলত এই একটি মাসেই ভাষা নিয়ে আমাদের দরদ উথলে ওঠে। এরপর যে-কে-সেই।
আমরা এই একুশ দিনের আলোচনায় একুশের আগে-পরের বেশ কিছু কথা বলব। বাংলা ও উর্দুর বাহাস অর্থাৎ ভাষা বিতর্ক নিয়ে কথা হবে। সে সময়কার রাজনৈতিক তৎপরতা নিয়ে কথা হবে, সে সময়ের পত্রপত্রিকা নিয়ে কথা হবে।
আজকের অবস্থানে দাঁড়িয়ে বায়ান্ন থেকে একাত্তর অবধি বাঙালি ও তৎকালীন পূর্ববাংলার অন্য অধিবাসীরা যে আশ্চর্য ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে, তাকে স্বপ্নের মতো মনে হবে। এই কালপর্বের আগে-পিছে এতটা ঐক্যবদ্ধ জনস্রোত বাংলার ইতিহাসে দেখা যায়নি। পরবর্তীকালে উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের পথ বেয়েই একাত্ম হওয়া দেশবাসীকে দেখা গেছে স্বমূর্তিতে।
ঐক্যবদ্ধতার যে নজির দেশবাসী তৈরি করেছিল, সেটা পরবর্তীকালে আর সেভাবে টিকে থাকেনি। দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে জাতি। এখন সেই বিভক্তির মধ্যেই আমাদের বসবাস।
কিন্তু যে আলো জ্বলেছিল সেদিন, তারই পথ ধরে এগোনোর জন্য একটা মশাল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। সে মশালের আলোয় পথ চলে স্বপ্নাতুর জাতি। একুশ নিজেই হয়ে আছে সেই মশালটি।
আমরা কথা বলার সময় বাংলা ভাষার দিকে নজর রাখব। আমরা দেখার চেষ্টা করব, বাঙালি মুসলমানের শিক্ষিত একাংশ কেন বাংলাকে মুসলমানের মাতৃভাষা হিসেবে মেনে নিতে রাজি ছিল না। কেন তারা উর্দুকে চাইছিল মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে। আমরা উত্তর খুঁজব এই প্রশ্নের—অভিজাতশ্রেণি ছাড়া আর সব শ্রেণির মধ্যেই বাংলায় হতো কথোপকথন, তবুও কেন এই উর্দুপ্রীতি থেকে সরে আসেনি অভিজাতেরা। দেখব, শিকড়ের সঙ্গে সম্পর্কহীন এই রাজনীতির পরিণাম কী হয়েছিল।
উর্দুর প্রতাপের বিরুদ্ধে বিশ শতকের শুরুর দিকেই বাঙালি মুসলমানের আত্ম-অন্বেষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু সাংস্কৃতিক এই প্রশ্নটি রাজনৈতিক আবহ দিয়ে মোড়া ছিল বলেই বাংলা ভাষার বিরোধিতা করার সময় ধর্মকে টেনে আনা হয়েছে। ধর্মকে জড়িয়ে ভাষার প্রশ্নটিকে বিতর্কিত করে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। এবং সে সময়কার বাঙালির একটি বড় অর্জন হলো, তাকে ধর্মের বড়ি গেলানোর সাধ্যমতো চেষ্টা করা হলেও ভাষা-প্রশ্নে সে আপস করেনি।
ক্রমান্বয়ে এ প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে দিতেই আমরা পৌঁছে যাব একুশের কাছাকাছি।
একুশ এলেই কিছু গৎবাঁধা কথা বলে যাই আমরা। ইতিহাসের কিছু বর্ণনা, একুশের চাওয়া-পাওয়ার খতিয়ান করা এবং সাফল্যের পথে এগোতে গিয়ে হোঁচট খাওয়ার প্রতিবেদন হয়ে ওঠে প্রতিটি বছরের মানচিত্র। এমনকি এই রক্তাক্ত তারিখটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেলেও আমরা দেখতে পাই, ভাষার প্রশ্নে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথটি বন্ধুর।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হবে কি হবে না, সে প্রশ্নের মীমাংসা হয়ে গিয়েছিল আমতলার বৈঠকে। গাজীউল হকের সভাপতিত্বে শিক্ষার্থীদের সে বৈঠক থেকেই বেরিয়ে এসেছিল দশজনি মিছিলগুলো। ছাত্ররা গ্রেপ্তার হয়েছিল অকাতরে। বিকেলে ছিল পরিষদের সভা। ছাত্ররা পরিষদ ভবনে পৌঁছে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানাতে চেয়েছিল। এবং সে সময়েই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে গুলি চলল। আর গুলিবর্ষণের ঘটনাই পাল্টে দিল এই বাংলার ইতিহাস। বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা আন্দোলনের বারুদে যেন আগুন লাগল। তৈরি হলো একুশের পথ।
একুশের পথ ধরেই দেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ। ১৯৪৭ সালের কিছু সময় আগে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য যে বাঙালি মুসলমান এককাট্টা হয়েছিল, এত কম সময়ের মধ্যে কী করে তারা পূর্ণভাবে নিজ অধিকার আদায়ের প্রশ্নে ঘুরে দাঁড়াল, পাটাতন হিসেবে পেল নিজ সংস্কৃতিকে—সেটা ইতিহাসের এক মহাবিস্ময়। সে সময়ের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় জন্ম নিয়েছে একটি দেশ—বাংলাদেশ যার নাম। ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত বাঙালির এই অভিযাত্রার স্বর্ণালি আভায় আমরা উদ্ভাসিত হই। কিন্তু মূলত এই একটি মাসেই ভাষা নিয়ে আমাদের দরদ উথলে ওঠে। এরপর যে-কে-সেই।
আমরা এই একুশ দিনের আলোচনায় একুশের আগে-পরের বেশ কিছু কথা বলব। বাংলা ও উর্দুর বাহাস অর্থাৎ ভাষা বিতর্ক নিয়ে কথা হবে। সে সময়কার রাজনৈতিক তৎপরতা নিয়ে কথা হবে, সে সময়ের পত্রপত্রিকা নিয়ে কথা হবে।
আজকের অবস্থানে দাঁড়িয়ে বায়ান্ন থেকে একাত্তর অবধি বাঙালি ও তৎকালীন পূর্ববাংলার অন্য অধিবাসীরা যে আশ্চর্য ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে, তাকে স্বপ্নের মতো মনে হবে। এই কালপর্বের আগে-পিছে এতটা ঐক্যবদ্ধ জনস্রোত বাংলার ইতিহাসে দেখা যায়নি। পরবর্তীকালে উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের পথ বেয়েই একাত্ম হওয়া দেশবাসীকে দেখা গেছে স্বমূর্তিতে।
ঐক্যবদ্ধতার যে নজির দেশবাসী তৈরি করেছিল, সেটা পরবর্তীকালে আর সেভাবে টিকে থাকেনি। দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে জাতি। এখন সেই বিভক্তির মধ্যেই আমাদের বসবাস।
কিন্তু যে আলো জ্বলেছিল সেদিন, তারই পথ ধরে এগোনোর জন্য একটা মশাল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। সে মশালের আলোয় পথ চলে স্বপ্নাতুর জাতি। একুশ নিজেই হয়ে আছে সেই মশালটি।
আমরা কথা বলার সময় বাংলা ভাষার দিকে নজর রাখব। আমরা দেখার চেষ্টা করব, বাঙালি মুসলমানের শিক্ষিত একাংশ কেন বাংলাকে মুসলমানের মাতৃভাষা হিসেবে মেনে নিতে রাজি ছিল না। কেন তারা উর্দুকে চাইছিল মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে। আমরা উত্তর খুঁজব এই প্রশ্নের—অভিজাতশ্রেণি ছাড়া আর সব শ্রেণির মধ্যেই বাংলায় হতো কথোপকথন, তবুও কেন এই উর্দুপ্রীতি থেকে সরে আসেনি অভিজাতেরা। দেখব, শিকড়ের সঙ্গে সম্পর্কহীন এই রাজনীতির পরিণাম কী হয়েছিল।
উর্দুর প্রতাপের বিরুদ্ধে বিশ শতকের শুরুর দিকেই বাঙালি মুসলমানের আত্ম-অন্বেষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু সাংস্কৃতিক এই প্রশ্নটি রাজনৈতিক আবহ দিয়ে মোড়া ছিল বলেই বাংলা ভাষার বিরোধিতা করার সময় ধর্মকে টেনে আনা হয়েছে। ধর্মকে জড়িয়ে ভাষার প্রশ্নটিকে বিতর্কিত করে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। এবং সে সময়কার বাঙালির একটি বড় অর্জন হলো, তাকে ধর্মের বড়ি গেলানোর সাধ্যমতো চেষ্টা করা হলেও ভাষা-প্রশ্নে সে আপস করেনি।
ক্রমান্বয়ে এ প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে দিতেই আমরা পৌঁছে যাব একুশের কাছাকাছি।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৫ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৫ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৫ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫