Ajker Patrika

খুঁড়িয়ে চলার আরও এক বছর

মীর রাকিব হাসান, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ১৫
খুঁড়িয়ে চলার আরও এক বছর

২০২১ সালের প্রথম ছবি ছিল ‘কেন সন্ত্রাসী’, মুক্তি পায় ১ জানুয়ারি। আজ ৩১ ডিসেম্বর ‘রাত জাগা ফুল’ ও ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ মুক্তির মধ্য দিয়ে এ বছরের মোট ছবির সংখ্যা হলো ৩০টি। আমদানি করা ভারতীয় ছবি ‘বাজি’ ও ‘গোলন্দাজ’ ধরলে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ৩২-এ। বছরের প্রথম আট মাসে মুক্তি পেয়েছে মাত্র ৮টি ছবি। তবে বছর শেষে বেড়েছে ছবি মুক্তির সংখ্যা। যেটি স্থবির ঢাকাই ছবিকে খানিকটা হলেও আশার আলো দেখিয়েছে।

হতাশা দিয়ে বছর শুরু হলেও শেষ দুই মাসে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই মুক্তি পেয়েছে নতুন ছবি। ছবিগুলো নিয়ে কলাকুশলীরা প্রচারণা চালিয়েছেন সাধ্যমতো। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর গুটি কয়েক হল খুললেও ছবি মুক্তির সাহস করেননি নির্মাতা-প্রযোজকেরা। অন্যদিকে, পর্যাপ্ত ছবির অভাবে হল খোলার সাহস দেখাননি অনেক হল মালিক। ফলে এক অদ্ভুত দ্বিমুখী পরিস্থিতির তৈরি হয়। ‘মিশন এক্সট্রিম’-এর মতো বড় বাজেটের ছবি মুক্তি পেয়েছে মাত্র ৫০টি হলে, এই ছবিকে লক্ষ্য করেই খুলেছে ২০টি হল।

‘মিশন এক্সট্রিম’, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’, ‘কালবেলা’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’, ‘নোনা জলের কাব্য’, ‘মৃধা বনাম মৃধা’র মতো প্রশংসিত ছবি যেমন মুক্তি পেয়েছে, তেমনি ‘রংবাজি-দ্য লাফাঙ্গা’, ‘তুমি আছো তুমি নেই’, ‘নারীর শক্তি’র মতো মানহীন ছবিও এসেছে। কোনো ছবিই প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যবসা করতে পারেনি। ‘হিট’, ‘সুপারহিট’ নেই একটি ছবিও। এ হতাশা আরও দীর্ঘ করেছে করোনা পরিস্থিতি। আসল বাস্তবতা হলো—যত ভালো ছবিই হোক, মাত্র ৫০-৬০টি হলে কোটি টাকা বাজেটের ছবি মুক্তি দিয়ে লাভ তো দূরের কথা, খরচ তুলে আনা সম্ভব নয়। ছবির বাজার বড় না হলে কোনো তারকার ছবিই প্রত্যাশিত ব্যবসা করবে না। দিনকে দিন ফ্লপের সংখ্যাই বাড়বে। কাজেই, দেশের বাইরেও বাংলা ছবির বাজার কীভাবে বড় করা যায়, আরও অধিকসংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছানো যায়—তার পরিকল্পনা প্রয়োজন।

বলিউডে আদিত্য চোপড়া, করণ জোহর, রনি স্ক্রুয়ালাদের মতো বিশেষজ্ঞরা আছেন, যাঁরা যেকোনো মুহূর্তে ইন্ডাস্ট্রির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু ঢালিউডে সে অর্থে বাজার-বিশেষজ্ঞ কিংবা শক্তিশালী কোনো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি এ বছরেও।

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া সারা বছর ছবি নির্মাণ করেছে। এসব ছবি নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির কলাকুশলীদের মধ্যে উন্মাদনা দেখা গিয়েছে। যদিও সব ছবির বাজেট কম ছিল। তবে সবাই কিছু না কিছু কাজ পেয়েছেন, এটাও কম কী! ঢাকাই ছবির এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় তারকা শাকিব খান। এ বছর তাঁর অীভনীত একটি ‘নবাব এলএলবি’ মুক্তি পেয়েছে, কিন্তু ছবিটি প্রত্যাশিত দর্শক টানতে পারেনি।

আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ ছবির কল্যাণে প্রথমবারের মতো কান চলচ্চিত্র উৎসবে অফিশিয়ালি নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। কানের লাল গালিচা ও প্রদর্শনীতে আলাদা নজর কেড়েছে আজমেরি হক বাঁধনের উপস্থিতি। ববিতা-জয়া আহসানের পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন বাঁধন। বিশ্ব গণমাধ্যমে বাঁধনের নাম এসেছে একাধিকবার। সে সুবাদে দেশের ইন্ডাস্ট্রি পেরিয়ে বলিউডের কাজেও যুক্ত হয়েছেন তিনি। রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের ‘নোনা জলের কাব্য’ কিংবা ‘পায়ের তলায় মাটি নাই’-এর মতো ছবিগুলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসা পেয়েছে।

তারকারা এবার বিদেশ ঘুরেছেন ব্যাপকভাবে। বছরের একটা বড় সময় বিদেশে কাটিয়েছেন দেশীয় ছবির অনেক বড় তারকা। আশার কথা, প্রায় সব তারকাই নতুন ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। বড় বাজেটের একাধিক ছবি নির্মিত হয়েছে, হচ্ছে। আগামী বছর ছবিগুলো মুক্তি পেলে সুদিন ফিরবে, আশা করা যায়। তার আগে দরকার, যথাযথ পরিকল্পনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত