বিসিবির কমিটিতে রদবদলের সঙ্গে আছে চমক

বিসিবির গতকালের বোর্ডসভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির পুনর্বিন্যাস কেমন হচ্ছে, সেটিই ছিল কৌতূহলের কেন্দ্রে। বিশেষ করে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব থেকে আকরাম খানের সরে যাওয়ার পর বোর্ডের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগের প্রধান কে হচ্ছেন—সেটিই ছিল প্রশ্ন। সভা শেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, জালাল ইউনুস হচ্ছেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান, যিনি গত আট বছর বিসিবির মিডিয়া বিভাগের প্রধান ছিলেন।

এবার আকরামকে দেওয়া হয়েছে ফ্যাসিলিটিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দায়িত্ব। তিনি একই সঙ্গে দেখবেন ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড বিভাগ, যেটির চেয়ারম্যান পদ গত দুটি কমিটিতেই শূন্য ছিল। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় অভিজ্ঞ ক্রিকেট সংগঠক জালাল ইউনুস জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ফিরে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বলেছেন, ‘জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ আনতে চাই। যদি পরিবেশ স্বাস্থ্যকর থাকে, সেটি ভালো করতে সাহায্য করবে।’ জালাল ইউনুস আরও যোগ করেছেন, ‘ক্রিকেটের স্বার্থে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, নেব।’

জালালের জায়গায় মিডিয়া বিভাগের নতুন প্রধান হয়েছেন প্রথমবারের মতো বিসিবি পরিচালক হওয়া তানভীর আহমেদ টিটু। এই বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান অবশ্য জালালই থাকছেন। নতুন স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আরেকটি চমক আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি। আগের দুই কমিটিতে কোনো বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব না পাওয়া দেশের এই স্বনামধন্য ক্রিকেট সংগঠককে অবশেষে কাজে লাগাচ্ছে বিসিবি। তাঁকে দেওয়া হয়েছে টুর্নামেন্ট কমিটির দায়িত্ব।

গেম ডেভেলপমেন্টে সুজনের সঙ্গে থাকছেন ফাহিম সিনহা। হাইপারফরম্যান্স কমিটিতে আগের মতোই চেয়ারম্যান নাঈমুর রহমান দুর্জয়, ভাইস চেয়ারম্যান আকরাম খান। গ্রাউন্ডসের প্রধান এবারও মাহবুব উল আনাম। নতুন কমিটি বাংলা টাইগার্সের দায়িত্বে কাজী ইনাম আহমেদ। বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টের চেয়ারম্যান ওবেদ রশীদ নিযাম। আম্পায়ার্স কমিটিও পাচ্ছে নতুন চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু। ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস বা সিসিডিএমের চেয়ারম্যান হচ্ছেন সালাহ্উদ্দিন চৌধুরী।

বিপণন ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের প্রধান থাকছেন আগের মতোই শেখ সোহেল। একইভাবে বাকি কমিটিতে আগের প্রধানেরাই থাকছেন। দায়িত্ব পুনর্বণ্টনের পর সাংবাদিকদের বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছে, এখন থেকে সবাই যার যার বিভাগ নিয়ে কথা বলবে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ নিয়ে অন্য কেউ বলবে না। আগে তারা (বিভাগীয় প্রধানেরা) ভাবত, আমিই (বিসিবি সভাপতি) বলব। ওদের পরিষ্কার করেছি, যদি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হয়, আমি বলব। তবে যে বিভাগের দায়িত্ব যে, সেটি নিয়েই তারা বলবে।’

গতকালের বোর্ডসভায় আলোচনা হয়েছে শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ প্রসঙ্গেও। ঢাকার বাইরে মাঠ কেনা, আন্তর্জাতিক ভেন্যুগুলোর সংস্কার, ৯৮ জন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারের চুক্তি ও ‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটাগরিতে মেয়েদের বেতন সর্বোচ্চ ৩৩ শতাংশ বাড়ানোর অনুমোদন করা হয়েছে সভায়।

বর্তমান নির্বাচক প্যানেলে থাকা মিনহাজুল আবেদীন ও হাবিবুল বাশারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৩১ ডিসেম্বর। তবে এখনই দুই নির্বাচকের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানাননি পাপন। বিসিবি সভাপতি বললেন, ‘আগেই বলেছি, জানুয়ারিতে এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। নির্বাচক প্যানেলে কোনো পরিবর্তন হবে কি না, বলতে পারছি না। তবে একটা সিরিজ চলার সময় নির্বাচক প্যানেল কিংবা কোচিং স্টাফে পরিবর্তন নিয়ে কিছু বলতে পারব না।’