Ajker Patrika

কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে বিপাকে স্বাস্থ্য সহকারী

তারাগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭: ৫৯
কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে বিপাকে স্বাস্থ্য সহকারী

তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোছা. শামছুন্নাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করে বিপাকে পড়েছেন স্বাস্থ্য সহকারী ধীমান রায়।

ধীমানকে হেনস্তা করাসহ প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে রংপুরের সিভিল সার্জন হিরম্ব কুমার রায়কে জানিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, করোনার টিকাদান কার্যক্রমের শুরু থেকে স্বাস্থ্য সহকারী ধীমান হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত ‘এমটি ইপিআই’ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি টিকা সরবরাহ ও বিতরণ, কোল্ড চেইন ম্যানেজমেন্ট, টিকার বর্জ্য অপসারণ ও বিনষ্টের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি টিকা সরবরাহ ও কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার পরিবহন ব্যয় নিজের পকেট থেকে মিটিয়েছেন। পরে এ বিষয়ে সরকারি বরাদ্দ এলে তা তাঁকে না দিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামসুন্নাহার উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।

এ ঘটনায় ধীমান গত ১০ আগস্ট রংপুর জেলা সিভিল সার্জন এবং ৩১ আগস্ট রংপুর বিভাগীয় পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে পরিচালক (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের উপপরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলামের নির্দেশে ৬ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা ১২ সেপ্টেম্বর তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত করেন।

তদন্ত কমিটি চলে যাওয়ার পর থেকে ধীমানকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মোবাইল ফোন নম্বর থেকে অভিযোগ তুলে নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে সমঝোতা করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ ২০ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে ধীমানকে তাঁর কর্মস্থল রহিমাপুর চাকলা কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তাঁকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দুজন নেতা-কর্মী। এ সময় ধীমানের ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা হেনস্তা করার পর ধীমান মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ধীমান গতকাল বৃহস্পতিবার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সত্যের পথে লড়তে গিয়ে আমি পদে পদে হুমকির সম্মুখে পড়ছি। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় তিনি ও তাঁরলোকজন আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। এত আমি শঙ্কিত। জীবন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামছুন্নাহারের বিরুদ্ধে গত ৮ আগস্ট চিকিৎসক এবং ২৪ আগস্ট স্বেচ্ছাসেবীরা টাকা আত্মসাৎ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সিভিল সার্জনের কাছে অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের তদন্তও হয়েছে। তিন সদস্যের কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন জামা হওয়ার কথা রয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে শামসুন্নাহারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জেলা সিভিল সার্জন হিরম্ব কুমার রায় বলেন, ‘স্বাস্থ্য সহকারী ধীমান রায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামসুন্নাহারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ আমাকে দিয়েছেন। খুব শিগগিরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত