Ajker Patrika

ডেঙ্গু পরিস্থিতি

সম্পাদকীয়
ডেঙ্গু পরিস্থিতি

ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভাবাচ্ছে সবাইকে। চলতি মাসের প্রথম তিন দিনেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ৯ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। করোনা এসে হতবিহ্বল করে দিয়েছিল পুরো পৃথিবীকে। ডেঙ্গু কিন্তু তখনো ছিল ক্রিয়াশীল। ডেঙ্গু একবার যে দেশে ঢোকে, সেই দেশ থেকে সহজে বের হয় না। নানাভাবে রয়ে যায়। সুযোগ পেলেই সে তার রক্তচক্ষু প্রদর্শন করে। তাই এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখার যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়াই সবচেয়ে জরুরি।

ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে। সম্পাদকীয় পাতায় আমরা এ বিষয়ে আগেও আমাদের পাঠকদের সতর্ক করে দিয়েছি। কিন্তু ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতির কারণে আবারও ডেঙ্গুবিষয়ক কিছু সচেতনতার শরণাপন্ন হওয়া দরকার বলে মনে করি।

ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা মূলত দিনের বেলা, সকাল ও সন্ধ্যায় কামড়ায় বলে মনে করা হতো। কিন্তু পরবর্তীকালে দেখা গেছে, রাতে উজ্জ্বল আলো জ্বালানো থাকলেও এডিস মশা কামড়াতে পারে। সুতরাং এ কথা বলা যেতেই পারে যে এডিস মশা কখন কামড়াবে আর কখন কামড়াবে না, তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। ঘরে মশা যেন ঢুকতে না পারে, এ জন্য দরজা ও জানালায় নেট লাগানো জরুরি হয়ে পড়েছে। দিনে বা রাতে কোনো জানালা বা দরজা দিয়ে যেন এই মশা ঢুকতে না পারে, তা নিশ্চিত করা গেলে অন্তত নিজ বাড়িতে এডিসের কামড় খাওয়ার আশঙ্কা কমে। আরও বেশি সচেতন হতে হলে বাড়ির শিশুদের ফুলপ্যান্ট বা পায়জামা পরিয়ে রাখতে হবে। বড়রাও শরীর ঢাকা পোশাক পরলে বিপদের আশঙ্কা কমে।

স্বচ্ছ পানিই এডিস মশার বংশবৃদ্ধিতে সহায়ক। তাই ঘরের ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, একই জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানি ফেলে দিয়ে নতুন পানি ভরতে হবে। আবার তা ফেলে দিতে হবে। তাতে এডিস মশার লার্ভা মরে যাবে। বাড়ির ছাদের বাগান, আশপাশের ঝোপঝাড়, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, ফুলের টব—এই সবকিছুতে স্বচ্ছ পানি এসে স্থির হয়ে বসলে এডিস মশার বংশবৃদ্ধি হয়। এদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে।

রাস্তায় মশা নিধনের জন্য ফগিং মেশিন এখনো সেভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না। বৃষ্টির পানি ঠিকভাবে নিষ্কাশন করা হচ্ছে না। এগুলো করা দরকার।

ডেঙ্গু জ্বর হলে অনেকেই সেটাকে সাধারণ জ্বর মনে করে অবহেলা করে থাকে। যখন হাসপাতালে রোগীকে নেওয়া হয়, তখন আর কিছুই করার থাকে না। ডেঙ্গু রোগীর সময়মতো চিকিৎসা পাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে অনেক মানুষই প্রাণ হারিয়েছে। আরও একটি ব্যাপার। শরীরের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হলে ডেঙ্গু জ্বর সহজে কাউকে কাবু করতে পারে না। নিজের খাদ্যতালিকায় সাইট্রাসজাতীয় খাদ্য, রসুন, বাদাম ইত্যাদি রাখা দরকার।
ঢাকার হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু রোগীতে ভরে উঠছে। রাজধানীতে এই রোগের প্রকোপ বেশি হলেও সারা দেশেই তা ছড়িয়ে পড়েছে। সবখানেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত