Ajker Patrika

বেইলি নয়, পাকা সেতু

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৭: ০৭
বেইলি নয়, পাকা সেতু

বান্দরবান জেলায় চার দশক আগের বেইলি সেতুর পরিবর্তে পাকা গার্ডার সেতু নির্মাণে কাজ করছে সড়ক বিভাগ। ইতিমধ্যে জেলার ১০টি পাকা সেতু করার জন্য ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। আরও ১২টি পাকা সেতুর জন্য ৭৮ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া বান্দরবান-খানহাট সড়কে (চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার খানহাট) ধোপাছড়ি খালের ওপর প্রায় ১০০ মিটার দীর্ঘ পাকা সেতু নির্মাণের জন্য ২৫ কোটি টাকার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে নকশা জমা দেওয়া হয়েছে। বান্দরবান সওজ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এর আগে বান্দরবান-রুমা সড়কের পাইক্ষ্যংঝিরির ওপরের বেইলি সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনা সরেজমিন তদন্তে সওজ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে একটি দল সম্প্রতি বান্দরবান পরিদর্শন করেছে। ওই সময় বেইলি সেতুর বদলে পাকা সেতু করার বিষয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে মতামত পায় তদন্ত দল। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত দলও মন্ত্রণালয়ে পাকা সেতুর প্রস্তাব দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, তদন্ত দল বান্দরবানের বেইলির পরিবর্তে পাকা সেতু করার বিষয়ে ইতিবাচক মতামত দেওয়ায় তাঁরা আশা করছেন। বান্দরবানে এবার ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ বেইলি সেতুর স্থানে পাকা সেতু নির্মাণ করা হবে।

জানা গেছে, বান্দরবান সড়ক বিভাগের আওতায় ১৫৯টি সেতু রয়েছে। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর নির্মাণ প্রকৌশল বিভাগ (ইসিবি) ৮৩টি বেইলি সেতু ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কাজ বাস্তবায়ন করছে। এ ছাড়া ৭৬টি বেইলি সেতু ও সংশ্লিষ্ট সড়কগুলো বান্দরবান সওজ বিভাগ রক্ষণাবেক্ষণ করছে।

সূত্রমতে, বান্দরবানে ১৯৮০ সালে সড়ক যোগাযোগের জন্য ইস্পাতের তৈরি বেইলি সেতু করা হয়। এর মধ্যে প্রায় সব বেইলি সেতু জরাজীর্ণ ও লক্কড়-ঝক্কর হয়ে গেছে। অনেক সেতু চরম ঝুঁকিপূর্ণ। এসব সেতুতে বাস-ট্রাক যাওয়ার সময় ভেঙে পড়ছে। সব সেতু ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় দুপাশে পাঁচ টনের বেশি মালামাল নিয়ে পারাপারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছে সড়ক বিভাগ।

গত দুই মাসে রুমা ও রোয়াংছড়িতে ট্রাক যাওয়ার সময় দুটি বেইলি সেতু ভেঙে যায়। এর মধ্যে ২ ফেব্রুয়ারি চালবোঝাই একটি ট্রাক রোয়াংছড়ির তারাছা এলাকার পাইক্ষ্যংঝিরির ওপরের বেইলি সেতু ভেঙে নিচে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই চালকের মৃত্যু হয়। এতে দুই দিন সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল। এর আগে গত ৯ জানুয়ারি রাতে বালুবোঝাই ট্রাক রোয়াংছড়ি উপজেলায় যাওয়ার সময় নোয়াপতং খালের বেইলি সেতুর পাটাতন ভেঙে আটকে যায়। এতে সড়কে প্রায় ১৮ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল।

সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সওজের পরিচালনার ৭৬টি সেতুর সবই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে ইতিমধ্যে ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দে জেলার ১০টি সেতু পাকাকরণের কাজ চলছে। আরও ৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২টি সেতু নির্মাণের বরাদ্দ অনুমোদন মিলেছে। এসব সেতুর কাজও শিগগির শুরু হবে। ইতিমধ্যে বান্দরবানের ২২টি বেইলি সেতু সড়ক বিভাগের মাধ্যমে পাকা করার কাজ চলমান। আশা করা যায়, অবশিষ্ট বেইলি সেতুগুলোও পাকা করার কার্যক্রম ও বরাদ্দ শিগগির শুরু হবে।

নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ধোপাছড়ি খালের ওপর প্রায় ১০০ মিটার পাকা সেতুটি হলে বান্দরবানের সঙ্গে চট্টগ্রামের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ আমূল উন্নয়ন ঘটবে। খানহাট হয়ে ধোপাছড়ি-বান্দরবান সদরের কুহালং-গোয়ালিয়াখোলার দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার কমে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত