সাজিদ মোহন
পাঠ্যবইয়ের কল্যাণে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিলাসী গল্পটি কমবেশি সবারই পড়া। সাপের কামড়ে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যু এবং সাত দিনের মাথায় বিষপানে বিলাসীর আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে গল্পটির সমাপ্তি ঘটলেও শরৎচন্দ্র ভালোবাসার স্বরূপ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে গল্পের শেষে যোগ করছেন বাড়তি কয়েক ছত্র। গল্পে বিলাসী-মৃত্যুঞ্জয়ের দুঃখে ডুবে গিয়ে গল্পের বাড়তি অংশটুকু এড়িয়ে যান বেশির ভাগ পাঠক।
শরৎচন্দ্র লিখেছেন, ‘এ দেশের নর-নারীর মধ্যে পরস্পরের হৃদয় জয় করিয়া বিবাহ করিবার রীতি নাই, বরঞ্চ তাহা নিন্দার সামগ্রী, যে দেশের নর-নারী আশা করিবার সৌভাগ্য, আকাঙ্ক্ষা করিবার ভয়ঙ্কর আনন্দ হইতে চিরদিনের জন্য বঞ্চিত, যাহাদের জয়ের গর্ব, পরাজয়ের ব্যথা, কোনটাই জীবনে একটিবারও বহন করিতে হয় না, যাহাদের ভুল করিবার দুঃখ, আর ভুল না করিবার আত্মপ্রসাদ, কিছুরই বালাই নাই। সাপুড়ের মেয়েটি যখন একটি পীড়িত শয্যাগত লোককে তিল তিল করিয়া জয় করিতেছিল, তাহার তখনকার সে গৌরবের কণামাত্রও হয়ত আজিও কেহ চোখে দেখেন নাই। মৃত্যুঞ্জয় হয়ত নিতান্তই একটা তুচ্ছ মানুষ ছিল, কিন্তু তাহার হৃদয় জয় করিয়া দখল করার আনন্দটাও তুচ্ছ নয়, সে সম্পদও অকিঞ্চিৎকর নহে।’
ভালোবাসার স্বরূপ উদ্ঘাটন করতে গিয়ে যুগে যুগে, দেশে দেশে কবি-সাহিত্যিক-ভাবুক-শিল্পীরা সাত ঘাটের জল এক ঘাটে করেছেন। দাঁড় করিয়েছেন নিজস্ব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। এসব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে ভালোবাসার বন্দনাগীত যেমন আছে, আছে সমালোচনার তিরও। মাটির গভীরে পাথরের খাঁজে খাঁজে যেমন লুকিয়ে থাকে প্রাকৃতিক সম্পদ, গল্প-উপন্যাস-কবিতার পরতে পরতে ঘটনা বা বিশেষ কোনো মুহূর্ত বা অনুভূতি বা আচরণের বর্ণনায় ভালোবাসার চিরায়ত বৈশিষ্ট্যগুলো ধরা পড়ে। আবার কেউ কেউ সরাসরিও সংজ্ঞায়িত করতে চেয়েছেন ভালোবাসা নামক বিশেষ অনুভূতিটিকে।
কবি রফিক আজাদ ভালোবাসা মানে কবিতায় লিখেছেন:
‘ভালোবাসা মানে দুজনের পাগলামি,
পরস্পরকে হৃদয়ের কাছে টানা;
ভালোবাসা মানে জীবনের ঝুঁকি নেয়া,
বিরহ-বালুতে খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি;’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন,
‘সখী, ভাবনা কাহারে বলে।
সখী, যাতনা কাহারে বলে।
তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ভালোবাসা ভালোবাসা—
সখী, ভালোবাসা কারে কয়!
সে কি কেবলই যাতনাময়।’
অঁতোয়ান দ্য স্যাঁৎ একজ্যুপেরি ‘লিটল প্রিন্স’ গ্রন্থে ভালোবাসার খুঁটিনাটি নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। তাঁর কাছে ভালোবাসা হলো পোষ মানানো। পোষ মানা হলো সম্পর্ক তৈরি করা, একজনের সঙ্গে আরেকজনের সম্পর্ক গড়ে তোলা। কেউ যখন কাউকে পোষ মানাও তাহলে দুজনের কাছেই দুজনের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাবে। একজন হবে অন্যজনের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর একজন।ভালোবাসলে একটি সাধারণ জিনিসও অন্য সবকিছু থেকে আলাদা, অনন্য হয়ে ওঠে।
একজ্যুপেরির গল্পে রাজপুত্র বাগানে ফুটে থাকা অসংখ্য গোলাপকে বলছে, ‘গোলাপ, তোমরা সুন্দর কিন্তু একেবারেই ফুটো কলসি।তোমাদের জন্য কেউ প্রাণ দিতে চাইবে না। যেকোনো সাধারণ পথিক হয়তো বলবে, আমার ফুলটির সঙ্গে তোমাদের কোনো ফারাক নেই।কিন্তু আমার সেই ফুলটি তোমাদের লক্ষ লক্ষ ফুলের চেয়ে অনেক গুণ ভালো সে।’ সাধারণ থেকে ফুলটি কেন-কীভাবে বিশেষ হয়ে উঠল, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রাজপুত্র বলছে, ‘সেই ফুলটি, যার গোড়ায় আমি পানি ঢেলেছি, কাচের ঢাকনি দিয়ে ঢেকে দিয়েছি, ঠান্ডা বাতাস থেকে বাঁচার জন্য বেড়া দিয়েছি, সেই গোলাপটিকে বাঁচানোর জন্য সব পোকামাকড় মেরেছি (কয়েকটা বাদে, কেননা আমরা দুজনে ঠিক করেছিলাম পরে কয়েকটি প্রজাপতি দরকার হবে)। সেই ফুলেরই কথা শুনেছি সমস্ত মন দিয়ে। হয়তো রাগ করেছে, কখনো বড়াই করেছে, কিংবা কখনো হয়তো কিছুই বলেনি। সে তো আমারই ফুল ছিল, এককেবারে আমারই।’
ফ্রান্সিস বেকন ‘অব লাভ’ প্রবন্ধে ভালোবাসার অসংখ্য নেতিবাচক দিক তুলে ধরেছেন। সঙ্গে একগাদা উদাহরণ। ভালোবাসার মতো এমন কী আছে যার চেয়ে বেশি সুখ কেউ দেয় না, অথচ কষ্টে ধুঁকে ধুঁকে মারার জন্যও যথেষ্ট?
রবীন্দ্রনাথের ‘লোকে তবে করে কী সুখেরই তরে এমন দুখের আশ?’ প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে বিলাসী গল্পের ‘আশা করিবার সৌভাগ্য’, ‘আকাঙ্ক্ষা করিবার আনন্দ’, ‘জয়ের গর্ব’, ‘পরাজয়ের ব্যথা’, ‘ভুল করিবার দুঃখ’, ‘ভুল না করিবার আত্মপ্রসাদ’, ‘তিল তিল করে হৃদয় জয় করে দখল করার আনন্দ-গৌরব’ শব্দগুচ্ছের ভেতর।
পাঠ্যবইয়ের কল্যাণে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিলাসী গল্পটি কমবেশি সবারই পড়া। সাপের কামড়ে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যু এবং সাত দিনের মাথায় বিষপানে বিলাসীর আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে গল্পটির সমাপ্তি ঘটলেও শরৎচন্দ্র ভালোবাসার স্বরূপ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে গল্পের শেষে যোগ করছেন বাড়তি কয়েক ছত্র। গল্পে বিলাসী-মৃত্যুঞ্জয়ের দুঃখে ডুবে গিয়ে গল্পের বাড়তি অংশটুকু এড়িয়ে যান বেশির ভাগ পাঠক।
শরৎচন্দ্র লিখেছেন, ‘এ দেশের নর-নারীর মধ্যে পরস্পরের হৃদয় জয় করিয়া বিবাহ করিবার রীতি নাই, বরঞ্চ তাহা নিন্দার সামগ্রী, যে দেশের নর-নারী আশা করিবার সৌভাগ্য, আকাঙ্ক্ষা করিবার ভয়ঙ্কর আনন্দ হইতে চিরদিনের জন্য বঞ্চিত, যাহাদের জয়ের গর্ব, পরাজয়ের ব্যথা, কোনটাই জীবনে একটিবারও বহন করিতে হয় না, যাহাদের ভুল করিবার দুঃখ, আর ভুল না করিবার আত্মপ্রসাদ, কিছুরই বালাই নাই। সাপুড়ের মেয়েটি যখন একটি পীড়িত শয্যাগত লোককে তিল তিল করিয়া জয় করিতেছিল, তাহার তখনকার সে গৌরবের কণামাত্রও হয়ত আজিও কেহ চোখে দেখেন নাই। মৃত্যুঞ্জয় হয়ত নিতান্তই একটা তুচ্ছ মানুষ ছিল, কিন্তু তাহার হৃদয় জয় করিয়া দখল করার আনন্দটাও তুচ্ছ নয়, সে সম্পদও অকিঞ্চিৎকর নহে।’
ভালোবাসার স্বরূপ উদ্ঘাটন করতে গিয়ে যুগে যুগে, দেশে দেশে কবি-সাহিত্যিক-ভাবুক-শিল্পীরা সাত ঘাটের জল এক ঘাটে করেছেন। দাঁড় করিয়েছেন নিজস্ব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। এসব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে ভালোবাসার বন্দনাগীত যেমন আছে, আছে সমালোচনার তিরও। মাটির গভীরে পাথরের খাঁজে খাঁজে যেমন লুকিয়ে থাকে প্রাকৃতিক সম্পদ, গল্প-উপন্যাস-কবিতার পরতে পরতে ঘটনা বা বিশেষ কোনো মুহূর্ত বা অনুভূতি বা আচরণের বর্ণনায় ভালোবাসার চিরায়ত বৈশিষ্ট্যগুলো ধরা পড়ে। আবার কেউ কেউ সরাসরিও সংজ্ঞায়িত করতে চেয়েছেন ভালোবাসা নামক বিশেষ অনুভূতিটিকে।
কবি রফিক আজাদ ভালোবাসা মানে কবিতায় লিখেছেন:
‘ভালোবাসা মানে দুজনের পাগলামি,
পরস্পরকে হৃদয়ের কাছে টানা;
ভালোবাসা মানে জীবনের ঝুঁকি নেয়া,
বিরহ-বালুতে খালি পায়ে হাঁটাহাঁটি;’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন,
‘সখী, ভাবনা কাহারে বলে।
সখী, যাতনা কাহারে বলে।
তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ভালোবাসা ভালোবাসা—
সখী, ভালোবাসা কারে কয়!
সে কি কেবলই যাতনাময়।’
অঁতোয়ান দ্য স্যাঁৎ একজ্যুপেরি ‘লিটল প্রিন্স’ গ্রন্থে ভালোবাসার খুঁটিনাটি নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। তাঁর কাছে ভালোবাসা হলো পোষ মানানো। পোষ মানা হলো সম্পর্ক তৈরি করা, একজনের সঙ্গে আরেকজনের সম্পর্ক গড়ে তোলা। কেউ যখন কাউকে পোষ মানাও তাহলে দুজনের কাছেই দুজনের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাবে। একজন হবে অন্যজনের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর একজন।ভালোবাসলে একটি সাধারণ জিনিসও অন্য সবকিছু থেকে আলাদা, অনন্য হয়ে ওঠে।
একজ্যুপেরির গল্পে রাজপুত্র বাগানে ফুটে থাকা অসংখ্য গোলাপকে বলছে, ‘গোলাপ, তোমরা সুন্দর কিন্তু একেবারেই ফুটো কলসি।তোমাদের জন্য কেউ প্রাণ দিতে চাইবে না। যেকোনো সাধারণ পথিক হয়তো বলবে, আমার ফুলটির সঙ্গে তোমাদের কোনো ফারাক নেই।কিন্তু আমার সেই ফুলটি তোমাদের লক্ষ লক্ষ ফুলের চেয়ে অনেক গুণ ভালো সে।’ সাধারণ থেকে ফুলটি কেন-কীভাবে বিশেষ হয়ে উঠল, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রাজপুত্র বলছে, ‘সেই ফুলটি, যার গোড়ায় আমি পানি ঢেলেছি, কাচের ঢাকনি দিয়ে ঢেকে দিয়েছি, ঠান্ডা বাতাস থেকে বাঁচার জন্য বেড়া দিয়েছি, সেই গোলাপটিকে বাঁচানোর জন্য সব পোকামাকড় মেরেছি (কয়েকটা বাদে, কেননা আমরা দুজনে ঠিক করেছিলাম পরে কয়েকটি প্রজাপতি দরকার হবে)। সেই ফুলেরই কথা শুনেছি সমস্ত মন দিয়ে। হয়তো রাগ করেছে, কখনো বড়াই করেছে, কিংবা কখনো হয়তো কিছুই বলেনি। সে তো আমারই ফুল ছিল, এককেবারে আমারই।’
ফ্রান্সিস বেকন ‘অব লাভ’ প্রবন্ধে ভালোবাসার অসংখ্য নেতিবাচক দিক তুলে ধরেছেন। সঙ্গে একগাদা উদাহরণ। ভালোবাসার মতো এমন কী আছে যার চেয়ে বেশি সুখ কেউ দেয় না, অথচ কষ্টে ধুঁকে ধুঁকে মারার জন্যও যথেষ্ট?
রবীন্দ্রনাথের ‘লোকে তবে করে কী সুখেরই তরে এমন দুখের আশ?’ প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে বিলাসী গল্পের ‘আশা করিবার সৌভাগ্য’, ‘আকাঙ্ক্ষা করিবার আনন্দ’, ‘জয়ের গর্ব’, ‘পরাজয়ের ব্যথা’, ‘ভুল করিবার দুঃখ’, ‘ভুল না করিবার আত্মপ্রসাদ’, ‘তিল তিল করে হৃদয় জয় করে দখল করার আনন্দ-গৌরব’ শব্দগুচ্ছের ভেতর।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫