Ajker Patrika

কেমন হবে নির্বাচন

সম্পাদকীয়
কেমন হবে নির্বাচন

নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এখনো স্পষ্ট হয়নি কয়টি দল নির্বাচনে অংশ নেবে কিংবা নির্বাচন কতটা অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে আওয়ামী লীগসহ ১৫টি দল ভোটে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপিসহ ১৭টি দল তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতীয় পার্টিসহ ১২ দলের অবস্থান স্পষ্ট নয়। তবে এই দলগুলো শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের বাইরে থাকবে না বলেই মনে হয়।

আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে। বিএনপি এক দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনে আছে। আগামী রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তবে হরতাল-অবরোধ ডেকে মাঠে থাকার নামে আসলে বিএনপি কী অর্জন করতে চায়, তা রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কাছেও স্পষ্ট নয়।

আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দলের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা সরকারের আছে। বিএনপি দলগতভাবে নির্বাচনে না গেলেও দলছুট হয়ে কেউ কেউ ভোটে দাঁড়াতে পারেন বলে প্রচার আছে। তবে এই তালিকায় বড় কোনো নেতা আছেন কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে পরিষ্কার হবে আসলে নির্বাচনে কারা থাকছেন আর কারা থাকছেন না। তাই আগামী কয়েকটি দিন ভোটের রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তবে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যদি ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার কৌশলই বাস্তবায়ন করতে চায়, তাহলে ভোট শেষেও রাজনৈতিক সংকট কাটবে না। তাই আসন্ন নির্বাচনে কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কারও জেতা চলবে না। ভোটকেন্দ্রে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভোটার উপস্থিতি ও ভোটদান নিশ্চিত করতে হবে। যাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তাঁদের সবাইকে নির্বিঘ্নে প্রচার-প্রচারণার সুযোগ দিতে হবে। নির্বাচন কমিশনকেও শক্ত অবস্থানের প্রমাণ দিতে হবে। কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠলে, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে গড়িমসি করা চলবে না। এমনকি প্রার্থিতা বাতিলের মতো কঠোর মনোভাব দেখাতেও দ্বিধা করা চলবে না। এগুলো করলে কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরতে পারে।

তরুণ প্রজন্মের ভোট দেওয়ার অধিকার যেন কেউ কেড়ে নিতে না পারে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সবাইকে। গত দুই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকারবঞ্চিত হয়ে যাঁরা ক্ষুব্ধ আছেন, এবার তাঁদের ক্ষোভ দূর করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার (বিওয়াইএলসি) এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস (সিপিজে) পরিচালিত এক জরিপ থেকে জানা যাচ্ছে, দেশে আগামী দিনে অনুষ্ঠেয় যেকোনো নির্বাচনে ভোট দিতে চান ৭৪ শতাংশ তরুণ-তরুণী (১৬-৩৫ বছর বয়সী)। আর ১৮-৩৫ বছর বয়সী ৭২ শতাংশ তরুণ-তরুণী আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দিতে চান। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১৬ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৫ হাজার ৬০৯ জনের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করা হয়।

নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষের কাছে উৎসবের মতো। একে কোনোভাবেই আতঙ্কের বিষয়ে পরিণত করা চলবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত