Ajker Patrika

ব্যবস্থা নেয়নি মালিকপক্ষ

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১০ জুন ২০২২, ১২: ২১
ব্যবস্থা নেয়নি মালিকপক্ষ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মালিকপক্ষের অবহেলার বিষয়টি ইতিমধ্যে সবার নজরে এসেছে। মালিকপক্ষ থেকে ডিপোতে রাসায়নিক থাকার বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে না জানানোর কারণেই এ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে ফায়ার সার্ভিস। শুধু তা-ই নয়, অগ্নিনিরাপত্তা বিধানেও মালিকপক্ষ অবহেলা করেছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মালিকপক্ষ প্রতিষ্ঠানটিতে অগ্নিঝুঁকি রোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হলেও তারা ডিপোতে কোনো ফায়ার হাইড্রেন্ট, স্মোক, হিট ও মাল্টি ডিটেকটর স্থাপন করেনি। প্রতি বছর অগ্নিমহড়ার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি কখনো তা করেনি।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল সাকিব মুবাররাত বলেন, ‘বিডার উদ্যোগে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আমরা বিএম কন্টেইনার ডিপো পরিদর্শন করি। এ সময় আমরা ওই প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনিরাপত্তা সম্পর্কিত অনেক ত্রুটি খুঁজে পাই। এ ঘটনায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি তাদের একটি চিঠি দিয়েছি। এখন পর্যন্ত তারা জবাব দেয়নি। আগেও একাধিকবার আমাদের পরিদর্শকেরা ওই ডিপো পরিদর্শন করেছেন। ওই সব ঘটনায় আমরা তাদের চিঠি দিয়েছি। সেগুলোরও কোনো উত্তর পাইনি। এর আগে গত বছরের ১৭ নভেম্বর আমরা প্রতিষ্ঠানটিকে আরেকটি চিঠি দিয়েছিলাম। তারা চিঠির নির্দেশনা প্রতিপালন করা নিয়ে আমাদের কোনো উত্তর দেয়নি।’

কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ ডিসেম্বর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) উদ্যোগে বিভিন্ন সংস্থার একটি সমন্বিত দল বিএম কন্টেইনার ডিপো পরিদর্শনে যায়। ওই দলে বিডা, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, এফবিসিসিআই, জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা ছিলেন। তখন বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ফায়ার হাইড্রেন্ট, স্মোক ডিটেকটর, হিট ডিটেকটর, মাল্টি ডিটেকটর ছিল না। এ ছাড়া অগ্নি মহড়া, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ, প্রাথমিক চিকিৎসা প্রশিক্ষণসহ আরও অনেকগুলো ত্রুটি খুঁজে পান। ওই সময় প্রতিনিধি দল, প্রতিষ্ঠানটির মালিক পক্ষকে যেসব ত্রুটিগুলো খুঁজে পেয়েছেন সেগুলো প্রতিপালনসহ পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি সুরক্ষা বিষয়ক সব আইনি বিধান মেনে চলার নির্দেশনা দেন। ওই পরিদর্শনের দেড় মাস পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি অগ্নি নিরাপত্তা, অগ্নি মহড়াসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিশ্চিত করার জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে চিঠি দেওয়া হয়। এরপর চার মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরকে ওই চিঠির কোনো উত্তর দেওয়া হয়নি।

সমন্বিত দলের সঙ্গে পরিদর্শনে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে কী কী ত্রুটি পেয়েছেন জানতে চাইলে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল সাকিব মুবাররাত বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করে আমরা অগ্নি ঝুঁকি রোধে ওই ডিপোতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে দেখিনি। ডিপোতে ফায়ার হাইড্রেন্ট, স্মোক ডিটেকটর, হিট ডিটেকটর, মাল্টি ডিটেকটর ছিল না। এ ছাড়া অগ্নি মহড়া, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণের কোনো সনদ তারা দেখাতে পারেনি। এ জন্য আমরা প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়মিত অগ্নি ঝুঁকি পরীক্ষা, বৈদ্যুতিক পরীক্ষার পর সনদ গ্রহণ করা এবং অন্যান্য পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি সংক্রান্ত বিষয় জোরদার করার নির্দেশনা প্রদান করেছিলাম। তবে ওই সময় তারা আমাদের কেমিক্যাল রাখার বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি।’

আব্দুল্লাহ আল সাকিব আরও বলেন, বিধিমালায় বছরে অন্তত একবার বৈদ্যুতিক লাইনগুলো পরিদর্শন ও পরিবীক্ষণের নিয়ম আছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে বছরে অন্তত একবার বৈদ্যুতিক লাইন পরিদর্শন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘তুমি ঘুমাও কীভাবে’, সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের বিস্ময়

বিদ্যালয়ে সময় দেন না শিক্ষক, ইউএনওর কাছে অভিযোগ করায় সহকর্মীকে মারধর

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত