Ajker Patrika

ব্যাংক মাশুলে দিশেহারা গ্রাহক

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৯: ৩৪
ব্যাংক মাশুলে দিশেহারা গ্রাহক

দেশের ব্যাংকিং খাত এগিয়ে চলছে। সেবার আওতায় আগ্রহ যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে ব্যাংকের সংখ্যা। বর্তমানে সারা দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ৬১টি ব্যাংক। এসব ব্যাংক এখন আর আমানত সংগ্রহ ও ঋণ বিতরণের গণ্ডিতে থেমে নেই। গ্রাহকদের দিচ্ছে নানামুখী সেবা। বিনিময়ে ব্যাংক গ্রাহকের কাছ থেকে নিচ্ছে নির্দিষ্ট হারে চার্জ ও ফি। তবে সেবার বিনিময়ে পদে পদে চার্জ দিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এমন অভিযোগও করেছেন অনেক গ্রাহক।

বিভিন্ন ব্যাংকের চার্জ নিয়ে রাজধানীর ভাটারার বাসিন্দা এছমোতারা খানম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক ও ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকে আমার দুটো অ্যাকাউন্ট আছে। আমি কার্ডের মাধ্যমে বেশির ভাগ সময় লেনদেন করি। একটু বেশি টাকা লেনদেন করলেই চার্জ গুনতে হয়। একবার পিন হারিয়ে বাড়তি ফি দিয়েছি। সামনে একটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছি। সেখানেও টাকা কাটবে ব্যাংক। মূলকথা, ব্যাংকের সব জায়গায় চার্জ। এত চার্জ আর ফির যন্ত্রণায় দিশেহারা হয়ে পড়ছি।’

বিভিন্ন ব্যাংকের হালনাগাদ চার্জ ও ফির তালিকা থেকে জানা যায়, বাণিজ্যিক ব্যাংকে হিসাব চালু থেকে শুরু করে বন্ধ করা পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে চার্জ ও ফি দিতে হয় গ্রাহকদের। এসব ব্যাংক সক্ষমতার ভিত্তিতে শতাধিক সেবা প্রদান করছে। ব্যাংকভেদে সেবার বিনিময়ে গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন রকম চার্জ ও ফি।

ব্র্যাক ব্যাংকের গ্রাহক মুক্তা বেগম বলেন, ‘ব্যাংক এমন একটা প্রতিষ্ঠান, যেখানে হিসাব চালু থেকে শুরু করে বন্ধ হওয়া পর্যন্ত প্রতি পদে পদে চার্জ দিতে হয়। ব্যাংকে ব্যালেন্স চেক, টাকা উত্তোলন, ট্রান্সফার, লকার সার্ভিসসহ সব সেবার জন্য চার্জ দিতে হয়। কোনো কোনো ব্যাংক শতাধিক সার্ভিস দেয়। আর এত চার্জ গুনতে গুনতে নাজেহাল অবস্থায় রয়েছি।’

জানা যায়, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক চলতি হিসাব খুলতে শুরুতেই গ্রাহকের কাছ থেকে ব্যবস্থাপনা চার্জ ৩০০ টাকা নিচ্ছে। হিসাব বন্ধ করার জন্য সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা নিয়ে থাকে ব্যাংকটি। আর সঞ্চয়ী হিসাব থেকে এটিএম কার্ডে টাকা উত্তোলনের সময় তাদের দেওয়া লেনদেনের সীমা অতিক্রম করলে প্রতি লেনদেনে পাঁচ টাকা চার্জ নেওয়া হয়। বছরে দুবারের বেশি ব্যালেন্স কনফারমেশন সনদ নিলে প্রতিবারের জন্য অতিরিক্ত ১০০ টাকা চার্জ দিতে হয় গ্রাহককে। স্থানীয় ক্রেডিট ইনফরমেশন চার্জ ৩০০ টাকা আর তা বৈদেশিক হলে দিতে হয় ১ হাজার টাকা। লকার সার্ভিসের জন্য আকারভেদে বছরে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা চার্জ দিতে হয়।

এদিকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব পরিচালনার জন্য লেনদেনের পরিমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থাপনা বাবদ অর্ধবার্ষিক চার্জ ৫০ থেকে ৩০০ টাকা নিচ্ছে। লকার সার্ভিসের জন্য বার্ষিক ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা চার্জ নিচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ডেবিট কার্ডের জন্য বার্ষিক ৪০০ টাকা ফি নিচ্ছে। ব্যাংকটিকে কার্ড রিপ্লেসমেন্ট বাবদ ১০০ টাকা, পিন পরিবর্তনে ১০ টাকা চার্জ দিতে হয় গ্রাহককে।

মানিকনগরের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী আহসান উল্লাহ চার্জ নিয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ব্যাংকের সেবার মান ও মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। তবে এ জন্য দিতে হয় বাড়তি চার্জ। আর আমি যে ব্যাংকে লেনদেন করি, সেই ব্যাংকের নির্ধারিত চার্জ সমান সেবার জন্য অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় বেশি।’

এ বিষয়ে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ব্যাংক একটি জটিল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এখানে সেবার মাধ্যমে আয় করা হয়। সেই আয় থেকে ব্যয় মিটিয়ে লাভ করতে হয়। লাভ ছাড়া ব্যাংক চলতে পারে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তুমি ঘুমাও কীভাবে’, সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের বিস্ময়

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

বিদায় বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত